গত মাসের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। দেড় সহস্রাধিক ইসরায়েলিকে হত্যা করে, জিম্মি করে দুই শতাধিক। প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত নয় হাজারের ওপর ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বাদ যাচ্ছে না নারী-শিশুরাও।
হামলা-পাল্টা হামলা চলছেই। লেবানন ভিত্তিক সংগঠন হিজবুল্লাসহ আরও একাধিক ইসলামি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে। ভীত হয়ে অনেক ইসরায়েলি দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে।
এর আগেও ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়েছে। সেসময় বিশ্ববাসী অতটা মাথা ঘামায়নি। কিন্তু এবার ইসরায়েলের বেপরোয়া মনোভাবে বিশ্ববাসী হতচকিত। বিশেষত হাসপাতালে বোমা হামলায় পাঁচ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। ইসরায়েলে হামলার পর বিশ্ববাসী ইসরায়েলের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও গাজায় ইসরায়েলিদের বর্বতার দরুণ সে সহানুভূতি উবে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিগৃহীত হচ্ছে অনেক ইসরায়েলি।
পূর্বের হামাস আর এখনকার হামাসের মধ্যে বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত এখন তাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র চলে এসেছে। বিশ্বের বেশ কিছু দেশ তাদের অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে। ইসরায়েলের মতো একটা প্রযুক্তির উৎকর্ষতার শীর্ষে থাকা একটা দেশে হামলা চালিয়ে এত এত মানুষ হত্যা এবং জিম্মি করা যে হামাসের সক্ষমতার পরিচয় দেয়; এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বোঝা যাচ্ছে ওদের বড় ফান্ডিং আছে।
গাজায় হামলা বিশ্ববাসীকে মনঃক্ষুণ্ন করেছে নিঃসন্দেহে। সবাই প্রতিবাদ জানিয়েছে। অথচ এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপির কোনো প্রতিবাদ নেই। তারা বলছে, তারা তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়েই চিন্তিত। আসলে তারা আমেরিকা তথা তাদের মিত্রদের বিরাগভাজন হতে চাচ্ছে না।
ইসরায়েল যে গাজায় হামলা চালাচ্ছে, এর পেছনে সমর্থন আছে আমেরিকারও। বিশ্বমোড়ল আমেরিকা সারাবিশ্বেই মানবতা-গণতন্ত্র ফেরি করে বেড়ায়। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যেও তাদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কিছুদিন আগে ঢাকা ১৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের লোকজন কর্তৃক হিরো আলম নামক জনৈক কনটেন্ট ক্রিয়েটর নির্যাতনের শিকার হলে আমেরিকাসহ বিশ্বের একাধিক দেশ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়, অথচ গত ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তারা নীরব। নীরব বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির নামে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের বিষয়েও। অহিংস আন্দোলনের কথা থাকলেও ২৮ অক্টোবর যে সহিংসতা হয়েছে; এ বিষয়ে আমেরিকার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২১