বাংলা ভাষায় একটা প্রবাদ আছে- 'দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।' বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই 'দুষ্ট গরু' হলো 'বাংলাদেশের জান, বাংলার প্রান-সাকিব আল-হাসান।' কিন্তু 'সেই দিন কি আর আছে মামা, দিন বদলাইছে না' বিঙ্গাপনের যুগে বাঙ্গালী 'শূন্য গোয়ালের চেয়ে দুষ্ট গরু ভালো' নীতিতে বিশ্বাসী বলে আমার ধারনা। 'CPL খেলতে না দিলে দেশের হয়ে খেলবো না' (যা গতকাল পর্যন্ত আমার ধারনা ছিলো সাংবাদিকের পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর কৌশল, ধারনা বদলালো আজ সাকিবের স্বীকারোক্তিতে যে সে নাকি রাগের মাথায় এটা বলেছিলো) বলার পরে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি হবার পরেও আমরা তাকে সমর্থন করে যাচ্ছি যে তার নাকি এদেশে জন্ম নেয়াই ভুল হইছে, বোর্ড নাকি নোংরা রাজনীতির মাধ্যমে ওকে ফাসাইছে ইত্যাদি । একই সমবেদনা/সহর্মমিতা এবং শাস্তি বাতিলের তীব্র উচ্চারন আমরা দেখতে পাই ঘুষ নিয়ে ধরা পড়া এবং তা স্বীকার করা আশরাফুলের ক্ষেত্রেও। আজিব, আইকন প্লেয়ার হলেই তার সাত খুন মাফ, এমনকি দেশ থেকেও তার ভাবমূর্তির মূল্য আমাদের কাছে অনেক বেশী।
আচ্ছা, ঐশীর কথা মনে আছে আপনাদের ? নেশা করতে বাধা দেয়ায় যে মেয়ে তার বাবা-মা কে নিজ হাতে খুন করে। ধরা পড়ে সব স্বীকার করার পর আদালত তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায়। সে সময় অনেকেই তার আরও কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত বলে মত প্রকাশ করে। এখন অনেকেই হয়ত বলবেন সাকিবের শাস্তি প্রসঙ্গে ঐশীর ঘটনা টেনে আনা কেন। টেনে আনা কেবল মাত্র একটি-ই কারনে- দেশকে তো আমরা মায়ের সাথেই তুলনা করি, তাই না? সাকিব তো মা-কেই হুমকি দিলো খুন করার, ঐশীর শাস্তি সমর্থন যোগ্য হলে, সাকিবেরটা নয় কেন? যে মায়ের জন্য সে আজ নন্দিত, তাকেই ছাড়ার হুমকি?? ভদ্র ভাষায় সাকিব খুব-ই Arrogant, একই রকম Arrogance এর জন্য ওয়েষ্ট ইন্ডিজের গেইল কয়েকবার, ইংল্যান্ডের কেভিন পিটারসেন, অষ্ট্রেলিয়ার সাইমন্ডস জাতীয় দলে ব্রাত্য হয়েছে। ঐসব দেশে কিন্তু শাস্তির বিরুদ্ধে এত হইচই হয় নাই। আমি পন্টিং এর মতো সাকিবকে চাই, যে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে Arrogant।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যার সংগ্রাম এবং ত্যাগের কারনে অর্জিত হয়েছে, সেই বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া যদি বাংলাদেশ ৪৩ বছর চলতে পারে এবং ভবিষ্যতেও চলে, তাহলে সাকিবকে ছাড়াও বাংলাদেশ ক্রিকেটদল আগামী ৬মাস চলতে পারবে ।