অশ্লীল যৌনতা: প্রশ্ন যেখানে দৃষ্টিভঙ্গির
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে রাসেল কবির। উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করে প্রথমে গণপিটুনি, এরপর গলায় জুতার মালা পরিয়ে ও মাথা ন্যাড়া করে বিদ্যালয় এলাকা ঘোরায়। প্রথমেই বলে রাখি- ঘটনাটি দেশে প্রথম নয়। এমন ঘটনা এখন অহরহই ঘটছে। ঢাকার পরিমল ও কুষ্টিয়ার পান্না মাস্টারের সব অপকর্ম প্রকাশ হয়ে পড়ার পর সারা দেশ নড়ে উঠেছিল। প্রশাসন ও মিডিয়ায় ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে সে সময়। কারণ, সত্যিই তখন বিষয়টি ছিল অবাক করার মতো। কোন শিক্ষক যে এতটা নীচে নামতে পারে তা অনেকেই তখন ভাবতে পারে নি। কিন্তু পরবর্তীতে এমন ঘটনার বেশকিছু পুনরাবৃত্তি আমরা দেখেছি। যেগুলি মিডিয়াই এসেছে শুধুমাত্র সেগুলিই আমরা জানতে পেরেছি কিন্তু আমাদেরই অগোচরে এখনও শত শত পরিমল-পান্না মাস্টার এমন অপকর্মে যে লিপ্ত রয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। যার প্রমাণ দিল এই রাসেল কবির।
প্রায় প্রতি দিনই পত্রিকার পাতায় যৌন হয়রানীর ঘটনা চোখে পড়ে আমাদের, যেন এটা আমাদের দেশে অতি সাধারণ ঘটনা হয়ে গেছে। এ খবরগুলি পড়ে কেউ ছি ছি করছে, কেউ সমাজকে দুষছে, কেউবা পৈশাচিক আনন্দ নিচ্ছে। কিন্তু এর কোন প্রতিকার, প্রতিরোধ হচ্ছে না। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। অবশ্য প্রতিকার বা প্রতিরোধের পূর্বে যে প্রশ্নটি আসে তাহলো বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার হওয়া। আমি যদি বুঝি যে, আমার সামনে যে কাজটি হচ্ছে তা অন্যায়-অরুচিকর, তাহলেই তো আসে প্রতিরোধের প্রশ্ন। কিন্তু সত্যই কি আমরা বিষয়টিকে সেভাবে দেখি? এ ঘটনাগুলির জন্য প্রথমত দায়ী অশ্লীল জীবনাচার। অশ্লীলতার যত প্রসার ঘটবে যৌন হয়রানীর ঘটনাগুলির পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে তত বেশি। হ্যাঁ, পত্র-পত্রিকা ও লোকমুখে বিষয়টিকে নিয়ে ছি ছি করতে দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু সেই পত্র-পত্রিাকাকেই যখন দেখি অশ্লীলতার বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হতে, বাঙালির চিন্তা চেতনা ও সংস্কৃতি পরিপন্থী কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে তখন অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রশ্ন তুলতে হয়, আমরা যেটাকে অশ্লীলতা বা অপকর্ম বলছি তা কি অন্তর থেকে বলছি নাকি লোকভয়ে বলছি? এ ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার আছে তো?
বিষয়টি বোধহয় আরও একটু পরিষ্কার করা দরকার। যে ধরনের শারীরিক সম্পর্ককে আমরা সাধারণত অবৈধ সম্পর্ক হিসেবে বিবেচনা করছি, পাশ্চাত্যে কিন্তু তা অবৈধ নয়। এসকল কর্মকাণ্ড সেখানকার আইন দ্বারা সিদ্ধ। এতে বাধা দেওয়ার অর্থ হলো সে দেশগুলোর প্রচলিত আইন অমান্য করা, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অর্থাৎ, যে কাজটি আমাদের চোখে ঘৃণিত, ধিকৃত ও অরুচিকর, একই কাজ অন্য এক বিরাট জনগোষ্ঠির কাছে নৈতিক ও আইনগত উভয়ভাবেই বৈধ।
সুতরাং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আগে ঠিক করতে হবে। বুঝতে হবে, সমস্যা কেবল ঐ পরিমল বা রাসেল কবিরদের নয়, সমস্যা হলো দৃষ্টিভঙ্গির। ব্রিটিশ শাসনের আগ পর্যন্ত আমাদের এক ধরনের সংস্কৃতি ছিল, পরবর্তীতে ব্রিটিশ আমল ও বর্তমান পাশ্চাত্য প্রভাবিত আমলে অন্যরকম সংস্কৃতির হাওয়া বইছে। তখন আমাদের পাশ্চাত্যের পেছনে কোন আকর্ষণ ছিল না, তাদের সকলকিছুই ঠিক- এমন দৃষ্টিভঙ্গি তখন আমাদের কারোরই ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসন ও চক্রান্তের শিকার হয়ে আমরা অনেকটা নিজেদের অজান্তেই পশ্চিমা অনুরাগী হয়ে পড়ি। দিন যতই যায় ততই আমাদের পশ্চিমের প্রতি টান বাড়ে বৈ কমে না। তাদের তৈরি রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, বিচারিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সিস্টেম এখন আমাদের ঘাড়ে। আর যে কোন জাতিরই সংস্কৃতি অনেকাংশেই প্রভাবিত হয় ও পরিবর্তিত হয় সে জাতির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সিস্টেমের দ্বারা। ফলে আমরা আজ শুধু পশ্চিমা জীবনব্যবস্থারই অন্ধ অনুসারী নই, পশ্চিমা সংস্কৃতিরও অনুসারী বটে। আমরা এটা বুঝতে সক্ষম হই নি যে, আমাদের ধ্যান-ধারণা, কৃষ্টি-কালচার আর পশ্চিমাদের কৃষ্টি-কালচার শুধু যে পৃথক তা-ই নয়, একেবারে বিপরীতমুখী। এটা বুঝতে পারি নি বলেই আমরা এতদিন যাবৎ জোর করে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে খাপ খাওয়ানোর বৃথা চেষ্টা করে চলেছি। ফল হয়েছে এই যে, আমরা না পশ্চিমা হয়েছি, না নিজেদের স্বতন্ত্রতা-স্বকীয়তা বজায় রাখতে পেরেছি। ওদিকে মাঝখান থেকে সৃষ্টি হয়েছে পরিমল, পান্না মাস্টার বা রাসেল কবিরদের মতো হাজার হাজার ব্যক্তিত্ব, যারা জাতে বাঙালি হলেও সংস্কৃতিতে পশ্চিমা। আমরা যেটাকে জঘন্য কর্মকাণ্ড মনে করে ছিঃ ছিঃ করছি সেটা কিন্তু এই রাসেল কবিরদের কাছে জঘন্য নয়। সে জানে- আমরা পশ্চিমাদের অনুসারী, তাদের মতো জীবন গড়ার উদ্দেশ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি, কাজেই শারীরিক প্রয়োজনে পশ্চিমারা যেমন অবলীলায় এসব করে যাচ্ছে সেখানে আমরা করলে অন্যায় হবে কেন? হ্যাঁ, পাশ্চাত্যের অন্ধভক্ত আমাদের মতো প্রাচ্যের অনগ্রসর জাতিগুলো আইনগতভাবে হয়তবা এই কাজকে এখনও বৈধতা দেয় নি, কিন্তু নৈতিকভাবে সেটা বৈধতা পেয়ে গেছে অনেক আগেই।
কাজেই সকলপ্রকার অন্যায় থেকে, অপকর্ম থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে প্রথমেই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। আমাদের ন্যায়-অন্যায়ের মাপকাঠি হতে হবে স্রষ্টার আদেশ-নিষেধ। অর্থাৎ স্রষ্টা যেটাকে নিষেধ করেছেন সেটা পৃথিবীর সকল মানুষও যদি বৈধতা দেয় তবুও সেটা অবৈধ, অন্যায় আর স্রষ্টা যেটাকে বৈধ বলেছেন সেটা পৃথিবীর সকল মানুষ অবৈধ বললেও প্রকৃতপক্ষে সেটা বৈধ। এই দৃষ্টিভঙ্গি যদি আমরা সৃষ্টি করতে পারি তবে যে কোন ধরনের অন্যায় সমাজ থেকে দূর কারার জন্য প্রথম সোপানে আমরা পা রাখলাম।
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন