somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আনু মোল্লাহ
আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

মূত্র বিসর্জন

২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ম্যালাদিন আগের ঘটনা। নীলক্ষেতে ফুটপাতে একজন ভদ্রলোক জিপার খুইলা আরামসে মূত্র বিসর্জন করতেছে। আমিও গিয়া একেবারে তার গা ঘেঁষে খাড়াইলাম। ভাবখানা আমিও তার মত একই কামে খাড়াইছি। জিপারে হাত দেয়ার মত ভঙ্গি করতেছি। ভদ্রলোক ব্যাপক বেজার হলেন। হবারই কথা। বিশাল ফোর্স নিয়া পেশাব করতেছেন। এসময় বিরক্ত করলে যে কোন সুস্থ লোকেরই মেজাজ খারাপ হবে। ভদ্রলোক আমারে চোখ রাঙাইয়া কইলেন, সইরা দাঁড়ান না। আমার গায়ের উপ্রেই মুতবেন নাকি?
আমি কইলাম, ভাই আসেন কাটাকুটি খেলি।
কি?
কাটাকুটি খেলেন নাই কখনো। আরে- আমি ছাইড়া দিই। তারপর আপনার মুত দিয়া আমার মুত কাটাবেন। আমি আপনার মুত কাটবো। ছেলেবেলায় খেলেছি। হেব্বি মজার খেলা। আপনার তো হেভী স্পীড। খেলা ভালো জমবো।
ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি মুত বন্ধ কইরা জিপার টাইনা দিলেন।
আমি কইলাম, আয় হায়। মাঝ পথে বন্ধ কইরা দিলেন। কিডনিতে সমস্যা হবে তো। আসেন খেলি।
আমার দিকে কেমন একটা চাহনি দিয়া সে হন হন করে কাঁটাবনের দিকে ছুটল। আমিও তার পেছন পেছন হাঁটা দিলাম।
আমি তার পিছু ছুটছি, সে আরো জোরে ছুটছে। বার বার পিছে ফিরে ফিরে দেখছে। তার অবস্থা দেইখা আমিও হেব্বি মজা পাইতেছি। সুতরাং দৌড়াইতেছি।
সে প্রাণ-পণ দৌড়ায়া কুত্তা-বিলাই মার্কেট পার হয়া এলিফ্যান্ট রোডের দিকে কোথায় হারায়া গেল।
পাগলা কুত্তাকেও মানুষ এমন ভয় পায় না।
লোকটাকে হারায়া আমিও কুত্তার মত জিহ্বা বাইর কইরা হাফাইতেছি। এমন সময় দীপা আইসা হাজির। আমার আকৃতি-প্রকৃতি দেইখা বুইঝা নিছে কোন একটা আকাম করছি। কইলো চল তোরে ঠান্ডা খাওয়াই।
তুই খাওয়াবি?
হ। খাওয়াইতে পারি। টিউশনির টেকা পাইছি আইজ। দুই মাসের টাকা একসাথে দিছে। গত মাসে টাকা দেয় নাই। এই মাসে আইসা এক সাথে দিছে।
আমার চেনা মেয়েদের মধ্যে দীপা হল সর্বশ্রেষ্ঠ কিপটা। ওর চেয়ে আরো বেশি কিপটা কেউ থাকলেও থাকতে পারে। তবে ওরকম কাউকে আমি চিনি না। সেই দীপা আমারে আইস্ক্রীম খাওয়াইতে চায়। এই সুযোগ হাতছাড়া করন যায় না। দীপার কাছ থেকে খাইতে পারছি। এইটাও একটা ভাইরাল ঘটনা।
কইলাম চল, তাইলে।
গিয়া দুইজনে অষ্টব্যঞ্জন রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। বইসা কইল, আয় লাঞ্চ কইরা নিই।
তুই লাঞ্চ খাওয়াবি আমারে?

তুই ঠিক আছোস? তোর স্টুডেন্ডের বাসায় তোরে সকাল সকাল উল্টা-পুল্টা কিছু খাওয়াই দিছে নাকি?
দীপা খাওয়াইবো বিশ্বাস হয় না। ফেরেববাজ মাইয়া। এর আগে দুই দিন এরকম খাওয়াইবো বইলা খাইতে নিয়া এমনে সেমনে আমারেই টাকা দিতে হইছে।
আমি আবার কইলাম, খামু না। তোর লগে খাইলে বিপদ আছে। পরে আমারে টেকা দিতে হইবো। আমার অত টাকা নাই।
আরে না। টেনশন করছ ক্যান। টাকা দিতে হইবো না। কইলাম না আমি দিবো। ম্যালা টাকা আছে সাথে। এর আগে তর লগে ম্যালা শয়তানি করছি। মাঝে মাঝে তো ভালা হইতেও মুন চায়।
ভাব দেইখা মনে হইল সিরিয়াসলি খাওয়াইবো। তাও ভয়ে ভয়ে খাইতে বসলাম। খাইতে খাইতে দীপা আমারে জিগায়, তুই কি করছিলি ঐখানে।
তুইতো দেখছোস।
তার আগে। নিশ্চয় কোন আকাম করছস। নইলে ওরকম হাঁফাইতেছিলি ক্যান।
দীপা ইনায়া বিনায়া আমার কাছ থেকে ঘটনাটা বাইর কইরা নিল। কইলো, তোর এতো কাটাকুটি খেলার শখ!
আমি ওরে যতই বুঝাই আমি আসলে কাটাকুটি খেলতে যাই নাই। ব্যাটা রাস্তার পাশে মুততেছে দেইখা লোকটারে ডর দেখাইতে গেছি। সে বিশ্বাস করে না।
খাওয়া শেষে আমারে কইলো বিলটা দিয়া দে।
আমি তো আসমান থিকা পড়লাম। মানে কি?
মানে সোজা। বিল আমারই দেয়ার কথা। দেওয়ার নিয়তেই খাইছি। কিন্তু এখন আমি যদি তোর এই কাটাকুটি খেলার কথা সবাইরে গিয়া কই, তাইলে কেমন হইবো? আমি বলব আমি নিজের চোখে দেখছি, তুই কাটাকুটি খেলতাছিস। তখন কেমুন মজা হবে।
হারামজাদী! এই ছিল তোর মনে।
আর বেশি আর্গুমেন্টে না গিয়া বিলটা দিয়া দিলাম। এই মাইয়ারে বিশ্বাস নাই। আমার জীবন তামা তামা কইরা দিতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যদি এমন হতো.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

যদি এমন হতো....

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা-দারিদ্র-মহামারী, যুদ্ধবিগ্রহের ধ্বংসযজ্ঞে মানুষে মানুষে, দেশে দেশে সকল বৈরীতা ভুলে একটা সুখী পরিবার গঠন করে দুনিটাকে সত্যিকার ভূস্বর্গ করতে...
শুরু হতো বাংলাদেশ থেকে। সব রাজনৈতিক দল মুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বিকার ( কবি দাউদ হায়দার স্বরনে তারি লেখা কিছু কবিতা থেকে উৎসাহিত হয়ে)

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৫



জন্মেছি, এও এক ঘটনা মাত্র।
কারও ইচ্ছেতে নয়, কারও অনিচ্ছেতেও নয়।
রক্তের গন্ধে ভরা এক সকালে
আমি নেমে এসেছি, অপ্রত্যাশিত চিৎকারে ।

শহরের ধুলো, গলির বিক্রি হয়ে যাওয়া রোদ,
বাসের পাদানিতে ঝিমিয়ে পড়া শরীর,
সবকিছু দেখেছি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪



ফের জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা! পহেলগাঁও থেকে শিক্ষা নিয়ে আগেভাগেই ৪৮টি পর্যটনস্থল বন্ধ করে দিল কাশ্মীর সরকার


গত ২২ এপ্রিল অনন্তনাগের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×