বাংলাদেশে অনেক স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় সাধারন শিক্ষক এমনকি কোনো কোনো সময় অমুসলিম মহিলা টিচাররাও কোরআন, হাদীস, দোয়া,মাসআলা ইত্যাদির ক্লাস নিয়ে থাকেন। অথচ বৃটিশ ও পাক আমলেও প্রতি স্কুলে মাওলানা স্যার নামে আলাদা টিচার ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এ পদবীটি এখন আর নেই।
অথচ দেশের ৭০ হাজার (বর্তমান ঘোষণায় ৯০ হাজার)প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯০ হাজার কওমী আলেম ধর্মীয় শিক্ষকরূপে নিয়োগ দিলে আগামী দিনের শিক্ষিত প্রজন্ম দীনি শিক্ষার ভিত্তির উপর গড়ে উঠতো।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘ সরকার দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।’
(প্রথম আলো : ২১ জানুয়ারি, ২০১০)
দুঃখজনক হলো, প্রাইমারি স্কুলে ক্রীড়া ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা এলেও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই। অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আন্তরিক পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাকরি।
দেশের সরকারি কলেজগুলোতে মালি, সঙ্গীত শিক্ষকের পদ আছে কিন্তু হাজার হাজার ছাত্রদের জন্য মসজিদ থাকলেও নেই ইমামের পদ। ঝাড়ুদারের চেয়েও ইমামের বেতন থাকে কম। ৩০ বছর সরকারি কলেজ মসজিদে ইমামতি করেও অবসরে ফিরতে হয় খালি হাতে। ৯০ ভাগ মুসলমানের টেক্সের টাকায় একটি কলেজে শত শত শিক্ষক কর্মচারির বেতন দেয়া গেলে ইমামের বেতন কেন নয়?
কওমি সনদের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ‘সংবর্ধনা’ যদি দেওয়াই হয় তাহলে সে অনুষ্ঠানে যেন সরাসরি এ দুটো বিষয়ে সরকারের বাকি দিনগুলোর মধ্যেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আদায় করা হয়।
স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্রের টাকা লাগে না। কিন্তু দাওরা পাসের মাস্টার্স স্বীকৃত এ শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে টাকা লাগে। অর্থ খরচ ছাড়াই স্বীকৃতি দিয়ে ‘শুকরিয়া’ নেওয়াটা তখনই জনগণের কাছে তখনই ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা পাবে, যখন স্বীকৃতির পাশাপাশি প্রাইমারি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দাওরা (মাস্টার্স) ডিগ্রিধারীদের এ খাতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের ইমামদের সরকারি স্কেলে বেতনের ব্যবস্থা করলেই প্রমাণিত হবে যে তিনি সত্যিকার অর্থেই ইসলামের খেদমত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চান।আল্লাহ তাওফীক দান করুন, আমীন।
মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী