চার বছরের আলিফরা সবাই তখন নানু বাড়িতে। নানু বাড়ি মানেই প্রিয় বড় মামা। প্রিয় ভাগ্নে ভাগ্নির দলকে ছাড়া তিনি একদন্ড থাকতে পারেন না। অফিসে গেলেও প্রিয় দস্যু বাহিনীর চিন্তা।
আরিশের বয়স তখন দশ। আলিফ, আরিশের আম্মু নিশি আন্টি, সেঝো খালা সবাই বাইরে গিয়েছেন। বাসায় শুধু মেঝো খালা। মাথায় কি বুদ্ধি খেলল ! আরিশ তখন মেঝো খালার উচু বিছানার নিচে লুকিয়ে পড়ল। চার বছরের আলিফ মশাই ভাইয়াকে দেখেও চুপ করে বসে আছে। আলিফের আম্মু নিশি আন্টি এসে আরিশের খোজ নিতেই জানতে পারলেন তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। মেঝো খালা ভয়ংকর চিন্তায় পড়ে গেলেন। বিকেলে বড় মামা আসবেন...!! কি যে ভয়াবহ অবস্থা হবে তখন...!!
বড় মামা এসেই এক গ্লাস লেবু শরবত খেয়ে থাকেন। এর মধ্যেই সব ভাগনা, ভাগ্নে তাঁর কাছে চলে আসা চাই। এরপর তাদের নিয়ে মামার গপ্পো-আড্ডা-টিভি দেখা- হই হুল্লোড়!! বাসার বাচ্চারা তাই বড় মামা আসার আগে সব পড়া শোনা শেষ করে ফেলে। এবং তাদের রেজাল্টও মাশ-আল্লাহ সুপার ব্রিলিয়ান্ট!
বিকেলে যখন বড় মামা এলেন, রানু আপা চুপচাপ মামার কাছে এল। মামা বলে উঠলেন; "কই আমার বাকি আব্বু-আম্মুরা সবাও কই?"
সবাই যথারীতি ভয়ে ভয়ে আসল। মামা আরিশের খোজ করতেই মেঝো খালা বললেন হয়তো আশে-পাশে পাড়া প্রতিবেশীর বাড়িতে গেছে। কিন্তু অড় মামাকে বোঝায় কে...!! মামা চিৎকার দিয়ে উঠলেন। নানু বললেন; "জালাল তুই বেশি করিস। আমরা সবাই খুজে দেখি।"
বড় মামা; "তোমরা যা শুরু করেছো...!! আমার ভাইগ্না-ভাগ্নিদের দিকে একফোটাও খেয়াল নেই। ওদের চিন্তায় আমি আর অফিসের যেতে পারব না। এখানেই বসে থাকতে হবে।"
যথারীতি সিকান্দার সাহেবও বাদ গেলেন না। সিকান্দার সাহেব আমলাতান্ত্রিক হাসি দিয়ে বড় মামাকে শান্ত করতে লাগলেন। এদিকে ভয়ে ভয়ে মেঝো খালা যেই নিজের রুমে আসলেন খাটের নিচ থেকে আরিশ মুখ বার করে বলল; "এই যে মেঝো খালা, আমি এখানে...!!"
আরিশকে দেখে স্বস্তিতে অথবা অতিরিক্ত টেনশনে মেঝো খালা মূর্ছা গেলেন। মেঝো খালাকে নিয়ে যখন ব্যস্ত সবাই আলিফ চুপিচুপি এসে আম্মুকে সুর করে বলল; "আম্মু ভাইয়া যে লুকিয়ে ছিল সেটা আমি জানতাম ...... হি হি হি হি" আলিফের কথা শুনে আম্মু ঠাস করে একটা চড় লাগিয়ে দিলেন তার গালে। চড়-থাপ্পড়ের এসব ছোট খাট দূর্ঘটনা যা হয়, সব গুলোই পড়বি তো পড় খোদ বড় মামার সামনে...!! বড় মামা আবার চিৎকার দিয়ে সোফাতেই মূর্ছা গেলেন।
কি আর করা...!! সিকান্দার সাহেব এবারও তার আমলাতান্ত্রিক মগজ খাটিয়ে পরিস্থিতি সামলে দিলেন। বড় ভাইয়ের মতন সম্বন্ধীকে বিছানায় নিয়ে এসে পাশে বসে রইলেন
প্রথম পর্ব Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:১৮