বাংলা ব্লগের ইতিহাস বেশিদিনের নয়। বাঙ্গালী প্রগতিশীল সংস্কৃতির কিছু উপাদান বরাবরই এদেশের মোল্লা সমাজের গাত্রদাহের কারন, ব্লগিং তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলা লেখালেখির এই নতুন চর্চায় গতি আসে, বেশকিছু ভালো ব্লগিং সাইট প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। সৃষ্টিশীলতার চর্চা সাধারনত কায়েমী স্বার্থের লেজে পা দিয়ে থাকে। ব্লগ্ও তার ব্যাতিক্রম নয়। সত্যি বলতে ব্লগিংই আম-জনাবের বক্তব্য সম্পাদকীয় কাটাকুটি ছাড়াই এই প্রথম প্রকাশ করছে, পাঠক্ও তাঁর মত ব্যক্ত করছে মুহূর্তের মাঝেই। পাঠক লেখকের এই অসাধারন মিথস্ক্রিয়ায় বাংলা সাহিত্যে এক চমতকার ধারার সুচনা হয়েছিলো।
অপেক্ষাকৃত নতুন এই মাধ্যমটির জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব ধর্মীয় ব্যাবসায়ীদের চোখ এড়ায়নি। বাঙ্গালী সমাজের সহনশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগতিশীলতা হত্যার দায়ে কলঙ্কিত ধর্মবাজদের দল ইদানিং শকুনের নজর দিয়েছে ব্লগিঙের দিকে।
আধুনিক সভ্যতার উপাদানগুলির কট্টর বিরোধী ধর্মসন্ত্রাসীরা তাদের কুটচালে জড়িয়ে ফেলছে সৃষ্টিশীল লেখকদের। অনাবশ্যক ঝগড়া সৃষ্টি করে ব্যাস্ত রাখছে সকলকে। অর্বাচীন প্রলাপ, কুটতর্ক এবং ধর্মীয় বিধান কে অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করে সকলকে নামিয়ে নিয়ে আসছে এমন এক নিচু স্তরে যেখান থেকে বেড়িয়ে আসা মুশকিল, নতুন সৃষ্টিতো দুরের কথা।
এখানেই তারা সফল। ছোট ছোট যুদ্ধে যদিও সৃষ্টিশীলরা টিকে যাচ্ছে, বড় আকারে আমরা হারাচ্ছি আমাদের মননশীলতা। এটাই কুপমন্ডুকদের মূল লক্ষ্য।
সাহিত্য সমৃদ্ধ হয় নতুন লেখায়। কিন্তু যখন থেকে জামাত প্রেরিত বরাহনন্দনদের পদচিহ্ন পড়েছে এই ব্লগালয়ে আমরা কি আর এগোতে পেরেছি?