ধর্ম বিদ্বেষীরা একটা সহজ সরল উদাহরন দিয়ে বুঝাতে চান যে, পৃথিবীর সকল মানুষ শান্তিতে মিলে মিশে বসবাস করছিল, ধর্ম এসেই মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে নানা যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্ম দিয়েছে। ধর্ম না থাকলে পৃথিবীতে আবারও শান্তি ফিরে আসবে। তাই ধর্ম ত্যাগ করার মধ্যেই মানবতা ও কল্যাণ আছে বলে তারা প্রচার চালান। আপাতঃ দৃষ্টিতে দেখলে তাদের এসব কথায় যুক্তি আছে বৈকি।
কিন্তু তাদের একথা একেবারেই সত্য নয় যে, একটা সময় পৃথিবীতে কোন ধর্ম ছিল না। যেদিন থেকে মানুষের বিবেক ডেভেলপ শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই ধর্ম পৃথিবীতে স্থান গেঁড়ে নিয়েছিল। আব্রাহামিক ধর্মই ছিল গোড়া থেকে। একের পর এক নবি রাসুল পৃথিবীতে এসেছেন এবং আল্লাহর বানী মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। কোন নবি রসুল কখনোই কোন বিভেদ ছড়াননি। তারা একেশ্ববাদ প্রচার করেছিলেন মাত্র।
একটিবার পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখুন তো, সামান্য কারনেই ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি, কালোয় সাদায় হানাহানি, এক বাড়ির লোকের সাথে আরেক বাড়ির হানাহানি, এক পাড়ার লোকের সাথে আরেক পাড়ার হানাহানি, এক সম্প্রদায়ের সাথে আরেক সম্প্রদায়ের, এক জাতির সাথে আরেক জাতির, একদেশের সাথে আরেক দেশের হানাহানি। এখানে কি কেবল ধর্মই বিভেদ সৃষ্টি করেছে? একই ধর্ম আর একই মতাদর্শের হওয়া সত্বেও এরা হানাহানি করেই চলেছে।
একটা গল্প শুনুন।
আপেল গাছের এক আপলে আরেক আপেলকে বলছে, পৃথিবীর দিকে একবার তাকিয়ে দেখ। মানুষে মানুষে কত হিংসা, কত হানাহানি। এইভাবে হানাহানি করতে করতে মানুষ জাতি এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর তখন গোটা পৃথিবী আমরাই শাসন করবো। অপর আপেলটি বললো, তা তো ঠিক। তবে আমাদের মধ্যে কারা? কাঁচারা নাকি পাকারা?’
পৃথিবীর নানা বিভেদ আর হানাহানির জন্যে যারা কেবল ধর্মকেই দায়ী করছেন, তারা তাদের দৃষ্টিকে একটু প্রসারিত করলেই বুঝতে পারবেন, পৃথিবীর মানুষে মানুষে নানা ধর্মের বৈচিত্র্যের কারনে বিভেদ একটু সৃষ্টি হয়েছে এটা কিঞ্চিৎ সত্য হলেও, প্রকৃত সত্য আসলে তা নয়। এই বিভেদ মানুষের সহজাত। এটাই সৃষ্টির বৈচিত্র্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২