এই পর্বটি পড়ার আগে -
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -১
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -২
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -৩
দ্যা লস্ট গস্পেল (The Lost Gospel) -৪
পড়ে নিন ।
-----------------------------------------------------------------------------
Judas এই একটা নাম যেটা ২০০০ বছর ধরে কোন খ্রিস্টান রাখে না। কেন?
ঠিক যে কারণে আমরা বাঙালিরা মীর জাফর নাম রাখতে কুণ্ঠিত হই। জুডাস নামের প্রতিশব্দই হয়ে গিয়েছে বিশ্বাসঘাতক। মাত্র ৩০ রৌপ্য মুদ্রা ঘুষের বিনিময়ে সে ধরিয়ে দেয় যীশুকে। তাই 30 pieces of silver বলতে বুঝায় কাউকে betray করার জন্য যে ঘুষ নেয়া হয়...
তাঁর পুরো নাম ছিল Judas Iscariot , হিব্রু উচ্চারণ এহুদা ইস্কারিয়ত।
এহুদার মৃত্যু নিয়ে বাইবেল এর লেখকরা নিজেই দেখা যায় একমত না। তারা confused; আসলে এহুদার কী হয়েছিল?
এক জায়গায় লিখা হয়েছে, এহুদা আত্মহত্যা করে। (Matthew 27:3–10) আরেক জায়গায় লিখা তাঁর পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে সে মারা যায় (Acts of the Apostles)
আসলে কী হয়েছিল সেটা আল্লাহ জানেন। বারনাবাস পড়লে অবশ্য একটা উত্তর পাওয়া যায়...
আরেকটা ব্যাপার, The Holy Grail; এটা নিয়ে যে খ্রিস্টান দুনিয়ায় কত জল্পনা কল্পনা হয়েছে...
বলা হয়ে থাকে, যীশু লাস্ট সাপারের সময় যে কাপ ব্যবহার করেছিলেন সেটার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই কাপ দিয়ে Joseph of Arimathea ক্রুশবিদ্ধ যীশুর রক্ত ধারণ করেন।
holy grail
এর ক্ষমতা হিসেবে বলা হয়, ঐ কাপ দিয়ে কেউ পানি বা কিছু পান করলে সে অমরত্ব পাবে, সব রোগ ভাল হয়ে যাবে... ইত্যাদি। এই কাপ পরে তিনি লুকিয়ে ফেলেন। কেউ বলে ব্রিটেনে পাঠিয়ে দেন বংশপরম্পরায় সংরক্ষন করার জন্য... এ কাপকেই বলে HOLY GRAIL; অথচ এর কোন ভিত্তি নেই, কারণ যীশু তো ক্রুশবিদ্ধই হন নি। তাই লিজেন্ড হিসেবেই টিকে আছে হলি গ্রেইল। লাস্ট সাপার অবশ্য সত্যি।
আমি পর্ব বাড়াতে চাচ্ছি না তাই পর্ব গুলো বড় বড় করেই শেষ করে দিতে ছাইচাই, কারণ বর্তমান পরিস্তিতিতে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিক হল দাজ্জাল, তাই যেহেতু ঈসা আবার আসবেন দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ তাকে হত্যা সব ব্যাপারে ঈসা জড়িত থাকবেন বলে তার ব্যাপারে আগে আলোচনা করে নিচ্ছি এবং আপনাদের ঈসার ব্যাপারে একটা স্বচ্ছ ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
যাই হোক, এবার শুরু করা যাক বারনাবাস এর লিখা... এখন থেকে কিন্তু ক্রুশবিদ্ধ হবার ফাইনাল কাহিনী শুরু হবে... আগের পর্বের পর থেকে continued...
অধ্যায় ২০১
প্রধান ইহুদী ইমাম কায়াফা ঈসাকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করল। ঈসা যখন বাইতুল মুকাদ্দাসে ঢুকলেন, তখন তারা তাঁর সামনে নিয়ে এল এক মহিলাকে, যার সম্পর্কে ব্যভিচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তারা নিজেরা বলাবলি করল, “ঈসা যদি এ মহিলাকে রক্ষা করে তাহলে সেটা হবে তাওরাত বিরোধী, কারণ মুসার আইনে আছে ব্যভিচারীর শাস্তি পাথর মেরে হত্যা। আর যদি ঈসা একে শাস্তি দেয় তাহলে সেটা হবে তাঁর প্রচারিত ধর্মকথার বিরোধী। কারণ, সে ক্ষমা-মহত্ত্ব-ঔদার্যের কথা প্রচার করে।”
তারা ঈসার কাছে এসে বলল, “এ মহিলা ব্যভিচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। মুসার কিতাব মতে তাঁকে পাথর মারতে হবে। আপনি কী বলেন?”
ঈসা নিচু হয়ে মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে একটি আয়নার ছবি আঁকতে লাগলেন। তারা উত্তরের জন্য চাপাচাপি করতে লাগল। তখন ঈসা মাথা তুলে ঐ আয়নার ছবির দিকে তাক করে বললেন, “তোমাদের মধ্যে যে গুনাহ মুক্ত সে প্রথম পাথরটি নিক্ষেপ করুক।” তারপর তিনি আবার আয়না আঁকতে লাগলেন, এটা দেখে সবাই চলে যেতে লাগল। সবার আগে গেল বুড়োরা, কারণ তাদের গুনাহের কথা মনে পড়ে গিয়েছে।
ঈসা মাথা তুলে দেখলেন ঐ মহিলা ছাড়া আর কেউ নেই। ঈসা বললেন, “ওরা কোথায় যারা তোমাকে অভিযুক্ত করল?”
মহিলা কাঁদতে কাঁদতে বলল, “প্রভু, তারা চলে গিয়েছে। আর আল্লাহর কসম... আমি আর গুনাহ করব না।”
ঈসা বললেন, “আলহামদুলিল্লাহ। শান্তিতে চলে যাও। আর গুনাহ করো না। আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিতে পাঠাননি।”
এরপর ঈসা ইহুদী ইমাম আর ফারিসিদের জড়ো করে বললেন, “আমাকে বল: ধর, তোমার ১০০ ভেড়া আছে। এর মধ্যে একটি ভেড়া হারিয়ে গেল, তখন তুমি কি বাকি ৯৯টা ভেড়া রেখে ঐ একটা ভেড়া খুঁজতে যাবে না? আর যখন তুমি ঐ ভেড়াটাকে খুঁজে পাবে, তখন কি সেটা এনে তুমি প্রতিবেশীদের চিৎকার করে বলবে না, ‘দেখ! দেখ! আমি আমার হারানো ভেড়াটাকে খুঁজে পেয়েছি!’ ? অবশ্যই তোমরা এমন করবে। কারণ, তোমরা তোমাদের ভেড়াগুলোকে ভালবাস, আর যেটা হারিয়ে যায় সেটা খুঁজে পেলে অনেক খুশি হও। তাহলে বল, আল্লাহ কি তাঁর বান্দাদেরকে এর চেয়ে কম ভালোবাসবেন??? না!!! আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, যখন কেউ তওবা করে তখন আল্লাহর ফেরেশতাদের মধ্যে খুশির রোল পড়ে যায়, কারণ তওবা তো আল্লাহর মহিমাকেই প্রকাশ করে।”
অধ্যায় ২০৯
(কয়েকদিন পর যখন ইতোমধ্যে ইহুদী ইমামরা ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে ঈসাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে)
যখন ঈসার মা মরিয়ম প্রার্থনা করতে শুরু করলেন, তখন ফেরেশতা জিবরাঈল এলেন আর তাঁকে ঈসার মৃত্যুদণ্ডাদেশের কথা জানালেন। এরপর বললেন, “ভয় করো না, মরিয়ম, কারণ আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করবেন।”
এ কথা শুনে মরিয়ম দ্রুত নাসরাত গ্রাম ছেড়ে জেরুজালেমে রওনা দিলেন ছেলেকে শেষবার দেখার জন্য। তিনি জেরুজালেমে তাঁর বোন মরিয়ম সালোমির (Mary Salome) এর বাড়িতে এলেন ছেলেকে খুঁজতে কাঁদতে কাঁদতে।
কিন্তু ঈসা তখন সিদ্রন ঝরনার (Fountain of Cedron) আড়ালে আত্মগোপনে ছিলেন। তাই মরিয়ম তাঁর ছেলেকে দেখতে পেলেন না। তবে সেই লজ্জাজনক ঘটনার পর আল্লাহর আদেশে ফেরেশতা জিবরাঈল, মিকাইল, আজ্রাইল আর ইসরাফিল ঈসাকে মা মরিয়মের কাছে এনেছিলেন। কিন্তু সে ঘটনা তো আরও পরের।
অধ্যায় ২১২
“হে আল্লাহ, আপনি সব পারেন, সব দেখাশোনা করেন। এ দুনিয়ার উপর করুনা করে আপনি আপনার সেই রাসুলকে তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিন।” ঈসা তিন বার আমিন বললেন। সাহাবীরাও আমিন বলল। কিন্তু এহুদা (JUDAS) কিছুই বলল না। কারণ, সে কিছুই বিশ্বাস করত না।
অধ্যায় ২১৩
যখন ভেড়া খাবার উৎসব এগিয়ে আসল, তখন নিকোদিমা গোপনে ঈসা আর সাহাবীদের কাছে ভেড়া পাঠিয়ে দিল, আর সাথে সাথে এটাও জানিয়ে দিলেন, রাজা হেরোদ কী দণ্ড দিয়েছেন। ঈসা বললেন, “আলহামদুলিল্লাহ! কারণ, হে আল্লাহ, তুমি আমাকে তোমার নবীদের অন্তর্ভুক্ত করেছ। তোমাকে ধন্যবাদ, আল্লাহ, আমি আমার নবীর দায়িত্ব সম্পন্ন করেছি।”
এরপর তিনি এহুদার দিকে ফিরলেন আর বললেন, “বন্ধু, দাঁড়িয়ে আছ কেন? আমার সময় প্রায় শেষ। তুমি দ্রুত তোমার কাজ কর।”
সাহাবীরা ভাবল, ঈসা হয়ত ঈদুল ফিসাখের (PASSOVER) জন্য কিছু কিনতে পাঠাচ্ছেন। কিন্তু ঈসা জানতেন, এহুদা বিশ্বাসঘাতক। তাই তিনি চাচ্ছিলেন সে যেন চলে যায়, ফলে তিনি কিছু কথা সাহাবীদের বলতে পারেন। এহুদা বলল, “প্রভু, আমি খেয়ে তারপর যেতে চাই।”
“চল, খাই,” বললেন ঈসা, “আমি যাওয়ার আগে তোমাদের সাথে এ শেষ খাওয়াটা (THE LAST SUPPER) খেতে চাই।”
এ কথা বলে তিনি তোয়ালে শরীরে পেঁচালেন। বেসিন থেকে পানি নিয়ে সাহাবীদের পা ধুতে গেলেন। তিনি প্রথমে এহুদার পা ধুলেন, এরপর পিটারের কাছে এলেন। পিটার বলল, “প্রভু, আমার পা ধুচ্ছেন কেন?”
ঈসা বললেন, “আমি যা জানি সেটা তোমরা জান না, পরে জানবে।”
পিটার বলল, “আমার পা আপনি কখনও ধুবেন না প্রভু!”
ঈসা বললেন, “তাহলে তুমি কিয়ামতের দিন আমার সাথে থাকবে না।”
পিটার বলল, “প্রভু, না, তাহলে আপনি কেবল পা নয়, মাথা আর হাতও ধুয়ে দিন...”
সাহাবীরা সবাই পানি দিয়ে ধৌত হলে ঈসার সাথে খেতে বসল।
ঈসা বললেন, “আমি তোমাদের ধুয়েছি, কিন্তু ... এক সাগর পানি দিয়ে ধুলেও সে পাক হবে না যে আমাকে বিশ্বাস করে না।” ঈসা জানতেন তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে, বললেন, “আমি সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। সে আমাকে ভেড়ার মতো বিক্রি করতে চাবে; কিন্তু, লানত ওর উপর, কারণ তাঁর সম্পর্কে নবী দাউদ ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, ‘নিজের খোঁড়া গর্তে সে নিজেই পড়বে’।”
সাহাবীরা তখন জিজ্ঞেস করল, “কে সেই বিস্বাসঘাতক??” (ঈসা উত্তর দেন নি।)
যখন ভেড়ার মাংস খাওয়া হচ্ছিল, তখন এহুদা তাঁকে জিজ্ঞেস করল গোপনে, “প্রভু, আমিই কি সেই লোক?”
ঈসা বললেন, “তুমি ঠিক বলেছ।”
১১ জন সাহাবী সে কথা শুনতে পেল না।
খাওয়া শেষে শয়তান এহুদার উপর ভর করল। ঈসা তাঁকে বললেন, “যাও, তোমার কাজ তাড়াতাড়ি কর।”
অধ্যায় ২১৪
এহুদা চলে গেলে ঈসা নামাজ আদায় করতে বাগানে এলেন। তিনি নিয়ম মত, মাটিতে হাঁটু ঠেকিয়ে সিজদা দিলেন। তিনি প্রার্থনা করতে থাকলেন আল্লাহর কাছে।
ওদিকে এহুদা ঈসার গোপন স্থান প্রধান ইহুদী ইমাম কায়াফাকে জানাতে গেল, বলল, “আপনি যদি আমার পুরস্কার ঠিক মত দেন, তাহলে আজ রাতেই আমি ঈসাকে আপনার হাতে তুলে দিব। সে এখন একা আছে, ওর ১১ সাথীর সাথে।”
প্রধান ইমাম কায়াফা বললেন, “কত চাও তুমি?”
এহুদা বলল, “৩০ রুপার মুদ্রা।”
ইমাম এহুদাকে গুণে গুণে ৩০টা রুপার মুদ্রা দিল। এরপর একজন ফারিসিকে পাঠিয়ে দিল রাজা হেরোদের কাছ থেকে সৈন্য আনতে। সৈন্যরা এহুদাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল জেরুজালেম থেকে... গেতসিমান বাগানের দিকে, যেখানে ঈসা আছেন।
মূল ঘটনায় প্রবেশ করার আগে খ্রিস্টানদের বিশ্বাস করা কাহিনী জানা দরকার, ওদের মতে ঘটনাটা আসলে কী হয়েছিল? তাহলে কাহিনী মিলিয়ে পড়তে সুবিধা হবে। আসুন জানা যাক। আমি বাইবেলের ৪টা গস্পেল থেকে এ ঘটনার বিবরন পড়ে অতি সংক্ষেপে যতটুকু মনে পড়ে লিখছি...
খ্রিস্টানদের ভাষ্য-
গ্রেফতার এড়ানোর জন্য যীশু লুকিয়ে ছিলেন গেতশিমান বাগানে। একটু আগে তিনি লাস্ট সাপার করলেন তাঁর ১২ সাহাবীর সাথে। এরপর জুডাস বা এহুদা বেরিয়ে গেল। বাগানে প্রার্থনারত ছিলেন যীশু, বারবার তিনি প্রার্থনা করছেন যেন তাঁকে গ্রেফতার না করতে পারে, ঈশ্বর যেন তাঁকে রক্ষা করেন; আর সাহাবীরা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বিশ্বাসঘাতক জুডাস ইহুদী ইমাম কায়াফার কাছে গেল আর ৩০ রুপার মুদ্রা দাবি করল যীশুকে ধরিয়ে দেবার বিনিময়ে। কায়াফা রাজি হলেন আর সৈন্য আনতে পাঠালেন। সৈন্য নিয়ে জুডাস রওনা হল যীশুকে ধরিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে।
বাগানে এসে পোঁছাল জুডাসের দল। একটা হৈচৈ এর মধ্যে যীশু গ্রেফতার হলেন। সাহাবীরা সবাই পালিয়ে গেলেন।
যীশুকে সানহেদ্রিনে নেয়া হল। সানহেদ্রিন হল ইহুদী বিচারসভা। যীশুকে এই অভিযোগে দোষী করা হল যে, তিনি নিজেকে ঈশ্বরপুত্র দাবি করেছেন। যীশু কোন কথা বললেন না। কেবল একটা কথা বললেন, “তোমরা বলছ এ কথা।”
তাঁকে তখন নিয়ে যাওয়া হয় গভর্নর পন্টিয়াস পাইলেটের (Pontius Pilete) কাছে। দাবি জানায় ইহুদী ইমামরা তাঁকে শাস্তি দেয়ার, ক্রুশে চড়ানোর। পাইলেট নিজে যীশুকে কিছু প্রশ্ন করে বললেন, তাঁর কাছে এ লোককে দোষী মনে হয়নি। তাই তাঁকে শাস্তি দিতে চান না তিনি।
তিনি যীশুকে পাঠালেন রাজা হেরোদের কাছে। হেরোদ আর তাঁর সৈন্যরা যীশুকে অপমান করল, তাঁকে ব্যঙ্গ করল। তাঁকে ইহুদীদের রাজা বলে উপহাস করল আর একটা রাজার মতো আলখাল্লা পড়িয়ে দিল। এরপর তাঁকে আবার নিয়ে আসা হল পাইলেটের কাছেই।
ইহুদী ইমামরা তখন যীশুর বিরুদ্ধে জনতাকে উত্যক্ত করে তুললো। পাইলেট তখন বললেন, প্রতি বছর এ উৎসবের সময় একজন অপরাধীকে মুক্ত করে দেয়া হয়। জনতার সামনে তিনি ২ জনকে রাখলেন, কাকে মুক্ত করে দেয়া উচিত বলে মনে করে জনতা? ১ জন ছিল যীশু খ্রিস্ট, আরেকজন ছিল কুখ্যাত খুনি বারাব্বা। দুজনের নামই ছিল ঈসা।
জনতা রায় দিল, বারাব্বাকে ছেড়ে দেয়া হোক আর যীশু খ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারা হোক।
পাইলেট বললেন, যীশুকে মারছ তোমরাই, আমি না। এ লোকের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী না। এর রক্তের ভার তোমাদের উপর। এটা যেন সবাই মনে রাখে। এ কথা বলে তিনি যীশুকে ক্রুশে চড়ানোর আদেশ দিলেন। (মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষমতা কেবল রোমান গভর্নরের ছিল, ইহুদীদের ছিল না, এ জন্যই পাইলেটের কাছে আসা।)
শুরু হল যীশুকে নির্যাতন করা। তাঁকে অনেক অনেক আঘাত করা হল। তাঁর শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল। তাঁকে মুকুট পড়ানো হল, তবে রাজার মুকুট না, কাঁটার মুকুট। তাঁর জামা খুলে নেয়া হল, টুকরো টুকরো করা হল...
নিয়মমাফিক নিজের ক্রুশ নিজেকেই বহন করতে হয়। তাই যীশুর কাঁধে চড়িয়ে দেয়া হল তাঁর ক্রুশ। প্রচণ্ড ভারি সেই ক্রুশ নিয়ে তাঁকে হেঁটে যেতে হল পাহাড়ের উপরে গল্গথা নামের স্থান পর্যন্ত । পথে তিনি বারবার পড়ে যাচ্ছিলেন। মাঝে এক মহিলা যে যীশুর অনুসারী ছিল তাঁকে পানি খাওয়াতে এলো কিন্তু সৈন্যরা ফেলে দিল সেই পানি। সাইমন নামের এক ভক্ত তাঁর ক্রুশ বহন করতে চাইল, কিন্তু তাঁকে তাড়িয়ে দিল সৈন্যরা।
শেষ পর্যন্ত পোঁছাল সবাই পাহাড়ে। সেখানে ক্রুশ মাটিতে বিছানো হল, সেখানে শোয়ান হল যীশুকে, হাতুড়ি দিয়ে পেরেক গাঁথা হল তাঁর হাতে, তাঁর পায়ে। ছিটকে বেরিয়ে এলো রক্তের স্রোত। এরপর ক্রুশ উপরে তোলা হল। তাঁর সাথে আরও ২ জন চোরকে ক্রুশে দেয়া হয়েছিল। যীশুর ক্রুশের উপর লেখা হয়েছিল, “নাসরাতের যীশু- ইহুদীদের রাজা।”
ক্রুসিফিক্সনের ঘটনার সময় সামনে যীশুর পরিচিতদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিল তারা হল, ইউহানা (John), মা মেরি, আর মেরি মাগডালিন। একজন মা হয়ে নিজের চোখের সামনে সন্তানের সব কষ্ট দেখতে হল মেরিকে।
সেদিন ছিল শুক্রবার। যাকে এখন খ্রিস্টানরা বলে গুড ফ্রাইডে। দুপুর ৩টার সময় যীশু চিৎকার করে উঠলেন, “ইলাহি !! ইলাহি !! লামা সাবাখতানি(হিব্রু ভাষায়) ???” (হে ঈশ্বর! হে ঈশ্বর!! কেন তুমি আমায় পরিত্যাগ করলে?) এরপর তিনি ধীরে ধীরে মারা গেলেন। {উল্লেখ্য, আর কোন হিব্রু বাক্য না জানলেও, উপরের এ বাক্যটি সকল খ্রিস্টান জানে, মুখস্ত করে। আর যারা খ্রিস্টধর্ম নিয়ে নাড়াচাড়া করেন তাদেরও মুখস্ত এ বাক্যটি... মুখস্ত করে ফেললে ভাল }
এরপর তাঁর লাশ নামানো হল। তাঁর লাশ কোলে নিয়ে অনেক কাঁদলেন মা মেরি। কাঁদল মেরি মাগডালিন আর জন।
আমি যা বলে যাচ্ছি এইসব খ্রিস্টানদের বিশ্বাস যীশুর ক্রুশের ঘটনা নিয়ে আসলে কি হয়েছিল তা পাবেন একটু পরে সাহাবী বারনাবাসের বরননাই... পড়তে থাকুন।
জোসেফ আরামাথিয়া (যে যীশুর রক্ত ধারণ করে সেই পাত্রে, হলি গ্রেইলে) ছিল অনেক ধনী। তাঁর নিজস্ব পাথরের কবরে রাখা হল যীশুকে। এত তাড়াতাড়ি কেন? কারন, শনিবার ইহুদীদের সাপ্তাহিক ধর্মীয় ছুটির দিন, সাব্বাথ(sabbath) ঐদিন এসব কাজ হারাম মনে করত তারা। তাই শুক্রবারেই সব কিছু শেষ করতে চাইল তারা।
পরদিন শনিবার, কিছুই হল না। সবাই শোক পালন করল।
এরপর দিন, রবিবার। ইস্টার সানডে বলে খ্রিস্টানরা এখন। সেদিন সকাল সকাল মহিলারা (মেরি মাগডালিন সহ) গেল যীশুর কবরে, সুগন্ধি দিতে। গিয়ে দেখল কবরের মুখের পাথর সরানো!! আর, যীশুর লাশ নেই!! কবর ফাঁকা! অবাক ব্যাপার!!! কাফনের কাপড় পড়ে আছে। সেই কাফনের কাপড় আজও আছে সংরক্ষন করা। এর নাম Shroud Of Turin. নামটা মনে রাখবেন। এই কাফনের কাপড়ের রক্তের ছাপ থেকে পরবর্তীতে প্রজুক্তির মাধ্যমে জুডাস এর চেহেরার আকৃতি বানানো হয় আপনারা পরবর্তী পর্বে তা দেখতে পাবেন। যেহেতু জুডাস এর চেহেরা ঈসার মত করে দেওয়া হয়েছিল ধারনা করা হয় ঈসার চেহেরা ঠিক তেমনই ছিল দেখতে।
সেই কাফনের কাপড় যেটাই এহুদাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়
একটা সূত্রে বলা হয়, মেরি মাগডালিন একা গেলেন ওখানে আর গিয়ে দেখলেন এক ফেরেশতাকে। “ফেরেশতা” বললেন, যীশু আবার “জীবিত” হয়েছেন। এ ঘটনাকে বলে The Resurrection of Christ.
ইতোমধ্যে একটা গুজব অবশ্য ছড়িয়ে গেল, ইহুদী নবী যীশু মিরাকল দেখিয়েছেন, তিনি আসলেই তাহলে ঈশ্বরপুত্র, মৃত্যুকে হার মানিয়েছেন তিনি!
কয়েকজন সাহাবীর কাছে দেখা দিলেন পুনর্জীবিত বা পুনরুত্থিত যীশু (The Resurrected Jesus)... তাদের সাথে কথা বললেন। আর চলে যাবার আগে অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে গেলেন তিনি সাহাবীদের, তারা তাঁর ধর্ম প্রচার করতে পারবে সবার কাছে, আর এজন্য তারা সব বিদেশি ভাষায় চাইলেই কথা বলতে পারবে।
Resurrection এর ৪০ দিন পর যীশুকে আকাশে তুলে নেয়া হল, সাহাবীদের সামনে। এটাকে বলে The Ascension.
এবং, ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী তিনি আবার আসবেন, এসে হত্যা করবেন Antichristকে। এ দ্বিতীয় আগমনকে বলে The Advent of Christ.
অনেকগুলো, প্রায় ১০০র উপর লিখিত কপি থেকে ৩২৫ সালে পছন্দ করা হয় এ কাহিনীওয়ালা কপিগুলো। আজও এ কাহিনীই বাইবেলে আছে।
এবার আসা যাক, বারনাবাসের লিখনিত আসুন দেখি আসলেই কি ঘটেছিল সেইদিন...
তবে তাঁর আগে, একটা উদ্ধৃতি দিয়ে নেই। এটা দাউদ(আ) এর উপর নাযিল আসমানি কিতাব জাবুর থেকে নেয়া। একটা ভবিষ্যৎবাণী। পড়ে দেখুন-
“ভাল মানুষটি অনেক বিপদে পড়বে, কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে রক্ষা করবেন। তিনি তাঁকে পুরোপুরি সংরক্ষন করবেন... ” (জাবুর, ৩৪:১৯-২১)
আরেকটি দেখুন-
“...নিশ্চয়ই তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন... তুমি দেখবে, দুষ্ট লোকটিই শাস্তি পাচ্ছে... তোমার কোন ক্ষতিই হবে না... কারণ, তিনি তোমাকে তাঁর ফেরেশতা দিয়ে রক্ষা করবেন... তারা তোমাকে তুলে নিবে... আল্লাহ পাক বলেন, ‘আমি তাঁকে বাঁচাবো। রক্ষা করব।’... সে আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আর আমি তাঁর প্রার্থনা শুনব। আমি তাঁকে নিয়ে আসব... তাঁকে সম্মান দিব... তাঁকে দেব সুদীর্ঘ আয়ু...”(জাবুর, ৯১:১-১৬)
এটা মাথায় রাখলেই চলবে।
আসুন আসল কাহিনীতে...
অধ্যায় ২১৪
...
ইমাম এহুদাকে গুণে গুণে (৩০ রুপার মুদ্রা) দিল। তারপর একজন ফারিসিকে পাঠিয়ে দিল রাজা হেরোদের কাছ থেকে সৈন্য আনতে। সৈন্যরা এহুদাকে নিয়ে জেরুজালেম থেকে বেরিয়ে এলো।
অধ্যায় ২১৫
সৈন্যরা এহুদার সঙ্গে ঈসার থাকার স্থানে পোঁছালে ঈসা অনেক পদশব্দ শুনতে পেলেন। তিনি ভয় পেয়ে বাগানের পাশের ঘরে ঢুকে পড়লেন। সেখানে ১১ সাহাবী নিদ্রায় মগ্ন ছিল। তখন আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দার বিপদ দেখে জিবরাঈল (Gabriel), আজ্রাইল (Uriel), মিকাইল (Michael) আর ইসরাফিলকে (Raphael) আদেশ দিলেন ঈসাকে তুলে আনার জন্য। ফেরেশতারা এসে ঈসাকে সেই ঘরেরই দক্ষিণ দিকের জানালা দিয়ে বের করে নিল। আসমানে ফেরেস্তাদের সাথে রেখে আসলেন ঈসাকে।
অধ্যায় ২১৬
ঠিক তখনই এহুদা ঘরে ঢুকল। দেখল সবাই ঘুমাচ্ছে। তখনই মহান আল্লাহ তাঁর ক্ষমতা দেখালেন। তিনি এহুদার চেহারা (এমনকি কণ্ঠস্বরও) এমনভাবে পরিবর্তন করে দিলেন যে, যে কেউ তাঁকে দেখে ঈসা মনে করত। সে আমাদের জাগিয়ে তুলল। জিজ্ঞেস করতে লাগল, “প্রভু ঈসা কোথায়???”
আমরা বিস্মিত হয়ে বললাম, “আপনিই তো আমাদের প্রভু। আপনি কি ভুলে গেছেন আমাদের?” ( বারনাবাস বলল আমরা তো জানতাম না যে সে এহুদা, পরে জেনেছি।)
সে হেসে বলল, “ঠাট্টা থামাও তো, তোমরা জানই যে আমি এহুদা ইস্কারিওত।” ঠিক তখনই সৈন্যরা ঘরে ঢুকে পড়ল আর এহুদাকে ঈসা ভেবে ধরে ফেলল। তাদেরই বা কী দোষ? আমরা সবাই ভয়ে পালিয়ে গেলাম। ইউহানার (জন) গায়ে লিনেনের কাপড় ছিল, সে পালানোর সময় এক সৈন্য তাঁর কাপড় ধরে ফেলে, তাই সে কাপড় ফেলেই নগ্ন হয়ে দৌড় দেয়। আল্লাহ ঈসার বাকি ১১জন সাহাবীকে বাঁচিয়ে দিলেন।
অধ্যায় ২১৭
সৈন্যরা এহুদাকে জোর করে বাধল কারণ সে বার বার বলছিল সে নাকি ঈসা নয়। সৈন্যরা তাঁকে টিটকারি দিয়ে বলল, “ভয় পেয়ো না, আমরা তোমাকে ইসরায়েলের রাজা বানাব। আমরা তোমাকে বাঁধছি কারণ তুমি রাজা হতে চাও না।”
এহুদা বলল, “বোকা কোথাকার! তোমরা এসেছ ঈসা নাসারাকে নিতে, তাঁর বদলে তোমরা তোমাদের পথপ্রদর্শককে ধরেছ। কেন???”
সৈন্যরা ধৈর্য হারাল। তারা তাঁকে ঘুষি-চড়-লাথি মারতে মারতে জেরুজালেমে নিয়ে গেল। ইউহানা আর পিটার পিছনে পিছনে গেল, তারা এসে আমাকে সব জানাল কী কী জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। ফারিসিদের আদালত সানহেদ্রিন তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল। এহুদার কথাগুলো সবার কাছে পাগলামি মনে হল। সবাই হাসল শুনে শুনে। সবাই বুঝে নিল, সে আসলে ঈসা, মৃত্যুভয়ে মিথ্যা বলছে, পাগলের ভ্যান ধরেছে।
তারা তাঁর চোখ বেঁধে দিল, তারপর পিছন থেকে মেরে বলল, “বল তো, নাসারাতের নবী ঈসা, কে তোমাকে মারছে?” ইহুদীরা তাঁর গায়ে থুথু ছিটাল।
মোট কথা, ইহুদী ইমাম আর ফারিসিরা এহুদাকে ঈসা ভেবে মৃত্যুদণ্ড দিল। আচ্ছা, আমি কেন বলছি যে ইহুদী ইমামেরা তাঁকে ঈসা ভেবেছিলো? এমনকি তাঁর সাহাবীরা আমি বারনাবাস পর্যন্ত তাই ভেবেছিলো, ইনিই ঈসা। কী বলব আর, ঈসার মা মরিয়ম পর্যন্ত তাই ভেবেছিলেন। তিনি অনেক কেঁদেছিলেন।
আল্লাহর কসম, আমি সব ভুলে গিয়েছিলাম, ঈসা কী বলেছিলেন। তিনি তো বলেছিলেনই, তাঁকে উঠিয়ে নেয়া হবে, তাঁর বদলে অন্য একজন কষ্টভোগ করবে। তিনি দুনিয়ার আয়ুর শেষ দিকে কিয়ামতের আগে আগে মরবেন, এর আগে নয় তা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম ।
যাই হোক, প্রধান ইমাম কায়াফা এহুদাকে তাঁর সামনে বেঁধে আনার হুকুম দিল। এরপর তাঁকে জিজ্ঞেস করল তাঁর প্রচারিত ধর্ম আর তাঁর সাহাবীদের কথা। এহুদা কোন কথাই বলল না। তখন ইমাম ইসরাইলের আল্লাহর নামে কসম খেয়ে তাঁকে সত্য কথা বলতে বলল। সে কি ঈসা না? সে কি নবী দাবি করে নি? সে কি ঈশ্বরপুত্র দাবি করেনি?
এহুদা বলল, “তোমরা বলছ এ কথা। আমি না। আমি তো বলেছি, আমি এহুদা। আমিই তোমাদের হাতে ঈসাকে তুলে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু, তোমরা দেখি পাগল হয়ে গেছ। ভাবছ, আমি ঈসা।”
প্রধান ইমাম বলল, “ভণ্ড কোথাকার! তুমি সাড়া ইসরাইলবাসীকে ঠকিয়েছ! সেই গালিলি থেকে শুরু করে এই জেরুজেলেম পর্যন্ত! সবার মন ভুলিয়েছ মুজেজার নামে ভণ্ড জাদু দিয়ে, আর এখন ভাবছ কেবল পাগলামির অভিনয় করে শাস্তি থেকে
পার পেয়ে যাবে? আল্লাহর কসম, সেটা হবে না। কখনও না!!”
এ কথা বলে ইমাম তাঁকে লাথি আর চাবুক মারার হুকুম দিল, যেন তাঁর মাথায় বুদ্ধি ফিরে আসে। এহুদা তাদের হাতে যে নির্যাতন ভোগ করতে লাগল, সেটা কোথায় প্রকাশ করা সম্ভব না। তাঁর উপর নির্যাতন দেখে তাঁর শত্রুর হৃদয় পর্যন্ত মায়ায় গলে যেত। কিন্তু প্রধান ইমাম আর ফারিসিরা ঈসার প্রতি এতই মনঃক্ষুণ্ণ ছিল যে, এহুদাকে ঈসা ভেবে তাঁর শাস্তিতে পাশবিক আনন্দ উপভোগ করা শুরু করল। (এত ক্ষোভ কেন? কারণ, ঈসা প্রকাশ করে দিয়েছিলেন, ইহুদী ইমামেরা জনগণের দানের টাকা আত্মসাৎ করে)
এরপর তারা এহুদাকে বেঁধে নিয়ে গেল গভর্নর পাইলেটের কাছে। কেউ জানত না যে, পাইলেট গোপনে ঈসাকে বিশ্বাস করতেন আর ভালবাসতেন। তাই পাইলেট তাঁকে তাঁর কক্ষে একা ঢুকতে দিলেন, জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর প্রতি কেন সবাই এমন করছে? অবশ্য, তিনি এহুদাকে ঈসা ভেবেছিলেন।
এহুদা বলল, “আরে! আপনিও দেখি ওদের মতো পাগল হয়ে গিয়েছেন!”
গভর্নর বুঝতে পারলেন না। তিনি তাঁর সাথে পাক কিতাবের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলেন, “জান তো, আমি একজন ইহুদী না? আমাকে সত্যি কথা বল। আমি ন্যায়বিচার করব। আমার হাতে তোমাকে মুক্ত করার আবার মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষমতাও আছে।”
এহুদা বলল, “বিশ্বাস করুন, আপনি আমাকে মারলে একজন নিরপরাধ লোককে মারা হবে; দেখুন, আমি তো এহুদা ইস্কারিয়ত; ঈসা নাসারা নই। ঈসা একজন জাদুকর। সে তাঁর জাদু দিয়ে আমার চেহারা বদলে দিয়েছে।”
এ কথা শুনে গভর্নর পাইলেট খুবই আশ্চর্য হলেন, তিনি তাঁকে ছেড়ে দিতে চাইলেন। তিনি বেরিয়ে এসে বললেন, “আমি তো এ লোকের মধ্যে কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না...”
-0- -0- -0-
এতটুকু পর্যন্ত এ পর্বে লিখলাম। শেষে কুরআনের ২টি আয়াত দিচ্ছি এখন, যেটা খ্রিস্টানদের সাথে ডিবেটে বার বার উদ্ধৃতি দেয়া লাগে, ক্রুশবিদ্ধ প্রসঙ্গ আসলেই...
“আর ইহুদীরা বলে যে, আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি যিনি ছিলেন আল্লাহর রসূল। অথচ তারা না তাঁকে হত্যা করেছে, আর না তাঁকে ক্রুশে চড়িয়েছে, বরং তাদের এরুপ মনে হয়েছিল। আসলে, তারা এ ব্যাপারে নানা রকম কথা বলে, তারা এক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে আছে, শুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। এটা নিশ্চিত, তাঁকে তারা হত্যা করেনি। বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তাআলা নিজের কাছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।”(নিসা, ৪:১৫৭-৮)
[to be continued...]
রেফারেন্স : গসপেল অফ বারনাবাস