ইউরোপে ভ্রমন করতে চান, ভ্রমনপিপাসু এমন বাঙালির সংখ্যা অনেক। শেনজেন ভিসায় ভ্রমনের জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে, কত টাকা খরচ হবে, কি করলে আবেদন ফলপ্রসু হতে পারে, আর ভিসা না পেলেই বা করনীয় কি, তা আমাদের অনেকেরই অজানা। আজ তাই এ ব্যাপারে কিছু তথ্য আপনাদের মাঝে জানাতে চাই।
আমার এ লেখা কেবলমাত্র সাধারন পাসপোর্টধারী টুরিস্ট ভিসা আবেদনকারীর জন্য প্রযোজ্য।
শেনজেন ভিসার (টুরিস্ট ভিসা) আবেদন করতে মূলতঃ যে কাগজগুলো লাগে, তা হলোঃ
(১) সূচারুভাবে পূরন করা শেনজেন ভিসা ফর্ম, এবং সঠিক স্থানে আবেদনকারীর স্বাক্ষর ও তারিখ।
(২) নির্দিষ্ট মাপের ২ কপি ছবি (৩৫ মিমি X ৪৫ মিমি) ।
(৩) সাধারন ক্যাটাগোরির পাসপোর্ট হলে কমপক্ষে দুটি পাতা ফাকা থাকতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে ৩ মাসের (যেদিন আপনি ইউরোপ ভ্রমন থেকে ফিরে আসবেন, সেদিন থেকে ৩ মাসের মেয়াদ হিসাব করতে হবে)।
(৪) আপনার পাসপোর্টে যদি অন্য কোন পুরোনো পাসপোর্টের উল্লেখ থাকে, তবে তার ফটোকপি জমা দিতে হবে। আপনি যদি আগে শেনজেন ভিসা পেয়ে থাকেন, তবে সে পাতা/পাতাগুলোর ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
(৫) আপনার ইউরোপে যাবার কারণ জানিয়ে একখানা চিঠি (Cover Letter)।
(৬) আপনি যদি চাকুরিজীবি হন, তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার কর্তৃক আপনার চাকুরীর প্রমানপত্র।
(৭) ব্যাংক কর্তৃক সিল ও সই করা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাংক হিসাবের মূল কপি এবং ফটোকপি।
(৮) বাংলাদেশে আপনার স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তির কাগজের কপি।
(৯) শেনজেন ভিসার জন্য হেল্থ/ট্রাভেল ইন্সুরেন্স এর মূল কপি ও ফটোকপি।
(১০) আপনার ইউরোপে থাকার ব্যবস্থাপত্র/ হোটেল বুকিং-এর কাগজপত্র।
(১১) প্লেনের বুকিং কপি (পুরো ভ্রমন সময়ের জন্য)।
(১২) আপনার ইউরোপ ভ্রমনের ট্যুর প্ল্যান ।
(১৩) ভিসা ফি (যে এ্যাম্বাসিতে/হাই কমিশনে আপনি আবেদন করবেন, তাদের তথ্য অনুযায়ী)।
মোটামুটি এ কাগজপত্র গুলো থাকলে আপনি আপনার কাঙ্খিত শেনজেন ভিসায় (টুরিস্ট ভিসা) ইউরোপ সফরের জন্য ভিসার আবেদন করতে পারেন। আরও যে ব্যাপারগুলো মাথায় রাখা দরকার, তা হলোঃ
(ক) আবেদন করার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিন। কমপক্ষে ৪ সপ্তাহ সময় হাতে নিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরা করাটা মঙ্গল। কারণ, আপনি যে ভিসা অফিসেই আবেদন করুন না কেন, তারা ভিসা দেয়া বা না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য কমপক্ষে ২ সপ্তাহ সময় চাইবে। সে সময় হিসেব করে যে এ্যাম্বাসিতে/হাই কমিশনে আপনি আবেদন করবেন, তাদের কাছ থেকে তাদের নিয়ম অনুযায়ি এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।
(খ) যে এ্যাম্বাসিতে/হাই কমিশনে আপনি আবেদন করবেন, তারা আপনাকে সাক্ষাতকারের জন্য আমন্ত্রন জানাতে পারে। কাজেই সে অনুযায়ি আগে থেকেই নিজেকে তৈরী করে নিন।
আপনার ভিসা যদি না হয়ে থাকে, তবে যে ব্যাপারগুলো লক্ষনীয়, তা হলো, আপনার পাসপোর্টের সঙ্গে কোন Refusal Letter আছে কিনা। যদি Refusal Letter এ আপিল করার উল্লেখ থাকে, তবে আপনি পুনরায় আপিল করতে পারবেন। তবে আপনাকে পুনরায় ফি জমা দিয়ে আপিল করতে হবে কিনা, তা Refusal Letter এ উল্লেখ থাকবে।
আশা করি, এ সকল তথ্য আপনাদের কাজে আসবে।
আপনাদের ইউরোপ ভ্রমন আনন্দময় হোক !
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪