প্রখ্যাত সাংবাদিক, এক কালের আওয়ামী এমপি, বঙ্গবন্ধুর অতি আপন জন, অধুনা আওয়ামী লীগ কর্তৃক স্বাধীনতা বিরোধী খেতাব পাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন (??) লেখক, কলামিষ্ট এ বি এম মুসা বলেছেন, তার পরামর্শে শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন। শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে দেরি করলে মঈনউদ্দিনরা খালেদাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, তার এই আশংকার কারনেই এবং তারই পরামর্শে শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন। এ বি এম মুসা মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা সেই বিতর্কে যাওয়ার আগে কয়েকটি প্রশ্নের যুক্তিযুক্ত উত্তর না পেলে আমিও হয়তো মানসিক ভারসাম্য হাড়িয়ে ফেলতে পারি। আশা করছি আপনারা একটু কষ্ট করে কিছু জবাব দেবেন।
১। শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনসভায় এবং তার দলের হাই প্রোফাইল নেতা কর্মীরা দাবি করেছেন যে, দেশের মায়ায়, গনতন্ত্রকে রক্ষা করতে শেখ হাসিনা সেনা শাষকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এ বি এম মুসা সাহেবের দাবি কতটুকো গ্রহণ যোগ্য ? হাসিনা কি তাহলে চুক্তি পত্রে স্বাক্ষর করতেই দেশে ফিরেছেন ?
২। মুসা সাহবে কি ভাবে জানতে পারলেন যে, মঈন উদ্দিন খালেদাকে ক্ষমতায় বসাবে ? এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি হাসিনা কে মঞ্চে ডেকেছেন যেখানে ক্ষমতার পালাবদলের ছক আকা হয়েছিল। তাহলে আমরা ভোদাই জনগন যে ঐতিহাসিক ভোটাধীকার (?) প্রয়োগ করলাম সেগুলো গেলো কোথায় ?
৩। মুসা সাহেব হাসিনাকে মঈনউদ্দিন সাহবের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন কিনা সেই তথ্য বের করার জন্য অবিলম্বে মুসা সাহেবের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করা যেতে পারে অথবা তাকে জরুরী সরকারের এক্সিট প্লানের প্রোগামার হিসেবে তাকে রিমান্ডে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জরুরী সরকারের সুবিধাভোগী বর্তমান হাসিনার আমলে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন, এক কথায় পাগল, তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার দায়িত্ব্য কে নেবে ? আর তাকে রিমান্ডে নিয়ে কে জিজ্ঞেস করবে ?
৪। আমরা যারা এখনো গনতন্ত্রের জন্য রক্ত দিতে মাঠে চষে বেড়াচ্ছি তাদের জন্য উত্তম সবক হচ্ছে মুসা সাহবের বক্তব্য। আরো অনেক কিছু হয়তো বের হয়ে যাবে অতিসত্ত্বর। আমাদের জানতে ইচ্ছে করে আসলেই কি আমাদের ভোটে সরকার গঠিত হয় ? গনতন্ত্রের চর্চা কি আমাদের মুখে মানানসই ?
৫। জরুরী সরকারের আমলে হটাৎ করে হাসিনার বিদেশ যাওয়া এবং পরবর্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে নোটিশ জারি করে তাকে দেশে ফিরতে বাধা দেওয়ার যে চেষ্টা হয়েছে, সেই নাট্যলিপির নাট্যকার হিসেবে মুসা সাহেবরা আসন্ন একুশে পদকের যোগ্য কিনা ?
৬। হঠাৎ করে মুসা সাহেবের মতো মুক্তিযোদ্ধের সৈনিকরা, শেখ হাসিনার পিতা এবং তার অতি আপনজনরা কি কারনে হাসিনা সরকারের সমালোচক বনে গেলেন, কি মোজেজা রয়েছে এতে ?
৭। বি এন পির আগামী নির্বাচনে জয় লাভের কিছু সম্ভবনা যখন তৈরি হচ্ছে, দেশি বিদেশি চক্র যখন আবার একটি পছন্দের সরকার তৈরির পরিকল্পনায় ব্যস্ত তখন এই সকল নব্য আওয়ামী বিরোধীরা যে জরুরী সরকারের মাষ্টার মাইন্ডের অংশিদার ছিলেন সেই আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় কি ?
৮। বিগত জরুরী সরকারের আমলের চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক নেতাদের বিশেষ করে বি এনপির নেতা কর্মীদের নির্যাতনের বিচার শুরু হবে, সাথে জরুরী সরকারের সহযোগীদের বিচার হবে এই আশংকায় অনেক খাছ মুক্তিযুদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর অতি আপনজনরাও হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে বিরোধীদলের কাছে নিজেদের ইমেজ ক্লিন করার চেষ্টা করছেন বলে অনেকে ধারণা করছেন, আসলেই কি তাই ?
৯। যুদ্ধ অপরাধের বিষয়ে যারা রাস্তায় ছিলেন, বিচারের শেষ মুহুর্ত্যে এসে তাদের অনেকে এখন বিচার পক্রিয়া নিয়ে সমালোচনা করছেন। তাদের এই সমালোচনায় সুশিল সমাজের সেই সকল অংশের সাথে স্বর্য় মুসা সাহেবরাও জড়িয়ে গেছেণ বলে অনেকে মনে করছেন। আসলে তার সততা কতটুকো ?
আমি জানি আমার প্রশ্ন শুনে আপনারা আমাকেও মানসিক ভারসাম্যহীন মনে করছেন। আসলে আমরা এমন এক দেশে বসবাস করছি যেখানে ভালো মন্দের মানদণ্ড কেবল একটি শব্দের মধ্যে সিমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কেবল প্রশংসা করো, সমালোচনার ধারেও যেও না।
যারা গনতন্ত্রের জন্য জীবন বাজী রাখতে চাচ্ছেন, গনতন্ত্রকে দেশের জন্য একমাত্র কল্যাণকর মনে করছেন, তারা এবার ভাবুন কোন গনতন্ত্রের দেশে বাস করছেন, যেখানে দেশের সরকার নির্বাচিত করে জনগন নয়, বাইরের শক্তি। গনতন্ত্রে কে যারা কুফরি বলেন তাদের সাথে যদিও আমার দ্বীমত রয়েছে, কিন্তু গনতন্ত্রের এই হতচ্ছারা অবস্থা দেখে তাকে নিজের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর বলে মনে করছি। আর ক্ষতিকর বস্তু থেকে দুরে থাকাই বুদ্ধিমানের লক্ষন।