somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

....এবং ড্রাকুলা-অন্ধকারের যুবরাজ

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূতের গল্প নয়- ভয় পাওয়া নিয়ে একটা ছোট্ট গল্প বলি-

ক্লাস ফোরে পড়ুয়া একটা ছেলের গল্প। ছেলেটা ভীষণ বই পাগল- দিন রাত গল্পের বই পড়ার নেশায় এই বয়সেই চোখের ১২ টা বাজিয়ে ফেলেছে ছেলেটা! সারাদিন টিনটিন- তিন গোয়েন্দা – ফেলুদা – শঙ্কু তে ডুবে থাকা ছেলেটার হাতে একদিন সেবা প্রকাশনীর একটা বই এল—ভয়ংকর দর্শন মলাটের বইটার নাম “ড্রাকুলাঃ ১ম খণ্ড”

এর আগে কয়েকটা ভূতের গল্প পড়েছে ছেলেটা, তাই ভাবল এটাও তেমন কিছুই হবে। রীতিমত এক নিঃশ্বাসে শেষ করা হলও বইটা – ট্রানসিলভানিয়ার প্রাসাদ- ভ্যাম্পায়ার- রক্তচোষা বাদুড়-- সব মিলিয়ে অন্য এক জগতের বর্ণনা যেন বইটায়!
তবে আসল সমস্যা শুরু হল বইটা পড়া শেষ হওয়ার পর। ছোট্ট ছেলেটার তো রাত্রে আর ঘুম আসে না।এই বুঝি জানালা দিয়ে একটা বাদুড় উড়ে এল- কামড় বসাল ঘাড়ে!

হাতের কাছে বইটার ২য় খণ্ড নেই- ২য় খণ্ড পড়ার মত সাহসও আসলে ছেলেটার মনে অবশিষ্ট নেই- ছেলেটা রাতে ঘুমাতে পারেনা- সন্ধ্যা হলেই বাসার সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়- রাতে কাঁপতে থাকে ভয়ে— এভাবেই ব্রাম স্টোকারের ১৮৯৭ সালের ক্লাসিকের নায়ক-ট্রানসিলভানিয়ার সর্বেসর্বা-অন্ধকারের যুবরাজ কাউন্ট ড্রাকুলা ২০০০ সালে এসেও ক্লাস ফোরে পড়ুয়া একটা ছেলের মনে ত্রাসের জন্ম দেয়!

গোটা ১ বছর লাগে ছেলেটার এই ভয় থেকে বের হয়ে এসে “ড্রাকুলাঃ ২য় খণ্ড” পড়তে। ভ্যান হেলসিং সাহেবের হাতে অন্ধকারের যুবরাজের মৃত্যু হয়েছে পড়ার পর হাফ ছেড়ে বাঁচে ছেলেটা। কিন্তু গোটা জীবনের জন্যে ছেলেটার মনে দাগ কেটে যান কাউন্ট ড্রাকুলা!

সেই ছেলেটা আমিই ছিলাম!ভয় কেটে গেলেও অদ্ভুত একটা আগ্রহ জন্ম নেয় কাউন্ট ড্রাকুলাকে নিয়ে— পত্রিকায় যেখানে এই বিষয়ে কিছু পেতাম পড়ে ফেলতাম। বড় হওয়ার পর যখন নেট পেলাম তখন উইকিতে ঘাঁটাঘাঁটি- গুগল সার্চ সব হল-পাশাপাশি যেটা হল সেটা হল ড্রাকুলাকে নিয়ে নির্মিত মুভি দেখা।সেইসব ড্রাকুলা মুভি নিয়েই সংক্ষিপ্ত রিভিউ দিতে আজকের এই পোস্ট-

*** হ্যামার স্টুডিও এর ড্রাকুলা সিরিজ :

“Dracula”(১৯৫৮) দিয়ে শুরু- এর পর ক্রিস্টফার লি একে একে অনেকগুলি মুভি করেন ড্রাকুলা চরিত্রে । প্রথম দিকের মুভিগুলো মোটামুটি হলেও পরেরগুলা তেমন একটা সুবিধার না। বি- গ্রেড মুভিই বলা চলে পরেরগুলোকে।

১/ “Dracula: Prince of Darkness”(১৯৬৬)
২/ Dracula Has Risen from the Grave (১৯৬৮)
৩/ Taste the Blood of Dracula (১৯৭০)
৪/ Scars of Dracula (১৯৭০)
৫/ Dracula A.D. 1972 (১৯৭২)
৬/ The Satanic Rites of Dracula (১৯৭৩) ইত্যাদি

মজার ব্যাপার হল এই চরিত্র দিয়ে খ্যাতি পেলেও এখন সবাই ক্রিস্টফার লিকে চেনে “দি লর্ড অফ দা রিংস” এর Saruman চরিত্রের জন্য!

*** Dracula 2000 সিরিজ :
অন্ধকারের যুবরাজের চরিত্রে “300” খ্যাত জেরার্ড বাটলার! আমার দেখা সবচাইতে সুদর্শন ড্রাকুলা বাটলার মশাই!
মুভিটা মাঝারি মানের তবে এর ২ টা সিকুয়েল বের হয়েছিল যেগুলো দেখা আর না দেখা সমান-
১/ Dracula 2000
২/ Dracula II: Ascension
৩/ Dracula III: Legacy

Dracula (১৯৯২): ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার Dracula দেখে সত্যি কথা বলতে গেলে বেশ হতাশ হয়েছিলাম। বই এর গায়ে কাঁটা দেয়া অনুভূতির কিছুই আসে নি মুভিতে- তবে রোমান্টিক মুভি হিসেবে মন্দ না!

তবে হ্যারি পটার সিরিজ এর “সিরিয়াস ব্ল্যাক” গ্যারি ওল্ডম্যানই যে এখানে ড্রাকুলা সেটা বিশ্বাস করতে বেশ কষ্ট হয়েছিল! পরে নোলান এর ব্যাটম্যান ট্রিলজীতে কমিশনার গর্ডনের চরিত্রে গ্যারি ওল্ডম্যানকে দেখে বুঝি যে এই বেটা আসলে সব রোলই করতে পারে!

ড্রাকুলাকে নিয়ে আরও অনেক মুভি- সিরিজ আছে-আমি আমার দেখা কয়েকটার কথা বললাম—হরর মুভির ফ্যান হলে দেখে ফেলতে পারেন মুভিগুলো-
ক্রিস্টফার লির মুভিগুলা একসাথে ডিভিডিতে পাওয়া যায়।বাকিগুলোও মোটামুটি নেটে নয়ত ডিভিডিতে সহজলভ্য।
মন্দ লাগবে না আশা করি- তবে ভয় পেতে হলে বইটা পড়ুন- এখনও গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠতে পারে!
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×