লিবিয়ায় ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি আছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ২০ হাজার জন গাদ্দাফিবিরোধী আন্দোলনের কারণে ঘোর বিপদে পড়েছেন। এর মধ্যে সরকারবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া বেনগাজিতে আছেন প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি। রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ ও সংঘাতের কারণে বাংলাদেশিদের অনেকেই দেশে ফিরতে চাইছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারও প্রয়োজনে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টেলিফোনে ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, লিবিয়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশেষ করে বেনগাজি এলাকা বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সেখানে প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক অবস্থান করছেন। ওই এলাকায় বাংলাদেশিরা সমস্যার মধ্যে আছেন। টেলিফোনে দূতাবাসের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হলেও সেখানে কেউ যেতে পারছেন না।
লিবিয়ায় চলমান বিক্ষোভ ও সংঘাতের শিকার হওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা জানতে চাইলে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, তাদের জানা মতে লিবিয়ায় অন্তত ৫০ হাজার বাংলাদেশি আছেন। তাঁদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ভালো আছে। তবে প্রায় ৪০ শতাংশ শ্রমিক সংঘাতের শিকার হয়েছেন। সূত্র আরো জানায়, এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। অস্ত্র হাতে মানুষ রাস্তায় ঘুরছে। কেউ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা নিয়ন্ত্রণ করার মতোও কেউ নেই।
এদিকে গতকাল রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে জহিরুল ইসলাম টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁর ভগি্নপতিকে বেনগাজি থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার পূর্বে দারনা সিটিতে সরকারবিরোধীরা আটকে রেখেছে। তাঁদের মারধর করা হয়েছে এবং জিনিসপত্রও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা এখন জীবন নিয়ে সুস্থভাবে দেশে ফিরতে চান। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার আগ্রহের কথা দূতাবাসকে জানাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে দূতাবাস সূত্র জানায়, অনেকেই দেশে ফিরতে চাচ্ছেন। আবার অনেকেই বলছেন, জীবিকার তাগিদে ভিটামাটি বিক্রি করে লিবিয়ায় এসেছেন। অনেকের বেতনও বকেয়া পড়ে আছে। দেশে ফিরে কী করবেন?