২৯-৩১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে জাতিসংঘের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমঝোতার ওপর একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত আর্টিক্যাল-৫৪-র ওপর আন্তঃদেশীয় ওয়ার্কিং গ্র“প একটি উপস্থাপনা দেয়। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলসহ ২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আর্টিক্যাল-৫৪ প্রয়োগের সমস্যাগুলো সেখানে আলোচিত হয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের প্রোফাইলও সেখানে তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে রয়েছেন নাইজেরিয়ার বায়েলসা প্রদেশের সাবেক গভর্নর আলামেইসিগা, ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাভেল লাজারেঙ্কো, নাইজেরিয়ার ডেল্টা প্রদেশের সাবেক গভর্নর জেমস আইবরি এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
কোকো সম্পর্কে বলা হয়Ñ সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে ২৩ জুন ২০১১-তে বাংলাদেশে তার ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৮.৮৩ কোটি টাকা জরিমানা হয়। যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে টেলিকমিউনিকেশন ও বন্দরসংক্রান্ত প্রকল্পে বৈদেশিক দুর্নীতি ও এফসিপিএ লঙ্ঘন করে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগে নন-কনভিকশনভিত্তিক বাজেয়াপ্তকরণ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এদিকে বাংলা নিউজ জানায়, আরাফাত রহমান কোকোর সিঙ্গাপুরে পাচার করা অর্থ ফেরত পেতে সরকারের প্রচেষ্টাসহ জঙ্গি অর্থায়ন, সন্ত্রাস দমন, সীমান্ত সন্ত্রাস ও হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে বাংলাদেশ।
আজ ১০ সেপ্টেম্বর সোমবার অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় রিজিওনাল রিভিউ গ্র“পের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের এ সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হবে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোও এ সম্মেলনে অংশ নেবে।
এ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সবিচ ড. মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কর্মকর্তা যোগ দিচ্ছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘সম্মেলনে আমরা বাংলাদেশের পক্ষে জঙ্গি অর্থায়ন, সন্ত্রাস দমন, সীমান্ত সন্ত্রাস ও হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পচার বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরবো। মানি লন্ডারিং ও জঙ্গি অর্থায়ন সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে সহায়তা চাইবো।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, দেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বেশ কিছু ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে বাংলাদেশে অর্থ পাঠাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিষয়টির বিস্তারিত উপস্থাপন করা হবে সম্মেলনে।
এনবিআরের একটি সূত্র জানায়, ব্যাক টু ব্যাক এলসি, মালোয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম এবং হুন্ডির মাধ্যমে প্রতি বছর ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন-২০১২ সঠিকভাবে পালনের নির্দেশ দেওয়া হলেও কিছু ব্যাংক এ আইন মানছে না। এ কারণে কিছু ব্যাংকের মাধ্যমেও দেশে জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়টি চালু আছে।’
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সিঙ্গপুরে পাচার করা ২০ কোটি টাকা ফেরত আনার বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হবে আন্তর্জাতিক ওই সম্মেলনে।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০৩