ইউরোপের সমাজে অনেক দিনের ধারণা বড় স্তনের নারীরাই সুন্দর। পীনোন্নত স্তন কম বয়সের প্রতীক। কেবল পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নয়, নিজের বয়সকে কমিয়ে, নিজেকে আনন্দ দেওয়ার কাজটিও করে উন্নত স্তন। এ ধারণার বশবর্তী নারীরা নিজেদের সাজাতে এবং ছোট স্তনকে বড় করতে বেছে নেন সিলিকন স্তন। কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের পরে স্তনকে ফুলিয়ে তোলেন এক কাঙ্ক্ষিত স্তর পর্যন্ত। কিন্তু, প্রচলিত এ ধারণার হয়তো অবসান হতে চলেছে। ইউরোপের নারীরা দেহ নয়, নিজের কাজ দিয়েই সমাজে সম্মানজনক অবস্থান করে নিতে চাইছেন।
আজ বুধবার ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনে প্রকাশিত এক খবরে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ব্রিটনি মার্শাল নামের ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর অভিমত প্রকাশিত হয়েছে। ব্রিটনি স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কিন্তু সে তার মা চ্যান্টাল মার্শলের মতো ‘আকর্ষণীয়’ শরীর পেতে চায় না। এদিকে চ্যান্টাল মার্শাল মেয়ের অভিরুচি ও ইচ্ছে নিয়ে ভীষণ দ্বিধান্বিত।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৩ বছর বয়সী নয় সন্তানের মা চ্যান্টাল মনে করেন, ব্রিটনি এখন একটি ‘ছেলেমি বয়সে’ আছে। নটিংহ্যামশায়ারের অ্যাশফিল্ড জেলার কির্কবির বাসিন্দা চ্যান্টাল ও তাঁর চার মেয়ে স্তন বাড়াতে এখন পর্যন্ত ব্যয় করেছেন ৫০ হাজার পাউন্ড। ১৯৯৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত চ্যান্টাল অপারেশন করিয়েছেন চারবার। এরপর তাঁর স্তনের পরিমাপ ৩৪বি থেকে বেড়ে ৩২জিজি হয়েছে। তাঁর কন্যা এমা (৩০), টেরি (২৭), টারা (২৬) ও রিপলি (২১) হেঁটেছেন মায়ের পথেই।
কিন্তু ব্রিটনি কথা, ‘আমি এখনো অনেক ছোট। স্তন বড় করার কথা ভাবার সময় এখনো আসেনি। আমি ভালোভাবে লেখাপড়া করতে চাই। আমি মনে করি একজন মেয়ের তা-ই করা উচিত, যা সে চায়। তবে এখন পর্যন্ত আমি স্তন বাড়াতে চাই না।’
ব্রিটনি বলছিল, ‘এ বিষয়ে আমি মা ও আপুদের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। নিজেদের বড় স্তন আর এ জন্য অন্যেরা ওদের দিকে যেভাবে তাকায়, তাতে তারা সত্যিই মজা পায়। আগে ভাবতাম, হয়তো আমিও একদিন আমার স্তনকে অনেক বড় করে তুলব। কিন্তু এখন যখন ওদের দিকে তাকাই তখন হাস্যকর মনে হয়। ব্যাপারটায় আমি গা-সওয়া হয়ে গেছি। মা যতই পীড়াপীড়ি করুন, ওসব কথা আমি আর শুনছি না।’
চ্যান্টাল কিন্তু বলছেন, ‘আমি আমার মেয়েদের চিনি। আর এও জানি, একদিন ব্রিটনিও তার বোনদের মতো হতে চাইবে।’ তিনি মনেপ্রাণে চান একদিন ব্রিটনি তার বোনদের মতো হয়ে উঠুক।
মাঝারি তনুর অধিকারী চ্যান্টাল এর মধ্যে নানি হয়ে গেছেন। তবুও শুধু উন্নত স্তনের জন্য তিনি নিজেকে এখনো তরুণী বলে মনে করেন। তিনি মাঝেমধ্যে মেয়েদের সঙ্গে নৈশক্লাবে যান। লোকেরা তাঁকে মেয়েদের বোন ভেবে ভুল করে, এটা দেখে তিনি ভীষণ মজা পান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার মেয়েদের এই ছদ্মরূপ দেখতে ভালোবাসি। জানি বয়স হলে ব্রিটনিও এদের মতোই হবে।’
ব্রিটনির বড় বোন এমা একজন মোহিনী মডেল ও রূপচর্চা-পসারি, টেরি একজন ঘোড়া প্রশিক্ষক, টারা গৃহকর্মী এবং রিপলিও রূপচর্চা-পসারি। তাঁর চার ভাই—টম (২৪) এখন বেকার, ড্যানি (২০) একজন মিস্ত্রি, ডিলান (১৯) ও ব্যান্ডন (১৫) ছাত্র।
ভাইয়েরা ব্রিটনিকে বরাবর সমর্থন করে যাচ্ছেন। চ্যান্টালও স্বীকার করেছেন, ‘আমার ছেলেরা ভাবে আমি এবং মেয়েরা পাগল।’ তিনি বলেন, ‘ওরা সব সময় ব্রিটনির পক্ষে। ওরা চায় ব্রিটনি হোক অন্য রকম। ছেলেমেয়েদের মধ্যে ব্রিটনিই সবচেয়ে বুদ্ধিমান। ওর জন্য গর্ব হয় আমার।’
ব্রিটনিও মায়ের গর্ব ধরে রাখতে চায়। তবে অন্য রকম করে। সে বলেছে, ‘পরিবারের প্রথম মানুষ হিসেবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। আগে পড়াশোনা, এরপর সব।’
ইউরোপের সমাজে অনেক দিনের ধারণা বড় স্তনের নারীরাই সুন্দর।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন