শীতকাল একইসাথে বিয়ে ও বেড়ানোর মৌসুম। তবে বিয়ে বেশিরভাগ মানুষের জীবণে প্রথবারেই শেষবার অার পরেরটি ছেলে বুড়ো সবার জীবণে অসংখ্যবার ঘটার সুযোগ অাছে। বাংলাদেশে বেড়ানোর জন্য সিংহভাগ মানুষের প্রথম পছন্দ কক্সবাজার। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৩৯০ কি মি। ঢাকার কাছেই যদি মিনি কক্সবাজার পাওয়া যায় সেটা নিশ্চয় কম উপভোগ্য হবে না। অার অাপনি যদি ভ্রমণ পিয়াসু হন তবে তো অার কথাই নেই।
মৈনট ঘাট, এটি ঢাকার দোহারের কার্তিকপুরে পদ্মা নদীর একটি ঘাট। ঘাটের অপর পাশে ফরিদপুর। প্রমত্তা পদ্মার বিস্তৃত বেলাভূমি অার জলরাশি অাপনাকে বিমুগ্ধ করবে নিশ্চিত ভাবে। পদ্মার টাটকা ইলিশ ভাজা একবার খেলে অনেক দিন মনে থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাজা ইলিশ ভাজাই এখনকার সবচেয়ে অাকর্ষনীয় বস্তু তবে খাবার হোটেল বাছাইয়ে ভুল করলে অাপনি এই অমৃত থেকে বঞ্চিত হবেন।
পদ্মার তীরের সরিষা খেত, ছবি তোলার বিলাসিতা বহুগুন বাড়িয়ে দিবে, ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা স্পিড বোটে করে পদ্মার বুকে জেগে উঠা জনবসতিহীন ছোট ছোট চরে ঘুরে অাসতে পারেন। নদীতে ঝাপাঝাপি, সাঁতার কাটা অাপনাকে শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
ঢাকার গুলিস্তান থেকে যমুনা পরিবহনের গাড়িতে করে সরাসরি মৈনট ঘাট যেতে সময় লাগবে দুই থেকে অাড়াই ঘন্টা, দূরত্ব ৬০ কি মি, বাস ভাড়া নব্বই টাকা। রির্জাভ বাস অাট হাজার টাকা। এছাড়া ব্যাক্তিগত গাড়িতেও যেতে পারেন। মৈনট ঘাটে থাকার মত অাবাসিক হোটেল নেই, দিনে দিনে ফিরে অাসাই ভাল, ঘাট থেকে সর্বশেষ গাড়ি সন্ধ্যা ছয়টায়। মৈনট ঘাটে তিন চারটি খাবার হোটেল অাছে, পদ্মা বিলাস হোটেলটি সবচেয়ে ভাল, এটি সৈকতে মধ্যে অবস্থিত, এখানে ইলিশ ভাজা অসাধারণ প্রতি খাবার প্যাকেজ দেড়শ টাকা, তাৎক্ষনিক ভেজে দেয়া টাটকা ইলিশ সঙ্গে ভর্তা, ডাল, সবজি অার ভাত তো অাছেই। অন্য হোটেলে খেলে ষাট থেকে নব্বই টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। এছাড়া কার্তিকপুর বাজারে ভাল হোটেল অাছে। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খেতে ভুলবেন না।
যাওয়ার পথে নবাবগঞ্জের কলাকোপা ঐতিহাসিক কোকিল প্যারিচাঁদ জমিদার বাড়ি, র্জজ বাড়ি, উকিল বাড়ি ঘুরে অাসতে পারেন, এগুলো পাশাপাশি অবস্থিত।
কলাকোপা প্যারিচাঁদ জমিদার বাড়ি
এরপর একই উপজেলার বান্দুরার হাসনাবাদের ঐতিহাসিক জপমালা রানীর গির্জা দেখা যেতে পারে, তবে গির্জা খোলা পাবেন রবিবারে। এটি সতেরশ সাতাত্তর সালে প্রতিষ্ঠিত অভিভক্ত বাংলার পঞ্চম গির্জা।
অতপর সরাসরি দোহারের মৈনট ঘাট।
নদীর তীরে সূর্যাস্ত
প্রমত্তা পদ্মা যেকোন সময় সর্বনাশা হয়ে উঠতে পারে, সাঁতার না জানলে নদীতে নামা কোনভাবেই উচিত হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২৯