‘তুমি কি তার ভয়ার্ত চোখটা দেখেছিলে
তুমি কি সে বিকট বোমার শব্দ শুনেছিলে
আগ্নি শিখা সেতো দ্রুতই নিভে যায়
কিন্তু কষ্টগুলো দিনের পর দিন বয়ে বেরাতে হয়।
বিদায় হে নীল আকাশ’
পিঙ্ক ফ্লয়েড ‘গুড বাই ব্লু স্কাই’ এই গানটা গেয়েছিল নিজেদের অন্তরের দায়বদ্ধতা থেকে। গান গেয়ে দুচার পয়সা কামানই যে সবার উদ্দেশ্য নয় সেটা পিঙ্ক ফ্লয়েড , বিটলস, বব ডিলানরা বুঝাতে পেরেছিলেন। চোখের সামনে নিজেদের ধংস হতে দেখতে কার ভাললাগে? ঘর ভাঙ্গা তো দেখা যায় কিন্তু মন ভাঙ্গার খবর কয়জন রাখে। বাংলায় এমন একটা গান আছে
‘বনের আগুন দেখে সবাই মনের আগুন অন্তরায়
যার ব্যাথায় সে নিজেই ব্যাথি অন্য জনের বোঝা দায়’
প্রতিদিন কতো শত মন ভেঙ্গে পড়ছে পৃথিবীর আনাচে কানাচে, কতো দীর্ঘশ্বাস ঘুরে ফিরছে বাতাশে। জানি এ ভাবে চলতে থাকলে চিরচেনা এই নীল আকাশকে একদিন নিশ্চিত বিদায় জানাতে হবে। পুরো আকাশ জুড়ে থাকবে ধুল ময়লা। গাছগুলো ভালোবাসা না পেয়ে মরে যাবে, গাছের শোকে বৃষ্টি হবে না। আমি আর কখনই বর্ষায় অফিস গিয়ে কাজের অবসরে ঝুল বারান্দায় বসে অপরাজিতা দেখতে পাবোনা। কতো সময়ই যে তাকে দেখে পার করেছি। নীল কণ্ঠ তার আর এক নাম। প্রকৃতির মাঝে এতো গাড় নীল আমি আর কোথাও খুজে পাইনি। সেই নীল কোন কিছুরই তুল্য নয়। স্বর্গীয় নীল।বেহেস্তের দরজায় আমি এই ফুলই কল্পনায় দেখি। বর্ষায় আমার অফিসের বিবর্ণ ঝুল বারান্দায় নতুন প্রান হয়ে আসে সেই অপরাজিতা। আমি বুদ হয়ে কাজে ফাঁকি দিয়ে বসে সেই সুধা পান করি। চারিদিক অন্ধকার করে ঘন বৃষ্টি যখন আসে সেই নীল কণ্ঠ নীল উজ্জ্বল আলো হয়ে অন্ধকারে জ্বলতে থাকে। মুশুল ধারে বৃষ্টি ঝরার শব্দ মনে আফিমের নেশা এনে দেয়। আফিম কোনদিন খাইনি কিন্তু গাজা খেয়েছি দুএকবার। মাথা ঝিমঝিম করে বৃষ্টির সেই তালে। কল্পনায় ডুব দেয় মন তখন। অপরাজিতারা আমার মনের গভীর নীলের প্রশান্তি হয়ে টিকে থাকে!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৭