আসছে ৫ই জানুয়ারী। একটি রাজনৈতিক দল দিনটিকে পালন করতে যাচ্ছে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে। আবার আরেকটি পক্ষ পালন করবে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে। আমরা জানি এসবই রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ।
এই মারপ্যাঁচের মধ্যে পড়ে কিন্তু সাধারণ মানুষই মরে। ‘A’ কিংবা ‘B’ এর মধ্যকার ক্ষমতার দ্বন্দে সাধারণ কর্মীরই প্রাণ যায়। কোন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বা স্থায়ী সদস্যের প্রাণ যায় না। তারা সুরক্ষিতই থাকেন।
শুধু যে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের হাতে অন্য দলের কর্মীরা মারা পড়েন, তা কিন্তু না। ক্ষমতার এই দ্বন্দ নিজ দলের মধ্যেও প্রকট হয়ে থাকে এবং তারই ফলশ্রুতিতে প্রাণহানিও ঘটে।
২০১৪ সালের জানুয়ারী- অক্টোবর পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতার একটা পরিসংখ্যান দিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বড় প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা দেখানো হয়েছে আওয়ামীলীগ- আওয়ামীলীগ এর মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায়। ১১৪টি সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭ জন নিহত এবং ১৪৫০ জন আহত হয়েছে। অথচ প্রতিপক্ষ বিএনপি, অর্থাৎ আওয়ামীলীগ- বিএনপির মধ্যকার ৭৫টি সংঘর্ষের ঘটনায় ২০জন মারা যান এবং আহত হন ৬৭২ জন। এবং আওয়ামীলীগ- জামাত/ শিবিরের মধ্যে ১০টি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত এবং ৪৪ জন আহত হন।
প্রতিপক্ষের চেয়েও নিজেদের জন্য নিজেরাই বড় হুমকি হয়ে উঠেছে আওয়ামীলীগ। এই আচরণ বা প্রকৃতি বিএনপি’তেও ব্যতিক্রম নয়। সংখ্যায় ছোট হলেও একই ধরনের প্রবণতা বিএনপি’তেও প্রকট ভাবে দৃশ্যমান। বিএনপি ২০১৪ সালে নিজেদের মধ্যে ২০টি সংঘর্ষ ঘটায়, যাতে ৫ জন নিহত ও ২০৯ জন আহত হয়।
৫ই জানুয়ারী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ বা ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করার আগে নিজেদের দলের ভেতর ‘গণতন্ত্র শিক্ষা মাস’, ‘সহনশীলতা শিক্ষন কর্মশালা’ বা ‘গণতন্ত্র চর্চা সপ্তাহ’ চালু করুন। এতে জনগণের লাভ বা ক্ষতি কিছু হোক না হোক, নিজেদের প্রাণ তো বাঁচাতে পারবেন...............
লাল সালাম.....................