বই মেলা। বইয়ের সাথে পাঠকের সম্পরক তৈরীর কাযরকর উদ্যোগ। পাঠকও অপেক্ষয় থাকে মেলার জন্য। মেলায় বইয়ে মূল্য অনেক কম থাকে, এবার মেলায় ওই ওই বই কিনবো বলে কয়েকমাস আগ থেকেই পরিকল্পনা করে। কেউ কেউ জমাতে থাকে টাকা। এই পাঠকগুলোকে ঠকানোর জন্য অপর দিকে ফাদ পেতে বসে থাকে নামী দামী বেশ কয়েকজন প্রকাশক।
যে কোন প্রকাশক রবীন্দ্রনাথ, শরৎ চন্দ্র, জীবনান্দ দাশ, বা বাংলা সাহিত্যের পুরোধাদের নিয়ে ব্যবসা করুক কারো আপত্তি নেই। কিন্তু সে ব্যবসারওতো একটা সীমা থাকা উচিৎ।
এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাঠক সমাবেশ ২৫ খণ্ডে রবীন্দ্রসমগ্র করেছে। ২৫ খণ্ডের দাম একত্রে ৪৫ হাজার টাকা। রবীন্দ্রসমগ্র কেউ যদি আলাদা কোনো খণ্ড কিনতে চায় সেই ব্যবস্থাও আছে।
এক পাঠক রবীন্দ্রসমগ্র খণ্ড ১৯ কিনতে গিয়ে তার চোখ ছনাবড়া। ৭০৫ পৃষ্ঠার বইয়ের গায়ে মূল্য লেখা ১০০০ টাকা। অমর একুশে বইমেলার নিয়ম অনুযায়ী ২৫% কমিশনে বইটির দাম হয় ৭৫০ টাকা। মেলার শুরুর দিকে তিনি বইটি কেনার জন্য মনস্থির করেন। তখনও দাম ছিল ৭৫০ টাকা। কিন্তু বৃহস্পতিবার কিনতে গিয়ে পড়ের মহা বিপত্তিতে। এখন নাকি ওই খণ্ডের মূল্য ১৫০০ টাকা। আর ২৫% কমিশনে দাঁড়ায় ১১২৫ টাকা। তিনি বইয়ের গায়ে মূল্য ১০০০টাকা দেখালেও বিক্রেতা বইটি ১১২৫ টাকার নিচে বিক্রি করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তারপর অনেক জোড়াজুড়িতে দোকানী সাফ বলে দেয় ১১০০ টাকা দেন। তিনি উপায়ন্ত না দেখে ১১০০ টাকা দিয়ে বইটি কেনেন। এরপর তিনি জোর করেই বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় রশিদ নেন। ক্রয় রশিদের বলা হয়েছে বইয়ের দাম ১৫০০ টাকা। ২৫% কমিশনে মূল্য ৩৭৫ টাকা কমিয়ে দেখানো হয়েছে ১১২৫ টাকা। তারপর ডিসকাউন্ট দেখানো হয়েছে ৭০ টাকা। এবার হল ১০৫৫টাকা। খুব আশ্চার্যের বিষয় হল, এরপর ৪% ভ্যাট যোগ করা হয়েছে ৪৫ টাকা। মোট দেখানো হয়েছে ১১০০ টাকা।
অমর একুশে বইমেলায় কোনো বইয়ের উপর ভ্যাট ধরার কোনো নিয়ম আছে বলে আমার জানা নেই। এখন প্রশ্ন হলো কোথাও পেল পাঠক সমাবেশ ৪% ভ্যাট ধরার আইন? বইয়ের গায়ের মূল্যের চেয়েও ১০০ টাকা বেশি দিয়ে কার কাছে বই বিক্রি করতে চাচ্ছে পাঠক সমাবেশ ?
বইটি তিনি কিনেছেন। কিন্তু মনের দুঃখ ভুলতে পারেননি। ব্যবসায়িক মানসিকতা এতো নিচে নেমে গেছে যে, পাঠক সমাবেশ পাঠকের সেঙ্গ এভাবে প্রতারনা করতে করছে। তা তিনি ভাবতেও পারেননি। যা বাবা গুরুদেব ধনির কাছে চলে যা, তোকে শুধুই ধনিদের কাছে পাঠাতে নেমে পড়েছে বিশিস্ট প্রকাশকরা।
###