র্যাপাররা এক ধরণের প্রতিবন্ধী। বলা যায় বাক্য প্রতিবন্ধী।তারা কোনো শব্দ বা বাক্য ঠিক মত উচ্চারণ করতে পারেন না।সাথে সাথে খুব অসুস্থও। মানসিক ভাবে অসুস্থ আর কি। F**k ছাড়া মূলত কোনো শব্দ নেই তাদের মধ্যে। এই মানসিক বিকারগ্রস্ত র্যাপার সম্প্রদায় গালিকে তাদের সমাজে শিল্পে পরিনত করেছে। তাদের উচ্চারণ খুব দ্রুত।কিন্তু কখনোই তাদের উচ্চারণ একবারে আয়ত্তে নেয়া যায় না। মাঝে মাঝে র্যাপার সম্প্রদায়ের লোকজনই মনে হয় বুঝতে পারে না আসলে তারা কি বলতে চায়। তাদের চলাফেরাও স্বাভাবিক মানুষের মত নয়, অস্বাভাবিক। সোজা হয়ে চলতে পারে না।গিন্নি মুরগীর মত লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটে।
#এমিনেম বিশ্বের অন্যতম সেরা র্যাপার।তার র্যাপ গান যদিও ১০ বার শুনেও আমার মত অনুর্বর মস্তিষ্কের লোক কিঞ্চিতও আয়ত্ত করতে পারে না, তারপরও যদ্দুর শুনেছি বা বুঝেছি, প্রতিটা গানেই মেসেজ থাকে। রোমান্টিক বা প্রতিবাদ।গালিগালাজ ও থাকে তবে কম। তিনি একটা আদর্শ। আমাদের দেশিও কয়েকটা র্যাপ গান শুনলাম; সাধারণ কথার থেকে উক্ত র্যাপ সং এ গায়ক সাহেব বাবা মা ও তাদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতেই ব্যস্ত! মনে হয় গানের মধ্যেই সব রাগ ঝারতেছে। সাথে বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গের নামের তো ছড়াছড়ি। ছোট সময় আমার শহরের কাজিনরা গ্রামে আমাদের বাড়িতে গেলে এগুলো নিজেরা শুনত আমাদের শুনতে দিত না। এখন বুঝি কেন দিত না।
যাই হোক প্রতিবন্ধীদের কথায় আসি।আসলে এসবের মূখ্য উদ্দেশ্য কি? সংস্কৃতি ধ্বংস? জ্বী। আজ থেকে কয়েকবছর পর আর বাংলা থাকবে না। কারণ ব্যাকডেটেড হয়ে গিয়েছে বাংলা গান। আমি এসব কথা বলছি। আমাকে তো বলবেই পাঁজরভাঙা বুড়ো। তারা উপদেশ দেবে,'গ্রো আপ ম্যান,আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে চলো।' আসলেই!স্বাধীনতার মাত্র ৪৪ বছর হল। এত কম বয়সেই দারুণ পেকে গিয়েছি আমরা। আমাদের যুগের ছেলেপেলেরা তো ঠিক মত 'প্রিন্স মাহমুদ'কেই চেনে না।
ঠিক আধুনিক হতে গিয়ে অন্যের সংস্কৃতির মধ্যে ডুব দিয়েছি আমরা। খারাপ লাগে তখন,আমার দেশের অন্যতম সেরা ট্যালেন্ট 'অর্ণবদা' তার এলবাম হাতে হাতে গিয়ে গিয়ে বিক্রি করে। সে দেশে বিদেশী অরিজিৎ সিং এর কনসার্টে হাজার হাজারটাকা খরচ করে মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।
আমার এক বন্ধু আছে,সে বলে বাংলা গান নাকি ক্ষ্যাত এ শোনে। কথাটা সে স্বীকার করলেও অনেকে মনে মনে এটাই ভেবে নিয়েছে,মেনে নিয়েছে। বিদেশী গান শোনা স্মার্টনেস।দেশী গান শোনা ক্ষ্যাত।অনেকেরই প্রিয় গান 'I'm so lonly broken angel'. ঠিক এই লাইনটির পর বাকি যে কি বলে বা কোন ভাষায় বলে সেটাও বুঝি না। এটা কারো দারুণ প্রিয়।কিন্তু, আমাদের দেশে এর থেকে অনেক ভালো জিনিস আছে।আমার এক কাছের বন্ধু,গানে দারুণ পটু। অসাধারণ দক্ষতা তার, গানের গলাও জব্বর। মজার ব্যপার সে কোনো বাংলা গান ঠিক মত জানে না জাতীয় সংগীত ছাড়া। সে মনে করে বাংলাদেশের গানের নাকি কোনো মান নেই। সেজন্য সে দিন রাত হিন্দি গান ভক্ষন করে।
এই হচ্ছে আমাদের অত্যাধুনিক সমাজ। আমাদের সৃষ্টিশীল সমাজ। ভবিষ্যৎ!
একসময় যদি বাংলা ভাষাটা হারিয়ে যায়, বলার কিছু থাকবে না। আমাদের যথেষ্ট আছে। কিন্তু জাতি হিসেবে ইচোঁরেপাকা।
সবশেষে একটি কথা বলি, আপনি বা আপনারা আধুনিক হোন, কিন্তু অন্যের সংস্কৃতি বিক্রি করে আধুনিক হওয়া ঠিক মানায় না। নিজের দেশের গানগুলো দিয়ে নতুন করে কাভার দিন, আপনি নতুন করে গান লিখুন আর গেয়ে যান প্রাণ খুলে।