রিয়া ওর ৩ বছরের ভাইজি রিম্পি কে খাওয়ানোর চেষ্টায় বাস্ত। অনেকক্ষণ ধরেই রিম্পির সাথে হুড়োহুড়ি করচে রিয়া। কিছুই খাওয়ানো যাচ্ছেনা মেয়েটাকে। গতকাল রাতে রিয়ার ভাবি মুমু কে হসপিটাল এ নেয়া হয়েছে, বাচ্চা হবে। বাসায় শুধু রিয়া আর রিম্পি। বড় ভাইয়া রাতুল, ছোট ভাই রুহেল, মা-বাবা সবাই সেখানে। কিছুটা টেনশন ও হচ্ছে রিয়ার।
রিম্পি ডাকছে, কিন্তু রিম্পির ডাক ছাড়িয়ে কানে এল মোবাইলের রিংটোন। "হ্যালো", ওপাশে রুহেলের গলা, "আপু, আরেকটা ডুপ্লিকেট রিম্পি হইছে, ভাবি ভাল আছে। রিম্পি কে নিয়ে তোকে চলে আসতে বলছে মা।"। অনেক খুশি লাগছে এখন রিয়ার, সে রিম্পি কে নিয়ে তৈরি হএ হসপিটাল এ আসলো।
ওখানে ততোক্ষণে রিয়ার খালা এসে উপস্থিত। "খালা তোমার আজকে কলেজ ছিল না?" "না আজকে আমার ক্লাস নেই, আর প্রাইভেট এর ছাত্রীদের আগেই বন্ধ দিয়েছি। কিন্তু এত হুড়োহুড়ি করে এসে তো শুনছি রাতুল এর আবার মেয়ে হয়েছে। তাঁর উপর আবার বউ করে চাকরি, সে কি আর বাচ্চা নিতে চাইবে? আর রুহেল তো মাত্র অনার্স এ পড়ে, ওর বিয়ে-বাচ্চার অনেক দেরি। তোর মা-বাবার কি আর নাতির মুখ দেখা হবে?" খালার এই কথা শুনে রিয়া কি বলবে বুঝতে পারছে না। ঢাকা ভার্সিটি থেকে মাস্টার্স, এমফিল করা, বিসিএস ক্যাডার খালার মুখেই যদি ছেলে না হবার জন্য আক্ষেপ শুনতে হয় তবে অশিক্ষিত, গরীব লোকদের আর দোষ কি? রিয়া ভাবতে থাকে, ছেলে হলেই যে সুসন্তান হবে তার নিশ্চয়তা কি? অথচ এই খালাই রিয়া কে সবচেয়ে বেশি আদর করে। তাহলে তাঁর সেই আদর- ভালবাসা কি মেকি? হটাত রিয়ার মা ডাক দেই, কেবিন এ যেয়ে নতুন শিশুটিকে দেখতে বলে।
কিন্তু রিয়া তখন যেন কিছুই শুনছে না, কিছুই দেখছে না, শুধু ভাবছে এই নবজাত শিশু টি কি মানুষ হবে না মেয়ে মানুষ হবে?