অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে জাবতীয় কাগজ প্রস্তুত করেই গেছিলাম পাসপোর্ট অফিসে। যেয়ে দেখি বিশাল লম্বা লাইন। প্রাই ১ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর আমার কাগজে সাক্ষর করলেন কর্মকর্তা। কর্মকর্তা থাকার কথা দুজনের আছে একজন। আরেকজন বাইরে আছেন পরে আসবেন ! তাই একাই তিনিই সামলাচ্ছেন বিশাল লাইনের দায়িত্ব। তিনি এতই ধীর যে ১ ঘন্টায় মনে হয় ২০ জনেরও হয়না।
এর পর এক আরেক জায়গায় ৫ মিনিটে আরেকটা সাক্ষর নিয়ে গেলাম ৪ তালায় সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর পেলাম ছবি তোলার সিরিয়াল। ছবি তোলার জন্য যেখানে ফর্ম জমা দিতে হয় সেখানে কোন সিরিয়াল নেই। আর্মি অফিসার ফর্ম নিয়ে ভিতরে রাখছেন। কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমার পরে এসেছে যারা তাদের অনেককেই ভিতরে আগে ডাকা হচ্ছে ছবি তোলার জন্য। আর রেফারেন্স তো আছেই!
ক্ষেপে আর্মি অফিসারকে একজন কিছু কথা শুনিয়ে দিতেই আর্মি অফিসার জানিয়েদিলেন এটা “জান্নাতের” সিরিয়ালনা একটু সময় লাগবেই। এর পর আমিও রেগে এমন কিছু বললাম তিনি আর না পেরে কাজ শুরু করে দিলেন। আগে ঘন্টায় ২০ টা ছবি তুলা হচ্ছিলনা আর এখন ৩০ টা হচ্ছে।
প্রায় ২.৩০ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর আমার সিরিয়াল আসলো। আমি ভিতরে যেয়ে দেখি হায় এ কি অবস্থা ! ছবি এবং সব তথ্য মিলিয়ে একজনের কাজ সম্পন্ন করতে প্রয়োজন ৫ মিনিট সেখানে তারা অতিরিক্ত সম ব্যয় করছে। ৪ টা কম্পিউটারে ছবি তুলা হচ্ছে। মানে ৫ মিনিটে ৪ জনের ছবি সে হিসাবে ঘন্টায় ৪৮ জনের হওয়ার কথা সেখানে ২০ জনেরও ঠিক মত হয়না ছবি তোলা। আজব না ?
কারেন্ট চলে গেল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে জেনারেটরও চললনা । প্রায় ২০ মিনিট পর কারেন্ট আসলো আমি তখনো বসে আছি ছবি তোলার চেয়ারে। কারেন্ট আসার পরও দেখি কম্পিউটার অপারেটর গল্প করছে আরেক কর্মচারীর সাথে। আমি বললাম একটু তারাতারি করেন আপনারা এভাবে গল্প করলে চলবে ? দেখুননা কত বৃদ্ধ এই গরমে দাঁড়িয়ে আছে ঘন্টার পর ঘন্টা। আমিও আড়ায় ঘন্টা পর সুজগ পেলাম । আমাদেরও তো সময়ের দাম আছে তাইনা ?
আমার কথায় মাইন্ড খেয়ে বললেন আপনার ছবি আমি তুলতামনা আপনি যেখান থেকে পারেন তুলে নেন !! মেজাজটা গেল বিগড়াইয়া আমার।
* আপনি ছবি তুলবেননা ?
# না আমি আপনার ছবি তুলবনা !
* আপনি শিওর ? ঠিকাছে দেখি দোষটা কার, বলেই ফোন টা বের করে কল দিতে গেলাম ।
হটাত তিনি থামেন থামেন বলে উঠলেন। আমার ফর্মটা ATTESTED করে দিয়েছেন এক মিনিস্ট্রি এর একজন বড় কর্মকর্তা ! এটা তার চোখে পড়তেই সব কথা বাদ দিয়ে বললেন আপনি বসেন আমি ছবি তুলে দেই।
আমি বললাম নাহ দরকার নেই আপনি তো বললেন ছবি তুলবেননা আপনি। আর শুনেন আমি খুব সাধারন হয়ে এসেছি। লাইনে আড়ায় ঘন্টা দাঁড়ায় ছিলাম আর আপনাদের কাজের গতি দেখছিলাম। আমার সাথে সাধারন ব্যবহার করুন। রেফারেন্সে আসলে যেমন ব্যবহার হয় আমি সেটা দেখতে চাইনি। Treat me as a Bangladeshi. Please don’t treat me as a special one.
ছবি তুলে চলে আসলাম। আসার আগে লোকটার নাম জিজ্ঞেস করলাম । নাম আর বলেনা ! শেষে তার ডাকনাম টা বললেন...আমান !
ডিজিটাল বাংলাদেশ এত সহজ না। আমি সকাল ১১ টায় যেয়ে কাজ শেষ করেছি দুপুর ৩.৪৫ এ। বসার আসন ২০ টা মানুষ আছে ২০০+ আর্মি অফিসার বলে আপনাদের জন্য AC আনবো নাকি ? এসব উলটা পালটা কথা নিয়েয় লেগেছিল আমার সাথে কিন্তু তিনি পেরে উঠেন নাই।
খুব মর্মাহত হয়ে ফিরে এসেছি। এভাবে দেশ চললে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সরকার ব্যর্থ। পারলোনা এদেশটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে । পারলোনা আমাদের ছাত্র সমাজকে মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে। এর পর আমাদের ভবিষ্যত কি ? আর আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ?