মিথোলজিক্যাল কাহিণীসমূহ ব্যপক আনন্দের। এই মিথ বিশ্বাসী অবিশ্বাসী উভয়ের জন্যই। যেমনটা গ্রীক মিথোলজি বিশ্বাসী অবিশ্বাসী উভয়ের জন্য। কাজেই জানার আগ্রহ নিয়ে এই পোস্ট পড়বেন। ধর্মীয় বিশ্বাসের নীতিকথা এখানে না কপচানোই ভালো!
খাবার, ফসল ও বৃষ্টি বন্টনের ফেরেস্তা -হজরত মিকাঈল (আঃ)-
---------------------------------------------------------
হজরত মিকাঈল (আঃ)
হজরত ইসরাফিল (আ) ( এর জন্মের পাঁচশ বছর পরে হজরত মিকাঈল (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জোমরূদ নির্মিত দুইটি বিরাট পাখা আছে এবং মাথা হতে পা পর্যন্ত সর্বাঙ্গ জাফরানী রঙের বড় বড় লোমে আবৃত। উক্ত লোমের প্রত্যেকটিতে দশ লক্ষ করে মুখ ও দশ লক্ষ চোখ আছে। আল্লাহ তা’আলার গজবের ভয়ে প্রত্যেক চোখ হতে সব সময় অশ্রু ঝড়ছে। সেই অশ্রুর প্রত্যেক ফোঁটা হতে একজন করে ফেরেস্তার জন্ম হচ্ছে। ওইসব ফেরেস্তাদের সকলেই দৈহিক অবয়বে মিকাঈল (আঃ) এর মতো, তবে আকৃতিতে তারচেয়ে ছোট।
এই সকল ফেরেস্তা সকলেই মুমিন বান্দাদের গুণাহ মাফের জন্য এবং তাদের প্রতি রহমত বর্ষণের অন্য সর্বদা আল্লাহর নিকট মুনাজাত করছে। কেয়ামত পর্যন্ত তারা এভাবেই আল্লাহর কাছে মুনাজাত করতে থাকবে।
মিকাঈল (আঃ) ফেরেস্তার অশ্রুতে সৃষ্ট সব ফেরেস্তারাই মিকাঈলের (আঃ) কাজে সাহায্য করে থাকে এবং এরা সকলেই মিকাঈল নামে পরিচিত। এরা সকলেই মিকাঈলের (আঃ) সাহায্যকারী হিসেবে আসমান-জমিনের যাবতীয় খাদ্য, রিজিক ও সম্পদ বন্টন করে থাকে।
দুনিয়ায় মেঘ বর্ষণ, ফল-ফুল, শাক-সবজি ও শস্যাদি উৎপাদন এবং যাবতীয় জীবজন্তুর খাবার বন্টনের কাজে নিয়োজিত আছে এসব ছোট ছোট মিকাঈল ফেরেস্তাগণ। আকাশ-পাতাল, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, নদী-সমুদ্র, ধূসর মরুভূমি প্রভৃতির মধ্যে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মিকাঈল ফেরেস্তার সাহায্যকারীগণ অবস্থান না করে।
পৃথিবীর কোথায় কোন সময়ে কি পরিমাণ বৃষ্টি বর্ষণ করতে হবে, তা এসব ফেরেস্তারাই ঠিক করে দেয়। যাবতীয় জীবের খাদ্য বন্টনের দায়িত্বও এদের উপরে ন্যাস্ত আছে। কে, কোন সময়ে, কোথা হতে, কি উপায়ে, কোন প্রকারের, কি পরিমাণ খাদ্য আহার করবে, তা এদের ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। কোনোভাবেই এদের করা খাদ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যতিক্রম ঘটে না। (দেখা যাচ্ছে গরীব লোকদের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় তারা বড়ই কিপটা!!! () যে ওয়াক্তে, যার জন্য, যেখানে, যতোটুকু খাদ্য বরাদ্দ করা আছে, সেই ব্যক্তি সহস্র মাইল দূরে অবস্থান করলেও সেই নির্দিষ্ট সময়ে তাকে যেকোনো উপায়েই হোক, সেই স্থানে যেয়ে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। কোনোরকমেই এর ব্যতিক্রম হবে না!! (মারহাবা! মারহাবা!)
যখন কোনো মানুষের মরণ উপস্থিত হয়, তখন তার খাদ্য বন্টনকারী ফেরেস্তাটি তার নিকটে এসে বলে- ‘আচ্ছালামু আলাইকুম, আমি তোমার খাদ্য বন্টন ও নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োজিত ছিলাম। কিন্তু আজ সারা দুনিয়া তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তোমার আহারের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলাম না। অতএব, তোমার শেষ সময় উপস্থিত। আজ হতে তোমার প্রতি আমার কর্তব্য শেষ হলো এবং আমি তোমার কাছ হতে বিদায় নিলাম।’
হজরত রাসূলে আকরাম (সঃ) ফরমিয়েছেন যে, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহর কছম করে বলছি যে, কোনো মানবের জন্য মিকাঈল (আঃ) ফেরেস্তার বরাদ্দকৃত খাদ্যের একটি কণা অবশিষ্ট থাকতেও কেউ দুনিয়া হতে বিদায় গ্রহণ করে না। কোনো মানবের সাধ্য নেই যে, তার জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যের চেয়ে একটুকরো খাদ্য কণাও অতিরিক্ত আহার করে অথবা তার জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্য আহার করা থেকে বিরত থাকে।’
দুনিয়ার কোথায়, কোন সময়, কোন প্রকারের ফলমূল, শাকসবজি ও শস্যাদি কি পরিমাণ উৎপন্ন করতে হবে, তা মিকাঈল (আঃ) ফেরেস্তা ও তার সাহায্যকারী ফেরেস্তাগণের কার্য তালিকার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। এদের নির্দেশ ব্যতীত দুনিয়ার কোথাও একটি শস্যকণাও উৎপন্ন হয় না!
বিঃদ্রঃ দয়া করে কেউ ধর্মের অমোঘ বাণী খুঁজার চেষ্টা করবেন না। স্রেফ পৌরাণিক কাহিনী হিসেবে একে ভাবুন, তবে আর প্রশ্ন থাকবে না। পৌরাণিক কাহিনীর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, একই সাথে পৌরাণিক কাহিনীর কোনো অবমূল্যায়নও নেই। সব যুগেই একে অবিশ্বাস করে আনন্দের বিশ্বাস নিয়ে পড়া হয়। আপনার আনন্দময় বিশ্বাস উদ্বেলিত হোক। পরবর্তী পর্বে হজরত জিব্রাইল (আঃ) এর জন্ম, দায়িত্ব ও ক্ষমতা সম্পর্কে লিখা নিয়ে আসছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৪