আহ্, এই রাস্তাটা? এখন মনে হচ্ছে কাপড় থেকেও ময়দা বেরুবে! হ্যাঁ, আজ এমনই এক রাস্তার গল্প নিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে! এই টেরাটাক্কা রাস্তার কাজ নাকি এই জানুয়ারিতেই শুরু হবে! কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। তো, আমাদের বাঙ্গালিদের দোষটাই এমন যে- সবকিছু নিয়ে আমরা প্রথমে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা শুরু করে দেই! তো চলুন আজ এসব কিছু ঝেড়ে ফেলে ভোল পাল্টে অন্তত এই রাস্তাটা নিয়ে কিছু ইতিবাচক চিন্তা করি...
১/ বলছিলাম ময়দার কথা! পরে ভেবে দেখলাম, এই রাস্তার ধারে জমানো ধূলোর স্তুপগুলো হলুদ হিসেবেও বেশ মানিয়ে যায়! তো এই মহামূল্যবান প্রাকৃতিক "হলুদ সমগ্র" প্যাকেটজাত করে অনায়াসেই বিশ্বের বিভিন্ন জনবহুল দেশে রপ্তানি করা সম্ভব! এতে করে যেমন একদিকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার হাতছানি পাওয়া যাবে অন্যদিকে বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে! যার কৃতিত্ব পাবে বাংলাদেশ, পাবে এই প্রাকৃতিক "হলুদ সমগ্র"!
২/ এই ভাঙ্গাচোরা ও ধূলোবালিপূর্ণ রাস্তাটাই হতে পারে আমাদের ঐতিহ্যবাহী এফডিসির একটি নতুন শাখা! তাতে আমাদের বাংলা ছবিগুলো নতুনত্ব পাবে! আজকাল অনেক ছবিতেই দেখা যায়- নায়ক নায়িকাকে নিয়ে পালাচ্ছে! তাদের পিছু ধাওয়া করছে ভিলেন, সে কি দুর্গম পথ বাপরে! নায়ক নায়িকা সমেত উতরে গেলো ঠিকই কিন্তু ভিলেন বেচারার দলবল বোঝাই গাড়িটা সেই দুর্গম রাস্তায় উল্টে চিপড়ে ঘূর্ণি খেতে খেতে একাকার! এখন যদি ছবির পরিচালক তার এই ধরণের ছবির শর্টগুলো ধারণ করার জন্য এই রাস্তাটিকে বেছে নেন তাহলে আরো কিছু নতুন সুবিধে পাবেন! যেমন-
ক/ অপ্রতিরোধ্য ধূলোবালি! যা তখন এ্যানিমেশন হিসেবে কাজ করবে। তাতে বাড়তি এ্যানিমেশন ইফেক্ট ব্যাবহার করার প্রয়োজন পড়বে না! খরচ বাঁচবে!
খ/ এই রাস্তার ভাঙ্গাচোরা খানাখন্দগুলো উদ্দেশ্যহীন ভাবেই সৃষ্ট! একদমই প্রাকৃতিক! কাজেই নায়ক-ভিলেনের এই ইদুর বিড়াল রেসটি দর্শক মন জয় করবে বলেই আমার বিশ্বাস!
গ/ শুটিং প্লেস হিসেবেও এই রাস্তাটা নতুন, কারণ আগে এই রাস্তাতে কোনো ছবির শুটিং হয়নি! ফলে চমকের পরে চমক তো থাকছেই!
৩/ আপনারা সবাই নিশ্চয়ই ঝালমুড়ি খেতে খুব পছন্দ করেন? কিন্তু সত্যি কথা হলো- সব ঝালমুড়িওয়ালারা ঝালমুড়ির উপাদানগুলো ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে মিক্স করতে পারে না! তাতে অনেকেই ঝালমুড়ির আসল স্বাদ থেকে বঞ্চিত থেকে যান! তাতে অবশ্য ঝালমুড়িওয়ালদের কোনো দোষ দেওয়া যায় না! কারণ তারাও সারাদিন এই ঝালমুড়ির ডিব্বা থাপড়াতে থাপড়াতে হাত দুটোকে ক্লান্ত করে ফেলেন! আমি এর একটা সলুশ্যন বের করেছি!
একটা ট্রাকের উপর বিরাট একটা ঝালমুড়ির ডিব্বা ফিটিং করে তাতে ঝালমুড়ির সব উপাদান ভরে এই ট্রাকটাকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে এয়ারপোর্ট-বাইপাস পয়েন্টের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে! রাস্তায় ঝাঁকি খেতে খেতে যখন ট্রাকটি বাইপাস এসে থামবে ততক্ষণে বোধহয় ঝালমুড়ির ডিব্বার ভেতরের সব উপাদান তালগোল পাঁকিয়ে এক জটিল ঝালমুড়িতে রূপ নেবে!( আমার তো জিভে এখনই পানি এসে যাচ্ছে!) তারপর এই ঝালমুড়ি নামমাত্র মূল্যে জনসাধারণের কাছে বিলি করা হবে! বিনোদন আর মজা মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে! আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয়, যিনি ব্যাপক বিনোদনের জন্যে সুরমাগাঙ্গে ভাসমান বিনোদনের ডিব্বা চালু করেছেন উনার কাছে এই ঝালমুড়ির প্রজেক্ট চালু করা কোনো ব্যাপারই না!!
_____________________
পরিশেষে,,,,, এই কথাটাই বলতে চাই-
আমাদেরকেও একটু সুযোগ দেওয়া হোক যাতে করে অন্যেরা যখন প্রশ্ন করবে-
"তোমার জামা থেকে এরকম পাউডার? তুমি না ওই রাস্তা দিয়েই আসো?" তখন যেন বুক ফুঁলিয়ে বলতে পারি- "আমি ওই রাস্তা দিয়েই আসি না! আমি ওখানেই থাকি!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০০