somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প ছোটগল্প, পড়বেন ছোট গল্প?

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জলোৎসবে জলজীবন
--হোসনে আরা মণি

টানা চোদ্দ দিন বাদল ঝরছে। এই চোদ্দ দিনের মাঝে একদিনের একক্ষণের তরেও সূর্যের মুখ দেখা গিয়েছে বলে কেউ সাক্ষ্য দিতে পারবেনা। পারবে কী করেÑ তারা কি আর আসমানের দিকে একপলক চেয়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছে? আসমান কেনÑ জমিনের উপরের খবরই বা তারা কতটা রাখতে পারছে? চোদ্দদিন ধরেইতো প্রায় ঘরবন্দি জীবন। ভাগ্যিস গেলবারে ধানটা ভাল হয়েছিল! এ ভিটার হাঘর, হাঅন্নরাও বর্গা চাষে ভাল ধান পেয়েছিল। তার কিছু জমান ছিল। আর সারা বছর এখান-ওখান থেকে কুড়িয়ে-বাড়িয়ে যা ছিল তা দিয়েই না এই কটা দিন দিব্যি কাটল। কিন্তু এভাবে আর কদিন থাকা যাবে? বাসাটার খিড়কি দরজায় এরই মাঝে পানি ঢুকেছে, পানিকাদায় দরজাটা বুঝি বুজেই গেছে। তাই যাওয়া-আসার জন্য উপরের দরজাই এখন ভরসা।
কাল সন্ধ্যায় বৃষ্টি একটু ধরে এলে এক উৎসাহী চ্যাংড়া সেই দরজা পথে বেরিয়ে একটু বাইরে ঘুরতে গিয়েছিল। অল্পক্ষণ পর ফিরে এসে সে যা বলল তাতে সবাই তাজ্জবÑ দুনিয়া নাকি আর সেই দুনিয়া নেই; লোকেরা বলাবলি করছেÑ সব সাগর হয়ে গেছে। এ খবর পেয়ে বাচ্চারাতো সাগর কী তা দেখার জন্য মহা উৎসাহে লম্ফ-ঝম্প শুরু করলÑ অবস্থা এমন যে মায়েদের ধমকেও তাদের উৎসাহ নেভেনা। শেষে বুড়ো ইদুন মোড়ল তার মস্ত বাতরসে ভরা শরীরটা কোনমতে হিচড়ে-পিছড়ে উপরে উঠতে থাকেÑ উদ্দেশ্য দুনিয়া দেখা। অর্থাৎ দুনিয়াটা সত্যিই সাগর হয়েছে কিনা এবং সেই সাগর দেখতে কেমন তা দেখে আসা।
তা সেই ইদুন মোড়ল যখন নেমে এল তখন তার চেহারা দেখে বাকিদের মুখ ভয়ে প্রায় নীলবর্ণ। বাসায় ঢুকে সে সেই যে শয্যা নিল তো পুরো রাতে তার আর কোন সাড় নেই। মোড়লের পো মোড়ল যে শেষপর্যন্ত বেঁচে উঠতে পারবে তা কাল রাতে কেউ ভাবতেই পারেনি। আজ সকাল থেকে অবশ্য তার অবস্থা একটু ভালর দিকে। হয়ত এ যাত্রা সে বেঁচেই গেল। তা বাঁচবে নাইবা কেনÑ হাজার হলেও ওরা পাঁচ পুরুষের মোড়ল। চিরটাকাল ভাল-মন্দ খাওয়া রক্ত ওর শরীরে। ওর দাদার দাদা বিদুর মোড়ল যখন এই এত্তটুকুন তখন নাকি দুনিয়াতে খুব ভাল, সুস্বাদু, খাঁটি অর্থাৎ সার-কীটনাশক ছাড়া নির্ভেজাল খাদ্যশস্য সুলভ ছিল। সেসব খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট বিদুর বড় হয়ে মোড়ল হল। সেই থেকেই তাদের বংশ সবসময় ভাল জিনিসটি খেয়ে আসছে। কোন খাবারটা খাঁটি, কোনটা ভেজাল, কোনটা স্বাস্থ্যকর, কোনটা ক্ষতিকরÑ এসব জ্ঞান বিদুরের আয়ত্ত্বে ছিল। এসবই সে শিখিয়ে গেছে তার অধঃস্তন প্রজন্মকে, তারা তার পরবর্তীদেরকে। এভাবেই বিদুরের বংশ অন্য সবার থেকে কান্তিমান, শক্তিমান হয়ে বেড়ে উঠছে। তো ইদুন মোড়ল একটু ধাতস্থ হয়ে আজ যা বলল তাতে তো সবার চক্ষু চড়কগাছ, মাথার মধ্যে বোঁ-বোঁ। উপরের সায়রে নাকি কিলবিল করছেন খালি তেনারা। বাস্তু-উদবাস্তু, জলজ-ভূমিজ সবই নাকি চারধারে ইচ্ছেমত ঘুরছে। বুড়ো ইদুন মোড়লকে তাদের একজন নাকি ধরেই ফেলেছিল প্রায়। ভয়ে- আতঙ্কে, আর ভারী শরীরটা নিয়ে জোরে ছুটতে না পারার ব্যর্থতায় সে পথের মাঝেই হার্টফেল করে অক্কা পেতে যাচ্ছিল।
সব শুনে গিন্নীরা সব কাঁদতে লাগল। গিন্নীদের কান্না দেখে বাচ্চারাও তারস্বরে শুরু করল। তবে পুরুষদের ধমকের মুখে শিগগিরই সবাই চুপ করল। পুরুষদের যুক্তি ফেলনা নয়Ñ সবাই মিলে যদি অমন হল্লা-চিল্লা করে তাহলে কোন বিপদ আর বাকি থাকতে পারে! বলাতো যায়নাÑ মাথার উপরে যারা আছেন তাদেরকে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিলে তারা কী করে বসে! বয়ঃজেষ্ঠদের এ বিষয়ে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। লাঠিপেটা-ফাঁসকল-বিষটোপÑ এসবতো মামুলি বিষয়। এমনকি দরজা সিল করে দেয়াটাও পুরনো কৌশল। ও কৌশল কাজে লাগেনা জেনে অর্থাৎ নতুন নতুন দরজা তৈরিতে তারা ওস্তাদ জেনে ওরা নাকি একবার নিয়েছিল ভিন্ন কৌশল। পাইপ দিয়ে টগবগে গরম পানি ঢুকিয়ে তাদেরকে পুড়য়ে মারা চেষ্টা করেছিল। এরকম নানা অভিজ্ঞতা আছে বলেই অবশেষে মেয়েরা চুপ করে। মাদেরকে চুপ করতে দেখে শিশুর দলও চুপচাপ স্তনপানে মনোযোগ দেয়। উপর থেকে ভেসে আসে নিষ্ঠুর দুপেয়েদের কথোপকথনঃ
এই বিষ্টি এমনি বিষ্টি নাগো, এ অইল গজুবে বিষ্টি। পাপের ভারে দুনিয়া যখন টলমল, তখন আকাশেত্থে ফেরেশতারা এমনি করে বিষ্টি নামের গজব ঢালে। নুহ্ নবীর আমলে আল্লা চল্লিশ দিন ধরে বিষ্টি দিছিল, ইবারতো কেবল চোদ্দ দিন।
ঠিক কইছ। চোদ্দদিনেই এ অবস্থা, চল্লিশ দিন হলি তো নূহ নবীর জমানার অবস্থাই হবি। বানের তলায় পাহাড়ও ডুববি।
ডুবুক। ডুবাই উচিৎ। পাপতো আর কম জমি নেই।
হ। সব পাপতো খালি আমরাই করছি। খায়ে নাখায়ে আমনের ধান রুইছিলে, সব গেল পানির তলায়। পানি একদিন নামবি কিন্তুক জাইগে উঠবি প্যাটের আগুন। সেই আগুন এই এত্ত এত্ত পানিতিউ কি নিভবি?
না নিভলি আর কিÑ আরো কিছু পাপ। ইভাবে পাপ বাড়তি বাড়তি একদিন দেখবা দুনিয়াডা পাপের তলায় ডুবে গেছে। তহন তুমার-আমার প্যাট পাপেই ভরে যাবি।
হ, খুব যাবি। এহনোতো প্যাট খালিই আছে, পাপ আইনে প্যাট ভরে দেও দেহি কেমন পার। খালিতো পার লাম্বা-চ্যাওড়া বাত ছাড়তি। তুমি ঘরে বসে পাপ পাপ করে বুলি কপচাও, ওদিকি দ্যাহ এই বিষ্টি কত্ত জনের কপাল খুলে দিচ্ছে। চিয়ারমেন ইবার তার দোতলা বাড়ি তিনতলা করে ফেলবি, ছালেক মেম্বারের টিনির ঘর পাকা চৌচালা হবি, দালাররা সব সাইকেল ফেলায় বাইক চড়বি।
হ, ঠিকই কইছ। এই বিষ্টি বহৎ লোকের কপাল ফিরাবিÑ অফিছারগের, নিতাগের, মন্ত্রীগের....খালি আমার ভুঁইর আমন ধান কয়ডা.....। বুড়ো ফোৎ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে। সে শ্বাসের আওয়াজে বুড়ো ইদুনের বুকও যেন কেঁপে ওঠে।

ঘ্যাঙদের সংসারে কদিন ধরে জব্বর ফুর্তি চলছে। নারী-পুরুষে গলা মিলিয়ে দিনরাত ঘ্যাঙর-ঘ্যাঙ করে তারা বেজায় আনন্দ উদযাপন করছে। এটাইতো তাদের উৎসবের কাল। পুরুষদের হৃদয়ে এ সময় উৎসবের বান, দেহে কামজ ঘ্রাণ। দেহ-মনের এই মৌতাতে তাদের গলাটাও হয় বড্ড দরাজ; অন্যদিকে নারীর রূপে হয় দারুণ খোলতাই। সবমিলিয়ে ভালবাসাবাসির এইতো সুবর্ণ সময়।
ঘ্যাঙ পুরুষেরা কদিন ধরে নির্লজ্জের মত গলা সেধে চলছে। তাদের সে মেঘমল্লার রাগে আকৃষ্ট হয়ে মেঘেরা আসছে সবেগে নেমে। মেঘেরা যত বেশি ঝরে পড়ে ঘ্যাঙ পুরুষের গলা ততই চড়েÑ মিঞা তানসেন বেঁচে থাকলে নিশ্চিত লজ্জা পেতেন। ঘ্যাঙ নারীদের কণ্ঠে সর্দিবসা ভাব। পুরুষের সাথে গলা মেলাতে তারা অক্ষম কিন্তু অত সুরময় প্রেমালাপের জবাবে কি আর চুপ থাকা যায়! অগত্যা তারা তাদের বসাকণ্ঠেই সাধ্যমত জবাব দিতে চেষ্টা করে। ঘ্যাঙ পরিবারের ছেলেপুলেরা দ্রুত বাড়ে। গত মৌসুমের প্রেমের ফসলগুলো এ বছরেই পেকে গেছে। মা-বাপের কীর্তি দেখে তারাও মুচকি হেসে মেঘমল্লার ধরে। তা দেখে ঘ্যাঙ মায়ের বুক কেমন করেÑ আহা! কত হাজার সোনামনির মাঝে দেখ কয়টামাত্র বড় হতে পেরেছে। প্রায় সবই গেছে মাছ আর জলঢোঁড়াদের পেটে। বড় হলে এসব জলার ছোটখাট মাছেরা আর তাদের ছোঁয় না বটে কিন্তু ঐ সরীসৃপগুলোর হুমকির মুখে তাদের গোটা জীবন কাটে। গেল বছরের বুড়ো নাগরটা আর এ বছরে নেই। কবে যেন জল ছেড়ে ডাঙ্গায় গিয়ে মরার সাধ জেগেছিল মনে। ব্যাস, চলে গেল এক গোখরা না দাঁড়াশের পেটে। কেন রে বুড়ো? বোশেখ-জষ্ঠির কাঁঠালপাকা গরমে যে ওনারা গেরস্থের ঘর-উঠোন-বাগানে যখন-তখন ঘোরাফেরা করেন তা কোন ঘ্যাঙই বা না জানে? তুই বুড়ো-হাবড়াÑ কোন সাহসে মজা ডোবা ছেড়ে গেরস্থ ঘরের কানাচে সাঁজকালে লাফালাফি করিস? এ জন্যই কথায় কয়Ñ যারে টানে যমে, সে যায় তার সমে। তা বুড়োটারই বা দোষ কী? চৈত-বোশেখ-জষ্ঠিÑ এই তিনমাসের টানা অনাবৃষ্টিতে ডোবা তো ডোবা পাতালের তলাটাও যেন শুকিয়ে যায়। গেরস্থের টিউকলে পানি ওঠেনা, ভুঁইয়ের বুকও শ্যালো দিয়ে ভেজান যায়না। মাঠের এখানে-ওখানে তাই ওরা ডিপ পুতেছে। তা সে ডিপও নাকি মাঝে মাঝে ফেইল মারে। পাতালের পানি এখন মানুষের কাছ থেকে যেন পালাতে চাইছে। এমন নিদাঘকালে একটু গা জুড়াতে অনেক পোড়াকপাল্যা ঘ্যাঙই গেরস্থ ঘরের ছায়ায় কিংবা গাছপালার তলায় একটু ঘোরাফেরা করে। সেদিন ঐ বুড়োটাও হয়তো তাই করেছিল। কিংবা কে জানেÑ বুড়োটা যা পেটুক ছিল! জলার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় খুদেমাছ, জলপতঙ্গ সব নাই হয়ে গেলে পেটের দায়ে সে প্রায়ই গেরস্থঘরের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে শুরু করত। দোআঁশ মাটির পুরনো ভিটেÑ এখানে-ওখানে উঁইয়ের ঢিপি, ঝিঁঝিঁর বাড়ি ছাড়াও হরেক রকম পোকামাকড়ের সমৃদ্ধ আবাস। পেটুক বুড়োটা হয়ত খিদে সইতে না পেরেই....কে জানে!
সাবেক বুড়োর দুর্বুদ্ধিকে মনে মনে গালমন্দ করলেও ঘ্যাঙানি কিন্তু বর্তমানের চ্যাংড়া নাগরকেও হেলা করেনা। বেচারা সেই কখন থেকে গলা ফুলিয়ে ডেকেই চলছে! ওর কণ্ঠে মেঘমল্লারের সুর আর যেকোন পুরুষ ঘ্যাঙের চেয়ে মধুর। ওর চেহারায় কম বয়সের লাবন্য, সুস্বাস্থ্যের লালিত্য এবং নবযৌবনের দীপ্তি। নিশ্চয় ওর সঙ্গ গতবছরের বুড়োটার চেয়ে উপভোগ্য হবে। তবু পুরনো সখা বলে কথাÑ এত বছরের স্মৃতি সে কী করে ভোলে! ভিজে ওঠা চোখের কোল উপচে পড়া ডোবার ঘোলা জলে ধুয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে মুখে হাসি ফুটিয়ে সে এগিয়ে যায় নবপ্রেমিকের অভিসারে।

দুধরাজের কপালে ভাঁজ। দুধরানীর মেজাজতো বড়ই খাট্টা। গতকাল থেকে দুধকুমার সেই একই ঘ্যান ঘ্যান করেই চলছে। তা বেচারাকে দোষই বা দেয়া যায় কী করে? সত্যিই তোÑ ওর এখন খেলার বয়স। কোথায় সঙ্গী-সাথী নিয়ে গহীন জঙ্গলে, লতাপাতার আড়াল-আবডালে খেলাধুলা করার কথা; তা নয়, বেচারাকে থাকতে হচ্ছে গেরস্থঘরের চালের ভাঁজে শুয়ে। তা সেই শোয়াটাও কি আর আরামের শোয়া? পুরো দেহটাকে টেনে-মুচড়ে কোনমতে ছনের সাথে মিশিয়ে এমন করে থাকতে হচ্ছে যেন তারাও একগোছা মোটা ছন বই আর কিছু নয়। এভাবে আর কাঁহাতক দিনের পর দিন থাকা যায়? অবুঝ, অনভিজ্ঞ দুধকুমারতো যখন-তখন বেরিয়ে যেতে চাইছে। মা দুধরানী যতই বোঝায়, দুধকুমারের ঘ্যানঘ্যানানি ততই বাড়ে। উপয়ান্তর না দেখে তারা স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়।
কর্তা দুধরাজ এমন একটা আবাসের খোঁজে রাতে চাল থেকে বেরিয়ে আসে যেখানে সপরিবারে মোটামুটি নিরাপদেই বসবাস করা যায় এবং সুবিধামত শিকারে যাওয়া যায়। দুধকুমারটার আহার্য নিয়েই যত চিন্তাÑ বেচারা এখনো বড়সড় কিছু গিলতে শেখেনি। দুধরাজ পরিবারের ভাগ্য ভালÑ চমৎকার একটা আবাসের সন্ধান নিয়ে কর্তা ফিরে এল শেষরাতে। তড়িঘড়ি করে পরিবারটি নতুন আবাসে প্রবেশ করল। ওয়াও!Ñ দুধকুমার ভিনদেশী ভাষাতে তার আনন্দ প্রকাশ করে। ইদানীং দেশে মাটির ঘরেও টিভি চলেÑ দুধকুমারের আর দোষ কী!
ছন-টালিতে ছাওয়া ঘরের মেঝে ফুঁড়ে ঠাঁই করেছে কিছু ধেড়ে ইঁদুর। গৃহস্থের জীর্ণ-পুরাতন মাচানের তলায় ছোট্ট ফুটো করে কয়েক হাত মাটির তলায় গড়েছে বেশ একটু প্রশস্ত নীড়। নীড়ের কেন্দ্র ঘিরে রয়েছে কিছু উপনীড়। আসলে ওগুলো নীড়েরই অংশÑ যেন প্রশস্ত লিভিং রুমকে ঘিরে থাকা কিছু বেডরুম, গেস্টরুম, স্টোররুম, স্টাডি ইত্যাদি। তবে নীড়টা যেহেতু ইঁদুরের, সেহেতু এর কুঠুরীগুলোর প্রায় সবই স্টোর হিসেবে ব্যবহৃত। আর কী নেই সেখানে! ধান-গমের শীষ থেকে শুরু করে নানারকম শষ্যদানা, টুকরো কাগজ, পাটের আঁশ, ছেঁড়া তেনা ইত্যকার নানা বস্তুতে সে নীড় বোঝাই। দুধরাজ পরিবারের আগমন বুঝতে পেরে ধেড়ে পরিবার যে যেদিকে পারে ছুটতে শুরু করে। বুড়ো ইদুন মোড়ল তার বাতরসভারী দেহটা নিয়ে তো আর অলিম্পিেিকর ১০০ মি. স্প্রিন্টের গতিতে ছুটতে পারেনা; তাই দুধরাজের মুখে সে ধরাটা খেয়েই গেল। কাচ্চা-বাচ্চারা সব বিভিন্ন ফাঁক-ফোকর দিয়ে কে যে কোথায় পালাল! কেবল এক সদ্যপ্রসূতি মা তার ছানাদের ছেড়ে যাবে কিনা তা ভাবতে গিয়ে এতটাই বিহ্বল হয়ে পড়ল যে দুধরানী তাকে সহজেই বাগে পেয়ে গেল। নবজাতক ধেড়ে ছানাগুলোর লোমহীন গোলাপী-লাল চেহারা, তখনো চোখ না ফোটায় পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার ব্যাপারে একেবারেই অনভিজ্ঞ। সেগুলোকে দুধকুমার বেশ ধীরে-সুস্থে আয়েশ করে খেয়ে নিল।
দুধরাজ পরিবার এখন দারুণ সুখী। ভরপেটের সুখ আর চমৎকার আবাসনের আরামে তাদের চোখে নিদ্রা এসে যায় প্রায়। গত কয়েকটা দিন তারা বড্ড আতঙ্কে কাটিয়েছেÑ এই বুঝি ওনাদের নজরে পড়ে যায়! একবার নজরে পড়লে ওনাদের হাত থেকে জঙ্গলেই নিস্তার মেলেনা তো বাড়িতে! আর এখন যা সময় তাতে দিনের বেলা ঐ খোড়ো চাল ছেড়ে বাইরে বেরুনো মোটেই নিরাপদ নয়। চালের তলার মাটিটুকু ছাড়া যেদিকে তাকাও শুধু পানি আর পানি। সরীসৃপজাত পানিকে তত ভয় পায়না, ভয় পায় পানির উপরে যারা প্রয়োজন ও স্বার্থের ফিকিরে ঘোরে তাদেরকে। পানি বাড়ার সাথে সাথে চিল ও বাজের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে। দুধকুমারকে নিয়ে পানিতে ঘোরাফেরা তাই তত নিরাপদ নয়। আবার দিনের আলোয় কোন গোপন আস্তানা খুঁজে পাওয়াও এখন সহজ নয়। কতখানি অনোন্যপায় হয়েই না তাদেরকে ঐ চালাটাতে ক্যামোফ্লেজ করে থাকতে হয়েছে! বেচারা দুধকুমার! সেতো এখনো পার্থিব ঝামেলা-জটিলতা বোঝেনিÑ সে প্রায়ই খেলতে বাইরে যেতে চাইত। তার মা তাকে শাসন করলে সে দেহ মুচড়ে প্রতিবাদ জানাত। ভাগ্যিস দিনের বেলায় ওনারা ঘরে কেউ তেমন থাকতেননাÑ ওনাদেরকেও পেটের চিন্তায় বাইরে দৌড়াতে হয় কিনা!
দুধরাজদের এ বাড়িতে ঠাঁই পাতার কথা নয়। সম্পন্ন গৃহস্থের গোয়ালঘরেই সাধারণতঃ দুধরাজদের আনাগোনা। কিন্তু এখন দেশের সব সম্পন্ন-অসম্পন্ন সবাই ডুবছে পানির তলায়। গৃহস্থের গোয়াল ডুবে গরুরা সব ভেসে গেছে কিংবা সামান্য অর্থের বিনিময়ে বেহাত হয়েছে, নয়ত দূরের কোন ইশকুল ঘরে ঠাঁই পেতেছে। দুধরাজদের ঠাঁই দেয়ার জন্য তো আর কোন আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়নি; তাই এ বাড়ির খোড়ো চালটাকেই তাদের বেছে নিতে হয়েছিল। এ বাড়ির ওনারা হাঘর-হাঅন্ন হলেও ভিটেটা বেঁধেছিল খুব উঁচু করেÑ দুধরাজদের দুর্দিনে এটা তাই কাজে লাগল।
পুরো দিনমান ঘুমিয়ে কাটিয়ে দুধরাজ পরিবার জেগে উঠল প্রায় সন্ধ্যায়। বাসা থেকে বেরুনোর এটাই সময়। খিদেও পেয়েছে খুবÑ পেটে কিছু না দিলেই নয়। দুধকুমারকে বেরুতে মানা করে দুধরাজ ও দুধরানী চলল খাবারের সন্ধানে। কিন্তু গর্ত থেকে বেরুতেই তারা এমন একটা অদ্ভুত ঘ্রাণ পেল যা তারা পূর্বে এ ঘরে পায়নি। মাচানের তলা থেকে উঁকি দিয়ে তারা যা দেখল তাতে তারা দারুণ খুশী হল। সত্যিইতো, দুগ্ধবতী জীবের সান্নিধ্য ছাড়া দুধরাজেরা থাকে কী করে!

নবপ্রেমিকের সাথে প্রেমের উত্তাল পর্বে প্রচুর ডিম ছাড়ল ঘ্যাঙানি। প্রেমিক ব্যাঙ ডিমগুলোকে দ্রুত নিষিক্ত করল। পরিতৃপ্ত-পরিশ্রান্ত ঘ্যাঙানি প্রেমিকের আলিঙ্গন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে চলে এল জল উপচানো ডোবাটার ধারে। বেশ করে শরীরটাকে ছড়িয়ে উবু হয়ে শুয়ে একটু বিশ্রাম নিতে যাবে এমন সময় কে যেন খপ করে তাকে মুখে পুরে নিল। কোনমতে চোখ ঘুরিয়ে সে দেখতে পেল সেই সোনালী-হলুদাভ রঙের সরীসৃপটিকে যে গত বোশেখ-জষ্টিতে বুড়ো ঘ্যাঙটাকে....। নিজের অনিবার্য পরিণতি বুঝতে পেরেও ঘ্যাঙানি কিছু বৃথা যুদ্ধের চেষ্টা করতে করতে মনে মনে ভাবে, আসল কাজটাতো একটু আগেই সারা হয়েছেÑ কোথাও না কোথাও তার কিছু সন্তান, তার রক্তের উত্তরাধিকার রয়েই যাবে।

ভরপেট আহার করে সুখী দুধরাজ দম্পতি মুখে দুটো ঘ্যাঙের বাচ্চা নিয়ে ফিরে চলে দুধকুমারের কাছে। যা দুষ্টু কুমারটা! এতক্ষণে একা একা কী যে করছে! অতিবর্ষার কারণে এবার দুধরানীর সব ডিম ফোটেনি। অন্যবছর এ সময় দুধরানীর বাসায় আট-দশটা বাচ্চা কিলবিল করে। অবশ্য এসব বাচ্চার কিছু যায় বাজ-ঈগলের পেটে, কিছু আবার বাচ্চাদের বাপেরও ভোগে লাগে। এবার সবেধন নীলমনি ঐ তো একটামাত্র দুধকুমার। মা-বাপ দুয়ে মিলেই তাকে পালন করছে।
খোড়োঘরের কানাছে পৌঁছে দুধরাজ বুঝল ব্যাপার ভয়ঙ্করÑ কিছু একটা এ বাড়িতে নিশ্চয় ঘটেছে। বাড়ির সবার মধ্যে কী এক অস্থিরতা, ওনারা সব লাঠিসোটা নিয়ে কী যেন খুঁজে চলেছেন। সর্বনাশ! তাহলে কি তাদের অস্তিত্ব, তাদের আবাস ধরা পড়ে গেল! দুধকুমারটা কোথায়? আছেতো বাসায়? দুধরানীর বুকটা কাঁপতে থাকে। ভয়ে ভয়ে অতি সন্তর্পণে আরেকটু এগোতেই তারা সেই সর্বনাশটাই প্রত্যক্ষ করে যা তারা আশঙ্কা করছিল। চারপাশ থেকে পানিচেপেআসা ক্ষুদ্র আঙ্গিনাটার পরে টানটান হয়ে পড়ে আছে দুধকুমার। শত্রুরা কুপি হাতে ঝুঁকে পড়ে তার চিকন লম্বা দেহটা লাঠির আগা দিয়ে উল্টে-পাল্টে জাত বিচার করছে। কেউ বলে, ইডা গোখরার ছাও। কেউ বলে, আরে না, দুধমনি, দেহিস না, গায় সাদা পারা। কেউ বলে, দুধ খাতি আইছিল, পুয়াতী ছাগলডার বাটেতো দুধ আইছে, তাই খাতি আইছিল। এসব শুনে একজন খেঁকিয়ে উঠে বলল, নিজিরা বানে ভাইসে যাবার লাগছিÑ এই ঘর আর হাতনে ছাড়া এক রত্তি ডাঙ্গা জমিন নাই, আর উনি আইছেন ছাগল নিয়ে। এ কথায় কে যেন নাকি স্বরে বলে, সাধে কি আর আইছি? তিনদিন নাওয়ে ভাইসে রাত কাটাচ্ছি। ঘরের মদ্যি হাঁটু পানি। মাচানের খুঁটি ভাইঙ্গে ক্যাথা-বালিশ, হাড়ি-কুড়ি সব ডুবিছে পানিতি। কোলের ছাওয়াল আর ঐ অবলা জীবÑ অগোরে কই থুই, কী খাওয়াইÑ এর মদ্যি বড় ভাসুরির মাইজে ছাওয়ালডা বানে ডুবে মইরলÑ তুমাগার জামই তাই কইল....
হুম, বুঝছি। জামই তো খালি এই তালেই থাহেÑ খালি মওকা একখান পাওয়া গেলিই হয়......। এ বাড়ির বুড়োটা বিরক্তির সাথে বলে।
মেয়েটার নাকিস্বর এবার ফোঁস ফোঁস কান্নায় রূপান্তরিত হয়। কাঁদতে কাঁদতেই সে বলে, আমি কি আসতি চাই? নাকি সাধ করে আসি? সৎমার ঘরে কার নাইয়র আসতি মন চায়? কিন্তুক পুড়া কপাল আমার; নাহলি দ্যাশে এত সব্বোনাশা বানই বা ক্যা আসবি আর ইসব গাইল-খুটা শুনতি আমারই বা ক্যা আসতি হবি.....
পূর্বের নারীকণ্ঠ এবার ঝংকার দিয়ে বলে, সৎমার ঘরে নাইওর আসতি মন চায়না তেমু আইছেন কোলে দুইডা, প্যাটে কয়ডা আর লগে পুয়াতি ছাগল লয়্যা। আপনা মা থাইকলে না জানি আরো কী নিয়া আইতেন, আদিখ্যেতা!
মস্ত ভারি পেটঅলা মেয়েটা আর কথা বাড়ায়না, বিনিয়ে বিনিয়ে কাঁদতে থাকে। কেবল মাঝে মাঝে বলতে থাকে, আমার কী সব্বোনাশ হোলোরে, ও আমার কাঞ্চি রে, তোরে নিয়ে ক্যা আইছিলাম এই বাড়িত!
মেয়েটার পাশে কালমত কী যেন একটা স্তুপ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঐ স্তুপ থেকে যে ঘ্রাণ ভেসে আসে তা এত দুঃখের মাঝেও দুধরাজদের মগজে ভিন্ন অনুভূতির সঞ্চার করে। খুব সাবধানে আরেকটু এগুতেই তারা ব্যাপারটা বুঝতে পারে। হ্যা, দুধকুমারের ঐ করুণ পরিণতির কারণটা বোঝা গেল। যে গাভীন ছাগীটাকে দেখে তারা তখন আনন্দিত হয়েছিল সেটাই ওখানে চারপা বিছিয়ে পড়ে আছে। ছাগীটার কাছ থেকে যে ঘ্রাণ ছুটে আসছে তাই কি দুধকুমারকে প্রলুব্ধ করেছিল গর্ত ছেড়ে বেরুতে? নাকি বাবা-মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগে সে খেলতে বেরিয়েছিল? মিটল তো খেলার সাধ? তবে ঐ দুর্ঘটনাটা কার দ্বারা ঘটল? দুধকুমারের দাঁতেতো বিষ নেইÑ থাকেনা; দুধরাজেরা অবিষধর প্রজাতি। তাহলে কি আর কেউ? আর সেই ‘আর কেউ’ এর দায় মাথা পেতে নিতে হয়েছে দুধকুমারকেই। ইস্! মাথাটা কেমন থেঁতলে গেছে! কেন যে ওনারা শত্রু-মিত্রের ফারাক না করে নির্বিচারে তাদেরকে......,আহা!
না, আর কোন নিরাপদ আবাসের দরকার দুধরাজ-দুধরানীর নেই। আজই হয়ত ওনারা খুঁজে বের করে বুজিয়ে দেবেন সব গর্ত। প্রাগৈতিহাসিক শত্রুতা সত্ত্বেও এই প্রলয়ঙ্করী বন্যায় ওনাদের সাথে আমাদের বা আমাদের সাথে ওনাদের সহবস্থানই যে অকরুণ নিয়তি তা ওনারা বোঝেননা। তার উপর আজ এই নীরিহ ছাগীটাকে কোন এক মাথামোটা-বদমেজাজী-পায়াভারীর অর্বাচীন জাতক দংশন করায় যেভাবে শত্রুতা উষ্কে গেল তাতে আর এ বাড়ির আশেপাশে থাকাটাও নিরাপদ নয়। ওনারা একবার খেপে গেলে করতে পারেননা এমন কিছুতো নেই। কাজেই গর্তবাসও এখন আর নিরাপদ নয়। তাছাড়া বান যেভাবে বাড়ছে তাতে আর দুদিনে আর সব বাড়ির ঘরের চালাও ডুববে। এ বাড়ির ভিটি অন্য সব বাড়ির চেয়ে উঁচু বলেই কিনা আজো ঘরটা শুকনো কিন্তু বান এভাবে বাড়লে কাল হয়ত পানি ঘরের মেঝে ছুঁয়ে যাবে। এতে করে গর্ত-টর্ততো ডুববেই। তাই ভাল আর নিরাপত্তার ভয়ে সিঁটিয়ে না থেকে উদার আকাশের নিচে ভেসে পড়া।। বাস্তুচ্যুতজনের জন্য চিরকাল আকাশই তো একমাত্র আস্থার স্থান!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×