“এপ্রিল ফুল” বাক্যটা মূলত ইংরেজী (April Fool), অর্থ এপ্রিলের বোকা। এপ্রিল ফুল দিবসটি সৃষ্টির সাথে রয়েছে মুসলমানদের করুণ ও হৃদয়র্স্পশী এক ইতিহাস। ১লা এপ্রিলের এই ইতিহাস অন্যান্য জাতি জানলেও অনেক মুসলিম না জানার কারনে এই বিজাতীয় অপসংস্কৃতিকে আপন করে নিয়েছে। আসুন জেনে নেই কি সেই নিদারুণ ইতিহাস! দিনটি ছিল ১লা এপ্রিল ১৪৯২ সাল
পহেলা এপ্রিলের করুণ ইতিহাস:
৭১১ খ্রিস্টাব্দে খলীফা ওয়ালিদ তৎকালীন সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ কে ইউরোপীয় দেশ স্পেন অভিযানের নির্দেশ দেন। স্পেনে চলছিলো তখন চরম অত্যাচারী রাজা রডারিকের নির্যাতন, সামাজিক বৈষম্য ও ধর্মের নামে অনাচার। কথিত আছে যে, অত্যাচারী রাজা রডারিক সিউটা দ্বীপের রাজা ফার্ডিনান্ড জুলিয়ানের দুহিতা ‘ফ্লোরিডার’ শ্লীলতাহানি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে জুলিয়ান মুসলিম সেনাপতিকে স্পেন বিজয়ের আমন্ত্রণ জানান।
অতপর, মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ এর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্পেনে ইসলামি পতাকা উড্ডীন হয় এবং মুসলিম সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়। সুদীর্ঘ প্রায় আটশ বছর পর্যন্ত সেখানে মুসলমানদের গৌরবময় শাসন বহাল থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে আস্তে আস্তে মুসলিম সাম্রাজ্যে ঘুন ধরতে শুরু করে এবং মুসলিম শাসকরাও ভোগ বিলাসে গা ভাসিয়ে দিয়ে ইসলাম থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। ফলে মুসলিম দেশগুলোও ধীরে ধীরে মুসলমানদের হাত ছাড়া হয়ে খ্রীস্টানদের দখলে যেতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আসে স্পেনের পালা। মুসলিম শাসনে নেমে আসে পরাজয়ের কাল ছায়া। খ্রীস্টান জগত গ্রাস করে নেয় স্পেনের কর্তূত্ব।
এক পর্যায়ে মুসলিম নিধনের লক্ষ্যে খ্রীস্টান রাজা ফার্ডিন্যান্ড বিয়ে করে পর্তুগীজ রানী ইসাবেলাকে। যার ফলে মুসলিম বিরোধী দুই বৃহৎ খ্রীস্টান শক্তি সম্মিলিত শক্তি রুপে আত্মপ্রকাশ করে। রানী ইসাবেলা ও রাজা ফার্ডিন্যান্ড খুঁজতে থাকে স্পেন দখলের মোক্ষম সুযোগ। পরবর্তীতে মুসলিম সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রস্থল গ্রানাডার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এক পর্যায়ে মুসলমানদের অসতর্কতার সুযোগে খ্রীস্টান বাহিনী ঘিরে ফেলে গ্রানাডার তিন দিক। এক মাত্র মহাসমুদ্রই বাকী থাকে মুসলমানদের বাঁচার পথ। অবরুদ্ধ মুসলমানগন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। মুসলমানদের এই অসহায় অবস্থায় রাজা ফার্ডিন্যান্ড প্রতারণার আশ্রয় নেন।
তিনি দেশব্যাপী ঘোষণা করেন: – “যারা অস্ত্র ত্যাগ করে মসজিদগুলোতে আশ্রয় নেবে এবং সমুদ্র পাড়ে রক্ষিত নৌযানগুলোতে আরোহন করবে তাদেরকে সব রকমের নিরাপত্তা দেওয়া হবে”-- এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে মুসলমানগন যেন আশার আলো খুঁজে পায়। সরল মনে বিশ্বাস করে মুসলমানগন মসজিদ ও নৌযানগুলোতে আশ্রয় গ্রহন করে।
কিন্তু ঐ মানুষ নামের পশু, ইতিহাসের জঘন্য নরপিশাচ প্রতারক রাজা ফার্ডিন্যান্ড বিশ্ব মানবতাকে পদদলিত করে নৌযানগুলোকে মাঝ দরিয়ায় ভাসিয়ে দিয়ে মধ্যসমুদ্রে ডুবিয়ে দেয় এবং মসজিদগুলিকে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে চার পাশে আগুন দিয়ে দেয় আর বাইরে থেকে ওরা উল্লাস ভরে কৌতুক করে সমস্বরে Fool! Fool!! বলে অট্টহাসি আর চিৎকারে মেতে উঠে।
ক্ষণকাল পরে অগ্নিদগ্ধ ও পানিতে হাবুডুবু খাওয়া অসংখ্য নারী-পুরুষ আর নিষ্পাপ শিশুর আর্ত চিৎকারে ভারি হয়ে উঠে স্পেনের আকাশ বাতাস। মুহূর্তের মধ্যে নির্মমভাবে নিঃশেষ হয়ে যায় অসংখ্য মুসলমানের তাজা প্রান।
আর এরই মধ্যে ইতি ঘটে স্পেনের আটশ বছরের মুসলিম শাসনের এবং পৃথিবীর ইতিহাসে রচিত হয় মনবতালঙ্ঘনের এক নির্মম অধ্যায়। দিনটি ছিল ১লা এপ্রিল ১৪৯২ সাল। তখন থেকে মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেওয়ার সেই নিষ্ঠুর ইতিহাস স্মরনার্থে খ্রীস্টানরা প্রতি বছর এপ্রিল ফুল পালন করে থাকে।
অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় “এপ্রিল ফুল” এর প্রকৃত ইতিহাস সর্ম্পকে না জানার কারণে আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের দুর্ভাগ্যকে আনন্দের খোরাক বানিয়ে এপ্রিল ফুল পালন করছি আর মেতে উঠছি উল্লাসে। নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য সর্ম্পকে অজ্ঞতার ধারা আর কতদিন আমাদের মধ্যে বিরাজ করবে?
অথচ হাদীছ শরীফে এসেছে নবী করীম (স) বলেছেন “যে ধোঁকা দেয় বা প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়।”
আরো ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।”
লেখাটি ভাল লাগলে শেয়ার করতে পারেন, আপনার একজন বন্ধুও যদি আপনার কারনে কিছু জানতে ও শিখতে পারে সেটা আপনার জন্যে বৃহৎ কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫