somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জান্নাত তো বেশী দুরে নয়।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


- আহমাদ মোস্তাফা
খোলা কলম হাতে এগিয়ে আসছে লোকটা। কাছে এসে বলল, চোখ খোল কুত্তার বাচ্চা। আমি তোর চোখ দিয়ে মার্বেল খেলমু।
তারপর একহাতে আমার মাথা চেপে ধরে অন্যহাতের কলমটা চোখের ভিতর ঢুকিয়ে দিল লোকটা। আমি চিৎকার করলাম বুক ফাটিয়ে। আমার চিৎকার শুনে একটু দুরে দাড়ানো বাকি দুজন পিশাচের মত হেসে উঠল হো হো করে।
আমার হাত পা চেয়ারে বাধা। ইলেক্ট্রিক শক দিতে দিতে ওরা আমার শরীরের সমস্ত রক্ত চুষে নিয়েছে। বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে মৃত্যুর মুখে দাড়িয়ে দেখে নিচ্ছি মানুষের বিভৎস রূপ।
আমার চোখ হীন কুটুরী থেকে গল গল করে ঝরে পড়ছে রক্ত। গাল বেয়ে একটা উষ্ণ স্রোত অনুভুত হচ্ছে।
আমার অন্য চোখটি এখনো কাজ করছে। সেই চোখ মেললাম অলতো ভাবে। ওদের আরেকজন লোক এগিয়ে আসছে। তার হাতেও কি যেন আছে।
হঠাৎ মনে হলো আমার হাতের আঙ্গুল গুলো ফেটে যাচ্ছে। চোখ মেলে দেখলাম বড় বড় কাথা সেলাইয়ের সুচ ঢুকিয়ে দিচ্ছে আমার আঙ্গুলে।
আমি আবার চিৎকার করি। ওরা আবার অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।
লোকটা উঠে দাড়ালো। আমার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন। তারপর আমার মুখের উপর একের পর এক ঘুসি চালাতে শুরু করলো।
আশ্চর্য! এখন আর আঘাতকে আঘাতের মত মনে হচ্চেনা। মুখের উপর অনবরত ঘুসি চালাচ্ছে লোকটা। তবুও কোন ব্যাথা অনুভুত হচ্ছেনা।
তাহলে কি আমি শহীদ হয়ে যাচ্ছি। শুনেছি শহীদের মৃত্যুর সময় কোন কষ্ট হয় না।
লোকটার ঘুসি বৃষ্টি থেমে গেছে। আমার নাক, কান দিয়ে উষ্ণ রক্ত বের হচ্ছে।
সে আমার মাথার চুল টেনে ধরে বলল, এবার বল কুত্তার বাচ্চা আমাদের কথা মত চলবি নাকি এখনো তুই ওসব কথা প্রচার করবি।
আমি মুখ তুলে থাকালাম লোকটির দিকে। সে আবার বলল, এখনো সময় আছে। তোর কথা তুলে নে। আমাদের কথায় চল। তাহলে প্রানে বেচে যাবি।
আমি অস্ফুট স্বরে বললাম, ইন্নাস সলাতি, ওয়া নুসুকি, ওয়া মাহাইয়া, ওয়া মামায়াতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।
লোকটি আমার মুখে আবার ঘুসি চালাল। তারপর বলল, বাংলা বল, বাংলা।
আমি ধীরে ধীরে বললাম, নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ শুধু মাত্র আল্লাহ জন্য।
আমার কথা শুনে লোকটি আমাকে ছেড়ে দিল। তারপর অন্যদের কাছে ফিরে গিয়ে কি যে বলাবলি করল।
আমি দেখতে পেলাম ওদের একজন হাতে একটা লোহার মুগুর নিয়ে তেড়ে আসছে আমার দিকে।
এইতো লোহার মুগুরটা উপরে তুলছে। তারপর প্রচন্ড ভালোবাসা নিয়ে নেমে আসছে আমার মাথা বরাবর।
ওরা আমাকে একটা মাইক্রো করে নিয়ে এসেছে একটা খোলা জায়গায়। জায়গাটা আমার চেনা। কতবার এখানে এসেছি। বন্ধুদের সাথে খেলেছি। আড্ডায় মেতেছি কত বিকেল।
ওরা আমাকে ফেলে দিল ঘাসের উপর। তারপর একজন কোমর থেকে পিস্তল বের করে কয়েকবার গুলি চালাল আমার লাশে।
আমার দেহের সমস্ত রক্তবিন্দু বের হয়ে রাঙ্গিয়ে দিচ্ছে সবুজ ঘাস। যেন একটি বাংলাদেশ।
চেয়ে দেখ আমার চোখহীন চোখের কুটুরী, আমার ভেঙ্গে দেওয়া হাত, সুচ ফুটানো আঙ্গুল, থেতলে দেওয়া মাথা আর রক্তের প্রতিটি লোহিত কণা চিৎকার করে সেই কথা বলছে।
চেয়ে দেখ, আমাদের কথাগুলোকে এমনি করে বহুদিন, মুছে দিতে ওরা কেউ পারেনি।
collected
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×