জন্মদাত্রী হিসেবে আমার, আপনার সকলের জীবনে মায়ের স্থান সবার ওপরে। যে মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে, দুই বছর স্তন্য দান করে, আমার আপনার জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত ক্রমাগত ত্যাগ স্বীকার করে তিলে তিলে আমাকে আপনাকে বড় করেছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাই করে যাবেন। যে মায়ের পায়ের নীচে আমার আপনার জান্নাত। যেই মায়ের জন্য আমরা কখনো কোথাও আঘাত পেলেই ‘মাগো’ বলে চিৎকার করি, সেই মাকে সম্মান দেখানোর জন্য বছরে একটি মাত্র দিন!
মাকে ভালোবাসার জন্য দিবসের কোন প্রয়োজন নেই। বিশেষ এই দিনে মায়ের জন্য আলাদা কোন উপহারের প্রয়োজন পড়ে না। তাঁরা যে সন্তানের মুখে শুধুমাত্র ‘মা’ ডাক শুনতে পেলেই খুশি। গর্ভধারণের পর থেকেই সন্তানের প্রতি মায়ের যে অকৃত্রিম ভালোবাসা তার মূল্য সমগ্র পৃথিবীর বিনিময়েও শোধ করা কোন সন্তানের পক্ষে সম্ভব নয়।
মা আমাদের শিকড়। গাছ যেমন সারা বছর শেকড় ধরে বেঁচে থাকে, আমরাও মাকে সারা বছর ভালোবাসে বেঁচে থাকব। ‘মা দিবস’ আমাদেরকে মায়ের শেকড় থেকে ক্রমাগত আলাদা করে দিচ্ছে। আমরা দোয়া করার সময় সবসময় বলি ‘রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা- অর্থ্যাৎ হে প্রভু আপনি আমাদের মা-বাবাকে সেই ভাবে দেখাশুনা করুন যে ভাবে তাঁরা শৈশবে আমাদের দেখাশুনা করেছেন।’ এই দোয়া করার পর আমরা কিভাবে নির্দিষ্ট একটি দিনে মাকে ভালোবাসার নামে অতি-আধুনিকতা দেখাব! তাতো মাকে ভালোবাসার নামে অপমান করারই শামিল।
তাই আমি বলবো, নির্দিষ্ট দিন নয় প্রতিটি দিন হোক মায়ের জন্য। শারীরিকভাবে উপস্থিতি দ্বারা না হোক অন্তরের নিখাঁদ ভালোবাসা দ্বারা। জানি মায়ের ঋন শোধ করা যাবে না, অনন্ত সারা বছর তাঁর মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টাতো করে যেতে পারব। আমি আমার মাকে সারা বছর ভালোবাসি। আপনিও আপনার মাকে সারা বছর ভালোবাসুন। বছরে একটি দিন মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে বাকি দিনগুলি মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখার স্বপ্ন দেখা থেকে বিরত থাকুন।
আমির ইশতিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪০