ম্যালাদিন আগের ঘটনা। নীলক্ষেতে ফুটপাতে একজন ভদ্রলোক জিপার খুইলা আরামসে মূত্র বিসর্জন করতেছে। আমিও গিয়া একেবারে তার গা ঘেঁষে খাড়াইলাম। ভাবখানা আমিও তার মত একই কামে খাড়াইছি। জিপারে হাত দেয়ার মত ভঙ্গি করতেছি। ভদ্রলোক ব্যাপক বেজার হলেন। হবারই কথা। বিশাল ফোর্স নিয়া পেশাব করতেছেন। এসময় বিরক্ত করলে যে কোন সুস্থ লোকেরই মেজাজ খারাপ হবে। ভদ্রলোক আমারে চোখ রাঙাইয়া কইলেন, সইরা দাঁড়ান না। আমার গায়ের উপ্রেই মুতবেন নাকি?
আমি কইলাম, ভাই আসেন কাটাকুটি খেলি।
কি?
কাটাকুটি খেলেন নাই কখনো। আরে- আমি ছাইড়া দিই। তারপর আপনার মুত দিয়া আমার মুত কাটাবেন। আমি আপনার মুত কাটবো। ছেলেবেলায় খেলেছি। হেব্বি মজার খেলা। আপনার তো হেভী স্পীড। খেলা ভালো জমবো।
ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি মুত বন্ধ কইরা জিপার টাইনা দিলেন।
আমি কইলাম, আয় হায়। মাঝ পথে বন্ধ কইরা দিলেন। কিডনিতে সমস্যা হবে তো। আসেন খেলি।
আমার দিকে কেমন একটা চাহনি দিয়া সে হন হন করে কাঁটাবনের দিকে ছুটল। আমিও তার পেছন পেছন হাঁটা দিলাম।
আমি তার পিছু ছুটছি, সে আরো জোরে ছুটছে। বার বার পিছে ফিরে ফিরে দেখছে। তার অবস্থা দেইখা আমিও হেব্বি মজা পাইতেছি। সুতরাং দৌড়াইতেছি।
সে প্রাণ-পণ দৌড়ায়া কুত্তা-বিলাই মার্কেট পার হয়া এলিফ্যান্ট রোডের দিকে কোথায় হারায়া গেল।
পাগলা কুত্তাকেও মানুষ এমন ভয় পায় না।
লোকটাকে হারায়া আমিও কুত্তার মত জিহ্বা বাইর কইরা হাফাইতেছি। এমন সময় দীপা আইসা হাজির। আমার আকৃতি-প্রকৃতি দেইখা বুইঝা নিছে কোন একটা আকাম করছি। কইলো চল তোরে ঠান্ডা খাওয়াই।
তুই খাওয়াবি?
হ। খাওয়াইতে পারি। টিউশনির টেকা পাইছি আইজ। দুই মাসের টাকা একসাথে দিছে। গত মাসে টাকা দেয় নাই। এই মাসে আইসা এক সাথে দিছে।
আমার চেনা মেয়েদের মধ্যে দীপা হল সর্বশ্রেষ্ঠ কিপটা। ওর চেয়ে আরো বেশি কিপটা কেউ থাকলেও থাকতে পারে। তবে ওরকম কাউকে আমি চিনি না। সেই দীপা আমারে আইস্ক্রীম খাওয়াইতে চায়। এই সুযোগ হাতছাড়া করন যায় না। দীপার কাছ থেকে খাইতে পারছি। এইটাও একটা ভাইরাল ঘটনা।
কইলাম চল, তাইলে।
গিয়া দুইজনে অষ্টব্যঞ্জন রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। বইসা কইল, আয় লাঞ্চ কইরা নিই।
তুই লাঞ্চ খাওয়াবি আমারে?
হ
তুই ঠিক আছোস? তোর স্টুডেন্ডের বাসায় তোরে সকাল সকাল উল্টা-পুল্টা কিছু খাওয়াই দিছে নাকি?
দীপা খাওয়াইবো বিশ্বাস হয় না। ফেরেববাজ মাইয়া। এর আগে দুই দিন এরকম খাওয়াইবো বইলা খাইতে নিয়া এমনে সেমনে আমারেই টাকা দিতে হইছে।
আমি আবার কইলাম, খামু না। তোর লগে খাইলে বিপদ আছে। পরে আমারে টেকা দিতে হইবো। আমার অত টাকা নাই।
আরে না। টেনশন করছ ক্যান। টাকা দিতে হইবো না। কইলাম না আমি দিবো। ম্যালা টাকা আছে সাথে। এর আগে তর লগে ম্যালা শয়তানি করছি। মাঝে মাঝে তো ভালা হইতেও মুন চায়।
ভাব দেইখা মনে হইল সিরিয়াসলি খাওয়াইবো। তাও ভয়ে ভয়ে খাইতে বসলাম। খাইতে খাইতে দীপা আমারে জিগায়, তুই কি করছিলি ঐখানে।
তুইতো দেখছোস।
তার আগে। নিশ্চয় কোন আকাম করছস। নইলে ওরকম হাঁফাইতেছিলি ক্যান।
দীপা ইনায়া বিনায়া আমার কাছ থেকে ঘটনাটা বাইর কইরা নিল। কইলো, তোর এতো কাটাকুটি খেলার শখ!
আমি ওরে যতই বুঝাই আমি আসলে কাটাকুটি খেলতে যাই নাই। ব্যাটা রাস্তার পাশে মুততেছে দেইখা লোকটারে ডর দেখাইতে গেছি। সে বিশ্বাস করে না।
খাওয়া শেষে আমারে কইলো বিলটা দিয়া দে।
আমি তো আসমান থিকা পড়লাম। মানে কি?
মানে সোজা। বিল আমারই দেয়ার কথা। দেওয়ার নিয়তেই খাইছি। কিন্তু এখন আমি যদি তোর এই কাটাকুটি খেলার কথা সবাইরে গিয়া কই, তাইলে কেমন হইবো? আমি বলব আমি নিজের চোখে দেখছি, তুই কাটাকুটি খেলতাছিস। তখন কেমুন মজা হবে।
হারামজাদী! এই ছিল তোর মনে।
আর বেশি আর্গুমেন্টে না গিয়া বিলটা দিয়া দিলাম। এই মাইয়ারে বিশ্বাস নাই। আমার জীবন তামা তামা কইরা দিতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫