পুলিশ প্রশাসনে এখন তোলপাড়
অভিযুক্ত পুলিশের এক কর্মকর্তা শীর্ষ এক কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে বলে দেন 'স্যার, আপনাদের অর্থাত্ এসপি ও ডিআইজিদের পদে পদে ঘুষ নেয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে থানায়ও ঘুষ বাণিজ্য অনেক কমে যাবে।' এ প্রসঙ্গে এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি মাসে থানা থেকে এসপি ও ডিআইজিদের নির্ধারিত হাতে ঘুষের প্যাকেট পৌঁছে দিতে হয়।
এই ঘুষ না দিলে সত্ অফিসার হলেও অসত্ অফিসার হিসেবে তার এসিআর-এ ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করে দেন। ৯৮ ভাগ থানায় নিরীহ মানুষ কিংবা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ধরে এনে ঘুষ আদায়ের বাণিজ্য চলে। চার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশে কিংবা চট্টগ্রামে কিছু সংখ্যক থানায় একেক ওসি বদলি হয়ে আসতে এসপি, ডিআইজি এবং শীর্ষ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ২০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উেকাচ দিতে হয়।
একইভাবে কোন কোন রেঞ্জের ডিআইজি এবং জেলার এসপি বদলি হতে শীর্ষ প্রশাসনকে উেকাচ দিতে হয়। আর এ উেকাচ নেয়ার জন্য শীর্ষ প্রশাসনে 'বহিরাগত ক্যাশিয়ার' থাকে। এই ক্যাশিয়ারের কাছে নির্ধারিত উেকাচ জমা দেয়ার পর তিনি শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে গ্রিন সিগনাল দেন। এরপর ভাল জায়গায় অর্থাত্ ঘুষ বেশি পরিমাণে আদায়ের বাণিজ্যের জায়গায় বদলির আদেশ জারি হয়ে যায় বলে উক্ত কর্মকর্তারা জানান।
কোন কোন জেলা এসপি ও রেঞ্জের ডিআইজি সরাসরি থানার ওসি ও এসআইদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেন। থানায় যোগদানের আগে মাসিক ঘুষ প্রদানের রেটটাও ওই সকল ওসি-এসআইদের জানিয়ে দেন। কয়েক থানার ওসি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এসপি আর ডিআইজির জন্য ঘুষ আদায়ের ধান্ধা করতে সারাদিন যায়। থানার অন্যান্য মামলার তদন্ত দারুণভাবে ব্যাহত হয় বলে তারা জানান।
প্রায় এক ডজন এসপি ও ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তার বাংলাদেশের বাইরে বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল সম্পদ রয়েছে, এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।