‘‘কবিতায় নিহিত থাকে জীবনকে প্রহরেপ্রহরে বদলে নেবার মন্ত্র, সময়কে মন্থন করবার মউনিপ্রতিম করুণ কোমল সুর এবং স্বর যা শিল্পের রসায়নে জারিত হ’য়ে তিলে তিলে কবিতায় রূপ নেয় সার্থক কোনো আধুনিক কবির হাতে, তাঁরই মৌনমগ্ন কালজ্ঞ খেয়ালের যাদুবলে৷ কবিতার আগ্রাসন বড়ো তাণ্ডুবে, নিস্তারহীন, বড়োই মর্মভেদী; কবিতা আমার কাছে উষ্ণঅভ্যন্তর–আগ্রাসী ওষ্ঠ, লুটেরা অধর, অধরা মাধুরী– অমীমাংসিত রমণী, যার রহস্যময় জঙ্ঘার একেকটি ঠমকের কাছে জনমজনম বুক চিতিয়ে প’ড়ে থাকতে হয়৷ মামুলি সব আবোলতাবোলসার– এমনকী সুখকর– শব্দরাশির অর্থহীন কচকচি তুচ্ছ জীবনযাপনের অনুষঙ্গ হতে পারে, কবিতায়, শিল্পকলায়, এ–সব উটকো, আজগুবি৷ কবিতা কোনো উটকো ললৎ জল নয়, আজগুবি পালা নয়৷ ‘কবিতাসুলভ ’–ঢঙে–কাটা ছত্রাদি, যত্রতত্র যতিচিহ্নাদির অপার অপচয়, অন্ত্যমিলের পুরোনো কাসুন্দি, প্রশংসার ফেনা, খাঁটি কবিতাপ্রেমীর কর্ণকুহর আমোদিত করে না, মস্তিষ্ককোষকেও দেয় না আহামরি কোনো নবতর ভাবনায় লীন হবার মৌন সুখ, আশ্চর্য কামড়; হৃদয়ের নাড়া শেকড়ের সাড়া, আরো দূরে, তার জন্যে চাই কবিত্বগুণ, শিল্পকে আশ্রয় ক’রে যা হয়ে ওঠে এবং বেড়ে ওঠে ধীরেধীরে৷ কবিতার প্রাণের নাম তার শিল্পসৌন্দর্য যা অন্যান্য শিল্পমাধ্যমেরও অরাধ্য, বলা যায়, কবিতার গুণে গুণান্বিত হ’য়েই অন্যান্য শিল্প ও চিত্রকর্ম ভাস্কর্য ইত্যাদি– হ’য়ে ওঠে শিল্প৷’’
এটাকে বইএর পাবলিসিটি না ভেবে আলোর সন্ধান বা ঠিকানা ভাবলে বোধহয় ঠিক করবেন। এই কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ এটি৷ তিনি পাবলিসিটির ধার ধারেন না৷ মহাকালই নির্ধারণ করবে তাঁর অবস্থান কোথায়৷ ওপরের লেখাটি কবির লেখা ভূমিকার অংশ, যা ফ্ল্যাপে দেওয়া হয়েছে৷ কাব্যগ্রন্থটি জাগৃতি প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে৷ ধন্যবাদ৷
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৭