একবার জনৈক বুদ্ধিজীবী বনের পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে একদল শেয়ালের সাথে উনার দেখা হল। এত শেয়াল একসাথে দেখে তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি দৌড়ে পালাবেন কিনা সেটা ভাবতে ভাবতে দেখলেন, সে পথ নাই। পেছনের দিকেও আরো একপাল এসে হাজির হয়েছে। এত শেয়াল দেখে তাঁর ভিরমি খাওয়ার উপক্রম। তিনি ঠিক কোন দিকে দৌড় দিবেন সে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে তারা তাঁকে চারদিকে ঘিরে দাঁড়াল। এই প্রেক্ষিতে কি করনীয় সেটা নির্ধারণে তিনি তাঁর উৎকৃষ্ট মগজ হাতড়ে কোন উপায় বের করতে পারলেন না। ভয়ে নিজের চোখ বন্ধ করে নিজেক শেয়ালের পালের হাতে সমর্পণ করে দিলেন।
দীর্ঘক্ষণ চক্ষু বন্ধ রাখার পরে দেখলেন নিজের উপর কোন ধরনের আক্রমন এমন কি আঁচড়েরও আভাস পাওয়া গেল না। তখন তিনি চোখ খুললেন। খুলে দেখলেন, সব শেয়াল সামনের ডান পা কপালে তুলে তাঁকে স্যালুট দিচ্ছে। তাদের মধ্যে নেতা শেয়ালটি সামনে এসে বলল, হে মহাজন, আপনি আমাদের সালাম গ্রহন করুন।
'আমরা শেয়াল নিখিল বাংলার
সকলেই আপনার ফলোয়ার।।'
বাকী শেয়ালগুলা বলল, হুক্কা হুয়া, হুক্কা হুয়া, হুক্কা হুয়া।
শেয়ালদের ধ্বনিতে আকাশ বাতাস বন বাঁদাড় মুখরিত হল। মাননীয় বুদ্ধিজীবির দেহে প্রাণ আসল। তিনি হাত তুলে তাদের সালাম গ্রহন করলেন।
সহসা এক শেয়াল চিৎকার দিয়ে উঠল। বাঘ, বাঘ আসছে বাঘ। সাবধান! সাবধান!! শেয়ালগুলো সব এদিক সেদিক পালাতে লাগল। এদিকে বুদ্ধিজীবী সাহেব মরিয়া হয়ে বললেন, 'আমাকে রেখে যেওনা। প্লিজ।‘
শেয়ালনেতা, দাঁড়িয়ে বলল, 'হুজুর, একটা কাজ করুন, আপনি সমস্ত কাপড় চোপড় খুলে দাঁড়িয়ে থাকুন। ভাল হয় যদি, ন্যাংটা হয়ে গাছের ডালে ঝুলে থাকেন। বাঘেরা ন্যাংটা মানুষ দেখেনি কোনদিন। সে আপনাকে ভূত ভেবে আর কিছু করবে না।' বলে সেও লুকিয়ে গেল।
তখন মাননীয় বুদ্ধীজীবি মহাশয় আর কি করবেন, কাপড়-চোপড় সব খুলে সম্পূর্ন নগ্ন হয়ে আদি ও আসল চর্ম সম্বল করে গাছের ডালে ঝুলে পড়লেন।
পাশের গাছে দুষ্ট বান্দরেরা তখন হাসতে লাগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০২