আজকেই একজন ব্লগারকে দেখলাম তার নতুন সিস্টেম কিনছেন তার বর্ননা দিচ্ছেন। তার নতুন কম্পিউটার কেনার খুশিতে আমরাও বাক বাকুম করলাম এবং তাকে অভিনন্দন।
ইদানিং এরকম সিস্টেম কনফিগারেশন অনেকেই কিনতে চান
Processor: Intel Core 2 Quad 3.07 GHZ
RAM: Corsair 6GB, DDR3, 800 bus speed.
Motherboard: GigaByte, S- series, 1333,
AGP: MSI, 1GB, DDR2
Hard Disk: 820 GB (500+320)
Monitor: Asus, 22" WideScreen.
Cashing with LCD and 5 cooling fan.
Wireless Keyboard, Mouse And Sound speakers 5.1
Windows Ultimate 64-bit, Registerd from Microsoft Corp.
তবে তাদের প্রতি আমার কিছু কথা। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী জিনিস কিনুন। যদি সদ্ব্যবহারই না করতে পারলেন তাহলে কিনে ভাই লাভটা কি হবে??
এবার কনফিগারেশন সম্পর্কে কিছু বলি।
১) যদি আপনি
ক) একনিষ্ঠ গেমার না হন বা
খ) ডাটাবেস নিয়ে কাজ না করেন দিন রাত অথবা
গ) আগামী পাঁচ বছরের মাঝেই নতুন সিস্টেম কিনবেন
তাহলে কোয়াড কোর২ প্রসেসর কিনে কোন লাভ নেই। এখনও কোন সফটওয়্যার বাজারে নেই যেটা আপনার ডুয়েল কোর প্রসেসরের মেক্সিমাম শক্তি ব্যবহার করতে পারে।
সাজেশন:
এএমডির এথলন ৬৪ অথবা এফএক্স আপনার সিঙ্গেল কোর প্রসেসরে মেক্সিমাম সাপোর্ট দিবে। আপনার যে কোন দৈনন্দিন চাহিদা দৌড়ের উপর পূরণ করবে। এবং ইন্টেলের কোর ডুয়ো মানের প্রসেসরকেও অনেক পিছে ফেলে দিবে।
২) র্যামের ব্যাপারে.....
ক) ভিস্তা আলটিমেট চালাবার জন্য ২ গিগা যথেষ্ট
খ) গেমস্ খেলার জন্য বা ডাটাবেসে কাজ করার জন্য ৪ গিগা যথেষ্ট
অতিরিক্ত র্যাম আপনার কোন কাজেই আসবে না। অযথা পরে থাকবে এবং বিদ্যুৎ খরচ করবে।
সাজেশন:
একনিষ্ঠ গেমার হলে খুব বেশি হলে ৪ গিগা র্যাম কিনুন
৩) মাদারবোর্ড এসএলআই কিনলে সবচেয়ে ভালো হতো
ভবিষ্যতে গ্রাফিক্স কার্ডের দাম কমলে আরেকটি গ্রাফিক্স কার্ড কিনে দুইটি গ্রাফিক্স কার্ড একসাথে ব্যবহার করে গেমের পারফর্মেন্স বাড়ানো যেতো
সাজেশন:
নতুন মাদারবোর্ড কিনার সময় এসএলআই মাদারবোর্ড কিনে ফেলুন। অথবা এটিআই কার্ডের ক্ষেত্রে ক্রসফায়ার মাদার্বোর্ড
৪) গ্রাফিক্স কার্ড
অনেকেই গ্রাফিক্স কার্ডের বর্ননা দিতে এজিপি বলেন। যা সঠিক নয়। পিসিআই-ই র যুগে এজিপি কিনে কোন লাভ নেই।
গত দুই বছরের পারফর্মেন্সের দিক দিয়ে এটিআই এর চেয়ে এনভিডিয়া গ্রাফিক্স কার্ড ভালো পারফর্মেন্সের দিক দিয়ে। তবে এই বছর আবারও বলে কিছু ভালো এটিআই কার্ড আসছে।
তাই আপনি এটিআই নিবেন না এনভিডিয়া কার্ড নিবেন তা আপনার পছন্দের উপর ও রিভিউয়ের উপর নির্ভর করবে। আবার একই কোর প্রসেসরের মাঝেও পারফর্মেন্স প্রভেদ রয়েছে কিছুটা। (যদিও সাধারন গেমাররা এটা বুঝবেন না, একমাত্র হার্ডকোর গেমাররা এই ফ্রেম ডিফারেন্স বুঝতে পারবেন)
সাজেশন:
গ্রাফিক্স কার্ড কিনার সময় কখনও টপ অফ দ্যা লাইন কিনবেন না। এক বা দুই মডেল কম কিনবেন এতে যেমন দামেও সাশ্রয় হবে তেমনই কিছুটা দাম কমার সাথে সাথেই এসএলআই ব্যবহার করে পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করতে পারবেন।
৫) হার্ডডিস্ক সাইজ সম্পর্কে অনেকের মত যতবেশি তত লাভ।
হার্ডডিস্ক আপনি গিগাবাইট কেনো টেরাবাইট নিন যদি আপনি.......
ক) হার্ডডিস্কে আপনার সব ছবি, গান বা গেমসের কালেকশন রাখতে চান
খ) ডাটা লস সহ্য করতে পারেন।
গ) নিয়মিত ডাটা ব্যাকআপের ব্যবস্থা রয়েছে
ঘ)ডিস্ক ফ্র্যাগমেন্টেশনের মতো ডিস্ক ম্যানেজমেন্টে অনেক সময় লাগবে
আপনার কোন ডাটা যদি নিয়মিত ব্যবহারের প্রয়োজন না পরে তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ডিভিডি রাইটারের ব্যবহার করে নিশ্চিত থাকা। ডাটা ব্যাকআপও সহজ হবে। তবে নিয়মিত যদি ব্যবহারের প্রয়োজন পরে তাহলে এক্সটার্নাল বা পোর্টেবল হার্ডডিস্ক কিনে নেয়াই ভালো হবে।
সাজেশন:
১৬০ গিগার বেশি কেনার প্রয়োজন নেই। দাম যখন এতোই কম হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে আরও কমবে (রাইটার ও ব্ল্যাঙ্ক ডিভিডির দাম), হার্ডডিস্ক সাইজ না বাড়িয়ে ডিভিডি রাইটার কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৬) মনিটর ২২" কেবল যারা একসাথে মাল্টি উইন্ডোতে কাজ করেন তাদের জন্য সুবিধাজনক।
মনিটর ১৭-১৯ ইঞ্চি এলসিডি কিনলে ভালো।
মেক্সিমাম রেজ্যুলেশন ও রিফ্রেস রেটে রান করলে চোখেরও আরাম, কাজের স্থানও বাড়বে।
সাজেশন:
বাজারে অনেক কমদামি এলসিডি মনিটর পাওয়া যায়, সেগুলো না কিনে ভালো ব্র্যান্ডের ভালো ওয়্যারেন্টি সহ এলসিডি মনিটর কিনুন। দাম শুরুতে বেশি পরলেও বিদ্যুৎ সাশ্রয় অনেক হবে।
৭) এলসিডি কেসিং দেখানো ছাড়া কোন কাজের না। এগুলো অযথা ওয়ার্নিং দিয়ে আপনার পিসি বন্ধ করে দিবে। গেমস্-এর মাঝে পিসি বিপ দিয়ে বন্ধ করে দিবে।
টেম্প্রেচার মনিটরের জন্য অনেক ভালো সফটওয়্যার রয়েছে।
গেমস্ খেলার জন্য ও ২৪ ঘন্টা পিসি অন রাখা হলে, কুলিং ফ্যানের চেয়ে ওয়াটার কুলিং কিনা সবচেয়ে ভালো। পিসি গরমই হবে না।
সাজেশন:
গেমার হলে ওয়াটার কুলিং সিস্টেম সহ কেসিং কিনুন। এলসিডি মনিটরের বদলে মাদারবোর্ড মনিটর ৫ -এর মতো থার্ড পার্টি ফ্রিওয়্যার ব্যবহার করুন।
৮) মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ড মাউস আপনার গেমিং-এ পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করলেও আপনার অন্যান্য প্রডাক্টিভিটি কমিয়ে দিবে।
সাজেশন:
কীবোর্ড বেসিক এ-শেপ, মাউস অপটিক্যাল স্ক্রল। কিনার আগে ব্যবহার করে দেখা উচিত ব্যবহারে আরামদায়ক কিনা এবং সহজে অভ্যস্থ হওয়া যায় কিনা।
৯) আমি আরেকটি অপারেটিং সিস্টেম যুদ্ধ শুরু করতে চাই না। তারপরও না বলে থাকতে পারলাম না....
উইন্ডোজ ভিস্তা ব্যবহার করুন যদি আপনি
ক) অরিজিন্যাল লাইসেন্স কিনে থাকেন
খ) ডাটা লস সহ্য করতে পারেন
গ) অপারেটিং সিস্টেমের প্রসেস দিয়েই আপনার পিসিকে ব্যস্ত রাখতে চান
ঘ) ফাংশনালিটির চেয়ে আইক্যান্ডি বেশি পছন্দ করেন
ঙ) নিত্য নতুন ভাইরাসের নাম জানতে চান
চ) সিস্টেম নিরাপত্তাহীনতা সহ্য করতে পারেন
আমি ভিস্তার চেয়ে উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করার কথা বলবো।
যতদিন উইন্ডোজ ৭ বের না হচ্ছে ততদিন আমি এক্সপি ব্যবহার করার কথা বলবো।
তবে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতে বলবো মুক্ত সোর্স অপারেটিং সিস্টেম/লিনাক্স/ইউনিক্স/বিএসডি................
সাজেশন:
গেমস্ খেলতে চাইলে লিনাক্সে সেডেগা ব্যবহার করে গেমস্ খেলুন অনেক সিকিউরড্ হবে, পারফর্মেন্স একই রকম থাকবে প্রায়। কোন লিনাক্স সিস্টেম ব্যবহার করবেন তা আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করবে। অসংখ্য ব্যবহারবান্ধব সিস্টেম আছে যেকোন একটি ব্যবহার করে দেখুন।
আমার স্বপ্নের সিস্টেম কনফিগারেশন??
প্রসেসর: এএমডি এথলন ৬৪ /এফএক্স ৪০০০ (সকেট ৯৩৯)
মাদারবোর্ড: এসএলআই সাপোর্টেড সকেট ৯৩৯ মাদারবোর্ড
র্যাম: ২ গিগা ডিডিআর২
অপটিক্যাল ড্রাইভ: ডিভিডি রাইটার
হার্ডডিস্ক: ১২০ গিগা স্যাটা ৭২০০ আরপিএম
গ্রাফিক্স কার্ড: এনভিডিয়া ৮৮০০ জিটিএ সাইলেন্ট
মনিটর: ১৭ ইঞ্চি এলসিডি
কেসিং: থার্মাল কেসিং
মাউস ও কীবোর্ড: বেসিক
অপারেটিং সিস্টেম: ইন্ট্রাপিড আইবেক্স ৮.১০
অথবা রয়েল বেঙ্গল লিনাক্স ২০০৮
এবং অবশ্যই ইউপিএস।
অন্যান্যদের মতামত জানতে আগ্রহী আছি আমি