আমি সাধারন আম-পাবলিক। খাই, দাই, ফেসবুকে আইসা ভালো আছি-ভালো থেকো টাইপ স্ট্যাটাস দেই আর জনতার প্রসবকৃত স্ট্যাটাসে লাইক দেই। ব্লগে অনিয়মিত হবার পর থেকে নতুন কোন ইস্যুতে কীবোর্ড ভাংগার অভ্যাসও এখন আর নেই। কিন্তু আজকে একটা নতুন ইস্যুতে কীবোর্ড ভাংতে ইচ্ছে হল। তাই লিখছি। যেহেতু আমরা ফেসবুক জেনারেশন তাই আমাদের সবকিছু আজকাল ফেসবুকেই চলে। আমি নিজেও এর ব্যাতিক্রম নই।
আজকে ফেসবুক থেকেই জানতে পারলাম যে এবারের এসএসসি বাংলা প্রথম পত্র পরিক্ষায় সৃজনশীল (!) প্রশ্নপত্রের দুই নাম্বার প্যারার প্রথম লাইনে লেখা, " জাহেদ সাহেব একজন লোভী ডাক্তার" ! আর এটা নিয়েই যতো তর্ক-বিতর্ক। এখানে ডাক্তারি পেশাকেই কেন নির্দিষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে? প্রশ্নে "লোভী ডাক্তার" না লিখে "লোভী মানুষ" লিখলেই তো হয়ে ঝামেলা হতো না! সেখানে কেন একটা নির্দিষ্ট প্রফেশন তুলে রেসিজমের সৃষ্টি করলেন আমাদের শিক্ষক মহোদয়েরা? আমরা ছোটবেলায় পড়তাম ডাক্তারি আর শিক্ষকতা দুটি মহান পেশা। তাহলে কেন এখন ডাক্তারি পেশাকে ছোট করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হল? অনেকেই বলছেন এই সামান্য ছোট ইস্যুতে এতো চিল্লাচিল্লির কি আছে? আচ্ছা মানলাম ব্যাপারটা ছোট। কিন্তু যদি এমন করে লেখা হতো যে, " জাহেদ সাহেব একজন লোভী শিক্ষক। তিনি ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাসায় ব্যাচের পর ব্যাচ প্রাইভেট পড়িয়ে আর প্রশ্নপত্র ফাঁস করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।" তখন আমাদের শিক্ষক পেশাজীবীদের মনে কি একটুও কষ্ট লাগতো না? তখন কি শিক্ষক মহোদয়েরা এর প্রতিবাদ করতেন না? ভালো খারাপ সব মিলিয়েই মানুষ। আর তাই সব প্রফেশনেই ভালো খারাপ মানুষ আছেন। তাই বলে ঢালাওভাবে কোন কিছু বলা ঠিক বলে আমি মনে করি না।
এবার একটু অন্যদিকে যাই। আজকে এই ঘটনা দেখার পর আমার মনে শুধু একটাই প্রশ্ন জাগছে আসলেই আমাদের শিক্ষক মহোদয়েরা কি সৃজনশীল পাঠ্যক্রমের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পেরেছেন? যদি উত্তর না হয় তবে তাদেরকে সৃজনশীল বিষয়ে আরও ট্রেনিং দেবার প্রয়োজন আছে। আর যদি হ্যাঁ হয় তবে বলবো এমন সৃজনশীলের থেকে আমাদের সময়কার মুখস্তবিদ্যার পরিক্ষাই ভালো ছিল।
সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।