ছবিতে দেখা যাচ্ছে কিভাবে গুলশান থানা পুলিশ Fareez Rahman কে আদরের সাথে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঝটপট সরিয়ে ফেলে কয়েকটা দরকারী ' 'জায়গা মতন' ফোন কলের পর! এইসব ছবি ফাঁস করে দেয়ার পরেও মনে হয় গুলশান থানা পুলিশ দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করবে না।
পুলিশ বলেছে কেউ মামলা করেনি তাই কিছু 'করা' সম্ভব হচ্ছে না।
আসলেই কি তাই? তাহলে
- ১৬ বছর বয়সে গাড়ি চালানো কি বৈধ?
- ধরে নিলাম আমরা ক্ষমতার জোরে তাও 'বৈধ', তাহলে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালিয়ে মানুষ চাপা দেয়ার শাস্তি সেই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়ার কথা না? এর জন্য কি আহত- নিহতদের মামলা করা লাগবে? ট্রাফিক আইন কি বলে?
- মদের বোতল পাওয়া গিয়েছে গাড়িতে, চালক ১৬ বছরের মাতাল, মাদক দ্রব্য আইনে এর শাস্তি কি?
এইভাবে খুজলে আরো অনেক প্রশ্ন পাওয়া যাবে যার একটারও উত্তর গুলশান থানা পুলিশের কাছে নাই। কারণ দেখতেই পাচ্ছেন যে 'জায়গা মতন' ফোন চলে গিয়েছে। পুলিশের কাজ কাকে রক্ষা করা? কেউ কি জানাবেন গুলশান থানা পুলিশ কে ফোন দিয়ে যে তাদের পেশাগত দায়িত্ব কি?
গুলশানে কার রেসিং-এ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গাড়িচালক সাবেক এমপি এইচবিএম ইকবালের ভাতিজা ফারিজ আহমেদকে (১৬) বাঁচাতে এক হয়েছে বিআরটিএ ও পুলিশ।এদিকে বুধবার সকালে বিআরটিএ অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে গাড়ির মালিকের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কম্পিউটারে গাড়ির নম্বর (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১৮৯৭৬) সার্চ দিলে মালিকের নাম আসে না, আসে শুধু চেসিস নম্বর।
থানার গেট সংলগ্ন রাস্তায় ইকবালের ভাতিজাচালিত গাড়িটি যত্নে ঢেকে রাখা আছে। এমনিতে দেখলে বুঝা যাবে না এটি কোনও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি। পরে গাড়িটির কাভার তুলে দেখা গেছে দুর্ঘটনার পর তোলা ছবির গাড়ি আর এই গাড়ি একই।
নে করেন, এরকম একটা BMW চড়ে যদি ১৫-১৬ বছরের কিছু মদ খাওয়া ছেলে যদি এসে আপনাকে অথবা আপনার আপনজনকে রাস্তায় পিষে মেরে চলে যায় তাহলে আপনার কপালে বিচার নাই! গতকাল একটা SUV দিয়ে মানুষ মেরেছে, কালকে নাহয় একটা BMW দিয়ে মারলো- গাড়ির তো অভাব নাই!
তার উপর যদি এইসব ১৫-১৬ বছরের বাপ-মামা-চাচা যদি হয় MP, মন্ত্রী, সচিব অথবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ লোক তাহলে তো আপনার আর রাস্তার একটা কুকুরের মধ্যে কোনো তফাত আইন দেখবে না। ভাবছেন আমরা একটু বাড়ায় বলে ফেললাম? একবার চিন্তা করেন, রাস্তায় কুকুর মারলে যেমন গাড়ি চালকের শাস্তি হয় না, তেমনি আপনাকে মারলেও এই ধরনের নাবালক আবাল চালকদের শাস্তি হবে না। তাহলে তো পার্থক্য থাকলো না, নাকি? কিন্তু আপনি যদি জোরে আপনার নিঃশ্বাস ফেলেও যদি এই গাড়ির গায়ে বাতাস দিয়ে দাগ (??!!) ফেলেন তাহলে আপনার খবর আছে। থানা পুলিশ সবই আসবে আপনাকে উঠায় নিয়ে যেতে।
এই প্রাক্তন সংসদ সদস্য Dr. H B M Iqbal এর আদরের দুলাল ভাতিজা Fareez Rahman (যার কিনা বয়স ১৬) মদ খেয়ে মাতাল হয়ে গুলশান বনানীতে ঘুরে বেড়ানোটা নতুন কিছু না। বাপের গাড়ি দিয়ে উরাধুরা চালানোও নতুন কিছু না। তাকে এর আগেও অনেক বন্ধু এই বিষয়ে সাবধান করেছিল কিন্তু এই আবাল ছেলে কথা শুনে নাই (প্রমান হিসেবে screenshot দেয়া হলো তার ও তার এক বন্ধুর August মাসে কথোপকথনের)। তার মতে মদ খাক, আর গাজা খাক - তার চেয়ে ভালো গাড়ি চালক নাকি দেশে নাই! তাই মনে হয় ৪/৫ টা খুন একসাথেই করলো! Professional Racer বলে কথা। ছেলেকে এখন UK পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। UK Border Agency ([email protected]) এ ইমেইল ও করা হয়েছে কিন্তু কতটুক কাজ হবে সেইটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এত আদরের দুলাল তো! এইভাবে আর কত? সব গাড়ির লাইসেন্স প্লেট এর নাম্বার, মদের ছবি, মার্কামারাদের ছবি... সবই দেয়া হয়েছে, এর চেয়েও বেশি চোখে আঙ্গুল দিয়ে কথা বললে তো আঙ্গুল চোখেই ঢুকে যাবে! আপনারাই বা আর কতো সহ্য করবেন? দিন কি বদলায় নাই?
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই সোমবার বিকালে রাজধানীর অভিজাত এলাকার ব্যস্ত সড়কে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন ওই কিশোর। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী লাইসেন্স পেতে ১৮ বছর বয়স হতে হয়। গুলশান থানার একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই ছেলে মদ্যপ অবস্থায় ছিল। গুলশানের ৭৪ নম্বর সড়ক দিয়ে বেপরোয়া চালানোর সময় দুটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। রিকশা দুইটা একেবারে উল্টে ভেঙে গেছে। তবে নিহতের বিষয়ে কিছু জানি না। যদিও গতরাতে (মঙ্গলবার) ফারিজ তার স্ন্যাপচ্যাটে লিখেছেন, ‘গোইং টু দ্যা পুলিশ স্টেশন উইথ ড্যাড।’ তারপরও থানার কেউ এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে ফারিজ রহমান-এর বন্ধুদের বরাত দিয়ে বলা হয়, সোমবার গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইলে তাদের রেসিং-এর ভিডিও করছিলো ফারিজ এবং দুর্ঘটনার একটু আগে তার সেলফি তুলে ফটোমেসেজিং স্ন্যাপচ্যাটে দিতে দেখা গেছে। ফারিজের ফেসবুক পেজে তার পরিচয় হিসেবে বিএমডব্লিউ-এর এমডি এবং মেম্বার অব পার্লামেন্ট লেখাও দেখা গেছে। ঘটনার ৩০ মিনিট আগে সে গাড়ি চালানো অবস্থায় সেলফি দিয়েছে
গাড়িটির মালিক এইচবিএম জাহিদুর রহমান। চালকের সিটে থাকা ফারিজ এইচবিএম জাহিদুর রহমানের ছেলে। জাহিদুর রহমানের ভাই এইচবিএম ইকবাল ১৯৯৬ সালে ঢাকার রমনা-তেজগাঁও আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। প্রভাবশালী এই নেতার ভাজিতা হওয়ায় ফারিজের বিরুদ্ধে এখনও কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি l
এমপি এইচবিএম ইকবালের ভাতিজা ফারিজ আহমেদকে বাঁচাতে এক হয়েছে বিআরটিএ ও পুলিশ l
fareez rahman facebook profile
ফারিজের প্রোফাইলে গিয়ে তার রেসিং ভিডিও গুলো দেখে আসুন। সে রাস্তা ঘাটে ফুল স্পিডে টার্ন নিচ্ছে।
রিকশাচালক হাকিমের পক্ষে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, আমরা গরীব। তারা যে আমাদের এখানে চিকিৎসা দিচ্ছে এটাই অনেক। তাদের অনেক ক্ষমতা। চিকিৎসার বিষয়টি তারা এড়িয়ে গেলেও আমাদের কিছু করার ছিলো না। এছাড়া গুলশান থানার সেকেন্ড অফিসার ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দিবেন বলেও জানান তিনি।
গুলশান থানায় ফোন করেও তেমন একটি সুবিধা পায়নি আমাদের মুফাসসিল ভাই।
ভিডিওর লিঙ্কঃ মুফাসসিল ইসলাম ভাইয়ের সাথে পুলিশের কথপোকথন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে ফারিজ রহমান-এর বন্ধুদের বরাত দিয়ে আরো যে ভয়ংকর তথ্য পাওয়া যায় তা হলো, গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইলে তাদের রেসিং-এর ভিডিও করছিলো ফারিজ এবং দুর্ঘটনার একটু আগে তার সেলফি তুলে ফটোমেসেজিং স্ন্যাপচ্যাটে দিতে দেখা গেছে। ফারিজের ফেসবুক পেজে তার পরিচয় হিসেবে বিএমডব্লিউ-এর এমডি এবং মেম্বার অব পার্লামেন্ট লেখাও দেখা গেছে। ঘটনার ৩০ মিনিট আগে সে গাড়ি চালানো অবস্থায় সেলফি দিয়েছে বলে বন্ধুসূত্রে জানা গেছে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, গতকাল বিকেল পৌনে চারটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আমরা এই গাড়ি আটক করেছি। গাড়ির মালিককে আটকের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে পুলিশ একটি মামলা করেছে। তিনি বলেন, গাড়িটি রিকশাকে ধাক্কা দেওয়ায় তা উল্টে গেলে কোলে থাকা শিশুটি মারা যায়, এতে আহত হয় মোট দুই রিকশার চারজন যাত্রী।
রাস্তায় এমন ঘটনা দিনদিন খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠছে যা সত্যিই দুঃখজনক। অনেকের গাড়ি চালানো দেখলেই মনে হয় , সেই গাড়ি আর তার ভেতরের মানুষ ছাড়া রাস্তায় সব যেন জন্তু-জানোয়ার। তারা যেন রাস্তার রাজা। বিশেষ করে আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে প্রতিনিয়ত এমন রেসিং করতে দেখা যায় উঠতি বয়সের যুবকদের।
তারা কি একবারও কখনো ভাবেনা যে তাদের এই লাগামহীন আনন্দ উল্লাস করে তুলতে পারে কারো জীবনকে বিষাদ ময়? এমন ঘটনাগুলোর জন্য দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি যদি না হয় তবে এমন দৃশ্য হয়তো প্রতিনিয়তো দেখতেই হবে আমাদের অহরহ। আর অকালে নিরাপরাধ মানুষের প্রাণ ঝরবে সড়ক মহাসড়কে। আজ একটি অজ্ঞাত শিশুর প্রাণ গেছে কাল যাবে আমার শিশুর এরপর হয়তো আপনার শিশুটিও অকালে এভাবেই চলে যাবে কালো পিচ ঢালা ঐ রাজপথে কোন না কোন এক গাড়ির চাকায় পিস্ঠ হয়ে! সড়ক পথে এই যন্ত্রনার শেষ কোথায়?
ব্যস্ত শহরের রাস্তায় ধনীর দুই দুলাল রেসিং খেলতে যেয়ে খুন করে ফেলেছে মায়ের কোলে থাকা এক দুধের শিশু কে।
খুব সম্ভবত নিউজটা পড়ে সবাই খুব আপসেট হবেন, গালিগালাজ করবেন, অনলাইন পার্সোনালিটিরা কিছুটা উত্তপ্ত স্ট্যাটাস দিবেন তারপর কিছুদিন পর সবাই সব ভুলে যাবে : এটাই বাংলাদেশ। ধনীভোগ্যা বাংলাদেশ, অপরাধী ধনীর দুলাল, তার উপর একজন ক্ষমতাবানের আত্মীয়!
যেখানে সাতখুন মাফ, সেখানে একটা শিশুই তো মরেছে, বিচার চাইবে কে?
ফারিজ রহমান রা একা না, গুলশানের রাস্তায় প্রতি রাতে আবাসিক এলাকার ভেতরে রেস হয় কালচার আর নীতি নৈতিকতা ছাড়া বেড়ে ওঠা ধনী আর ক্ষমতাবানদের স্পয়েলড কিডদের। এই ফারিজ এর কুকীর্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে এসেছে জন্য বেকায়দায় পড়েছে এই আরকি, বাকিরা আরো বুদ্ধিমান হবে, স্ন্যাপচ্যাটেও সতর্কতা বজায় রেখে চলবে, অন্তত my life > your life এরকম বোকামিমার্কা পোস্ট দিবে না আর মানুষ খুন করে বলবে "ভবিষ্যতে আর্মি হব, একটু যুদ্ধ যুদ্ধ খেললাম, কয়েকটা গিনিপিগ মরল "
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৬