somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) - ৬ (শেষ পর্ব)

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দ্যা লস্ট গস্পেল সিরিজের শেষ পর্ব এটা। দেরী হবার কারনে দুঃক্ষিত।চাকরী ও পড়াশোনার ব্যস্ততার জন্যে এই দেরী।

# পোস্ট টা একটু বেশি ই বড়। সময় নিয়ে পড়বেন।শেষ এ রয়েছে চমক! আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে আবিষ্কার করা হয়েছে জুডাস তথা ঈসার সম্ভাব্য ছবি !
----------------------------------------------------------------------------
দ্যা লস্ট গস্পেল সিরিজের আগের পর্বগুলো-

দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -১
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -২
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -৩
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -৪
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -৫

--------------------------------------------------------------------------

আমরা বারানাবাসের বর্ণিত এত কাহিনী পরেছি , আমাদের জানা উচিত কিভাবে এই কিতাব তথা গস্পেলটি পাওয়া গেল। গস্পেলটি সংগ্রহ ও সংকলন নিয়ে কিছু কথা বলেই আমি ধারাবাহিক বর্ণনাই যাচ্ছি।
বারনাবাস এর জন্ম সাইপ্রাসের এক ইহুদী পরিবারে। তাঁর আসল নাম ছিল ইউসুফ, কিন্তু ঈসার প্রতি তাঁর অটল ভক্তির কারণে তাঁকে সাহাবীরা ডাকত বারনাবাস বলে। বার নাবিয়া, মানে নবীর পুত্র।(বাইবেল, বুক অফ অ্যাক্টস, ৪:৩৬-৩৭)

বাইবেলে বারনাবাস সম্পর্কে বলা আছে, “সাহাবী” (অ্যাক্টস, ১৪:১৪) আর “পাক রুহে পূর্ণ, একজন ভাল মানুষ, বিশ্বাসী।” (অ্যাক্টস ১১:২৪)
ঈসা চলে যাবার পর অনেকেই তাঁর জীবনকাহিনী তথা ইঞ্জিল লিখেন। প্রায় ১০০র বেশি ইঞ্জিল লিখা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি বারনাবাস এর।

এখন আমরা যে বাইবেল দেখছি বা পড়ছি সেটাকে সম্পূর্ণ ঈসার উপর নাজিলকৃত বাইবেল বলার অবকাশ নাই এটা মুলত পলের ( saint Paul’s) খ্রিস্টধর্ম। যে কিনা প্রথম জেরুজালেম থেকে ভ্যাটিকানে খ্রিস্ট ধর্ম প্রছার করতে যায়, মুলত এটাও একটা ষড়যন্ত্র। প্রকৃত ধর্ম এটা না।


ভ্যাটিকান চার্চ

৩২৫ সাল।

অনুষ্ঠিত হল সুবিখ্যাত (কুখ্যাত?) কাউন্সিল অফ নাইসিয়া। (Nicea)

এই কাউন্সিলে বাইবেলের অনেক সত্য লুকিয়ে ফেলা হয়, এখানে বাইবেলের বর্তমান লিখাগুলো নির্বাচন করা হয়। আর খ্রিস্টধর্মের মূলতত্ত্ব তুলে ধরা হয়। ঐ কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ দখল করে সেইন্ট পলের অনুসারীরা। ঐ কাউন্সিলেই অনেক ইঞ্জিল ধ্বংস করে দেয়া হয়। যার মধ্যে ছিল “নাসারিয় ইঞ্জিল”, “মিসরীয় ইঞ্জিল”, “হিব্রু ইঞ্জিল” যা লিখা হয়েছিল ঈসার মাতৃভাষা আরামায়িকে।



কাউন্সিল অফ নাইসিয়াতে আলেক্সান্দ্রিয়ার আথানেসিয়াসের দ্বারা প্রভাবিত এবং গৃহীত হয় ত্রিত্ববাদ। (ভিঞ্চি কোড পড়ুয়ারা এটা ইতোমধ্যে জানেন।) কাউন্সিলে ঈসার জন্ম তারিখ দেয়া হয় ২৫ ডিসেম্বর, যা সূর্যদেবতা হরাসের জন্মদিন। যীশুকে ঈশ্বরপুত্র নামে ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার (সাব্বাথ) থেকে রবিবার করা হয়। নির্বাচিত করা হয় যে ইঞ্জিলগুলো সেগুলোতে দেখানো হয় যীশু ঈশ্বরপুত্র আর ঈশ্বর। আসলে ঐ গস্পেলগুলো অলটার করে পলের অনুসারীরা আর নাম দেয় সাহাবীদের নামে।


council meeting inside Vatican pope living palace(systine chapel)



৩২৫ সালের আগ পর্যন্ত বারনাবাসের ইঞ্জিল একটা গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিল হিসেবে বিবেচিত হত। ৩২৫ সালে কাউন্সিলে আদেশ জারি করা হয়, কারও কাছে যদি কোন হিব্রু গস্পেল পাওয়া যায় তাহলে তাঁকে হত্যা করা হবে। ৩৮৩ সালে পোপ বারনাবাসের ইঞ্জিলের একটি কপি তাঁর লাইব্রেরিতে রাখেন।

উল্লেখ্য, ভ্যাটিকান লাইব্রেরি খুবই সমৃদ্ধ। ধর্মীয় রিসারচারদের জন্য স্বপ্নের লাইব্রেরি।
৪৭৮ সালে সম্রাট জেনোর ৪র্থ বর্ষে বারনাবাসের কবর আবিস্কার হয়। সেখানে তাঁর নিজের হাতে লিখা বারনবাসের ইঞ্জিলের একটি কপি পাওয়া যায়।

গস্পেল অফ বারনাবাস ৩৮২ সালে Western Church এর আদেশে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ৪৬৫ সালে পোপ ইনোসেন্ট একে আবার নিষিদ্ধ করেন। তারপর পোপ গেলাসিয়াসও (৪৯২-৪৯৫) আবার ban করেন। ৪৯৬ সালে গেলাসিয়ান নির্দেশিকায় নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় এখনও এ গস্পেলের নাম পাওয়া যায়।


সেন্ট পাল এর ভাস্কর্য ভ্যাটিকানের সদরে


গস্পেল অফ বারনাবাসের প্রকৃত আবিস্কারক এক খ্রিস্টান পাদ্রী, নাম তাঁর ফ্রা মারিনো। তিনি ইরানিয়াসের লেখা পড়তে গিয়ে দেখলেন, ইরানিয়াস সেইন্ট পলের বিরোধিতা করেছেন আর বারনাবাসের গস্পেলের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন। মারিনো এ গস্পেলের একটি কপি পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠলেন।


সেন্ট পিটার এর ভাস্কর্য ভ্যাটিকানের সদরে


মারিনো ছিলেন পোপ সিক্সটাস (১৫৮৫-১৫৯০) এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একদিন, তারা দুজন একত্রে পোপের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে ছিলেন। তখন পোপ ঘুমিয়ে পড়লেন। সময় কাটানোর জন্য মারিনো বই পড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখনই তিনি বইগুলোর মধ্যে পেয়ে গেলেন তাঁর পরম আকাঙ্ক্ষিত বই গস্পেল অফ বারনাবাস। তিনি উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন। বই তিনি আলখাল্লার নিচে লুকালেন। পোপ ঘুম থেকে উঠলে তিনি তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলেন। পরে এ গস্পেল পড়ে মারিনো ইসলাম গ্রহণ করেন।


ইতালিয় ভাষায় রচিত এ কপিটি ফ্রা মারিনোর পর নানা হাত ঘুরে অবশেষে অ্যামস্টারডাম এর একজন গুরুত্বপূর্ণ আর সম্মানিত লোকের হাতে আসে। তবে সেই রহস্যময় লোকের পরিচয় জানা যায় নি কখনও। এটুকু জানা গেছে, তিনি সারা জীবন এ বইটিকে যত্ন করে রাখেন, সংরক্ষণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর প্রুশিয় রাজার কাউন্সিলর J. E. Cramer এর হাতে আসে বইটি। ১৭১৩ সালে ক্রেমার পাণ্ডুলিপিটিস্যাভয় এর যুবরাজ Eugene এর কাছে উপহার হিসেবে পাঠান কারণ, যুবরাজ ছিলেন বইপ্রেমী।

১৭৩৮ সালে যুবরাজের লাইব্রেরির সব বইয়ের সাথে পাণ্ডুলিপিটিও চলে যায় ভিয়েনার সুবিখ্যাত লাইব্রেরি Hofbibliothek-এ। এখনও সেখানেই আছে।


Vatican city the yard of vatican


উল্লেখ্য, গস্পেল অফ বারনাবাসের একটি গ্রিক অনুবাদ পাওয়া গেছে যার অনেকটা অংশ আগুনে পোড়া।

বইটির লাতিন ভার্সন থেকে Mr & Mrs Ragg ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। বইটি প্রকাশ করে Oxfordআর প্রিন্ট করে Clarendon Press । সেটি ১৯০৭ সালের কথা। কিন্তু বেশিরভাগ কপি (ইংরেজি) রহস্যজনকভাবে বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। বর্তমানে এর মাত্র ২টা কপির কথা শুনতে পাওয়া যায়। একটি আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আর অন্যটি ওয়াশিংটনের কংগ্রেস লাইব্রেরিতে। আমেরিকার কংগ্রেস লাইব্রেরির বইটির মাইক্রোফিল্ম থেকে বইটির প্রথম সংস্করণ বের হয়, এ কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করেন আমেরিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লোক, যার পরিচয়ও আজও পাওয়া যায়নি। সেটার কপি থেকেই এই সিলেক্টেড কিছু অংশের অনুবাদ... যা আপনারা পড়ছেন ধারাবাহিকভাবে... আজকে তাঁর ৯ম পর্ব। :)

শুরু করা যাক, আগের পর্বের রেশ ধরে...


একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার, বর্তমান বাইবেলের John 20:19 এ বলা আছে, পুনর্জীবিত যীশু যখন সাহাবীদের কাছে আসলেন, তারা ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। যীশু কীভাবে সম্বোধন করলেন জানেন? :) তিনি সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেন, "শালোম আলেইকেম" যার অর্থ হিব্রুতে "Peace Be Upon You." :)

যাক, একটা ব্যাপার। বারনাবাস এর মতে, ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিল জুডাস। এহুদা। আসলে, একমাত্র বারনাবাসই কিন্তু একমাত্র গস্পেল না যেটাতে বলা হয়েছে এ কথা। যীশু যে আসলে ক্রুশবিদ্ধ হননি, এ সত্যটা অনেক গস্পেলেই ছিল! উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি, গস্পেল অফ পিটার। এখানেও এ কথা আছে। আগেই বলেছি, ৩২৫ সালে কাউন্সিল অফ নাইসিয়াতে বাইবেল এর লিখনীগুলো নির্বাচনের সময় চুজ করা হয় সেই গস্পেলগুলোকে যেগুলো "গুজব"-এ বিশ্বাস করা হয়েছিল। এতে খ্রিস্টধর্ম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থাকতে পারে... এ বিষয়ে ইনশাল্লাহ শেষ পর্বে লিখব...

কুরআনের ৪:১৫৭ অনুযায়ী চিন্তা করলে নিচের ৩ রকমের জোর দেয়া যায়, দেখুন- আমি ইংলিশে লিখছি... "তারা তাঁকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি।"
১) “They did not kill him” (তারা করে নি। ইহুদীরা না। তাহলে অন্য কেউ? এরকম একটা জোর দেয়া যায়।)
২) “They did not kill him” (তারা হত্যা করতে পারেনি। অর্থাৎ এত কিছুর পর তিনি বেঁচে ছিলেন।)
৩) “They did not kill him” (তারা তাঁকে মানে ঈসাকে হত্যা করেনি।)

দেখুন, ১ নং পয়েন্ট, এটা সিওর সব দিক থেকে, ইহুদীরা দায়ী ছিল। সো, এ পয়েন্ট বাদ।
২ নং পয়েন্ট, এটা অনেক চিন্তাবিদ বলেন, আসলে তাঁকে হত্যা করতে পারেনি। তাঁকে ক্রুশে দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তিনি সহ্য করেছিলেন। কিন্তু আল্লাহ বলেছেন, "তারা তাঁকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি।" আল্লাহ কত সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। কিন্তু, তারা বলেন, আসলে, ক্রুসিফাই শব্দের অর্থ ক্রুশবিদ্ধ করে মারা, কেবল ক্রুশে চড়ানো নয়। তাই যদি হত তাহলে, আল্লাহ কি হত্যা আর ক্রুশের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করতেন? এজন্য, আমি এ তত্ত্ব বিশ্বাস করি না। মানতে পারি না।

আরেকটা মজার ব্যাপার আমি খেয়াল করলাম, বাইবেল পড়তে গিয়ে, ক্রুশবিদ্ধ "যীশু"র সামনে মা মেরি কাঁদছেন... তখন যীশু তাঁকে সম্বোধন করছেন, "হে মহিলা!!" (জন ১৯:২৬) আপনি কি আপনার মাকে ওহে মহিলা বলে সম্বোধন করবেন? যেখানে চরম কষ্টের সময় আমরা মা বলে চিৎকার করি, সেখানে তিনি হে মহিলা বলছেন! :) এতে কি মাথায় আসছে আপনার? প্রথমত হইত তিনি যীশু এবং তিনি খুবই অভদ্র আর মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করেন দ্বিতীয়ত, তিনি যীশুই নন। যীশুর চেহারাই অন্য কেউ।

আসুন দেখি-
কুরআন কোনটাকে সাপোর্ট করে?"ঈসা বললেন... তিনি (আল্লাহ) আমাকে করেছেন মায়ের প্রতি অনুগত, আর তিনি আমাকে উদ্ধত করে বানাননি।" ( সুরা-মারিয়াম, ১৯:৩২)

আল্লাহ কুরআনে স্পষ্ট বলেই দিলেন যে তিনি (ঈসা) মায়ের প্রতি অনুগত তিনি মায়ের সাথে এমন আচরণ করবেন মানাই যাই না।


ইহুদীরা বিশ্বাস করে, যে ক্রুশে চড়ে মারা গেল সে অভিশপ্ত। (তাওরাত, ২য় বিবরণ, ২১:২৩) এ জন্য যীশু মসীহ (খ্রিস্ট) কিনা আসলেই, সেটা তারা পরীক্ষা করে দেখল। যেহেতু ক্রুশবিদ্ধ হয়েছে, তাহলে সে আসলে মসীহ না। ভণ্ড।

কিন্তু, আসলে তো ঈসা (আ) হলেন ক্রাইস্ট, মসীহ।

যাক, এবার আগের পর্বের পর থেকে শুরু করা যাক, বারনাবাসের গস্পেল...

অধ্যায় ২১৭
...
এরপর তারা এহুদাকে বেঁধে নিয়ে গেল গভর্নর পাইলেটের কাছে। কেউ জানত না যে, পাইলেট গোপনে ঈসাকে বিশ্বাস করতেন আর ভালবাসতেন। তাই পাইলেট তাঁকে তাঁর কক্ষে একা ঢুকতে দিলেন, জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর প্রতি কেন সবাই এমন করছে? অবশ্য, তিনি এহুদাকে ঈসা ভেবেছিলেন।

এহুদা বলল, “আরে! আপনিও দেখি ওদের মতো পাগল হয়ে গিয়েছেন!”

গভর্নর বুঝতে পারলেন না। তিনি তাঁর সাথে পাক কিতাবের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলেন, “জান তো, আমি একজন ইহুদী না? আমাকে সত্যি কথা বল। আমি ন্যায়বিচার করব। আমার হাতে তোমাকে মুক্ত করার আবার মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষমতাও আছে।”

এহুদা বলল, “বিশ্বাস করুন, আপনি আমাকে মারলে একজন নিরপরাধ লোককে মারা হবে; দেখুন, আমি তো এহুদা ইস্কারিয়ত; ঈসা নাসারা নই। ঈসা একজন জাদুকর। সে তাঁর জাদু দিয়ে আমার চেহারা বদলে দিয়েছে।”

এ কথা শুনে গভর্নর পাইলেট খুবই আশ্চর্য হলেন, তিনি তাঁকে ছেড়ে দিতে চাইলেন। তিনি বেরিয়ে এসে বললেন, “আমি তো এ লোকের মধ্যে কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না। এ লোক বলছে যে সে নাকি এহুদা, যে কিনা ঈসাকে ধরিয়ে দিতে গিয়েছিল। সে বলছে, গালিলির ঈসা জাদু করে তাঁর চেহারা পালটে দিয়েছে। এ কথা সত্য হলে এ নিরপরাধ লোককে মারা বড় অন্যায় হবে। আর যদি সে ঈসা হয় কিন্তু মনে করে সে ঈসা না, তাহলে সে তো পাগল হয়ে গিয়েছে। পাগলকে হত্যা করা নিষিদ্ধ।”

তখন ইহুদীরা চিৎকার করে উঠল, “সে ঈসা নাসারা! আমরা তাঁকে চিনি। তাঁর অপরাধের জন্যই আমরা তাঁকে আপনার হাতে দিয়েছি। সে কেবল পাগলের অভিনয় করছে যেন সে ছাড়া পেয়ে আবার কুফরি করতে পারে।”

পাইলেট এ মামলা থেকে মুক্তি চাইলেন। তিনি বললেন, “সে তো গালিলির অধিবাসী। আর গালিলির রাজা তো হেরোদ। তাই তাঁকে হেরোদ বিচার করবেন।”

তারা এহুদাকে হেরোদের কাছে নিয়ে গেল। হেরোদ চাইতেন ঈসা তাঁর ঘরে যাক, কিন্তু হেরোদ ইহুদী না হওয়ায় ঈসা তাঁর ঘরে যেতেন না। কিন্তু এবার এহুদাকে দেখে হেরোদ আশ্চর্য হলেন। তিনিও তাঁকে ঈসা ভাবলেন।

হেরোদ এহুদাকে অনেক প্রশ্ন করলেন। কিন্তু এহুদার উত্তরগুলো অসঙ্গত হল। বারবার সে বলল, যে সে ঈসা না। তখন হেরোদ তাঁকে বিদ্রূপ করলেন। তিনি তাঁকে সাদা একটা কাপড় পড়ালেন। যেমনটা তখন বোকাদের পড়ান হত। তিনি তাঁকে পাইলেটের কাছে ফেরত পাঠালেন, বললেন, “ইসরাইলবাসীদের উপর অবিচার করো না! একে শাস্তি দাও!”

এ কথা হেরোদ বলেছিলেন কেন? কারণ, ইহুদী ইমামরা তাঁকে ঘুষ দিয়েছিল। রাজার আদেশ মানা

বাধ্যতামূলক তাই গভর্নর পাইলেটকে তাই করতে হল।

পাইলেট তাঁকে ইহুদীদের হাতে ছেড়ে দিলেন হত্যা করবার জন্য। কিন্তু আল্লাহ এহুদাকে ক্রুশে চড়ানোর জন্য সংরক্ষন করলেন। যেন সে বিস্বাসঘাতকতার শাস্তি পায় ঠিকই। তাই সৈন্যদের অসহনীয় পাশবিক নির্যাতনে এহুদার দেহ রক্তে লাল হয়ে গেল, কিন্তু সে মরল না। বিদ্রূপ করে তারা তাঁকে একটা পুরনো পোশাক পড়াল। বলল, “দেখ, এ পোশাকে আমাদের নতুন রাজাকে কত মানাচ্ছে! এখন তাঁকে মুকুট পড়াতে হবে!” তারা অনেক কাঁটা যোগাড় করে আনল আর মুকুট বানাল। তারপর সে মুকুট এহুদার মাথায় পড়িয়ে তাঁকে উঁচু স্থানে বসাল।

সৈন্যরা ব্যঙ্গাত্মকভাবে তাঁকে স্যালুট দিতে লাগল। তারপর সামনে হাত পেতে বলল, “আপনাকে মুকুট পড়ান হয়েছে; বোকা রাজা, আপনি কি আপনার সৈন্যদের কোন পুরস্কার দেবেন না?”

অন্যদিকে, ষড়যন্ত্রকারী ইহুদীরা দেখল, ঈসা (এহুদা) মরে নি!! তারা ভাবল পাইলেট তাঁকে ছেড়ে দিবেন। তারা পাইলেটের কাছ থেকে এহুদাকে ক্রুশে দেয়ার আদেশ আদায় করল। পাইলেট আদেশ দিলেন, এহুদাকে ক্রুশে ঝুলানো হোক। তাঁর সাথে আরও দুজন ডাকাতকেও ক্রুশে দেয়া হল।

তারা তখন এহুদাকে কাল্ভারি পর্বতের গল্গথা নামের জায়গায় নিয়ে গেল। এ জায়গায় তখনকার অপরাধীদের ক্রুশে ঝুলানো হত। সেখানে তারা এহুদাকে ক্রুশবিদ্ধ করল।

এহুদা কিছুই করতে পারল না, কিছুই না...

শুধু শেষ দিকে, মারা যাবার আগে সে কেবল চিৎকার করে উঠল, “ইলাহি, ইলাহি, লামা সাবাখতানি?? (খোদা আমার! খোদা আমার! কেন তুমি আমায় পরিত্যাগ করলে?) তুমি কি দেখছ না যে, ঐ ভণ্ড জাদুকরটি পালিয়ে গেছে আর আমি নির্দোষভাবে এখানে মারা যাচ্ছি?” এরপর সে মারা গেল।

অনেকেই ধর্ম ত্যাগ করল, ভাবল যে আসলেই ঈসা একজন ভণ্ড নবী। তাঁর সব কাজ কালো জাদু দিয়ে করা। ঈসা বলেছিলেন তিনি কিয়ামতের আগে আগে মরবেন, এর আগে তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু, ওরা দেখল তা হয়নি।


কিন্তু, যারা ঈমান ত্যাগ করেনি তারাও প্রচণ্ড দুঃখ পেল, এহুদাকে দেখে তারা ভুলে গেল ঈসা কী বলে গিয়েছিলেন। ঈসার মাকে নিয়ে ইউহানা (জন) আর মেরি মাগডালিন কাল্ভারি পাহাড়ে গিয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে তারা ঈসার মৃত্যু দেখল। নিকোদিমা আর আরামাথিয়া গ্রামের ইউসুফ (Joseph of Aramethea) এর সহায়তায় তারা গভর্নরের কাছ থেকে এহুদার লাশ কবর দিতে চেয়ে নিল।



কাঁদতে কাঁদতে ক্রুশ থেকে নামান হল এহুদার লাশ...

শেষ পর্যন্ত তাঁকে ইউসুফের সমাধিতে রাখা হল। তাঁর লাশকে শত সুগন্ধিতে মাখান হল।


অধ্যায় ২১৮

তারপর সবাই ঘরে ফিরল। আমি ইউহানা (জন), তাঁর ভাই ইয়াকুব (জেমস) আর মা মরিয়মের (মেরি) সাথে নাসরাত গ্রামে ফিরে এলাম।

এর মাঝে এক ঘটনা ঘটল... আল্লাহর ভয় নেই মনে এমন কিছু কুচক্রী লোক রাতের আধারে সমাধির মুখ থেকে পাথর সরিয়ে এহুদার লাশ চুরি করল আর লুকিয়ে ফেলল। তারা রটিয়ে দিল যে ঈসা মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছেন; ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হল। তখন ইমাম কায়াফা ফতোয়া জারি করলেন, কেউ ঈসা নাসারার কথা বলতে পারবে না। ফতোয়া অমান্য করায় অনেককে শাস্তি পেতে হল, অনেককে পাথর মেরে হত্যা করা হল।

নাসরাত গ্রামে এ খবর এসে পোঁছাল যে, ঈসা ক্রুশে মারা যাবার পর পুনর্জীবিত হয়েছেন। তখন আমি ঈসার মাকে অনুরোধ জানালাম কান্না থামাতে। তাঁর ছেলে পুনর্জীবিত হয়েছেন।

কাঁদতে কাঁদতে মরিয়ম বললেন, “চল, আমরা আমার ছেলেকে দেখতে জেরুজালেম যাই। তাঁকে দেখলে আমি শান্তিতে মরতে পারব।”

আমরা রওনা দিলাম।

অধ্যায় ২১৯

মা মরিয়ম, ইউহানা (জন) আর ইয়াকুবের সাথে আমি পোঁছালাম জেরুজালেমে। সেখানে গিয়ে মরিয়ম সবাইকে বললেন তাঁর ছেলের কথা ভুলে যেতে। তিনি জানতেন, প্রধান ইমামের ফতোয়া ভুল। কিন্তু, এত মানুষ মারা যাচ্ছে দেখে তিনি এটা বললেন। কত কষ্ট হলে একজন মা তাঁর ছেলেকে ভুলে যেতে বলেন!! সবার হৃদয়ে এসে আঘাত লাগল। আল্লাহ সবার মনের কথা জানেন। তিনি জানতেন ঈসার প্রকৃত বিশ্বাসীরা এহুদার মৃত্যুতে কত কষ্ট পেয়েছে এবং তারা তাদের নবীকে জীবিত দেখতে প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে।

তখন মরিয়মের রক্ষক ফেরেশতারা ৪র্থ আসমানে আরোহণ করলেন; ওখানে ঈসা ফেরেশতাদের মাঝে ছিলেন। তারা তাঁকে সব কথা জানালেন। এ কথা শুনে ঈসা আল্লাহ্‌কে অনুরোধ করলেন তাঁকে তাঁর মা আর সাহাবীদের সাথে দেখা করার অনুমতি দিতে। দয়াময় আল্লাহ মঞ্জুর করলেন। তিনি তাঁর প্রিয় চার ফেরেশতাকে নির্দেশ দিলেন ঈসাকে তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে যেতে এবং সেখানে টানা তিন দিন তাঁর উপর নযর রাখতে; যেন, প্রকৃত ইমানদার ছাড়া কেউ তাঁকে না দেখতে পায়।

ঈসা স্বর্গীয় আলোতে পরিবেষ্টিত হয়ে সেই কক্ষে এলেন যেখানে ছিলেন ২ বোন সহ মা মরিয়ম, মারথা আর মেরি মাগডালিন, আমি (বারনাবাস), ইউহানা (জন), ইয়াকুব (জেমস) আর পিটার। সবাই ভয়ে মৃতের মত পড়ে গেল। তখন ঈসা মাটি থেকে তাঁর মা আর সাহাবীদের তুলে বললেন, “ভয় পেয়ো না, আমি ঈসা। আর কেঁদো না। কারণ আমি তো জীবিত, মৃত নই। (আমাকে ধরে দেখ, কারণ আত্মার তো কোন রক্ত মাংসের শরীর থাকে নেই)” সবাই অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল, কারণ সবাই ভেবেছিল ঈসা মৃত ছিলেন।

তখন মা মরিয়ম কেঁদে বললেন, “ হে আমার পুত্র বল আমাকে, যেখানে আল্লাহ তোমাকে মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন সেখানে কেন তিনি তোমাকে এমন মৃত্যুযন্ত্রণা দিলেন? দেখ, কত লোক তোমার ধর্ম ত্যাগ করেছে। যারা তোমাকে ভালবেসেছে তারাও খুব কষ্ট পেয়েছে।”

অধ্যায় ২২০

ঈসা তাঁর মাকে জড়িয়ে উত্তর দিলেন, “বিশ্বাস কর, মা, আমি সত্যি বলছি, আমি আদৌ মরিনি। কারণ, আল্লাহ আমাকে কিয়ামাতের কাছাকাছি সময় পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখবেন।” এ কথা বলে ঈসা চার ফেরেশতাকে বললেন যা ঘটেছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে।
তখন ফেরেশতা চারজন নিজেদের প্রকাশ করলেন। তাদের দেখে সবাই আবার অজ্ঞান হয়ে গেল। কারণ ফেরেস্তাদের ৪টি উজ্জ্বল আলোকউৎসের মতো দেখাচ্ছিল। তখন ঈসা তাদের কাপড় দিয়ে আড়াল করে দিলেন যেন তাদের দেখাও যায়, শোনাও যায়। এরপর তিনি সবাইকে তুললেন, বললেন, “এরা হলেন আল্লাহ্‌র প্রধান চার ফেরেশতা। ইনি জিবরাঈল (Gabriel), ওহী বহন করেন। ইনি মিকাইল (Michael), আল্লাহ্‌র শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করেন। ইনি আজরাইল(Azriel), জান কবচ করেন। আর ইনি ইস্রাফিল(Uriel), কিয়ামাতের সময় শিঙ্গা বাজাবেন আর হাশরের ময়দানে সবাইকে ডাকবেন।”

এরপর চার ফেরেশতা মরিয়মের কাছে বর্ণনা করলেন সম্পূর্ণ ঘটনা, কীভাবে এহুদার চেহারা পরিবর্তন হল যেন সে শাস্তি পায়। এ ঘটনাই আমি, বারানাবাস,এতক্ষণ লিখলাম।

শেষ হলে আমি বললাম, “প্রভু, আপনি যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন আমরা আপনাকে যেভাবে প্রশ্ন করতে পারতাম, এখনও কি পারব?”

ঈসা বললেন, “প্রশ্ন কর, বারনাবাস। আমি উত্তর দেব।”

আমি বললাম, “প্রভু, আল্লাহ তো করুণাময়, তবুও কেন তিনি আমাদের কষ্ট দিলেন, আমাদেরকে মনে করালেন আপনি মৃত? আপনার মা এত বেশি কেঁদেছেন যে উনি মৃতপ্রায়। তাছাড়া আপনি আল্লাহ্‌র প্রিয় নবী, কেন তিনি আপনার নামের এ অপপ্রচার থাকতে দিলেন যে আপনি ২ জন ডাকাতের মাঝখানে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন?”

ঈসা বললেন, “বিশ্বাস কর, বারনাবাস, প্রত্যেক গুনাহের আল্লাহ শাস্তি দেন, সেটা যতই ছোট হোক না কেন। আমার মা আর আমার বিশ্বাসী সাহাবীরা যারা আমাকে ভালবাসত, কিছুটা হলেও তাদের সে ঐশ্বরিক ভালবাসার মধ্যে পার্থিব ভালবাসা ছিল; তাছাড়া তোমার আমার কথা মনে রাখনি যে, আমি ক্রুশে মরব না। তাই আল্লাহ তোমাদের পরকালীন শাস্তির বদলে তোমাদের এ সাময়িক শোক দিয়েছেন। আর দ্বিতীয় কথা, আমি এ দুনিয়ায় নিষ্পাপ ছিলাম, তবুও মানুষ আমাকে ঈশ্বর ও ঈশ্বরপুত্র বলেছে, বলবেও। আল্লাহ্‌র ইচ্ছা যে, হাশরের দিন দোযখে ফেরেশতাদের দ্বারা যেন আমার অপমান না হয়, তার বদলে ক্রুশে এহুদার মৃত্যুতে মানুষের দ্বারা আমার ইহকালে কিছুটা অপমান হয়। এ অপমান চলতে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র সেই রাসুল এর আগমন হয়, আল্লাহ তাঁর মাধ্যমে তাঁর উপর নাজিল করা কিতাবে এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করবেন, জানাবেন যে আমি ক্রুশবিদ্ধ হইনি। তার আগে নয়।”

এ কথা বলে তিনি বললেন, “হে আল্লাহ তুমি ন্যায়বিচারক। তোমার প্রতি সমস্তা প্রশংসা।”

অধ্যায় ২২১

ঈসা আমার দিকে ফিরে বললেন, “বারনাবাস, এ দুনিয়ায় আমার জীবনে যা ঘটেছে, যা বলেছি, সব আমার ইঞ্জিলে লিখে রাখ। এহুদার কথাও সেখানে লিখবে, যেন কেউ বিভ্রান্ত না হয়, সত্যটা সবার জানা দরকার।” আমি বললাম, “ইনশাআল্লাহ, আমি লিখব। কিন্তু, এহুদার কথা তো আমি জানি না, আমি দেখি নি। (আমি ক্রুশের কাছে যাইনি।)”

ঈসা বললেন, “এখানে ইউহানা আর পিটার আছে, তারা তোমাকে বলবে, ওরা দেখেছে।” তখন ঈসা তাঁর ইমানদার সব সাহাবীকে ডাকতে বললেন। ইউহানা ও ইয়াকুব নিকোদিমা আর ইউসুফের সাথে প্রধান সাত সাহাবীকে ডাকল। আরও কয়েকজনকে ডাকা হল, যারা ৭২ জনের মধ্যে ছিল। সবাই ঈসার সাথে খেল।

৩য় দিন ঈসা বললেন, “মাউন্ট অলিভ-এ চল আমার মার সাথে। আমাকে সেখানে আকাশে তুলে নেয়া হবে।” আমরা ৭২ জনের মধ্যে ৪৭ জন গেলাম, বাকি ২৫ জন পালিয়ে গিয়েছিল দামেস্কে। দুপুরবেলা সবাই প্রার্থনায় দাঁড়ালে অনেক ফেরেশতা সেখানে এলো আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতে করতে। ঈসার মুখ থেকে এক স্বর্গীয় আলো বের হচ্ছিল, সবাই মাটিতে পড়ে গেল, কিন্তু ঈসা তাদের উঠিয়ে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, আমি তোমাদের সেই ঈসা।”



তিনি অনেককে ধমক দিলেন যারা তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করেছিল, “তোমরা কি বল আমি আর আল্লাহ মিথ্যুক? আমি বলেছি, আবারো বলছি, আল্লাহ আমার আয়ু রেখেছেন কিয়ামাতের আগ পর্যন্ত। আমি সত্যি বলছি, আমি মরিনি, সে এহুদা ছিল , বিশ্বাসঘাতক। মনে রেখ, শয়তান তোমাদের ধোঁকা দেবার চেষ্টা করবে। তোমরা আমার সাক্ষী থেক। ইসরাইল এবং সমগ্র দুনিয়ায়, মনে রেখ যা শুনেছ, যা দেখেছো।”

তিনি দুয়া করলেন আল্লাহ্‌র কাছে, যেন ইমানদাররা নাজাত পায়। কাফিররা ভুল বুঝতে পারে। দুয়া শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে তিনি বললেন, “মা শালোম আলেইকেম(আসসালামু আলাইকুম,).”

--

শেষ করছি কুরআনের আয়াত দিয়ে-
“নিশ্চয়ই তারা অবিশ্বাসী যারা বলে, মেরীর ছেলে খ্রিস্ট নিজেই ঈশ্বর। অথচ, খ্রিস্ট তো বলেছিল, হে ইজরাইলবাসী! তোমরা উপাসনা কর ঈশ্বরের যিনি আমার প্রতিপালক আর তোমাদেরও প্রতিপালক।”
“নিশ্চয়ই তারা কাফির যারা বলে, মরিয়মের ছেলে মসীহ নিজেই ঈশ্বর। অথচ, মসীহ তো বলেছিল, হে বনী ইসরাইল! তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহ্‌র যিনি আমার প্রতিপালক আর তোমাদেরও প্রতিপালক।” (মায়িদা ৫:৭২)


অনেকে হয়ত জানে না, ইহুদী আর খ্রিস্টান ধর্মের মত ইসলামেও আল্লাহ্‌র বিরোধিতা বা কুফরির শাস্তিতে একটা অপশন আছে ক্রুশে চড়ান।
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আর পৃথিবীতে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হল-
১) তাদের হত্যা করা হবে
অথবা ২) তাদের ক্রুশে চড়ান হবে
অথবা ৩) তাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে
অথবা ৪) তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে।
এ হল তাদের জন্য দুনিয়ায় লাঞ্ছনা আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।” (মায়িদা ৫:৩৩)



তিনি দুয়া করলেন আল্লাহ্‌র কাছে, যেন ইমানদাররা নাজাত পায়। কাফিররা ভুল বুঝতে পারে। দুয়া শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে তিনি বললেন, “আসসালামু আলাইকুম, মা। (সালোম আলেইকেম)... সমস্ত প্রসংসা আল্লাহ্‌র যিনি তোমাকে আর আমাকে সৃষ্টি করেছেন।” এ কথা বলে তিনি সাহাবীদের দিকে তাকালেন এবং বললেন, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।” এরপর সবার চোখের সামনে চার ফেরেশতা ঈসাকে আকাশে তুলে নিলেন।

অধ্যায় ২২২

ঈসা চলে যাবার পর, সাহাবীরা ইসরাইল আর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য শয়তানের কারসাজিতে চাপা পড়ে গেল। কিছু শয়তান লোক নিজেদের ঈসার সাহাবী বলে দাবি করে প্রচার করল যে, ঈসা মারা গিয়েছেন এবং পুনর্জীবিত হয়েছেন, যেমনটা গুজব ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু আমরা- আমি যতটুকু লিখে গেলাম- তা প্রচার করি না। অন্যরা প্রচার করল আর এখনও করে যে, ঈসা নাকি ইবনুল্লাহ (আল্লাহ্‌র পুত্র), দুঃখের ব্যাপার এদের মাঝে পলও (Paul) আছে। তারা শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত। কিন্তু, আমরা প্রচার করি সত্য কথা।, প্রচার করি তাদের কাছে যারা আল্লাহ্‌কে ভয় করে, যেন কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্‌র বিচারে তারা মুক্তি লাভ করে। বেহেশত পায়।
আমিন।

এই পর্যন্ত বর্ণনা করে গেছেন ঈসা(আ) এর ঘনিষ্ঠ সাহাবা বারনাবাস। এই পর্যন্ত ছিল বারনাবাসের ইঞ্জিল।

–গস্পেল অফবারনাবাসের সমাপ্তি -

ঈসা(আ) এর কাফনের কাপড় থেকে তার তথা জুডাসের ছবি!!!!!

এখন আমি সেই চমক,অর্থাত তথাকথিত ঈসা (আঃ) তথা জুডাসের কাফনের কাপড় নিয়ে লিখেছি। সেই কাফনের কাপর থেকে আধুনিক প্রযুক্তিরমাধ্যমে কআবিষ্কার করা হয়েছে জুডাস তথা ঈসা (আঃ) এর সম্ভাব্য ছবি । একটা নাম মনে রাখবেন তুরিন। এই তুরিন হল সেই কাফনের নাম।

এইবার শুনুন মজার এক কাহিনী -
ঈসা (আ) এর প্রার্থনায় সাহাবীদেরকে একটা মিরাকল দেয়া হয়েছিল। তারা ধর্মপ্রচারের স্বার্থে অনেক বিদেশি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। অথচ এর আগে তারা এ ভাষা জানতেনও না।

এখন একটা ব্যাপার লিখি, খ্রিস্টানদের অনেকে বিশ্বাস করে যীশুর কথা মাফিক তাঁর সাহাবী জন John The Apostle(ইউহানা) যীশুর ২য় আগমন পর্যন্ত পৃথিবীতে জীবিত থাকবেন... জন মারা যাবেন যখন যীশু আবার পৃথিবীতে আসবেন। John 21:21-23 থেকে এটা তারা মনে করে।
প্রশ্ন হল, এটা কি ট্রু? এমন কি আসলেই হতে পারে? ঈসা যদি আসলেই এমন দোয়া করে থাকেন, তাহলে কি ইউহানা এখনও জীবিত?

John ((ইউহানা) কে নিয়ে যা তথ্য পাওয়া যায় তা নিচেলিখা হল -

শাওয়াহেদুন নবুয়ত, মদিনা পাবলিকেশন, পৃষ্ঠা ২৬-

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বলেন, কাদেসিয়া যুদ্ধ চলাকালে খলিফা উমর (রা) হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা)কে চিঠি লিখলেন, নজলা ইবনে মুয়াবিয়াকে যেন হুলওয়ানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাদ তাই করলেন। নজলা যখন তাঁর দলবল সহ হুলওয়ান আক্রমণ করেন, তখন অনেক বন্দি আর গনিমাতের মাল হাতে আসল। জোহরের নামাজ পড়ার জন্য তিনি এক পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নিলেন। নামাজের জন্য আজানে যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার” বলা হল। তখন পাহাড় থেকে আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি মহতের মহত্ত্ব বর্ণনা করেছ।”
যখন তিনি “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলেন, তখন আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি ইখলাসের কালিমা বললে।”
যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “আমাকে মরিয়ম এর পুত্র ঈসা তো ইনারই সুসংবাদ দিয়েছেন।”
যখন “হাইয়া আলাসসালাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “যে সালাতে যায়, তাঁর জন্য মোবারকবাদ।”
যখন “হাইয়া আলাল ফালাহ” বললেন, তখন আওয়াজ এলো, “যে সাড়া দিবে, সে সফল হবে।”
এভাবে আজান শেষ করার পর, নজলা বললেন, “আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন, তুমি কে? তুমি তোমার স্বর যখন আমাদের শুনিয়েছই তখন আকৃতিও দেখাও। কেননা, আমরাও আল্লাহ্‌র বান্দা আর তাঁর রাসুলের উম্মাত। আমরা খলিফা উমারের সৈনিক।”
এরপর পাহাড় থেকে বেরিয়ে এলো একজন। মাথায় সাদা কেশ। পুরনো পশমি বস্ত্র। সে বলল, “আসসালামু আলাইকুম।”
নজলা বললেন, “ওয়ালাইকুম সালাম। তুমি কে? তোমার পরিচয় দাও।”
সে বলল, “আমি রুজায়ব ইবনে বরমসলি। হযরত ঈসার (আ) সাহাবী। তিনি তখন পর্যন্ত আমার বেঁচে থাকার জন্য দোয়া করেছেন যখন তিনি আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। শূকর হত্যা করবেন। ক্রুশ ভেঙে খ্রিস্টানদের অপবাদ ও মিথ্যাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন। মুহাম্মাদ (স) এর সাথে আমার সাক্ষাত হয়নি। আমার সালাম হযরত উমারকে পৌঁছে দেবে।এরপর সে আরও অনেক কথা বলল এরপর চলে গেল।
নজলা এ ঘটনা হযরত সাদ (রা) কে লিখলেন আর তিনি সেটা লিখলেন উমার (রা)কে।
খলিফা উমার (রা) তখন নির্দেশ দিলেন সাদকে (রা), মুহাজির আর আনসারদের একটা দল নিয়ে ঐ পাহাড়ে যাও। সেখানে তাঁকে পেলে আমার সালাম দিবে তাঁকে। কারণ, রাসুল (স) এর দেয়া খবর অনুযায়ী ঈসার (আ) সাহাবীদের মধ্যে কেউ ওখানে আছেন।
হজরত সাদ (রা) ৪০০০ মুহাজির আর আনসার সহ ৪০ দিন ওখানে থাকলেন। ঐ পাহাড়ে প্রত্যেক বার নামাজের জন্য নিজে আজান দিতেন। কিন্তু আর কোন দিন সেদিনের মতো জবাব আসেনি। কেউ আর বের হয়ে আসেনি।

এই হল ঘটনা। নাম মিলে নি। এটা একটা ভাবার বিষয়।

কিন্তু, নাম না মেলার ব্যাপার নতুন না। এক্ষেত্রে ইসলামিক স্কলাররা যেটা করেন সেটা হল আগের ধর্মের বর্ণনা থেকে ঘটনা মিলিয়ে দেখেন। দেখা যায়, একজন সম্পর্কে একই ঘটনা বর্ণিত আছে। কিন্তু, নাম ভিন্ন। সুতরাং দুজনই একই বলে ধরে নেওয়া যায়।
যেমন, আগের তাওরাতে বর্ণিত আছে মাদায়েনের এক নবীর কথা লিখা আছে। যার কাছে মুসা গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নাম লিখা জেথ্রো। কিন্তু, এটা সিওর তিনি আর কুরআনে বর্ণিত শুয়াইব (আ) একই ব্যক্তি। সুতরাংইতিহাসে অনেক সময়ই নাম পরিবর্তন কিংবা ভাষাগত কারনে বিকৃত হয়েছে।
ঈসা (আ) সম্পর্কে কেবল একজন এর ক্ষেত্রেই বলা হয়, যার জন্য ঈসা এমন দোয়া করেছেন। তিনি ইউহানা। সুতরাং এখানে এটা ইউহানা হবার কথা।


এবার আসি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা প্রসঙ্গে।
আপনাদের আগেই বলাহয়েছিল হইত মনে আছে, “যীশু”র অর্থাৎ জুডাসের দেহ যখন ক্রুশ থেকে নামান হল... তখন তাঁর দেহে সুগন্ধি মাখিয়ে লিনেনের কাফনের কাপড় দিয়ে পেঁচান হল।

সেই কাফনের কাপড়ের কথা বলব এখন।তুরিন হল সেই কাফনের নাম।


ইতালির উত্তরের এক শহর।
এ শহরেই রয়েছে Cathedral of Saint John the Baptist যা Turin Cathedral(তুরিন কেতেদ্রাল) নামেও পরিচিত। এ চার্চে মিলিয়ন ভিজিটর এসেছিলেন একটা রেলিক দেখতে। কী সেই রেলিক?

সেই কাফনের কাপড়। যা এখন শ্রাউড অফ তুরিন নামে পরিচিত (রেস-২ মুভি তে এই শ্রাউড অফ তুরিন চুরি নিয়ে একটা সিকোয়েন্স আছে) নিচের ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। অত্যন্ত সুক্ষভাবে লক্ষ্যকরুন...খেয়াল করে দেখুন, একটা হাল্কা দেহের আভাস দেখতে পাচ্ছেন?


চিত্র- কাফনের কাপড়ের ছবি কারু কাজের মত যা দেখতে পাচ্ছেন প্রথম দিকে এইসব ছিল না পরে তা রুপা গলে এর উপর পরলে এর ছাপ


না দেখলে নিচের ছবিতে বুঝার সুবিধার্থে যুম করা ছবি আরও ভাল করে লক্ষ্য করার চেষ্টা করুন রক্তের ছাপ একটা চেহারা আভাস পাওয়া যাচ্ছে কি না !!



চিত্র-লক্ষ্য করুন ছবি যুম করলে আরও স্পষ্ট চেহারার আভাস পাওয়া যায়,


এ কাফনের কাপড় এর ইতিহাস হল -

৯৪৪ সালে এ কাফন ছিল কনস্টান্টিনোপলে। ১২০৪ সালে নাইটস টেমপ্লাররা যখন জেরুজালেম আক্রমণ করে সেখানে, তখন যুদ্ধের স্পয়েল হিসেবে এ কাফন পায় তারা।
১৩৯০ সালের দিকে এ কাফন ছিল ফ্রান্সে। ১৫৩২ সালে ফ্রান্সের সেই চেম্বারি চ্যাপেলে অগ্নিকান্ড হয়। তখন কাফনের কিছু জায়গা পুড়ে যায়। রুপা গলে ভাঁজ করা কাফনের উপর পড়ে যাওয়ায় এই ছাপ সৃষ্টি হয়যা আপনারা কারুকাজের মত দেখছেন। ছবি দেখতে পারেন। নানরা কাপড় দিয়ে সেলাই করেন বিভিন্ন জায়গা।
১৫৭৮ সালে তুরিনে আনা হয় এ কাফন। তুরিন ইতালির একটা জায়গার নাম। ১৬৯৪ আর ১৮৬৮ সালে আবার রিপেয়ার করা হয় এ কাফন।
১৯৮৩ সালে কাফনের মালিকত্ব পায় ক্যাথলিক চার্চ অফ ভ্যাটিকান। নিচের ছবিতে ভ্যাটিকানে তুরিনের ছবি



উপরের চিত্র- ভ্যাটিকানে তুরিনের ছবি


১৯৯৭ সালের ১১ এপ্রিল। আবার আগুন লাগে তুরিনে। এবারো রক্ষা পায় কাফন। ২০০২সালে রিপেয়ার করে আবার রিস্টোর করা হয়।

মজার ব্যাপার হল- ২০০৪ সালে দেহের ছাপের আভাস দেখতে পাওয়া যেতে থাকে ব্যাক সাইডেও। এর আগে কেবল ফ্রন্ট সাইডে দেখা যেত।
২০১০ সালে কাফনটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তবে ১০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। এরপর আবার সরানো হয়। নেক্সট কবে দেখানো হবে সিওর না। ২ মিলিয়ন মানুষ ঐ কয়দিনে কাফন দেখতে এসেছিল।

নাস্তিকরা আর সন্দেহবাদীরা গোড়া থেকেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন, এটা যীশুর কাফন নয়। এজন্য কার্বন ডেটিং করা হয়। দেখা যায়, রেজাল্ট এসেছে, মধ্যযুগের কাপড়।

কাফন এর আকার আয়তাকার। প্রায় 4.4 × 1.1 m (14.3 × 3.7 ft)। সবচেয়ে অবাক করা বৈশিষ্ট্য যেটা এ কাফনের, সেটা হল, এখানে অস্পষ্টভাবে দেখা যায় সেই দেহের অবয়ব। দেখুন নিচের ছবিতে



উপরের চিত্র- কাফনের কাপড়ের নেগাটিভ মুডে ছবি লক্ষ্য করুন


কাফনের কাপড়ে যে রক্তের ছাপ আর অন্যান্য বৈশিষ্ট্য দেখা যায় অবয়ব থেকে সেটা প্রমাণ করে, এটা গস্পেলগুলোতে বর্ণিত যীশুর/জুডাসের কাফন।



আসুন কী কী দেখা যায় জানা যাক... বিজ্ঞানীরা কী কী বের করেছেন—

১. এক হাতে স্পষ্ট করে বোঝা গেছে বড় গর্ত ছিল। (পেরেক দিয়ে করা) দ্বিতীয় হাত ফোল্ড করায় বুঝা যাচ্ছে না।

২. বুকের পাশ দিয়ে কিছু একটা দিয়ে ছিদ্র করে দেয়া হয়। যেটা থোরাসিক কাভিটি পর্যন্ত পৌঁছায়। এর কারণ বারনাবাসেই বলা হয়েছিল, হইত আপনারা যারা আমারআগের পার্ট গুলো ভাল করে পড়েছেন তাদের মনে আছে একজন রোমান সৈন্য যীশু শ্বাস ত্যাগ করার পর বুকের পাশ দিয়ে বর্শা ঢুকিয়ে দিয়েছিল।

৩. কপালের আর খুলির আশপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র কারন মাথায় তীক্ষ্ণ কাঁটার মুকুট পড়ানো হয়েছিল এরপ্রমান গস্পেল অফ বারনাবাসে বলা হয়েছে যে তাকে কাটার মুকুট পরান হয়।

৪. পায়ে আঘাতের চিহ্ন

৫. মুখ ফোলা ছিল হইত প্রচণ্ড আঘাতেরকারনে

৬. দুই হাত থেকেই রক্ত গড়িয়ে পড়েছে নিচের দিকে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটা হয়েছে অভিকর্ষের কারণেই। ক্রুশে থাকা অবস্থায়।

৭. পায়ে গর্ত ছিল।

অনেক কিছুর পরেও বিরোধীরা বলতেই থাকেন, এটা যীশুর কাফন না। এটা অনেক পরের। কিন্তু ধীরে ধীরে আরও প্রমাণ আসতে থাকে। দেখা যাক কী কী প্রমাণ।

“সিন্ডোনোলজি” (Sindonology) হল তুরিনের কাফন এর উপর গবেষণার বিষয়ের নাম। এত বেশি গবেষণা হয়েছে এটা নিয়ে যে, একটা আলাদা সাবজেক্ট হয়ে গেছে। তুরিনের কাফন হল বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ধর্মীয় রেলিকের একটি।

উল্লেখ্য, এক এক স্থানের ধুলো এক এক রকম। গবেষকরা প্রাচীন জেরুজালেমের কবর থেকেও ধুলোর স্যাম্পল যোগাড় করেন। মিলিয়ে দেখেন কাফনের ধুলোরস্যাম্পল আর জেরজালেমের ধুলোর স্যাম্পল এর রেজাল্ট হুবহু এক। তারা রেজাল্ট পেল কাপড়টা আসলেই প্রাচীন এবং, জেরুজালেমের।

আসুন একটু ছবিগুলো পর্যালোচনা করি......



উপরের চিত্র-অত্যাধুনিক থ্রিডি ইমেজ জেনারেটর এর মাধ্যমে প্রাপ্ত নিচের ইমেজটা দেখুন... মিলিয়ে দেখুন, এমনকি ক্ষতগুলোও খেয়াল করুন।



চিত্র-মুখের একটা প্রাথমিক থ্রিডি ভিউ..



উপরের চিত্র- এ ছবিটা খেয়াল করুন, মুখমণ্ডলের ক্লোজ আপ ভিউ, বাম দিকে নরমাল আর ডান দিকে এক্সরে।



উপরের চিত্র- এবার উপরের ডান দিকের যে এক্সরে ছবিটা সেটা জুম করে দেখুন...



উপরের চিত্র- এবার কম্পিউটারের মাধ্যমে জেনারেট করা এই ইমেজেরই 2D ভিউ। চোখ খোলা রেখে... এর অর্থ হল, এ ছবিটি ঈসা তথা জুডাস এর মুখমণ্ডলের এর ছবি



উপরের চিত্র- এই ছবিটাকেই সাদা অংশগুলো ভরাট করে একটু এডিট করে নিচের এ ছবিটা আসে



কাফনে রক্ত লেগে আছে। সে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়। দুঃখের ব্যাপার, রক্তের ব্লাড গ্রুপ বের করা যায় নি। DNA Test করার কথা ছিল, করতে গিয়ে দেখা গেল, করা যাচ্ছে না। কেন?

কারণ ২০০০ বছরে ডি এন এfragmented হয়ে গেছে!! এটা এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। কারণ, হয়ত সেক্ষেত্রে তারা প্রমাণ করত যে, যীশুর ডিএনএ থেকে আমরা প্রমাণ করলাম, তাঁরও বাবা আছে! অথচ, ওটাতো জুডাসের ডি এন এ।

১৯৯৭ সালে জেরুজালেমের হিব্রু ভার্সিটির বোটানিস্ট দানিন প্রমাণ করেন যে কাফনের সাথে ফুলের রেণু লেগে আছে। ফুলের নাম(Chrysanthemum coronarium, Cistus creticus এবং Zygophyllum বৈজ্ঞানিক নাম) এটা নির্দেশ করে, এ কাফনের সময়কাল মার্চ –এপ্রিল, আর স্থান হল জেরুজালেম। এগুলো ইসরায়েলের বসন্তের ফুল। পরবর্তী গবেষণায় দেখা যায়, ৫৮ টা ফুলের রেণু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৫টাই জেরুজালেম অঞ্চলের। রেণু আসল কথা থেকে বুঝতে পেরেছেন? বারনাবাসের বর্ণনা থেকে এটি সম্পূর্ণ মিলে যায় কারন ,ঐ যে, কাফন পেঁচানোর আগে যীশুর দেহে সুগন্ধি মেখে দেয়া হয়। তখন ফুলের সুগন্ধি ব্যবহৃত হয়। ওখান থেকেই রেণু আসার সম্ভাবনা বেশি।

নাসার কয়েকজন রিসারচার কাফন দেখে বলেন, যীশুর চোখের উপর কয়েন রাখা হয়েছিল। এর ব্যাপারে বারনাবাস কোথাও কিছু উল্লেখ করেননি। তবে বেপারটি অসম্ভব নয়, কারণ, যারা গ্রিক আর রোমান মুভি দেখেছেন তারা জানবেন, রোমান রীতিতে মৃতের চোখে কয়েন রেখে দেয়া হত। সেই কারনেও হতে পারে।

১৯৭৯ সালে রিপোর্ট করা হয়, কাফনের উপর ফেইন্টভাবে দেখা যাচ্ছে গ্রিক আর লাতিনে কিছু লিখা আছে!! কম্পিউটার আনালাইসিসে দেখা গেল, লিখা আছে,INNECEM (a shortened form of Latin "in necem ibis" এর অর্থহল you will goto death"), আরও আছে NNAZAPE এটাকেভাঙলে হয় NUS (Nazarene/নাসরাত), নাম আছে IHSOY(Jesus/ঈসা) and IC (Iesus Chrestus/ঈসা খ্রিস্ট)। রোমাননামের শেষে সাধারনত আস, ইক এইসব প্রচলন আছে যেমন- জুলিয়াস, হরাস ইত্যাদি।

মোট কথা, কাফনটি তথাকথিত যীশু তথা জুডাসের। এর মানে দাঁড়াচ্ছে কী বুঝতে পেরেছেন? কাফনে যে মুখের ছাপ আছে সেটা ঈসার মুখের ছাপ!! ঈসার মুখের ছাপ বলছি কারন, জুডাস আর ঈসার চেহারা হুবহু সেম করে দেয়া হয়েছিল।

ভাবছেন, এত কিছু কী করে নরমাল একটা কাফন থেকে বের করা গেল? খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত বের করতে পারেন নি, কী করে এত স্পষ্ট ছাপ পড়ল কাফনে, এমনকি এমনভাবে ছাপ বসে আছে যে সহজেই ত্রিমাত্রিক চিত্র তুলে ধরা যায়।
তবে খালি চোখে এ ছবি দেখা যায় না। ফটোগ্রাফির উদ্ভবের আগে পর্যন্ত কেউ এ ছবি দেখতেও পারেননি।
মে মাসের ২৮ তারিখ, ১৮৯৮ সাল। সন্ধ্যাবেলা।
ইতালিয়ান ফটোগ্রাফার সেকন্দো পিয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন, যিনি সেই কাফনের ছবি তুললেন।
তিনি ডার্ক রুমে গেলেন আর ছবির নেগেটিভ বের করলেন। আর ইতিহাসে প্রথম মানুষ হিসেবে যীশুর মুখের নেগেটিভ ছবির উপর চোখ রাখলেন। এবং আঁতকে উঠলেন!



উপরের চিত্র- তুরিন (কাফনের কাপড়) কে গবেষণার চিত্র


এবার সুদূর এক ভবিষ্যতের দিকে একটু তাকাই...

ভোরের আলো ফুটে উঠেছে... অপরুপ সুন্দর দামেস্ক নগরী যেন আরও সুন্দর দেখাচ্ছে...
ফজরের আজান দেয়া হয়ে গেছে... কিছুক্ষণ বাদেই নামাজ শুরু হয়ে যাবে...
দুশ্চিন্তাগ্রস্থ চেহারায় দামেস্কের পূর্ব দিকের মসজিদের কাছেই দাঁড়িয়ে আছেন মুহাম্মাদ আল মাহদি। কাছেই মুসলিম বাহিনীর সৈন্যরা নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে... আজকে নিঃসন্দেহে একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। খুবই গুরুত্বপূর্ণ... খুবই...
গত দু দিনের যুদ্ধে অনেক মুসলিম শহীদ হয়েছেন... সামান্য সৈন্য অবশিষ্ট আছে... বাহিনীর নেতা হিসেবে তিনি চিন্তিত তো হবেনই...
এমন না যে, তিনি সেচ্ছায় এ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। বরং, মুসলিমরাই তাঁকে অনেক অনুরোধ করেছেন তাদের নেতা হবার জন্য... এত অনুরোধের পর তিনি না করতে পারেননি... তাই, আজ তিনি মুসলিমদের নেতা... ইমাম... তারা তাঁকে ডাকে মাহদী বলে... পথপ্রদর্শক... তাঁর নামই অনেকে ভুলতে বসেছে... মুহাম্মাদ...
যাক, তিনি শেষ বারের মতো, দূরে তাকালেন, ইজরাইল সীমান্ত ওদিকেই..... ওখানেই আছে তাদের শত্রু বাহিনী... তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে এক ভণ্ড ইহুদী.।আফসস ক আফসোস এই দজ্জালের (ভণ্ড) ছলনায় কত মুসলিম যে ইসলামচ্যুত হয়ে গেল... অথচ, নবী (স) তো বলেই গিয়েছিলেন তার ব্যাপারে যারা তার এবং তার ফেতনার ব্যাপারে সাবধান হচ্ছে না আফসোস তাদের জন্য। আজই ফয়সালা হবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জয়ী করবেন। মুহাম্মাদ মাহদি ঘুরে পা বাড়ালেন মসজিদের দিকে
ইমামতির জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন ইকামত দেয়া হয়ে গেল...কিন্তু, তখনই লোকদের চাপা চিৎকার শুনতে পেলেন তিনি। সবাই উপরে তাকিয়ে রয়েছে।তিনিও সবার দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকালেন আর সাথে সাথে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লেন...
আকাশ থেকে নেমে আসতে দেখা যাচ্ছে একটা উজ্জ্বল আলোকে... কাছে আসতেই বোঝা গেল, ৩ জন আছেন সেখানে... দু পাশের দু জন এর গা থেকে উজ্জ্বল আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে দেখেই দূর থেকে মনে হচ্ছিল আলো আসছে... কিন্তু, মাঝের জনের দিকেই তাঁর দৃষ্টি আটকে গেল, কারণ, এতক্ষণ ভুলে থাকলেও এখন যে তাঁর মনে পড়ে গেছে...
মাঝবয়সী এক যুবককে দেখছেন তিনি...
মাঝারি উচ্চতা, লালচে ত্বক, গায়ে হলুদ রঙের কাপড়... তাঁর সুন্দর চুলে ভোরের আলো প্রতিফলিত হচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন চুলে পানি চিক চিক করছে, অথচ চুল শুকনো...
সাদা মিনারের উপর নামিয়ে দিলেন তাঁকে সেই জ্যোতিরমান দুই লোক... ধীরে ধীরে নেমে এলেন তিনি...
কারও আর তাঁকে চিনতে বাকি নেই... ইনিই যে ঈসা মসীহ।

সালাম বিনিময়ের পরেই ঈসা (আ) কে অনুরোধ করা হল, নামাযের ইমামতি করার জন্য... কিন্তু, তিনি প্রত্যাখ্যান করে বললেন, “এ উম্মতের নেতা আপনি, আপনিই পড়ান নামায...”;শেষ পর্যন্ত, ইমাম মুহাম্মাদ আল মাহদির পিছনেই ফযরের নামায আদায় করলেন ঈসা (আ) আর তাদের অনুসরণকারী মুসলিমরা।
নামায শেষে নতুন উদ্যমে প্রস্তুত হল মুসলিম বাহিনী... আজ যে তাদের বিজয়ের দিন... নবী ঈসা যে আজ তাদের মাঝে... আলহামদুলিল্লাহ...
দামেস্ক থেকে রওনা হল মুসলিম বাহিনী... ইজরাইল সীমান্ত এর দিকে... ঈসা (আ) এর মাতৃভূমির দিকে...
সীমান্তের কাছাকাছি আসতেই ইহুদী বাহিনীর চিহ্ন দেখা যেতে লাগল... এখনও তাদের এক চোখা ভণ্ড মসীহ দেখা যাচ্ছে না... তবে কিছুক্ষণের মাঝেই হয়ত বেরিয়ে আসবে...

ঐ তো... বেরিয়ে আসছে সেই এক চোখা ইহুদিদের ত্রাণকর্তা দাজ্জাল -
যেই মুহূর্তে তার চোখ পড়ল ঈসার উপর, সাথে সাথে কেঁপে উঠল ভয়ে... কারন সে জানে, তাঁর মৃত্যু লিখা আছে ঈসার হাতেই... তার মানে আজকেই তার শেষ দিন ? এতদিন ধরে যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে সে, সব শেষ হয়ে যাবে ? এ হতে পারে না... পালাতেই হবে।

এদিকে ইহুদী বাহিনীতেও ছড়িয়ে পড়েছে ভীতি, তাদের পরাজয় যে কাছেই সেটা বুঝতে আর বাকি নেই। ফরমেশন ওলট পালট হয়ে যেতে লাগল, সবাই এদিক সেদিক পালাতে লাগল... আর মুসলিম বাহিনী “আল্লাহু আকবার” রবে তাড়া করল ইহুদীদের... আজ যে তাদের বিজয়।

এদিকে রয়েছেন আসল মসীহ ঈসা আর ওদিকে রয়েছে ভণ্ড মসীহ দাজ্জাল...
তার মনে তখন ঘুরছে পালাবার চিন্তা... উপায় একটা আছে... কাছেই এয়ারপোর্ট... বেনগুরিওন আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট... মাত্র কয়েক কিলোমিটার... ওখানে তাঁর ব্যক্তিগত বিমান আছে, তার প্রিয় সাদা বিমান... কোন মতে যদি ওখানে পৌঁছাতে পারা যায়... তাহলে আর তাকে ধরে কে...
সাথে সাথে উল্টো দিকে পালান শুরু করল সে...
সে কি পারবে??
কিছুক্ষণ পর পিছে তাকিয়েই তার ভয় আরও বেড়ে গেল... ঈসা যে তার পিছন পিছনই আসছেন... না, আরও জোরে যেতে হবে... ঐ তো দেখা যাচ্ছে, এয়ারপোর্ট...
কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেল সে... যাক, হয়ত এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম, এটা ভেবে পিছনে তাকাতেই দেখল, ঈসা তাঁর পিছনেই...
...
...
আর একটু এগুলেই হয়ত পালাতে পারতাম, ইসরাইলের বেনগুরিওন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের মেইন গেইটের সামনে মাটিতে পড়ে ভাবল দাজ্জাল... তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত এটা... আল্লাহ্‌র এক প্রিয় নবী ঈসা তাঁর সামনে... হাতে অস্ত্র...

হ্যাঁ, ঈসা (আ) এর হাতেই দাজ্জাল মারা যাবে Armageddon যুদ্ধের শেষ দিনে। ইসরাইলের বেনগুরিওন আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের মেইন গেটে। নিচের ম্যাপ দেখলে হয়ত বুঝবেন সহজে



চিত্র- ইসরায়েল এর আন্তর্জাতিক বেন-গুরিন এয়ারপোর্ট ধারণা করা হয় এর পালিয়ে জাওার সময়ই দাজ্জাল এইখানেই ঈসা তাকে হত্যা করবেন।


আমার গস্পেল লিখার মূল কারন ছিল ঈসার ব্যাপারে স্বচ্ছ এবং প্রকৃত ধারণা দেওয়া। যাতে ভণ্ড মসীহ দাজ্জাল তার পোষা বাহিনী যারা এখন পৃথিবীতে তার আগমনের প্লাটফর্ম রেডি করে চলেছে এবং অধীর ভাবে তার আগমনের দিনক্ষণ গুনছে। এই বেপারেই হবে আমার পরবর্তী পোস্ট গুলো। এই পোষ্টগুলোর মাধ্যমে আপনারা জানবেন কে এই দাজ্জাল ? কে ইমাম মাহদি ? দাজ্জাল কথায় বন্দি অবস্থায় আছে ? মুসলিমদের সাহায্যকারী ইমাম আল মাহদির জন্ম কোন ভুমিতে হবে ? দাজ্জালের সাহায্যকারী বা তাকে সমর্থনকারী কারা ? ইমাম আল মাহদির সাহায্যকারী কারা হবেন ? হাদিসে তাদের চেনার লক্ষণ কি বলা হয়েছে ? দাজ্জাল কে কথায় মারা হবে ? কোন এয়ারপোর্ট এর কাছে সে পালানোর চেষ্টা করবে......আমার পরবর্তী পোস্ট গুলোতে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করে যাব ইনশাআলাহ।


বুখারি শরিফের হাদিস বলছে, ঈসা (আ) ফিরে এসে আরও ৪০ বছর জীবনকাল কাটাবেন। মোট বয়স হবে তাহলে ৭৩ বছর।
তাঁর কবর দেয়া হবে মদিনায়, মুহাম্মাদের (স) পাশে।

এই সিরিজের আন্ডারে অনেক কিছু লিখা যেত আরও। কিন্তু শেষ করে দিচ্ছি। ইসরাইলের সাথে সম্মিলিত মুসলিম বাহিনীর যুদ্ধের সময়ই ঈসা (আ) এর আগমন হবে।
আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে রাখুন। আমিন।


"যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা বলবেন;আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং আমি জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত। আমি তো তাদেরকে কিছুই বলিনি, শুধু সে কথাই বলেছি যা আপনি বলতে আদেশ করেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহর দাসত্ব অবলম্বন কর যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা আমি তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম। অতঃপর যখন আপনি আমাকে লোকান্তরিত করলেন, তখন থেকে আপনিই তাদের সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। আপনি সর্ববিষয়ে পূর্ণ পরিজ্ঞাত।" {কুরআন,৫:১১৬-৭}

--------------------------------------------------------------------------
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৬
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×