সকালে অফিস যাবার সংগ্রামটাকে জীবন-যুদ্ধের একটা অংশ হিসেবে বর্ণনা করা যায় খুব সহজে। কিন্তু খুব তাড়া না থাকলে আমার সময়টা ভালই কাটে। জীবিকা আহরণই মূলত প্রতি সকালের এই ভ্রমনের প্রধান উদ্দেশ্য। নিজে জীবিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে আমি দেখি আমারই মতো আরও হাজারো মানুষের ছোটাছুটি। কেউ রুদ্ধশ্বাসে ছুটছে কর্মক্ষেত্রের দিকে, কারো আবার পথই কর্মক্ষেত্র। কেউ যাচ্ছে হাজারো মানুষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে আবার কেউ যাচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশাল গাড়িতে একাকী। পথিকদের কাছে নানা ধরনের খাবার অথবা নানা ধরনের টুকিটাকি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশ। কেউ আবার সুযোগ খোঁজে পকেট মারার মতো অসদুপায় অবলম্বনের। উপার্জনের এই যুদ্ধে নাবালক শিশু থেকে খুনখুনে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবারই রয়েছে অংশগ্রহনের সমান দাবী।
ভালো ভাবে খেয়াল করলে এই কর্মযাত্রা হয়ে উঠতে পারে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার এক সচিত্র মাধ্যম। এক পথিকের প্রতি অন্য পথিকের সহমর্মিতা, পারস্পরিক ঝগড়া অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ব্যাপার। কখনো কখনো বাসের ভেতর উঠে চায়ের দোকানের মতো বিতর্কের ঝড়। খেলাধুলা, রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যাক্তিদের করা কেলেঙ্কারী পর্যন্ত কিছুই সেই ঝড় থেকে রেহাই পায়না।
আজ আসার পথে দেখতে পেলাম একজন অন্ধ বাঁশী শিল্পীকে। তাঁর বাঁশীর সুর আমাকে যতটা অবাক করল তার চেয়ে অনেক বেশি অবাক হলাম তাঁর বিষয়বস্তুর উপস্থাপনের ভঙ্গী দেখে। তাঁর গল্পের নায়িকার নাম “খাইরুন সুন্দরী”। শিল্পী কিছুক্ষণ খাইরুন সুন্দরীর গল্প বলেন তারপর তিনি তাঁর বাঁশীতে তোলেন যেটুকু বলেছেন সেটুকু। তাঁর নিঃশ্বাসের সাথে সাথে বাঁশীটা কেঁদে উঠছিল খাইরুন সুন্দরীর দুঃখে আবার কখনো খিলখিলিয়ে হেসে উঠছিল খাইরুন সুন্দরীর আনন্দে।
বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন আবর্তে আমি দেখেছি বিভিন্ন ধারার উপস্থাপনা। কিন্তু আজকের এই শিল্পীর উপস্থাপনের ভঙ্গী ছিল আমার জন্য একই সাথে বেতিক্রম আর মনমুগ্ধকর
বিঃদ্রঃ- ছবিটি google থেকে সংগৃহীত...।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৫