একটা গণতান্ত্রিক দেশে কি কথা বলার অধিকার নেই? দাবী জানানোর অধিকার নেই?
কথা বল্লেই মার খেতে হবে? দাবী করলেই মার খেতে হবে?
আমরা কি সামন্তযুগে বাস করছি?
একটা দেশ- আমাদের বাংলাদেশ অনেক প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে শুধু জনগণের বাচাঁর একান্ত-একাগ্র ইচ্ছার উপর ভর করে। মানুষ বাচঁতে চায়। মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে বাচঁতে চায়। শত অপরাধ, দূর্নীতি, অভাবগ্রস্থতার মধ্যেও মানুষ বাচঁতে চায়। যে ছেলেটা প্রাণের তোয়াক্কা না করে ভূমধ্যসাগর পারি দিয়ে ইউরোপে অভিবাসি হচ্ছে শুধু প্রিয়জনদের কথা চিন্তা করে এবং অবৈধ অভিবাসী হয়ে দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে- তার পাঠানোর টাকায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। যে ছেলেটা মাস্টার্স পাস করে সারাদিন সেল্সম্যানের কাজ করে মাস শেষে ১৫ হাজার টাকা পাচ্ছে - ঐ টাকায়ই তার বাবা-মা, পরিবার খেয়ে পড়ে বেচেঁ আছে। এই কাজের ব্যবস্থা মানুষ ব্যক্তি চেষ্টায় করছে। আর এ কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
যে ছেলেট দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে- বেশিরভাগেরই বাবা-মা চেয়ে থাকে কখন তার ছেলে পাশ করে বের হয়ে একটা চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবে। এ জন্য তাঁরা জমি বিক্রি করতে্ও পিছপা হন না। তাঁদের স্বপ্ন থাকে তাঁদের ছেলে একটা সরকারী চাকরি করবে।
এই সরকারী চাকরি পেতে গেলে যে কি পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয় সেটা শুধু যারা করে তারাই জানে। খেয়ে- না খেয়ে পড়ার টেবিলে বসে থাকে। জীবনের সেরা সময় চলে যায় পড়ার টেবিলে। তবুও চাকরি জোটে না। কারণ এত এত চাকরি প্রত্যাশিদের মধ্যে থেকে লটারিতে তার নাম ওঠে না। হ্যাঁ, সরকারী চাকরি এখন লটারী- চাকরি এখন লটারী তাদের কাছেই- যাদের কোন কোটা নেই, যাদের কোন লিংক নেই, যাদের কোন টাকা নেই!
আজ এত এত বেকারের দেশে ৫৬ ভাগ কোটা শুধু অমানবিক।
যারা আজ আক্রান্ত হয়েছেন- তাদের পরিবার কী করছে , তাদের বাবা-মা , ভাইবোন কোন পরিস্থিতি সাফার করছে এই ব্যপারটা কি ভেবেছে যারা আক্রমণ করেছে। আমরা সবাই বাবা-মায়ের সন্তান। আমরা সবাই মানুষ। আপনারও পরিবার আছে - তাদেরও আছে। মানবিক হোন। মানুষের কষ্টটা বুঝুন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তারা এখন প্রজ্ঞাপন চায়।
প্রজ্ঞাপন কখন হবে, কিভাবে হবে তার একটি পরিস্কার ধারণা দিলেই তো সবাই সংশয় থেকে মুক্তি পেতো।
আজ এই হামলার পর সবাই আতংকগ্রস্ত। কোন জায়গায় জানি দেখেছিলাম- কোন সিনেমায় মনে হয়: ভিলেন বলছে “মারতে হবে , ভয় দেখাতে হবে! এটাই আমাদের পুঁজি।”
আন্দোলনকারীদের কেন মারতে হবে? এটা তো গণতান্ত্রিক দেশ- বঙ্গবন্ধুর দেশ। এখানেতো কথা বলার অধিকার আছে- এখানে তো ন্যায্য দাবী করার অধিকার আছে!
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর অমর কবিতায় বলেছিলেন “ কেউ যদি ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজন যদি সে হয় তাঁর ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেবো।”
এই ছিলো তাঁর নীতি- এমনকি শত্রুর প্রতিও।
আমি তাঁর আদর্শ মেনে চলি।
আমি আতংকগ্রস্থ নই- লজ্জা লাগে! বড় লজ্জা লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:০১