দৈনিক আমার দেশের কথিত সেই নাস্তিক ব্লগার আরিফ জেবতিকের প্রায় ১ বছর আগের ধর্ম বিষয়ক একটি পোষ্টের লিংক দিলামঃ
Click This Link
তার সেই নোটটি এখানে সরাসরি নিচে কপিও করে দিলামঃ
নোটটির শিরোনাম ছিলঃ "রেইনার এবার্টবৃন্দকে একজন মুসলিম ভাইয়ের জবাব "
রেইনার এবার্টবৃন্দকে একজন মুসলিম ভাইয়ের জবাব
by Arif Jebtik (Notes) on Tuesday, October 23, 2012 at 6:16pm
রেইনার এবার্ট নামে এক ভদ্রলোকের নামে বিডিনিউজ২৪.কম এর মতামত পাতায় প্রায় ৫০ জন নানান ধর্ম, পেশা, লিঙ্গের লোকজন আমাদের, মানে মুসলিম ভাইবোনদের কাছে একটা খোলাচিঠি লিখেছেন। লেখা প্রকাশিত হওয়ার ২ দিনের মধ্যে এই লেখার কোনো জবাব কোনো মুসলিম ভাইদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে একজন মুসলিম হিসেবে অন্যের চিঠির জবাব দেয়ার ভদ্রতাটুকু আমি করতেই পারি। এজন্যই এই খোলা চিঠির জবাবের অবতারণা। রেইনার এবার্টদের চিঠিটি পড়তে পারবেন এখানে : Click This Link)
প্রিয় রেইনার এবার্ট এন্ড গং,আপনাদের চিঠি থেকে সারমর্ম যা উদ্ধার করতে পারলাম সেগুলো হচ্ছে,
১. " বর্তমান বাংলাদেশে হযরত মোহাম্মদ (সঃ)-এর সময়কার মরুভূমির জনগোষ্ঠির মত গোশত তেমন দুর্লভ মূল্যবান সম্পদ নয়। বর্তমানে আমরা দরিদ্র অভাবীদের সাহায্য করার জন্য প্রাণী কুরবানী দেবার টাকা আরও কার্যকরী খাতে ব্যয় করতে পারি।"
২. "মুসলমানদের জন্য কুরবানী ঈদ আনন্দের একটি পর্ব হলেও আল্লাহ্র প্রাণীদের জন্য এটা সুখের সময় নয়। এই উৎসবে বহু ছাগল, গরু ও অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণীর জীবনের ইতি ঘটে। যে দেশে মানুষই হৃদয়বিদারক অবস্থায় বসবাস করছে, সে দেশের প্রাণীদের দুর্দশার কথা চিন্তা করা কঠিন। কিন্তু আমরা কিছু সময়ের জন্য আপনাদের এটাই বিবেচনা করার অনুরোধ করছি যে কুরবানী ঈদে উৎসর্গ হবার জন্য যে সমস্ত উট, ভেড়া, ছাগল ও গরু রাখা হয় তারা কতোটা অসহায়।"
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে আপনাদের কথা মূলত দুইটা। প্রথমটি হচ্ছে কোরবানির টাকা পয়সা অন্যান্য সামাজিক উন্নয়নের খাতে ব্যয় করা আবশ্যক এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে পশুদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
আসুন, একটা একটা করে জবাব দেই।
প্রিয় রেইনার এবার্ট এন্ড গং,
আমি ঠিক জানি না কোন গবেষণা বলে আপনারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে বাংলাদেশে বর্তমানে 'মরুভূমির জনগোষ্ঠির মত গোশত তেমন দুর্লভ মূল্যবান সম্পদ নয়'। মরুভূমির জনগোষ্ঠির ইতিহাস যা আমি বুঝি, সেখানে সবসময়ই গৃহপালিত জীব হিসেবে উট এবং দুম্বার প্রচলন ছিল। বরং কৃষিজাত পণ্যের অভাবের জন্য সেই সময় তাঁদের পক্ষে গোশত বরং আমিষের জন্য বহুল প্রচলিত একটি খাদ্য ছিল। এই তুলনায় বাংলাদেশে এখন বরঞ্চ প্রাণীজ আমিষের অভাব অসহনীয়। খালে-বিলে মাছ নেই আজ বহু বছর ধরে। দেশ চলছে চাষ করা মাছের উপর নির্ভরশীল হয়ে, সেই মাছ কেনার সামর্থ্য এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই নেই। প্রাণীজ আমিষের একটি বড় উৎস ছিল হাস-মুরগি, কিন্তু সেগুলোও আজকে সোনার হরিন। ডিমের দাম মাঝে মাঝে এমন পর্যায়ে চলে যায় যে একজন কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুরের পক্ষে ডিম এখন শখের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময় এই বিপুল জনগোষ্ঠির আমিষের চাহিদা পূরণে খাদ্য সরবরাহ করা এই রাষ্ট্রের পক্ষে স্বাভাবিকভাবেই সম্ভব নয়। এই বিকল্প হিসেবে কোরবানির ঈদ একটি বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কোনো পরিসংখ্যান নেই, তবু মোটামুটি যদি ধরে নেই এই দেশে কোরবানির ঈদের সময় ১৬ কোটি জনগোষ্ঠির ৫% বড়লোক পরিবার প্রতি ১টি করে প্রাণী কোরবানি করেন, তাহলেও ৯ লক্ষ প্রাণীর মাংস বিতরণ করা হয়। এই ৯ লক্ষ পশুর মাংস এই গরিব দেশের জন্য আমিষের একটা বড় ঘাটতি মেটাতে পারে।
আমি লক্ষ করছি বেশ কিছুদিন ধরে এদেশে এটা না করলে এই টাকা সমাজ উন্নয়নে ব্যয় করা যেত, এ ধরনের একটা দোহাই সবসময়ই দেয়া হয়। এই দোহাইয়ের বিরুদ্ধে আমার কিছু শক্ত কথা আছে। আপনারা কেন ধরেই নিচ্ছেন যারা কোরবানি দেন, তাঁরা সারাবছর সমাজ উন্নয়নে আর কোনো টাকা ব্যয় করেন না? আর কোরবানি দিয়ে দিলে সমাজের কাজে আর কোনো টাকা ব্যয় করা যাবে না, এরকম কোনো ধর্মীয় বিধান তো নেই, তাই না? তাহলে কোরবানির টাকাই সমাজ উন্নয়নে কাজে আসে এটি একটি গিমিক তৈরি করা যুক্তি হতে পারে, কিন্তু কার্যকারণে এটি বড় কোনো শক্ত যুক্তি নয়। ইসলাম কোরবানির পাশাপাশি সমাজে অর্থ প্রবাহের জন্য একটি বড় চাপ তৈরি করেছে জাকাতের বিধান তৈরি করে। জাকাতের টাকা বিলাস ব্যসনে ব্যয় করা যায় না, এই টাকা সরাসরি সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠির উন্নয়নে ব্যয় করতে হয়। সুতরাং দরিদ্র জনগোষ্ঠির উন্নয়নের দোহাই দিয়ে কোরবানি বন্ধ করে দেয়া কোনো সুস্থ যুক্তিই নয়।
আপনারা যে বিষয়টি হয় খেয়াল করেননি নয়তো ইচ্ছে করে এড়িয়ে গেছেন, সেটি হচ্ছে যেকোনো উৎসবই সমাজে একটি বড় অর্থনৈতিক গতিপ্রবাহের সৃষ্ঠি করে। সুস্থ অর্থনীতিতে টাকার মুভমেন্ট খুবই জরুরি একটি বিষয়। টাকা যদি বাজারে না এসে আমার ড্রয়ারে আর আপনার পকেটে রয়ে যায়, তাহলে সেটি সমাজের কাজে আসে না, অর্থনীতিও দুর্বল হয়ে পড়ে। কোরবানীর ঈদ এদেশের সবচাইতে বড় একক অর্থনৈতিক গতিপ্রবাহের উৎসব। এখানে ৯ লক্ষ প্রাণীর মূল্যের বড় অংশ যায় গ্রামে। গ্রামের গৃহস্থরা পশুপালন করে বছরে একবার বিক্রি করতে পারেন, এতে করে তাঁদের একটি বড় বার্ষিক আয় হয়। একে কেন্দ্র করে পরিবহন খাতে চাঞ্চল্য সৃষ্ঠি হয়। ইজারাদার, পাহারাদার, টোল আদায়কারি, চাঁদাবাজ থেকে শুরু করে কসাইয়ের ছোকরা এসিসটেন্ট, ছুরি-কাঁচি শানদেনেওয়ালা কামার পর্যন্ত একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তৈরি হয় যা সমাজের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমার দুঃখ আপনারা চল্লিশজন মিলেও অর্থনীতির এই জরুরি বিষয়টিকে এড়িয়ে গেলেন। সমাজের দরিদ্র মানুষকে দান করতে আপনাদের যে উৎসাহ, তাঁদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে আপনাদের উৎসাহের একই ধরনের অভাব দেখে আমোদিত হয়েছি বলতে পারি। এর বাইরে দেশের চামড়া শিল্পের কথা বাদই দিয়ে গেলাম এখানে, অর্থনীতিতে সেটির প্রয়োজনীয়তা একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন।
জনাব রেইনার এবার্ট এন্ড গং,
আপনাদের দ্বিতীয় আক্ষেপ হচ্ছে কোরবানির পশুদের প্রতি মুসলিমরা দয়ালু নয়। আসলে এই কথাটি এত ইনিয়ে বিনিয়ে ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে বলতে চেয়েছেন যে কথা পরিস্কার হয়নি এখানে। সে যাক। এখানেও আপনাদেরকে প্রাকৃতিক মৌলিক বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য করতে বলি। প্রকৃতি তার ভারসাম্য রক্ষার জন্যই ফুড চেনের উদ্ভব করেছে। ফুড চেন বন্ধ করে দিলে প্রকৃতিতে ভারসাম্য হীণতার সৃষ্ঠি হয়। একসময় আমাদের দেশ থেকে ব্যাঙ ধরে রপ্তানি করা হতো, দেখা গেল কয়েকবছরের রপ্তানিতে আমাদের দেশে ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব হলো। এখন এই পোকামাকড় যাতে বেড়ে না যায় এজন্যই ব্যাঙের প্রয়োজন। আবার ব্যাঙ যাতে বেড়ে না যায় এজন্য সাপের দরকার পড়ে খালে-বিলে। এর সবই প্রাকৃতিক খাদ্য প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় মানুষের যেখানে অবস্থান সেখানে প্রানীর আমিষজাত খাদ্য প্রকৃতির বিধান। সুতরাং পশু হত্যা করে খাওয়ার মধ্যে কোনো অযুক্তি নেই, পুরোটাই যৌক্তিক।আপনারা দোহাই দিচ্ছেন যে এই প্রাণীদের প্রতি নায্য আচরণ করা হয় না। এটা ভিন্ন আলোচনার বিষয়। ইসলামে পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে অনেকগুলো রীতিনীতি তৈরি করা হয়েছে, যে রীতিনীতিগুলো পশুদের কল্যানেই করা হয়েছে।এখানে পশু জবাইয়ের পর পশুটির বাঁধন খুলে দিতে হয়, পশু জবাইয়ের আগে তাকে পর্যাপ্ত খাবার খাওয়াতে হয়, কোরবানির পশুকে আগে গোসল দেয়ানোর একটি রীতি আছে আমাদের সমাজে, এক পশুর সামনে অন্য পশুকে হত্যা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে ধর্মীয় রীতিতে- এর সবগুলোই আপনারা এড়িয়ে গিয়ে এমন ভাবে একটা লেখা লিখলেন যাতে মনে হয় মুসলিমরাই সবচাইতে বেশি অমানবিকভাবে পশু হত্যা করে চলছে! কয়েক হালি অপ্রয়োজনীয় ইসলামী সূত্রের দোহাই দেয়ার ব্যাপারে আপনাদের যে উৎসাহ, তাঁর চাইতে অনেক কম কষ্ট করেই আপনারা জানতে পারতেন যে কোরবানীর পশু এবং সব পশুদের বেলাতেই মহব্বত রাখার জন্য ইসলামের বিধান আছে।কোরবানির পশুর যে ক্লেশ পরিবহন এবং অন্যান্য কারণে হয়, সেগুলো হচ্ছে প্রায়োগিক সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে আইনের জোর প্রয়োগের দাবি করা যেতে পারে। প্রাণীদেরকে গাদাগাদি করে না রাখা, কষ্ট না দেয়ার জন্যও এদেশে পশুক্লেশ নিবারণী আইন আছে, সেই আইনের প্রয়োগ দাবি করা যেতে পারে, কিন্তু মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার আবদার জানিয়ে চিঠি লেখা ঠিক হয় না।
জনাব রেইনার এবার্ট এন্ড গং,
আমাদের দেশে এখন নতুন ফ্যাশন হচ্ছে ধর্মীয় রিচুয়ালগুলোকে নিয়ে হাশি তামাশা করা অথবা খারিজ করে দেয়া। আপনারা কোরবানির মতো একটি রিচুয়ালকে খারিজ করে দিতে চিঠি লিখেছেন। এরকম করে সমাজ থেকে সব উৎসবই তাহলে খারিজ করে দিতে হয়। সব উৎসবের টাকাই সমাজন্নোয়নে কাজে লাগে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, দানখয়রাত করে সমাজের উন্নয়ন করাটাই একটি অপরিপক্ক ধারণা। উৎসবই বরং বেশি করে অর্থনৈতিক জোয়ার তৈরি করে আর এজন্যই সমাজের দরকারেই আমাদেরকে উৎসবগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে।পরম করুণাময় আপনাদেরকে সেই জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করুন, আমীন।
--------(আরিফ জেবতিকের লেখার কপিকৃত অংশ শেষ)------------------------------------
কি বুঝলেল , যে লোকটি ইসলামের মহত্ব তুলে ধরে লেখালেখি করসে আজ তার নামেই মাহামুদুর রহমান প্রচারণা চালাইতাছে যে, সে নাকি ফেবু- ব্লগে আল্লাহ - রাসূলকে নিয়া অশ্লালীন কুটুক্তি করসে !!!!
এছাড়া পিয়ালকে ব্লগে কিংবা ফেবুতে কখনও কি আপনারা আল্লাহ - রাসূলকে কুটুক্তি করে পোষ্ট দিতে দেখেছেন ??? যারা তার লেখা নিয়মিত পড়েন, তারা সুষ্পষ্ট করেই জানেন পিয়ালের সকল লেখাই ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জামাতের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে ।
এবার ইমরান সরকারের কথা কইঃ আপনারা সকলেই জানেন লীগের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকার কারনে সে জাগরণ মঞ্চের নেতৃত্ব চেয়ার নিয়া নিছে , আদৌতে সে একজন ব্লগারেই নয় ।
আর যে ব্যক্তি ব্লগারই নয়, এখন তার নামেই যদি অপবাদ দেই সে ব্লগে আল্লাহ - রাসূলকে কুটুক্তি করে লেখসে !! তবে এর মতন হাস্যকর দাবি আর কি হইতে পারে??
এইবার এখখান সহি মুসলিম হাদিস শেয়ার করি ঃএটা দিবালোকের মত সত্য যে এই হাদিসটি মাহামুদুর রহমানের মত লোকদের উদ্দেশ্যই ছিলঃ জেবতিক-পিয়ালদেরকে আল্লাহ - রাসূলকে কুটুক্তিকারী নাস্তিক বলে অন্যায় ভাবে অপবাদ দেবার কারনে এই হাদিস অনুযায়ী দৈনিক আমার দ্যাশের সম্পাদক মাহামুদুর রহমান নিজেই কাফের-নাস্তিকে পরিনত হয়েছেন , সেই সাথে তার হাজার হাজার কর্মিদেরকেও সেই পথে হাটাইতাছেন ।
অফটপিকঃ এসব তথাকথিত ভূয়া নাস্তিকের ইস্যু লইয়া ইমরান মঞ্চ আর হেফাজতে ইসলামের রাজনৈতিক কামড়া-কামড়ির সুযোগে আসল নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন-দাড়িপাল্লারা ততক্ষণে পাগাড় পার !!!!!!!!
হেফাজতে ইসলামের যদি সত্যই ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মাঠে নামার নিয়ত থেকে থাকে তবে ওগোরে উচিৎ অযথা মসলমান ইমরান, মুসলমান আরিফ জেবতিক, মুসলমান অমি পিয়ালদের আল্লাহ - রাসূলকে কুটুক্তিকারী নাস্তিক বইলা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে মিথ্যা প্রচারনা না চালাইয়া আসল নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন- দাড়িপাল্লা-আবুল কাশেমদের বিরুদ্ধে একশন নিতে কর্মসূচী দেয়া ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:১৮