যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে এখন ১ শতাংশের দ্বারা, ১ শতাংশের জন্য ও ১ শতাংশের অর্থনীতি বলা হচ্ছে। গত ৪০ বছরে বাংলাদেশেও অঢেল বিত্ত-সম্পদ গুটি কয়েক ধনীর হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছে। তাই দেশের অর্থনীতিকেও এখন ‘রেন্ট সিকারদের দ্বারা, রেন্ট সিকারদের জন্য ও রেন্ট সিকারদের’ অর্থনীতি বলা যায়। কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশী অর্থনীতিবীদ আবুল বারকাত।
যাঁরা নিজেরা কোনো সম্পদ তৈরি না করে নানাভাবে অন্যের সম্পদ হরণ করেন, তাঁদের রেন্ট সিকার হিসেবে অভিহিত করেন আবুল বারকাত। তিনি বলেন, ধনীদের মধ্যেও এখন একধরনের ‘সুপার’ ধনী তৈরি হয়েছে। এঁদের লুটপাটের প্রক্রিয়া সাম্প্রতিককালে বেড়েছে।
রেন্ট সিকার তারাই যাদের নিজেদের অর্থ নেই কিন্তু অন্যদের অর্থ হরণ করে। অন্যের অর্থ হরণ করার পরেও রাষ্টীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার কারণে অথবা ক্ষমতার মালিকদের প্রিয়ভাজন হওয়ার কারণে আইনের আওতায় তারা আসে না। ব্যংকের ভাষায় এরাই ঋণ খেলাপী। ফলাফল তারা হয়ে ওঠে আরো বেপরোয়া
আইন মানার সংস্কৃতি যারা চর্চা করে বা সৎভাবে বার্ণিজ্য করতে আগ্রহী তাদের মুনাফা কম, ক্ষমতার জোর নেই, ব্যংকও তাদের ঋণ দিতে পারে না ঋণ খেলাপীদের দৌরাত্বের জন্য। ব্যংক যখন জেনে শুনে ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়, যা পরবর্তীতে খেলাপী ঋণে পরিণত হয়, তাদের জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হয়। যেমন ধরুন, একটা ব্যংকের ঋণ দেয়ার ক্ষমতা ১০০ টাকা। ৪০ টাকা খেলাপীদের হাতে চলে গেলে, প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ১০০ টাকার পরিবর্ত পাবে ৬০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই বঞ্চিতে তালিকার সিংহভাগ ক্ষদ্র ও নবীন উদ্যোক্তারা থাকবে।
নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি না হলে, অর্থনীতির ভিত মজবুত হয় না, উত্তরাধিকার গড়ে উঠে না। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে এটার ফলাফল যে সুখকর নয়, সেটা নিশ্চয় তথ্য উপাত্ত দিয়ে বোঝানোর দরকার নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬