(যাদের তসলিমা নামের উপর চুলকানি আছে তারা দয়া করে পোস্ট টা এভয়েড করেন)
প্রিয় লেখিকা
আমি বাংলাদেশের এক সাধারন, ভীতু, অসহায় ও মূর্খ নারী। আপনার প্রতি যেই অবিচার করা হয়েছে তা আমি কক্ষনোই মেনে নিতে পারিনি কিন্তু প্রতিবাদও করতে পারিনি। আমি ভীতু! তাই আমি ক্ষমা চাই!
আমি আমার বাবা, ভাই, বন্ধু, স্বামী কে বোঝাতে পারিনি কোন নাস্তিক সিগারেট হাতে রেখে কোরান শরীফ পড়লে তাতে কোরান অবমাননা হয় না। কোরান অবমাননা হয়, যখন কোন মুছলিম কোরানের কথা অমান্য করে ও বিপরীত কাজগুলো করে। কোরান অবমাননা হয় যখন নামধারী মুসলমান মানুষ মিথ্যা বলে, হত্যা করে, রেপ করে, দুর্নীতি করে, অসহায় মানুষের শেষ সম্বল আত্নসাৎ করে......... এরাই কোরানের অবমাননা করে। সঠিক মুসলমানের উচিত এদের বিরুদ্ধে জিহাদ গড়ে তোলা। কিন্তু আফসোস!! এরাই সমাজে মাথা উচু করে চলে, আর আপনার মতন জ্ঞানিদের মাথা কেটে আমরা (অ)ধর্ম রক্ষা করি। আমি তাই আপনার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী! আমাকে ক্ষমা করুন!
আমি আমার সমাজ কে বুঝাতে পারিনি যে, আপনি নারীদের একাধিক স্বামী গ্রহণে উৎসাহিত করে কিছু বলেন নাই। পুরুষদের একাধিক বিয়ের প্রতিবাদ করেছেন। আমি সেই সব লম্পট কাপুরুষদের মুখের উপর বলতে পারিনি যে, তোমাদের একাধিক বিয়ের কোন যৌক্তিকতা ও দক্ষতা নেই। যদি একাধিক বিয়ের বিষয় চলেই আসে তাহলে নারী অধিক দক্ষ। কারন নারী তার পতিতা পেশা দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ১০ বা তার অধিক পতিত পুরুষ কে তৃপ্ত করে যা বিপরীতভাবে কোন পুরুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কোন পুরুষ ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন নারীকে তৃপ্ত করার ক্ষমতা রাখে না। তাই তোমরা একাধিক স্ত্রী রাখার মতন অন্যায় করো না। তসলিমা তোমাদের এই অন্যায়কে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝাতে নারীর একাধিক স্বামীর কথা এনেছে। আমি দুঃখিত! আমি লজ্জিত! আমরা প্রতিবাদ ও উৎসাহের পার্থক্য জানিনা!!!
আমাকে ক্ষমা করুন ম্যাডাম, আমি কাওকে বুঝাতে পারিনি জ্ঞানের যুদ্ধ হবে জ্ঞান দিয়ে। তলোয়ারের যুদ্ধ হবে তলোয়ার দিয়ে। আমি আমার সমাজকে বলতে পারিনি আমাদের নবীর পথে বুড়ি কাটা দিয়ে রাখার পরেও সেই নবী অসুস্থ বুড়িকে সেবা করে মানবতা ও প্রেমের জয়গান গেয়েছেন। তাই তোমরাও মানবিক ও প্রেমিক হলেই নবি খুশি হবেন। কক্ষনোই সন্ত্রাসী কে নবি ভালবাসবেন না। আমাদের নবি যেই অমানবিক কাজ করে নাই তা আমরাও করতে পারিনা। যদি করি তাহলে নাস্তিকদের দেয়া অপবাদের সত্যতা প্রমানিত হয় আর নবীর প্রেমের গান তোমাদের সন্ত্রাসি কাজের আড়ালে হারিয়ে যায়। আমি দুঃখিত!! আমরা ধর্ম ও অধর্মের পার্থক্য আপনাকে বুঝাতে পারি নাই। তাই আমি নবীর উম্মতদের একজন হয়ে ক্ষমা চাইছি।
অতি পুরুষবাদিতা থেকে অতি নারীবাদিতার জন্ম হয়। অতি উগ্রবাদি ধর্মান্ধতা থেকে অতি উগ্র নাস্তিকতার জন্ম হয়। তাই আপনার অতি নারীবাদিতা ও নাস্তিকতার জনক আমাদের এই উগ্র পুরুষবাদি ও মৌলবাদ সমাজ। আমি এই জনক কে ঘৃণা করলেও হত্যা করতে পারিনি, প্রতিবাদ করতে পারিনি। আমার এই ভীরুতা ক্ষমা করুন!
একজন লেখিকা বা কলমযোদ্ধার সাথে আমরা টপ টেরর সন্ত্রাসির মতন আচরণ করেছি। একজন টপ টেরর সন্ত্রাসি ও কলমযোদ্ধার পার্থক্য আমরা করতে শিখে নাই। আমাদের ক্ষমা করুন।
আমাকে ক্ষমা করুন! কারন- আমি আমার কান্নার সমব্যথীকে, আমার উপর করা অন্যায়ের প্রতিবাদকারীর পাশে দাড়াতে পারিনি, তার কান্নায় আমি কাদতে পারিনি! উপরন্তু পরোক্ষ ভাবে আপনার মায়ের ভালোবাসা থেকে আপনাকে বঞ্চিত রাখতে সাহায্য করেছি।
কি করব বলুন!! আমি যে ভীরু, দুর্বল। আমি সমাজকে ভয় পাই। তার চেয়েও বেশি ভয় পাই মানুষের চামড়া দিয়ে মোড়ানো পশুগুলোকে। ওদের মুখ থেকে নির্গত নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ বর্জ্য পদার্থ আমার গায়ে লাগে না তবে ঐ গন্ধটাকে ভয় পাই। এই চিঠি লিখতেও ভয় পেয়েছি। তবুও বিবেকের তাড়নায় লিখলাম। হয়ত আপনার চোখে পড়বে না। তবুও নিজের কাছে ভারমুক্ত হলাম।
ইতি
আপনার ক্ষমাপ্রার্থী
ভীতু বাঙালি নারী