শিরোনাম দেখে আমাকে পড়ুয়া ভাবলে ভুল করবেন, আমি অনেক পরি, তবে অ্যাকাডেমিক পড়া বাদে। পছন্দের বই যেখানে পেয়েছি, এনে পড়ার চেষ্টা করতাম, এমনকি এস।এস।সি পরীক্ষার পর ম্যাডাম এর কাছ থেকে চেয়ে এনেও পরেছি। আর আনতে না পারলে কিনেচি, সে যতদিন পরেই হোক।
খুব পছন্দ গোয়েন্দা কাহিনি। সবচেয়ে প্রিয় ‘ফেলুদা’ । শারলক হোমস, তিন গোয়েন্দা, কাকাবাবু, ব্যোমকেশ, টেনিদা, শঙ্কু তো আছেই সাথে রবিন্দ্রানাথ, শরৎচন্দ্র, আনিসুল হক কেউ বাদ যাননি। এবার বই পড়ার কিছু নিজস্ব পদ্ধতি বলছি কারন যত বই পরেছি তার অর্ধেক ই লুকিয়ে। কখনও মাকে, ভাইকে, আবার ক্লাস এ শিক্ষকদের লুকিয়ে।
ক্লাসে বেশির ভাগ লুকাতাম বই এর ভিতর, ব্যাগ এর ভিতর ও লুকিয়েছি। শিক্ষকরা এগিয়ে আসলে টেবিল এর নিচে চলে যেত বই। স্কুল এ 9-10 এ বেশি করেছি।
এরপর বাসায় নিতাম গাইড ধরনের মোটা বইয়ের ভিতর, তবে ১দিন মা’র হাতে ধরা পরে এই পদ্ধতি বাদ দেই বাসায়। আর মা অফিস গেলে তো মহাশান্তি। কারন দিনে বাসায় খালা-ফুপু রা থাকত না, so নালিশ এর ভয় ছিলনা। আর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পরলে তো পরতাম ই। এরপর শীতের দিনে নতুন উপায় এ শুরু করলাম(তখন কলেজে এ পরি), বিছানায় বসে লেপের নিচে, আর লেপের উপরে ক্লাসের বই। মা যখন রুম এ উকি দিত, তখন উপরের বইটাই দেখত। এই পক্রিয়ায় ধরা খাইনি।
আমার ভাই কে লুকিয়ে পরতাম ওর কার্টুন বই। ও আমার বইগুলো পরতে সময় নিত তাই ওকে পরতে দিতে চাইতাম না। তাই ও ওর কার্টুন বই ওর ড্রয়ারে তালা দিয়ে রাখত। আর আমি ও বাইরে গেলে বা ঘুমিয়ে থাকলে ওগুলো বের করে পরতাম।
আর কোনও বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যেয়ে নতুন বই পেলে সবার মাঝে বসেই পরতাম, আড্ডাও চলত আর আমার বই পরাও চলতো। আর এতে আমার দোস্তরা বিরক্ত হলেও পড়া থামত না।
আর ভার্সিটি তে এসে, শুধু পরীক্ষার সময় মাস ২ ছাড়া সারা বছর নতুন বই পেলেই পরি। আর যে বই পড়া হয়ে গেছে কিন্তু সংগ্রহে নেই, সেটা কেউ উপহার দিতে চাইলে সেই বই গুলো চেয়ে নেই।
শেষে গেল সপ্তাহেও মাকে লুকিয়ে ১তা আগের পড়া (কইয়বার পরছি তার হিসাব নেই) ফেলুদার বই পড়ার জন্য বাসা থেকে হল এ নিয়ে এসেছি।
পরিষেশেঃ মা, ছোট ভাই এবং শিক্ষক দের কাছে ক্ষমা চাই এভাবে লুকিয়ে পড়ার জন্য। তবে বই আমি পরবই।