বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ভারতের ‘সেভেন-সিস্টারস' বা ‘সাতবোন' নামের যে সাতটি পাহাড়ি রাজ্য রয়েছে সেগুলো হলোঃ আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল । তন্মধ্যে অপূর্ব নিসর্গ আর বিচিত্র সংস্কৃতির নাগা জনগোষ্ঠীর দেশ নাগাল্যান্ড।
উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রেক্ষাপটে নাগারাই প্রথম বিদ্রোহ করে। তারা ভারতীয় রাষ্ট্রে অঙ্গীভূত হতে অস্বীকার করে এবং ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এরই আগে ১৯৪৭ সালের জুন মাসে নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল (এনএনসি) গঠিত হয়। এ সংগঠনটি নাগা জনগোষ্ঠীর একমাত্র প্রতিনিধিরূপেনাগা হিলে একটি গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের প্রতি দাবি জানায়। নিজেদের রাজনৈতিক ভাগ্য গণতান্ত্রিকভাবে বেছে নেয়ার লক্ষ্যে নাগাদের মতোই কাশ্মীরিরাও কাশ্মীর-উপত্যকায় গণভোটের দাবি জানিয়েছিল। জনগণের পক্ষ থেকে উত্থাপিত উভয় দাবিই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অগ্রাহ্য করে। নাগা প্রসঙ্গে লক্ষণীয় যে, যখন ভারত এ দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন এনএনসি-এর উদ্যোগে ১৯৫১ সালের মে মাসে নাগা জনপদে একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এ গণভোটের মাধ্যমে নাগা স্বাধীনতার পক্ষে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রকাশিত হয়। এখনও নাগারা সেই গণরায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতবর্ষ বৃটিশ শাসনে থাকলেও নাগারা প্রথম সভ্য জগতের খবর পেয়েছিল আমেরিকান-খৃস্টান মিশনারিদের কাছ থেকে। সেটা প্রায় দু'শ বছর আগের কথা। তারপর আলাদা অঙ্গরাজ্যরূপে ভারত ও পৃথিবীর বুকে নাগা অস্তিত্ব ঘোষিত হয়, নাগারা বিদ্রোহ করে সেটাও প্রায় ৪৫ বছর আগের ঘটনা। কিন্তু সাধারণ নাগারা এখনও তাদের চিরায়ত সমাজের কোটর ছেড়ে বেশি দূর এগিয়ে আসতে পারেনি। নাগারা নাগাল্যান্ডের বাইরে সহজে যেতে চায় না। বাইরের মানুষকেও সহজে গ্রহণ করতে চায় না। অতীতে এমনও দেখা গেছে যে, সর্বভারতীয় চাকরিতে (যেমন রেল, ডাক ও তার, আয়কর, জীবনবীমা ইত্যাদি) নিযুক্ত কোন নাগা নাগরিক নাগাল্যান্ডের বাইরে বদলি হলে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। ভারতের বা বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বাঙালি, শিখ, গুজরাতি, তামিল, মারাঠিদের যেভাবে বসতি গড়ে তুলতে দেখা যায়-নাগা বা উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতবোন রাজ্যগুলোর কোন জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের সেই তুলনায় দশমিক ভাগও সক্রিয় দেখা যায় না।
ইতিহাসও নাগাদের জন্য এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে। মানুষের মাথা শিকার করার বিশেষণটা যে নাগাদের পেছন ছাড়ছে না তারও একটি ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। নাগারা অর্ধশতাব্দী আগেও মানুষের মাথা শিকার করত এবং বীরত্ব প্রদর্শনের নিদর্শনস্বরূপ ‘ট্রফি' হিসাবে সেগুলোকে তাদের বসত-ঘরে টাঙিয়ে রাখত। এই বীরত্বব্যঞ্জক মস্তক শিকার এমন ব্যাপক ও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, প্রতিটি গ্রাম বাধ্য হয়েছিল নিশ্চিদ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। খাড়া পর্বতশৃঙ্গে বসতি গড়ে, সেই বসতির চারপাশে উঁচু উঁচু পাথর সাজিয়ে প্রাচীর তুলে, সমস্ত লোকের আসা-যাওয়ার একটি মাত্র দরজা বানিয়ে, প্রতিটি গ্রাম হয়ে উঠেছিল এক-একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। আর তার থেকেই জন্ম নিয়েছিল বিচ্ছিন্নতা। নাগারা মূলত একটাই উপজাতি এবং একই ভাষাগোষ্ঠীর লোক হওয়া সত্ত্বেও এই গ্রামবিচ্ছিন্নতার জন্যই বর্তমানে ৩০/৩৫টি উপজাতি এবং ভাষাগোষ্ঠীতে বিভক্ত। বিচ্ছিন্নতা এমনই স্তরে পৌঁছে গেছে যে, এক উপজাতি আরেক উপজাতির ভাষা পর্যন্ত বোঝে না। নাগাল্যান্ডের সরকারি ভাষা ইংরেজি। হিন্দি নয় ইংরেজি শেখাতেই সিংহভাগ নাগাদের আগ্রহ। হিন্দিশিখতে চাওয়া নাগার সংখ্যা নগণ্য-মুষ্টিমেয়-আঙুলে গোনা যায়।
ভারতের আসামের উত্তর কাছাড় জেলার সদর শহর হাফলং থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে জাটিঙ্গা অবস্থিত। আসামে শিলং পাহাড়ের পর শুরু হয় হাফলং পাহাড়ের সারি। স্থানীয় দিমাশি ভাষায় হাফলং শব্দের অর্থ হলো 'উইপোকার তৈরি করা ছোট পাহাড়'। তবে জাটিঙ্গা শব্দটি দিমাশি ভাষার নয়, শব্দটি জেমে-নাগা উপজাতির।
পৃথিবীর শোণিত সৌরভে চির ইতিহাস হয়েই রয়ে যায় এক বিপন্ন বিস্ময়। একদা কিছু নাগা পরিবার জুম চাষের জন্য জাটিঙ্গা আসে। একদিন তারা বুনো প্রাণীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন জ্বালালে দেখতে পায় আগুন লক্ষ্য করে ঝাঁক বেঁধে নেমে আসছে একই জাতের পাখি। তখন ওরা ভেবেছিল এটা শয়তানের কাজ। পর পর কয়েক রাত এ ঘটনার পুনরাবৃতি হলে নাগারা সেখান থেকে চলে যায়। আসামের জাটিঙ্গা গ্রামে প্রতি বছর আগস্ট থেকে অক্টেবর এর মাঝে ঘনঘোর অন্ধকারের রাতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ঝির ঝির বৃষ্টি এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় যখন বাতাস বয়ে চলে দক্ষিন পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্ব দিকে তাপমাত্রা বিশ ডিগ্রী থেকে পঁচিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস আদ্রতার পরিমান আসি থেকে নব্বই শতাংশ তখনই পাখিদের স্বেচ্ছামৃত্যু ঘটে। যদি কোন খোলা জায়গায় আগুন জলতে থাকে তাহলে সেখানে ঝাঁপিয়ে পরে ঝাঁকে ঝাঁকে। বিষয়টি যেন জাটিঙ্গার ঘন বন এবং পাহাড়ি ঝরনার মতই রহস্যাবৃত। এর কারন হতে পারে বিশেষ পরিবেশের যা সহজে অনুভব করা যায় না। বিজ্ঞানীদের মতে, বর্ষাকালে বৃষ্টির ফলে মাটির নীচে পানি জমে বলে চৌম্বক শক্তি জনিত হেরফেরের জন্য পাখির মাঝে অজ্ঞাত স্বেচ্ছামৃত্যুর স্পৃহা জন্মে।
জেমে-নাগা উপজাতিরা জাটিঙ্গা এলাকায় এখন আর বাস করে না। কারণ তাদের ধারণা জায়গাটা অস্বাস্থ্যকর। জাটিঙ্গায় বর্তমানে বাস করে জৈন্তা উপজাতির লোকেরা। পাখিদের এই আত্মাহুতির বিষয়টিকে তারা ঈশ্বরের দান বলে মনে করে! আসাম পর্যটন দপ্তর জাটিঙ্গায় একটি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করেছে, যেটাতে উঠে রাতের বেলা পাখিদের আত্মহত্যা দেখা যায়। সারা বিশ্বের বহু পাখি বিশারদ জাটিঙ্গায় গিয়ে এই রহস্যময় ঘটনা পর্যবেক্ষণও করে এসেছেন। অনেকে অনেক রকম ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিন্তু কোনোটিই সুস্পষ্ট নয় বলে রহস্য রহস্যই থেকে গেছে।
আসলে গ্রামটিতে পাখিরা আত্মহত্যা করে না বলে বলা উচিত তারা গ্রামবাসীর হাতে মারা পড়ে। বছরের এই সময়টাতে গ্রামবাসী নানা জাতের পাখির মাংসে ভূরিভোজ করে থাকে। আগস্ট থেকে নভেম্বর অর্থাত্ শরত্ ও হেমন্ত ঋতুতে রাতের বেলা গ্রামবাসীরা দলে দলে বেরিয়ে পড়ে। তাদের হাতে থাকে জ্বলন্ত মশাল, লণ্ঠন। বাঁশের লম্বা খুঁটি সাহায্যে মশাল বা লণ্ঠন উঁচিয়ে ধরে তারা আত্মহত্যাকারী পাখিদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এই আলো লক্ষ্য করে কোথা থেকে যেন ঝাঁকে ঝাঁকে নানা জাতের পাখি এসে পড়তে থাকে। মাটিতে পড়ার পর পাখিগুলো আর ওড়ার চেষ্টা করে না। মাটিতে পড়ে থাকা পাখিগুলোকে গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলে এবং রান্না করে খায়। অনেকে পাখিগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু লাভ হয়নি। মাটিতে পড়া পাখিগুলোকে কেমন জুবুথুবু, ভীত দেখায়। কিছু খেতে দিলেও খায় না, দিনের পর দিন অভুক্ত থেকে পাখিগুলো অনাহারে মরে যায়। ভারতের প্রাণিবিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন গবেষণা করেও এ ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সক্ষম হননি। ফলে জাটিঙ্গা আজও রহস্যে ঢাকা, পাখিদের আত্মহত্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি বার্ষিক আশ্চর্যজনক ঘটনা।
‘হেড-হান্টিং' নাগা সমাজব্যবস্থায় এবং নাগা জনজীবনে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিছক খেলাচ্ছলেও মস্তক শিকারে এরা দ্বিধা করতো না। দুই গ্রামের মধ্যবর্তী জঙ্গলের মধ্যে কোনও একটি জলাশয় সংলগ্ন-পার্শ্ববর্তী গ্রামের কেউ মাছ ধরতে এলে হয়তো অপর গ্রামের কেউ পেছন থেকে আক্রমণ করে তার মাথাটাই কেটে নিয়ে দৌড়ে চলে আসত। হতভাগ্য মৎস্য শিকারীর দেহ পড়ে থাকত জলাশয়ের ধারে আর কর্তিত মস্তক চলে যেত হত্যাকারী নাগা যুবকের ঘরে-শোভাবর্ধক ও বীরত্বব্যঞ্জক সুভেনির হিসাবে। মস্তক শিকারের এই অভ্যাস নাগারা পেছনে ফেলে এসেছে বহুকাল। কিন্তু অপবাদ ও দুর্নাম তাদের পিছু ছাড়েনি এখনও। তার একটি কারণ হলো শিক্ষিত শ্রেণীর উদ্যোগের অভাব।
নাগাদের অতীত নিয়ে কথা বললেই যেমন চলে আসে কর্তিত মস্তকের কথা তেমনিভাবে এদের বর্তমান নিয়ে কথা বললেই এসে যায় বিদ্রোহ, সন্ত্রাস, ইন্সার্জেন্সির কথা। আর সেই ইন্সার্জেন্সির পটভূমিকাতেও নাগাদের চিত্রিত করা হয় ভয়ঙ্কর হিংস্র মানব শ্রেণী রূপে। এরও কারণ রয়েছে। কাশ্মীর-পাঞ্জাব থেকে আসাম-মেঘালয় পর্যন্ত সর্বত্রই নিরস্ত্র জনগণের ওপর ফৌজি আক্রমণের প্রতিরোধস্বরূপ একমাত্র নাগা জনগোষ্ঠীই ভারতীয় সেনাবাহিনী বা আইন রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্মম জবাব দিতে পেরেছে। কাশ্মীরের রাজপথে বা পাঞ্জাবের শহরগুলোতে ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং জনগণের ওপর সেনা হামলার প্রতিবাদে যখন কেবল মিছিল বা ইট-পাটকেলের ঘটনা ঘটছে তখন নাগারা তাদের দেশে এসে আক্রমণরত ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়ে কুচি কুচি করে কেটে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।
অতি-আধুনিকতার জন্য ভারতের সবচেয়ে বেশি এইডস রোগীর বাস নাগাল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি মদ্যশালা, নাইটক্লাব ও দেহ ব্যবসার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। বিদেশী পর্যটক ও ভারতীয় পর্যটক-যারা জীবন ও যৌবনের রোমাঞ্চ ও উত্তেজনাকে বেশ করে উপভোগ করতে চান, তারা হালে এক দৌড়ে চলে যাচ্ছে নাগাল্যান্ডের শহরগুলোতে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নাগাদের একটি নতুন প্রজন্ম যারা শিকড় ছেড়ে সমতলীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করছে এবং নাগা সভ্যতা ও সংস্কৃতি বর্তমানে এভাবে ভারতের সমতলীয় আগ্রাসনের মুখে ধ্বংসোন্মুখ। ক্রমেই নানা অভ্যন্তরীণ প্রচলিত মূল্যবোধ বিলীয়মান হয়ে যাচ্ছে নাগা জীবন ও সমাজ থেকে।
নাগা সমাজ যত গ্রামবিচ্ছিন্ন ও নগরকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে ততই ক্ষয়ে যাচ্ছে পুরাতন বহু মূল্যবোধ। হাল আমলে নগরসমাজের ওপর গ্রাম-পঞ্চায়েতের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকছে না। নগর-শহরে জন্মানো এবং সেখানেই বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের দায় থাকছে না কোনও সামাজিক কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করার। শহরে আইনশৃক্মখলা রক্ষার দায়িত্বে আছে পুলিশ এবং প্রশাসন। নতুন প্রজন্ম জানে তাদের কীভাবে প্রভাবিত করা যায়। তাই পুলিশ-প্রশাসনকে কাঁচকলা দেখিয়ে এবং সনাতন সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে নতুন প্রজন্ম ভাঙছে নাগা ট্র্যাডিশন। যদিও একদল এখনও ছুটছে স্বাধীনতার রক্তাক্ত আন্দোলনে। এদের দ্বারাই নির্ধারিত হবে নাগা সংস্কৃতির নতুন বিন্যাস। আর হেড-হান্টার বা পার্বত্য বিপ্লবী নাগাদের সম্পর্কে নতুন সংজ্ঞাটিও ঠিক করে দেবে এই অগ্রসর নতুন নাগা প্রজন্মই।
ব্যাপকভাবে নাগারা যখন অবগুণ্ঠন ছেড়ে নাগাল্যান্ডের বাইরে যাওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে পারবে-তখনই তারা একটি জাতীয় চারিত্র প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। নচেৎ এই নিভৃতচারী জনগোষ্ঠী পৃথিবীর মানুষের কাছে থেকে যাবে অজানা ও রহস্যময় হেড-হান্টার। কিংবা সশস্ত্র বিপ্লববাদের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের রহস্যময় পার্বত্য যোদ্ধা।
ব্লগার মামুন রশিদ ভাইয়ের দেয়া কিছু তথ্যঃ
জাটিঙ্গায় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে শত শত পাখির আত্মহত্যার রহস্য এখনো উন্মচিত হয়নি । ধারণা করা হয় কুয়াশা আবৃত পুরো উপত্যকায় পাখিরা দিকবিদিক হারিয়ে উড়তে থাকে, আর হঠাৎ আলোর দেখা পেলে ঝাঁপ দেয় । এই সুযোগে স্থানীয়রা তাদের শিকার করে মারে ।
বাঙ্গালী অধ্যুষিত কাচার জেলার একটি মহুকুমা হাফলং । এখানে মুলত ডিমাসা উপজাতির বাস । তাদের ভাষা বাংলার কাছাকাছি, মুনিপুরি-টিপরা ভাষার মত তারাও লেখায় বাংলা হরফ ব্যবহার করে । বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির সাথে তাদের নিবিড় যোগাযোগ আছে ।
তবে নাগারা খুবই উগ্র আর হিংস্র এক বর্বর জাতি । প্রতিপক্ষের মাথা কেটে নেয়ার রেওয়াজ তাদের এখনও আছে । বাঙালী-মনুপুরি আর কারবিআরলঙের অন্যান্য উপজাতিদের সাথে তারা এখনো রক্তক্ষয়ি দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে ।
ব্রিটিশ আমলে সিলেট আসামে ছিল, সেই সুবাধে পুরো আসাম রাজ্য জুড়েই বাঙালীরা উপনিবেশ গড়েছিল । নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর এখনো বাঙালী অধ্যুষিত শহর ।
ব্লগার সাইফুল আজীম ভাইয়ের দেয়া কিছু তথ্যঃ
ওদের কালচার নিয়ে ওরা কিছু বলেনা। একাকী থাকে প্রায়। ওদের কালচার মানেই ট্যাবু। আমাদের সমাজের বাইরে। ওরা নতুন জামাইকে কুকুরের বমি খাওয়ায়। এটাই রীতি।
নাগাল্যান্ডের আদিবাসীদের কারনে ওখানকার বাস্তুসংস্থান হুমকির মুখে যার করনে নানাবিধ প্রাণীর শিকার যা কিনা ওদের সংস্কৃতির অংশ তা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তবে মনে হয়না কাজ হবে।
এরা সরকারী চাকরীতে নিজের এলাকা ছাড়া আর কোথাও পোস্টিং হলে জয়েনই করেনা। নাগাল্যান্ডবাসী অফিসারদের কাছে কুকুর খুব লোভনীয় ছিল। মাসে একবার তারা কুকুরের মাংস খেতই যার জোগান আসত ক্যাম্পাসের নেড়ি কুকুরের বংশ নাশের মাধ্যমে। প্রথমে তারা কয়েকদিন কুকুরকে ভালো খাওয়াত। পরে বিশেষ কায়দায় মাথায় আঘাত করে কুকুরকে মেরে নিজেরা মিলে ভোজ আয়োজন করত।