এই পোস্ট টা আমার ভার্সিটির ছোটভাই জয় এর এফবি পোস্ট থেকে নেয়া।শিরোনামটা অবশ্য আমার
জয় এর পোস্ট এইখানে
অনেকেই HSC ’র ফলাফল বিপর্যয় নিয়ে কথা বলছেন, অনেকেই যারা আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেনি তাদের উদ্দ্যেশে খুব অনুপ্রেরণামূলক কথা বলছেন। শুনে বেশ ভালোও লাগছে। অনুপ্রেরণা জিনিষটা একটা নির্জীব মানুষকে কোথার থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তার উদাহরণ দেবার মত অনেক আছে। খুব কম মানুষ আছে যারা অনুপ্রেরণা দিতে জানে। কথাটা বললাম এই কারনেই যে, কেন জানি মানুষ আজকাল অনুপ্রেরণা দিতে মাঝেমধ্যে কুণ্ঠা আর কার্পণ্য বোধ করে। আর আমাদের আশেপাশে আজকাল এরকম মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই। ব্যপারটা হতাশাজনক। কিন্তু এই অল্প ভালো লাগার ভিড়ে রেজাল্ট খারাপ/আশানুরূপ ফলাফল না হলে ( আমাদের মতে আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারা মানে জিপিএ ৫ এর নিচে পাওয়াটাই আজকাল একটা ফলাফল ভালো না হওয়ার মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত ) ছাত্ররা কেন এতটা ভেঙ্গে পড়ে তার কারণ জানা সত্ত্বেও খুব কম কথাই যে বলি তাও ঠিক না। বলি। তবে যত যাই বলি না কেন, সেটা বলার পর হাওয়ায় উড়তে থাকে। কারো গায়ে হাওয়াটা লাগে, কারো লাগে না। লাগা না লাগাতে তেমন কিছু যায় আসে না। তারপরও বলা।
ধরা যাক একটা ছাত্রের খুব ইচ্ছে সে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে, কিন্তু পড়তে ইচ্ছে হলেই তো আর হল না, তার চেয়ে বড় কথা সে কেন পড়বে ??? এই পড়ার ইচ্ছেটা যতটা না তার, তার চেয়ে বেশি তার পরিবার কিংবা আশেপাশের মানুষদের কথা শুনে বা কোন এক পরিচিত জনকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে দেখে। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিলো সেটা চুয়েটের পাশ দিয়ে বাড়িতে যাওয়াআসা করতে-করতে আর স্কুলে পড়ার সময় চুয়েটের ভাইয়ার কাছে প্রাইভেট পড়তে-পড়তে। ব্যপারটা অনেকটা ভাইরাসের মত। আমারটা ভিন্ন । সবার ক্ষেত্রে এমন না। কারো কারো অনেক ছোটবেলা থেকেই লক্ষ্য স্থির থাকে। সেটা পরিবেশের উপর নির্ভর করে।
যাই হোক, মূল কথায় আসাযাক। ধরলাম, ছেলেটা জিপিএ ৫ পেল না। সে ৪.৮৮ বা তার চেয়েও অনেক কম পেল। ভালো খারাপ হতেই পারে। কিন্তু এই ফলাফলটা তার উপর কোন রকম ‘ আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারার ‘ যে এক তীব্র চাপা কষ্ট সেটা অনুভব করতে দিত না। সেই ছাত্রটার তীব্র চাপা কষ্ট অনুভব হবার মূল কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা। আমি যদি এখন বলি আমার বুয়েট নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটার প্রতি কোন সম্মান/ শ্রদ্ধা নেই তাহলে কিছুটা ভুল হবে। সম্মান/ শ্রদ্ধা সবই আছে। দেশের একটা নামকরা আর সেরা প্রকৌশল বিদ্যা অর্জনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে শুধু মেধাবীদের পদধূলি পড়ে, সেই সাথে আমাদের দেশকে গোটা বিশ্বে তুলে ধরে/প্রতিনিধিত্ব করে , এমন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি যে কারোরই সম্মান/ শ্রদ্ধা থাকাটা উচিৎ কিংবা করা উচিত । এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু সেই একই সাথে আমার কেন জানি বুয়েট ‘এর ব্যপারে চরম বিরক্তও আছে। হয়তো সেটা আমি সেখানে পড়তে না পারা , কিংবা ভর্তি পরীক্ষাই দিতে না পারা, কিংবা তার চেয়েও দুঃখজনক আমি সেখান থেকে ভর্তি ফর্ম নামক জিনিষটা নিতে’ই না পারার “ যোগ্যতা “ অর্জন করতে না পারার যন্ত্রণায়। যে কোন কিছুই হতে পারে। এর বাইরেও কিছু কারণ আছে। তাই বলে কি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ইচ্ছেটা বা সুপ্ত বাসনাটা আমার মরে যাবে ?? নাহ ?? মরতে দেয়া যায় না। ( বলে রাখা ভালো আমাদের দেশের সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার+ভর্তি পরীক্ষা দিতে সিটে বসার যোগ্যতা+ ফর্ম নেয়ার যোগ্যতা অর্জন’এর নিয়ম নীতি এক , শুধু বুয়েট বললে ভুল হবে )। তাই সুযোগ না পেয়ে যখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিদ্যা অর্জন শেষ করলাম, সেখানে আবার সিজিপিএ আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় শিক্ষার মান নিয়ে বিরাট প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রশ্নটা অনেকেই করেন। উত্তরও দিতে হয়। কারো কাছে উত্তরটা ভালো লাগে , কারো না। সে যাই হোক, বুয়েটে ফর্ম নিতে গেলে এখন স্কোর লাগে ২০ এ ২০!!!! বলাই বাহুল্য গোল্ডেন ছাড়া আর বাকিরা বুয়েটের গেইটের ধারে কাছেও যাইতে পারবে না। তাই স্বপ্ন দেখা বন্ধ। কিছু করার নাই কথাটা বললে ভুল হয়। করার অনেক কিছুই আছে। বাট আমরা করতে দিচ্ছি না। এই আমারা কারা ??? এই “ আমরা “ প্রশ্নের উত্তর কে বা কারা কি-কিভাবে দিবে আমার জানা নেই। কিন্তু আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।
- বুয়েটের ফর্মে লেখা থাকে যারা ফিজিক্স + কেমেসট্রি + ম্যাথ + ইংলিশ ‘এ জিপিএ ৫ ( ২০ এ ২০ ) পাবে তারাই পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে শর্ত প্রযোজ্য হল যদি এই নিয়মে দেখা যায় যে ২০ এ ২০ পাওয়া ক্যান্ডিডেট ৬০০০ ক্রস করছে সে ক্ষেত্রে যারা সকল বিষয়ে ( ঐ ৪ বিষয় সহ ) জিপিএ ৫ পেয়েছে তারাই পরীক্ষা দিতে পারবে।
এটা আমাদের সময় পর্যন্ত ছিল। আবার এমনও হয়েছে যখন দেখা যাচ্ছে ৮০০০ ক্রস করলো শুধু ঐ ৪ টা সাবজেক্টে ২০ এ ২০ পাওয়ায় , তখন সব বিষয়ে জিপিএ ৫ - এর মধ্যে আবার ৪র্থ বিষয় নিয়েও মারপ্যাঁচ আছে, ৪র্থ বিষয় সহ বা ছাড়া আবেদনকারী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে । এর ফলে ক্যান্ডিডেট ৬০০০ হয়ে গেলো। এর আগে কোন এক বছর শুনলাম ( সম্ভবত ০৬-০৭ কিংবা ০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে হতে পারে ) বুয়েট তাদের যোগ্যতা অর্জনে ৫০০০-৫৫০০ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দিয়েছে। কারণ আবেদনকারী কম !!!!! কেন কম হয়েছে বা তারা ছাকুনি দিয়ে ছাঁকতে – ছাঁকতে কম করে ফেলেছে তা বুঝা দায় !!!!!
( তবে শিক্ষাবর্ষ ১২-১৩ ‘তে আরও ভয়ানক অবস্থা !!! দেয়া হয়েছে - “ সকল সঠিক আবেদনকারীর মধ্য হতে বাছাই করে সর্বাধিক ৮০০০ আবেদনকারীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে। তবে ৮০০০ তম সকল আবেদনকারীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে। এই বাছাইয়ের জন্য যথাক্রমে আবেদনকারীর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ ও মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ –কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। )
- ব্যাস এখান থেকেই আপত্তি শুরু হয়ে গেলো। তার মানে যারা গোল্ডেন তারাই শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবে। আর যাদের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও জিপিএ কম পাবার কারনে পরীক্ষা দিতে পারছে না , তারা অন্য পাবলিক বা প্রাইভেট’এ গিয়ে ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও অন্য সাবজেক্ট নিয়ে পড়। রেজাল্ট ভালো করতে না পারার ঠ্যালা সামলাও। আমাদের সময় বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে SSC ‘ র রেজাল্ট না লাগলেও (SSC তে ৩ পাইলেও ফ্যাক্ট ছিলনা ) এখন যারা HSC পাশ করছে তাদের লাগবে। তারা এক প্রকার অভাগাই বটে। এর মানে এই দাঁড়ালো যে বা যারা SSC’ তে জিপিএ ৫ পায় নাই তার আর বুয়েট ‘এ পড়ার ইচ্ছে না থাকাই উচিত , HSC পরীক্ষায় কেমন রেজাল্ট করবে তার সেই ভাবনা ভাবার দরাকার নেই ।
এবার আসি বুয়েট / অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম নিয়ে ব্বিরক্ত হবার কয়েকটা কারণে -
- SSC + HSC ’র রেজাল্ট ‘ই যদি আপনারা অগ্রাধিকার দেন তাইলে HSC ’র ঐ ৪ টা সাবজেক্টেই শুধু ৫ খুঁজার মানে কি ?? ফর্মে গোল্ডেন চাই বলতে আপনাদের সমস্যা কি ছিল ??
- আপনাদেরকে সরকার/বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন/ শিক্ষা মন্ত্রনালয় , অনেকবার মেডিক্যালের মত সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে একই প্রশ্নে ভর্তি পরীক্ষা নিতে বলা সত্ত্বেও কেন আপনারা তা মানতে নারাজ ??? এরপর বুয়েট না বলায় বাকিরাও ( কুয়েট , রুয়েট , চুয়েট ) না । মেডিক্যাল পারলে আপনারা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এই নিয়ম পারছেন না কেন বা করতে চাইছেন না ?? নিতে সমস্যাটা কোথায় ??
যদি দয়া করে নিতেন তাহলে পরীক্ষার্থীদের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম কিনবার টাকা + গিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দিতে যে টাকাটা খরচ হয় + যাতায়াত খরচ ( অনেকেই যাতায়াত সমস্যার কারনে ভর্তি পরীক্ষা হয় দিতে যেতে পারেন নি দেড়ি হয়েছে , নয় বিশ্ববিদ্যালয় দূরে হওয়ায় যান নি ) , উপরন্তু মানসিক আর শারীরিক কষ্টটাও কিছুটা কমতো। আপনারা সরকার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ‘এর বলা ভর্তি পরীক্ষা নীতি ( মেডিকেল এর মত করে ) কারো কথাই মানেন না। এর মানে কি আমি ভেবে নিব আপনারা দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলে আপনারা আপনাদের এক প্রকার শক্তি দেখাচ্ছেন ?? তাহলে কি ভেবে নেয়া উচিত যে , আপনারা যখন সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিআইটি ‘র আন্ডারে কলেজ হিসেবে ছিলেন তখনি ঠিক ছিল ?? তখন একটা সুন্দর নিয়মে চলত ?? নাকি বিআইটি থাকা অবস্থায় যারা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে তারা ইঞ্জিনিয়ার না ?? এখন যারা করছে তারাই শুধু ইঞ্জিনিয়ার ?? মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করে ডাক্তার হতে পারলে আর সেটা যদি মানসম্মত ডাক্তারি ডিগ্রি হয় আর বিআইটি’র সময় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে যদি ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে তাহলে এখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি পেতে এত বাজে ভর্তি পরীক্ষা সিস্টেম কেন ?? কেন শুধু ৬০০০-৮০০০ জন’ই ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে ?? বাকিদের এত অভাগা / বঞ্চিত করছেন কেন ?? কেন মেডিক্যাল এর মত ৩০০০০ কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ৪০-৫০০০০ জন পরীক্ষা দিতে দিচ্ছেন না ??? নাকি সেখানে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে যান যাদের জিপিএ ২.৫ / ৩.৫ তারা গাধা ?? তারা লেখাপড়া করতে জানেন না। নাকি তারা সেখানে ভর্তি হতে পারেন না ?? কোনটা ?? আমি তো এমন অনেককেই দেখছি যারা ৩.৫ পাওয়া সত্ত্বেও ঢাকা/সিলেট কিংবা চিটাগং এর মত ভালো মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে। তাহলে আপনাদের সমস্যা কোথায় ?? যদি এর উত্তর হয় আপনাদের কষ্ট হয় তাই + আপনারা কোয়ালিটি ঠিক রাখতে চান তাহলে বলতেই হয় আপনারা যেটা করছেন তা হল ছাত্রদের সাথে এক ধরনের ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই না । এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর + স্বায়ত্তশাসিত করার ফলে আপনারা যা খুশি করছেন ?? কোনটা ??? আপনারা ভর্তি নিয়ে ছাত্রদের সাথে ছিনিমিনি খেলছেন ?? আপনারাই বরঞ্চ পড়ালেখার মান দিন দিন বাজে করতে উৎসাহ দিচ্ছেন। যদি বলেন কিভাবে ?? তার উত্তর কিন্তু আবার আপনারই দেন, আপনারই বলেন জিপিএ ৫ পাওয়া বাড়লেও ছাত্রদের মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আবার আপনারাই জিপিএ ৫ ছাড়া কাউকে ভর্তি পরীক্ষা দিতেও দেন না। তাহলে কি দাঁড়ালো ?? তার মানে আপনারাই বলছেন জিপিএ ৫ পাওয়া সকল ছাত্রই আসলে প্রকৃত অর্থে ভালো না। কিন্তু তার মানে আমি এটাও বুঝে নিবো না যে যারা জিপিএ ৫ পায় নি তারা জিপিএ ৫ ধারীদের থেকে খারাপ। পরিস্থিতির কারনে বা তখন হয়তো কোন কারনে সে ভালো ফল করতে পারেনি। কিন্তু আপনি কি বুঝতে চান , সে যদি ভর্তি পরীক্ষায় বসতে পারত তাহলে হয়তো আপনার স্বনামধন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে টিকতেও পারত, হয়তো সে একদিন দেশ বরেণ্য ভালো ইঞ্জিনিয়ার হতে পারত। কিন্তু আপনাদের কিছু বাজে ভর্তি পরীক্ষা নীতির কারনে সে সুযোগটা হারাল। তাহলে এবার আপনারাই বলুন ছাত্ররা HSC’র আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারায় এতটা ভেঙ্গে না পড়ে কি করবে ??? নাচবে , হাসবে , মিষ্টি খাবে খুশিতে আপনাকে চুমু দিবে !!!! কোনটা চান আপনি ??? কিছু দুর্নীতি নাকি কিছু স্বপ্নের অপমৃত্যু নাকি একজন মানুষ যে তার পরীক্ষার ফলাফল মোটামুটি করার পরও আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে পড়ে তার স্বপ্নগুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেশকে উপহার দিচ্ছে। কোনটা ?? কিন্তু আপনারা তা করছেন না , করতে দিচ্ছেন না । তাহলে আপনারা কি করছেন ???? এর উত্তর হল , আপনারা বাধ্য করছেন আপনাদের সৃষ্ট অদ্ভুত ভর্তি পরীক্ষা নীতির মারপ্যাঁচে পড়ে যাতে একটা ছাত্র সেই তথাকথিত আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারায় হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে। আপনারা তার হতাশা কিভাবে আরও বাড়ানো যায় , যাতে করে সে ফিউচারে প্রতি পদে-পদে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে পড়তে না পারায় একদিন আফসোস করে উঠে , তার মন ঢুঁকরে কাঁদে সে ব্যাবস্থা করছেন। আপনাদের এর জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ দেয়া উচিত!!!! তা আপনারা পেতেই পারেন!!!! কারণ আপনারাই যে দেশ সেরা !!! আপনারাই যে একটা কম জিপিএ পাওয়া ছেলের দেখা একটা স্বপ্নকে হাতে ধরে চিপে- চিপে নষ্ট করে ফেলেছেন , ফেলছেন হয়তো এভাবেই ফেলবেন-ফেলতে থাকবেন । এর উত্তর কি ?? আপনাদেরকে যতই বুঝানো হোক আপনারা বুঝতে চান না। আপনারা আপনাদের নীতিতেই অটল থাকুন। বাহ । চমৎকার !! আমার তাতে কিছুই যায় আসে না। কারণ আমি যে ... আমিই!!! এই আমার মত কিছু সব সময় থাকে, থাকবেই!!!!
[ আমি বুয়েট বা দেশের অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ছোট করতে চাই নি। সেই ছোট করবার যোগ্যতা আমার নেই আমি তা জানি। আমি সাধারন একটা ছাত্র ছাড়া আর কিছুই না। বুয়েট বা দেশের অন্য যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মানের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। শুধু ভর্তি প্রক্রিয়ার কিছু সিস্টেম নিয়ে বললাম। কিছু কম জিপিএ পাওয়া ছাত্রের স্বপ্ন কিংবা কষ্টের কথা বললাম। যদি আমার কোন ভুল হয়ে থাকে কিংবা আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকে তার জন্যে ক্ষমা প্রার্থী। ]
নিচে আমার এক বন্ধু @Mahmud Rafiq Rahi 'র বলা কিছু অসাধারণ কথা দিয়ে দিলাম । আমার অসাধারণ লেগেছে বলেই যে আপনারও লাগবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই আমি জানি । কিন্তু এরপরও কেন জানি যোগ করার লোভটা সামলে রাখতে পারলাম না। খুব ইচ্ছে হল। তাই দিয়ে দিলাম। সঙ্গে একটা পেইজে পাওয়া ছোট্ট গল্প । ভালো লাগলে যারা পড়ার তারা পড়বেন।
- “ মানুষের জীবন এক অসাধারণ জীবন । যদি বেঁচে থাকেন, নিজেকে জীবনের মাঝে ধরে রাখতে পারেন - তাহলে আপনার জীবনে একটা স্বপ্ন থাকবে। যখন স্বপ্ন থাকবে, তখন সেটা পূরণ করবার একটা দুর্বার আশা থাকে। যখন স্বপ্ন থাকে, আশা থাকে - তখন জীবনে কিছু একটা করবার উপায় থাকে। আপনাকে যে অমুল্য জীবন দেয়া হয়েছে সেটা ফুটবল খেলা না,তাই এই জীবনে নিজের কাছে হেরে যাওয়া মেনে নেয়া যায় না।
যত ভালো কথাই বলি, ভালো লাগার কোন কারণ নেই। আমার'ও লাগেনি যখন আমিও HSC তে A+ পাইনি। দুর্ধর্ষ দুরন্ত দুঃসাহসিক বৈমানিক জীবনের ডানা হারিয়ে ইউনিভার্সিটি'র ১৭ তলা বিল্ডিঙের উপর উঠে ভাবতাম দেই সব শেষ করে এক লাফ দিয়ে। ঘোরের মধ্যে ছিলাম, তাই সাহস ছিলনা বলা যায় না।
সেদিন যদি এক লাফ দিয়ে সব শেষ করে দিতাম, তবে আমি আজকের আমি হতাম না। নিজের যোগ্যতায় পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে চাকরি করি, তাও UNDP'র ম জায়গার বিশাল চেয়ার পাত্তা না দিয়ে। আমি একদিন চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে পারি নাই - আমার পাসপোর্ট দেখার মত এক জিনিস, কোন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে ফর্ম নেবার পর পরীক্ষা দিতেই আমি বসতে পারি নাই - আগামী বছরের অগাস্টে পৃথিবীর ১২ নং সেরা ইউনিভার্সিটিতে ফান্ড নিয়ে আমি মাস্টার্স করতে যাচ্ছি।
আমাদের HSC'র পর আপাত ভাগ্যবান ভাবা আমার সহপাঠীদের একটা অসাধারণ সময় কাটে টিউশনি করে, টুকটাক দেশীয় কোম্পানিতে বড় ভাই, নিজের প্রতিষ্ঠানের চেয়ার টেবিল দেখায়ে চাকরির খোজ নিয়ে। তারা অবশ্যই ভালো জায়গায় যাবে - ততদিনে আমি ত আর বসে থাকব না।
আজকে আপনি যেখানে এসেছেন সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার না - আপনি কোথায় যাবেন সেটাই আপনার জীবনের সফলতা। HSC'র পর মাত্র জীবন শুরু করলেন, ক্রমাগত অনেক দূরের পথ আপনাকে হেঁটে যেতে হবে। রাস্তা যেমনই হোক, দেখবেন সেখানে একটু বসে জিরোবার জায়গা ঠিকই পাবেন, দেখবেন কোন অপরিচিত গাড় মমতায় আপনার জন্য পানি হাতে দাঁড়িয়ে। সাহস হারিয়ে ফেলিয়েন না, স্বপ্ন ছেড়ে দিয়েন না। আপনি এখনো বেঁচে আছেন - জীবন তাঁর সব ঐশ্বর্য নিয়ে আপনার অপেক্ষায় আছে। মানুষ কক্ষনোই একা হাটে না।
যখন খারাপ সময় আসে, তখন চারপাশ থেকে আসে - যাতে করে হয় আপনি উপরে উঠে যেতে পারেন, কিংবা নিচে। আপনি কোথায় যেতে চান? জীবন আপনাকে, আপনার সামর্থ্য প্রমান করবার একটা সুযোগ দিয়েছে। মন খারাপ না করে সেটা লুফে নিন।
মনে করেন, এটা কল্পনা থেকে পাওয়া আপনার দ্বিতীয় জীবন। এই জীবনে আফসোসের কোন সুযোগ নেই।
নিজের সামর্থ্য প্রমানের জন্য একটা সুযোগ পেয়েছেন আপনি - Take The Chance, Make A Change And Breakaway “
- গল্প –
- " খুব সকালে রেজাল্ট আসে ... ১০০ জনের মাঝে ৯৯ জন জিপিএ ৫ পেলো, একটা ছেলে পেলো না ... ফ্রেন্ড সার্কেলের ৯ টা মেয়ের মাঝে শুধু ঐ মেয়েটাই কেন জানি ৪.৮৮ পেয়ে গেলো !!
অনেক হই-হুল্লোড়ের মাঝ থেকে মেয়েটা চুপচাপ মায়ের হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে আসলো ... অনেক "V" দেখানো হাতের মাঝে ঐ ছেলেটার হাত নেই !!
পৃথিবীর কেউ যদি ঐ ছেলে বা মেয়েটাকে বলে, "আমি তোমার মানসিক অবস্থাটা বুঝতেছি" ... সে একটা বিশাল রকমের মিথ্যুক !!
ছেলেটার দুনিয়াটা ছোট হয়ে আসে ... মেয়েটার মা-বাবা কাঁদতে থাকে ... পৃথিবীটা অনেক বেশি অসহনীয় লাগে তখন ... জীবনটা অর্থহীন মনে হয় ... আসলেই তো ... ২ বছর লেখাপড়া করার পর ক্লাসের সবাইকে যখন আনন্দের চিৎকার করতে দেখবা, চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা হবে না ??
তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডগুলার যখন হাতের আঙ্গুল দিয়ে "V" দেখাবে, তখন ঐ হাত দিয়ে মুখ চেপে কাঁদতে কি পরিমাণ কষ্ট হবে, সেইটা দুনিয়ার কেউ বুঝবে না ... কেউ না !!
"আপনার মেয়ে এ প্লাস পায় নাই ?? বলেন কি !! ... পাশের বাড়ির অমুকের মেয়েও তো পাইছে !!"
"আয়হায় !! আপনার ছেলের রেজাল্ট খারাপ হইছে ?? ... পাবলিক ভার্সিটিতে নিবে ওরে ?? ইশ !!"
এইরকম হাজার হাজার কথা ছেলেটার আর মেয়েটার বাবা-মা কে বুলেটের মত ঝাঝরা করে দিবে প্রতিনিয়ত ... তারাও তো মানুষ ... বাসায় এসে ছেলেটা আর মেয়েটাকে যা নয় তাই বলবে, বকবে, কাঁদবে !!
রাত বাড়বে ... খুব সাবধানে ওড়নাটা গলায় পেচিয়ে ফাঁস দেয়ার প্রস্তুতি নেয় মেয়েটা ... ঘুমের ওষুধটা হাতে তুলে নেয় ছেলেটা !!
যেই টাকাটা বাবা গুছিয়ে রাখছিলো মিষ্টি কেনার জন্য, সেই টাকাটা পরদিন সন্তানের কাফনের কাপড় কেনার জন্য খরচ করতে হলো !!
দুইটা জীবন শেষ ... গল্পও শেষ !!
আচ্ছা ... এইবার গল্পটার একটু পিছনের দিকে ফিরে যাই ...
ছেলেটার দুনিয়াটা ছোট হয়ে আসে ... মেয়েটার মা-বাবা কাঁদতে থাকে ... পৃথিবীটা অনেক বেশি অসহনীয় লাগে তখন ... জীবনটা অর্থহীন মনে হয় ... আসলেই তো ... ২ বছর লেখাপড়া করার পর ক্লাসের সবাইকে যখন আনন্দের চিৎকার করতে দেখবা, চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা হবে না ??
তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডগুলার যখন হাতের আঙ্গুল দিয়ে "V" দেখাবে, তখন ঐ হাত দিয়ে মুখ চেপে কাঁদতে কি পরিমাণ কষ্ট হবে, সেইটা দুনিয়ার কেউ বুঝবে না ... কেউ না !!
বাবা-মা বাসায় এসে ছেলেটা আর মেয়েটাকে যা নয় তাই বলবে, বকবে, কাঁদবে !!
রাত বাড়বে ... প্রচন্ড জিদে মেয়েটা তার মোবাইল টা ছুড়ে ফেলে দেয় ... ছেলেটাও ফেইসবুক আইডিটা ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেয় ... ডিঅ্যাক্টিভেট করার আগে স্ট্যাটাস দেয়ঃ
"DEAR PARENTS !! ONE DAY I'LL MAKE YOU PROUD ... PROMISE !!"
পরদিন প্রচন্ড জিদ নিয়ে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে সারাদিন পড়তে থাকে ... কোচিং এ সবাই তাদের "আঁতেল" বলে ... ওরা মুচকি হাসে !!
ঠিক চার মাস পর অ্যাডমিশন টেস্টের রেজাল্ট বের হয় ... চার মাস আগে বাবা যেই টাকাটা গুছিয়ে রেখেছিলেন মিষ্টি কেনার জন্য, আজ চার মাস পর সেই টাকায় ২০ কেজি মিষ্টি কেনা হয় !!
আজও মেয়েটা কাঁদছে ... আনন্দে !!
আজও ছেলেটা চিৎকার করছে ... আনন্দে !!
"আপনার মেয়ে ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে ?? কংগ্রেটজ ভাই !!"
"আপনার ছেলেটা বুয়েটে টিকছে ?? মাশআল্লাহ !!"
বাবা-মা এর মুখে ১০০ ওয়াট বাল্বের মত হাসি ... পৃথিবীটা তখন অনেক বেশি সুন্দর !!
গল্পটা শেষ ... হ্যাপি এন্ডিং !!
প্রথম গল্পটা গল্প হিসেবেই থাক ... দ্বিতীয় গল্পটা সত্যি হিসেবে দেখতে চাই !!
জীবনটা সস্তা না ... ৩ ঘন্টার কয়েকটা পরীক্ষার জন্য তুমি জন্মাও নাই, তাইলে ৩ ঘন্টার কয়েকটা পরীক্ষার জন্য মরবা কেন ??
সবার মুখেই হাসি ফুটবে ... কারো মুখে একটু আগে ফুটবে, কারো মুখে একটু পরে ... কিচ্ছু লাগবে না ... শুধু একটু অপেক্ষা করো ... দাঁতে দাঁত চেপে একটু অপেক্ষা করো ... একটু অপেক্ষা !!"