রাত একমাত্র সময় যখন নিজেকে সবার থেকে আড়াল করে ছাদের এক কোণে বসে চাঁদের সাথে গল্প জমিয়ে তোলা যায়। রাত্রি নামলে চাঁদ মামা তার সমস্ত সময় আর স্নিগ্ধ আলো বিলিয়ে দেয় সকলের মাঝে । সেদিন রুপকের মন খারাপ। চাঁদের আলোতে নিজেকে সতেজ করে তোলার প্রয়াসেই চাঁদের সাথে গল্প করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো সে ।
কেন জানি চাঁদটা নিজেকে মেঘের আড়ালে রেখেছিল সেদিন । আকাশটা বড্ড বেশী অন্ধকার। অন্ধকার রুপকের ভালো লাগেনা। অন্ধকারে শুধুই বিষণ্ণতা, কেমন যেন ফ্যাকাসে রকমের অনুভুতি। রুপক ভাবে ঘরে যেয়ে ডিম লাইটের আলোতে কিছুটা কৃত্রিম অনুভূতি উপভোগ করবে।
লাইটের সুইচ দিতে যেয়েই টের পায় বিদ্যুত নেই...হারিকেনে আজ একটুও কেরোসিন নেই। ভেবেছিল অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে খানিক তেল কিনে নিবে কিন্তু চাঁদের নেশা সেই তখন থেকেই চেপে আছে তাই আর মনে ছিলোনা তেলের কথা।
ক্লান্ত শরীরটা বিছানার কাছে সমর্পণ করতেই রুপককে বিছানা আপন মায়ায় জড়িয়ে ঘুম পারিয়ে দেয় রুপককে । ঘুমে স্বপ্নের মাঝে তার কাছে জোছনার আলো ধরা দেয়। স্নিগ্ধতাই তার ঘুম আরো গভীরে পৌছায়। বেলা ১২ টাই অফিসে যাবার কারনে চাকরিটা চলে গেছে তার । তবে এটা নিয়ে তার কোন চিন্তা নেই রুপকের । তার বেশ কিছু জমানো টাকা আছে সেগুলো দিয়ে বেশ কেটে যাবে একা জিবন। কিন্তু রুপক কিছু একটা চায়।
রুপক আজ আর বাসায় ফিরবে না...নদীর ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর মেলে ধরে মনে মনে ভাবে আজ হয়তো নদী হতে কোন জলপরী ধরা দিবে তার কাছে । পাশে থাকা বেঞ্চ টাতে গা এলিয়ে দিতেই স্বপ্নের রাজ্যে পাড়ি জমায় রুপক। সেখানে তার জন্য অপেক্ষায় ছিল এক জলপরী...
এভাবেই প্রতিদিনের ইচ্ছা গুলো স্বপ্ন হয়েই ধরা দেয় রুপকের কাছে...বাস্তবতার দেখা পাবার অপেক্ষায় সে এখন পাগলপ্রায়...বড়ই ক্লান্ত। তবুও বাস্তবতা এতটাই কঠিন আর নিষ্ঠুর যে সহজে ধরা দিতে চাইনা রুপকের কাছে...
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৪