সৃষ্টির আদিকালে অর্থাৎ বিজ্ঞানের জ্ঞান থাকার আগে যখন মানুষ আকাশে চাঁদ তারা দেখতো তখন ভাবুক অথবা কবি মন এর সৌন্দর্য বর্ণনা ও নানা উপমায় কবিতা লিখত( কবিমন সর্বকালেই সৃষ্টির সৌন্দর্য অথবা অসৌন্দর্য নিয়ে রূপ উপমায় শব্দ নিয়ে খেলতেই বেশী ভালোবাসে, যেমন – নজরুল লিখেছে “খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে” এখানে কবিত্ব যেমন রয়েছে, তেমনি দর্শন চিন্তাও রয়েছে)।
দার্শনিক নানা প্রশ্নে মস্তিষ্কে ঝর উঠিয়ে দেয় এই মহা বিশ্ব ও সৃষ্টির আদিঅন্ত জানার জন্য । এই দার্শনিক চিন্তাবিদের মধ্যে এক অংশ এই প্রশ্নগুলোর আধ্যাত্মিক সমাধান খোঁজে , আরেক অংশ যুক্তি এবং প্রমাণ খোঁজে । যুক্তি এবং প্রমাণ থেকেই আসে বিজ্ঞান। আর আধ্যাত্মিক মুক্তি অথবা সমাধান থেকে আসে ধর্ম তথা জীবন বিধান, নৈতিক মূল্যবোধের চিন্তা ইত্যাদি। বিজ্ঞান হচ্ছে প্রমাণিত সত্য আর ধর্ম হচ্ছে আধ্যাত্মিক মুক্তি এবং বিশ্বাস, এখানে সত্য কিংবা অসত্য প্রমাণ করার কিছু নেই। কাজেই ধর্ম কখনোই বিজ্ঞানের সংজ্ঞায় পড়ে না।
মানব জীবনে আধ্যাত্মিক মুক্তি, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের শিক্ষা খুব প্রয়োজন। তা না হলে মানুষ এ পৃথিবী বহু আগেই ধ্বংস করে ফেলত।মানুষ নামের পশুদের সত্যিকার অর্থে মানুষ করার জন্য ধর্মের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাথে সাথে বৈজ্ঞানিক ভাবে সঠিক প্রমাণাদি সহকারে এই বিশ্বভ্রমান্ডকে জানাটাও খুব জরুরী। তবে ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে যখনই রাজনীতি প্রবেশ করে তখনই এর সঠিক গুণাগুণ পণ্ড হয়ে যায়। যেমনটি হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলার স্কুল শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে নিয়ে। ঐ স্কুলের শিক্ষার্থীদের আচরণে সত্যিই অবাক হয়েছি। মাঝে মাঝে freedom of expression এবং আধুনিক টেকনোলজির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বেশ ক্ষতিকারক।
আরেকটি ব্যপার হচ্ছে শিশুকিশোরদের শিক্ষককে অনেক বেশী দক্ষ হতে হয়। যে কোন educational material নিয়ে শিক্ষক যখন কাজ করবেন তখন সেটা অনেক বেশী অরগানাইজ এবং সুচিন্তিত হতে হবে। বিজ্ঞানের ক্লাসে ধর্ম নিয়ে যখনই কথা উঠছে, তখন চিন্তা ভাবনা না করে উত্তর দেয়া উচিত হয়নি । বিজ্ঞান ধর্ম থেকে এসেছে নাকি কোথা থেকে এসেছে – এরকম ফিলোসফিকাল প্রশ্নের উত্তর চট করে বাচ্চাদের সাথে না করাই ভালো। কারণ শিশু -কিশোরদের মন কাদা মাটির মত থাকে। তাদেরকে এখন গঠন করার সময়, সঠিক শেইপ দেয়ার সময়।এতোটুকু ভুল হলে তাদের লার্নিং প্রসেস ভুল পথে যেতে পারে । যাই হোক, ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালোর দিকে যাচ্ছে না। তারাই তো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তারাই তো দেশের কল কাঠি নাড়াচাড়া করবে এক সময়। তারা এতোটা বেয়াদব হলে কেমন করে হবে!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ৮:৩৪