ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং কি?
মাদকের জগতের নতুন এক নাম ডান্ডি। স্থানীও ভাষায় এটা ডান্ডি নামেই সুপরিচিত। ইংরেজিতে একে গ্লু স্নিফিং ( glue sniffing ) বলে। নামটা শুনতে বেশ মজার আর কৌতুহলপূর্ণ হলেও এই জিনিসটা কিন্তু মোটেও মজার নয়। বরং খুবই মারাত্মক একটা নেশার দ্রব্য।:-&
গ্লু মানে হল গাম বা আঠা আর স্নিফিং মানে হল আঘ্রান বা জোরে জোরে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে টানা। তার মানে দাড়ায় যে জোরে জোরে নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে আঠার যে ঘ্রান থাকে তা নাকের মধ্যে নেওয়ার নামই হল গ্লু স্নিফিং। তবে একে ডান্ডি বলা হয় কারণ, এই কাজে আমাদের দেশে সাধারণত ডেনড্রাইট অ্যাডহেসিভ নামক ভারতীয় সস্তা গাম ব্যাবহার করা হয়। আর ডেনড্রাইট কে সংক্ষেপে ডান্ডি বলা হয়।
Inhalants are a broad range of drugs whose volatile vapors are taken in via the nose and trachea.They are taken by volatilization, and do not include drugs that are sniffed after burning or heating. ( উইকিপিডিয়া )
কিভাবে নেয় এর ডান্ডি?
পলিথিনের ব্যাগে ডেনড্রাইট ঢেলে তারপর সেটার মুখটা হাতের মুঠে আবদ্ধ করে একটা ছোটো ফাঁকা রেখে সেই ফাঁকা জায়গাটা নাকে লাগিয়ে তারপর সেটার ঘ্রান নেয়।
সেবনকারীদের ধরনঃ
সাধারণত অল্পবয়স্ক টিনেজরা এই নেশায় জড়িয়ে পরে। দামে সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় এই নেশায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই টিনেজদের মধ্যে পথশিশুর সংখ্যা বেশী। আর সেইসব বাচ্চারাও আছে যারা বাসায় একাকী থাকে বাবা-মা হীন অবস্থায়। এরা প্রথমে কৌতূহলবশত এর ঘ্রান নিয়ে থাকে। আর প্রথমদিকে এটা একটু উটকো লাগলেও বেশ ভালোই লাগে। আর এর থেকেই এরা এই মরন বিষের প্রেমে পড়ে যায়।:-&
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ড্রাগ এবিউস এর মতে, “ the most serious inhalant abuse occurs among children and teens who "...live on the streets completely without family ties.”
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ
এর প্রতিক্রিয়া খুবই বিপদজনক। এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত হায়পক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) মারা যায় কারণ, এটি অক্সিজেন বন্ধ করে মস্তিষ্ক এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেটি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।:-& নিউমোনিয়া, কার্ডিয়াক ফেইলরও হতে পারে। এছাড়া এর সেবনকারী অনির্দেশ্য আচরণ করতে পারে, ঝলসিত চেহারা মানে চেহারা বিকৃত হতে পারে, মাথা ঝিন ঝিন করতে পারে, মুখের চারপাশে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে।:-&
আমাদের করনীয়ঃ
নেশা নির্মূল করা কোন কালেই সম্ভব হয়নি আর হবেও না। তবে এই ডান্ডি নেশার গ্রহীতারা যেহেতু বেশীরভাগই টিনেজ তাই এই ব্যাপারটা খানিকটা আমাদের নাগালের মধ্যে।এই ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। বিক্রেতাদের একটু সৎ মনভাবাসম্পন্ন হতে হবে। আর কর্পোরেট বাবা-মা’দের তাদের সন্তানদের প্রতি একটু খেয়াল রাখতে হবে। এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো যারা এইসব নিয়ে কাজ করছে তারা একটু নজর দিতে পারে এই দিকটাতে। তাহলেই অনেকাংশে এই মরনঘাতি নেশার হাত থেকে আমাদের শিশুদের আমরা বাঁচাতে পারবো বলে আমি মনে করি।
- একজন আরমান
উৎসর্গঃ
আমার ইউনি'র সকল প্রিয় শিক্ষকবৃন্দদেরকে