শনিবার বেলা ১২টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালায়া হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন বাংলাদেশের প্রয়াত প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। ওয়ান ইলেভেনে অবৈধ মঈন-ফখরুদ্দিনের সরকারের আমলে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করার পর ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায় কোকোর।
২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বরে অবৈধ ওয়ান ইলেভেন সরকার ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। যৌথবাহিনীর পাশবিক নির্যাতনে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আর একদিনের জন্যও তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে সুস্থতা লাভ করেননি। ২০০৮ সালের মে মাসে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান তিনি। তারপর থেকে তিনি স্ত্রী ও ২ মেয়েকে নিয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছিলেন। সন্তানহারানোর শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া।
যেভাবে নাটক করলেন শেখ হাসিনা…
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে শনিবার রাত ৮ টায় বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণাটি দেন সন্ধ্যার পর। ওদিকে, টিভিগুলো ৭ টার দিকে লাইভ সম্প্রচারে জানায়, শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত বিএনপির সিনিয়র নেতারা। কিন্তু ৭ টার পর খালেদা জিয়া পুত্রশোকে অধিক কাতর ও শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে তাকে ডাক্তাররা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেন। পুত্রশোকে মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রণহীন খালেদা জিয়ার ঐ মূহূর্তে কোন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ছিল না। ঐ মুহূর্তে ডাক্তাররাই চিকিতসা শাস্ত্র অনুযায়ি ব্যবস্থা নেন। প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত গুলশান অফিস খালেদা জিয়ার বেগতিক অবস্থা এবং ঘুম পাড়িয়ে রাখার কারণে ৭ টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী শাকিলকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। খালেদা জিয়ার সহকারী শিমুল বিশ্বাস দু:খ প্রকাশ করে জানায়, বেগম খালেদা জিয়া ঘুম থেকে উঠলেই তাদেরকে জানানো হবে এবং তখন যেন প্রধানমন্ত্রী আসেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। ৮ টার সংবাদেও টিভিতে রিপোর্টাররা লাইভে জানালেন প্রধানমন্ত্রী আসছেন না। কিন্তু ৮ টা ৩৬ মিনিটে তারপরও শেখ হাসিনা গুলশান অফিসের সামনে চলে আসেন। গাড়ি থেকে নেমে মাত্র ৩০ সেকেন্ড দাঁড়িয়ে আবার গাড়িতে উঠে চলে যান। এরপর থেকে মিডিয়াগুলো নির্লজ্জভাব দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে মালকোছা মেরে নেমে পরে। যেখানে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর সংবাদ দিয়ে লিড হবে। তাকে নিয়ে একাধিক প্যাকেজ হবে। রানডাউনের প্রথম কমপক্ষে ৫ টি নিউজ থাকার কথা তার মৃত্যু নিয়ে। সেখানে রানডাউনের লিড নিউজগুলো শেখ হাসিনার নাটক নিয়ে। এটা দলীয় সাংবাদিকতার এক নির্লজ্জ উদাহরণ হয়ে থাকলো। টকশোগুলোতো আরও একধাপ আগিয়ে। শেখ হাসিনাকে কেন ফিরিয়ে দেয়া হলো সে বিষয়ে মিডিয়ার তাৎক্ষণিক টকশোর এরেঞ্জমেন্ট দেখে কারও বুঝতে বাকি রইলো না বিষয়টি পরিকল্পিতই ছিল।
যেসব কারণ প্রমাণ করে শেখ হাসিনা সমবেদনা নয় নাটক করতে গিয়েছিলেন…
১. প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে সে স্থানটি তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ দখলে নেয়। প্রধানমন্ত্রী কোথাও যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেই তাকে সেখানে নেয়া হয় না। নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ যখন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তখন তিনি যেতে পারেন। কিন্তু সরেজমীনে দেখা গেলো এসএসএফ গুলশান অফিসের নিয়ন্ত্রণ নেয়নি।
২. সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে গেট আটকানো ছিল তাই শেখ হাসিনা ভিতরে ঢুকতে পারেনি। এটাও একটা নাটক। যেখানে খালেদা জিয়াকে ৩ তারিখ থেকে পুলিশ তালা মেরে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। যেখানে পুরো গেইটের নিয়ন্ত্রণ ছিল পুলিশের কাছে সেখানে যখন প্রধানমন্ত্রী আসেন তখন সেই গেট, সে কার্যালয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা এসএসএফের হাতে। সেখানে কেন এসএসএফ সেই দায়িত্বটি নিলেন না? স্বাভাবিক অবস্থায় যেখানে গেটটির নিয়ন্ত্রণ বিএনপির কারও হাতে ছিল না সেখানে প্রধানমন্ত্রী আসবেন আর গেটটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে বিএনপির হাতে? এটা ভাবা যায়?
৩. বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে তখন হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ভিড় করে ছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী যাবেন আর তার কোন নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা হলো না? সেখানে যদি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতো? কেন বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হলো না? কেন অফিসটির ভিতরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হলো না?
তারমানে কী দাঁড়ালো শেখ হাসিনাকে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি জানানোর পরও তিনি মূলত নাটক করার জন্য, শোককে নিয়েও রাজনীতি করার জন্য গুলশান কার্যালয়ে এলেন। তিনি যে ভিতরে যাবেন না সেটা আগেই নির্ধারিত ছিল। যে কারণে এসএসএফ শুধুমাত্র অফিসের বাইরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন যে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আসবেন সে পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি চেয়েছেন গেট থেকে ফিরে যাবেন আর সে কারণেই নাটক সাজিয়েছেন এবং এটাকে নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন।
তার আরও কিছু প্রমাণ রয়েছে…
রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটেও গুলশান অফিস জানে যে প্রধানমন্ত্রী আসছে না। মিডিয়াও শিমুল বিশ্বাসের ব্রিফিং এর পর সেটাই প্রচার করে। হঠাৎ করেই যে নিষেধ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিত্বহীনভাবে চলে আসবেন সেটা বুঝে উঠতে পারেনি বিএনপি। এরকমটিই জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান।
যখন জানতে পারলেন প্রধানমন্ত্রী এসেছেন তখন বিএনপির সিনিয়র নেতারা দোতালা থেকে নিচে নামছিলেন এবং শিমুল বিশ্বাস শোক বই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসছিলেন। কিন্তু আওয়ামীলীগের তোফায়েল আহমেদের পরামর্শে শেখ হাসিনা তার মন্ত্রীদের নিয়ে দ্রুত কেটে পড়েন। বিএনপিকে ২ মিনিট সময় না দিয়ে চলে যাওয়াই প্রমাণ করে শেখ হাসিনা মূলত নাটক করতেই এসেছিলেন।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির একজন সিনিয়র রিপোর্টার নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমত খালেদা জিয়াকে দেখতে আসছিলেন। কিন্তু যখন জানালো হলো বিএনপি নেত্রী পুত্রশোকে কাতর হয়ে ভেঙে পড়ায় তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে তখন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য নাটক করতে গুলশান অফিসে চলে আসলেন। প্রমাণ করতে চাইলেন আমি এসেছিলাম কিন্তু খালেদা জিয়া গেট খোলে নাই। কিছু মিডিয়াতো কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন দিতে থাকলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। তারমানি তারা বিষয়টি আগে থেকেই জানতো এবং সে হিসেবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। সময় টিভিতে তাৎক্ষণিক ইকবাল সোবহানের উপস্থিতিই সেটা আরও স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে। মিডিয়াগুলো বলা শুরু করলো জনগণ হতাশ হয়েছে, তারা ভেবেছিল দুইনেত্রীর মধ্যে সংলাপ হবে। কতটা নির্লজ্জ মিডিয়া হলে এসব বলা হয়। যেখানে খালেদা জিয়া শোকে মূহ্যমান সেখানে বলা হচ্ছে দুইনেত্রীর দেখা হলে সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট কেটে যেতো। খালেদা জিয়ার কী সে অবস্থা ছিল? তারচে বড় কথা ওরকম পরিস্থিতিতে কী শেখ হাসিনাও কী রাজনৈতিক আলোচনা করতেন?
যে কারণে খালেদা- হাসিনার দেখা হয়নি…
খালেদা জিয়ার স্বাস্থের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেলে তাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। সে কারণেই মূলত দেখা হয়নি। তারপরও যেসব কারণে
জনগণ চাচ্ছিলো খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ না দেন তার কারণগুলো হলো:
১. মালয়েশিয়ার বিএনপি সভাপতি জানান, শনিবার রাতে বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করবে সরকার এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করবে এরকম খবর পেয়ে আমাকে তার উদ্বেগের কথা জানায় আরাফাত রহমান কোকো। এই বৃদ্ধ বয়সে মায়ের গ্রেফতার ও নির্যাতনের কথা শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বেগম জিয়ার ছোটো ছেলে। তার কিছুক্ষণ পর খবর পাই তিনি হার্ট এ্যাটাক করেছেন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করি। হাসপাতাল থেকেই তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। মূলত শেখ হাসিনার জন্যই না ফেরার দেশে চলে গেলেন শহীদ জিয়ার ছোট ছেলে।
কোকোর মৃত্যুর পেছনের এ কারণটি জানেন খালেদা জিয়াও। তারপরও কিভাবে একজন হত্যাকারীর নাটকীয় সমবেদনা গ্রহণ করবেন পুত্রশোকে মূহ্যমান খালেদা জিয়া?
মৃত্যুর আগে মাকে সেই উদ্বেগের কথা জানান কোকোও। প্রবাস জীবনে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও সময়ে কথা বলতেন আরাফাত রহমান কোকো। কখনও ফোন করতেন কোকো, কখনও বা খালেদা জিয়া নিজেই। ফোনালাপে বিএনপি চেয়ারপারসন খোঁজ নিতেন পুত্রবধু স্ত্রী সৈয়দ শরমিলা রহমান সিঁথি, দুই নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানের সঙ্গে। সবার শারীরিক খোঁজখবর নেওয়া ছিল খালেদা জিয়ার প্রায় নিয়মিত রুটিনেরই অংশ।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন কোকো। গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থানরত মহিলা দলের এক নেত্রীর মুঠোফোনে কথা হয় মা-ছেলের।
প্রায় ৭ মিনিটের ওই ফোনালাপে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানার পাশাপাশি বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়েও কিছু কথা বলেন কোকো। বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ মহিলা দলের ওই নেত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে জানিয়েছেন এ তথ্য।
তিনি জানান. গত ৫ জানুয়ারি পুলিশের ছোড়া পেপার স্প্রে’র কারণে অসুস্থ হওয়ার পর প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার খোঁজ নিয়েছেন কোকো। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন কোকো। আলাপকালে কোকোর উদ্বেগের বিষয়টি ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া নিজেই।
মহিলা দলের ওই নেত্রী জানান. শুক্রবার মধ্যরাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোকোর শেষ ফোনালাপের শেষ আলাপ ছিল- ‘মা ভালো থেকো, নিরাপদে থেকো।’ এর কয়েকদিন আগের আলাপে কোকো বিদেশ থেকে দেশে ফেরার আগ্রহের কথাও জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়াকে।
২. ওয়ান ইলেভেনের অবৈধ মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার রাজনীতি থেকে দূরে থাকা কোকোকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে ভয়ঙ্কর নির্যাতন করে। সেই নির্যাতনের পর ফুসফুস নষ্ট যায় কোকোর। তারপর থেকে আর কখনও সেভাবে সুস্থ হয়নি তিনি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসার পর পারতো তার মতো করে খালেদা জিয়াসহ তার সন্তানদের মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করাতে। সেটা না করে উল্টো আরও মামলা দিয়ে দেশে আসার পথ বন্ধ করে দেয়। ৮ টি বছর মায়ের সাথে ছেলের দেখা হয়নি। যেই হাসিনার জন্য ৮ বছর ছেলেকে দেখতে পায়নি খালেদা জিয়া। যে হাসিনার জন্য মৃত্যুর সময় পাশে থাকতে পারেনি মা। এখন পর্যন্ত ছেলের মরা মুখটি দেখতে পারেনি যে মা; সে মা কিভাবে ছেলের হত্যাকারীর কাছ থেকে নাটুকে সমবেদনা নিবেন?
৩. ৮ বছর পেরুলো বৃদ্ধ খালেদা জিয়া এখনো একাকী। কারণ সরকার তাদের মামলাগুলো তুলে নিলেও একটি মামলা তোলেনি খালেদা জিয়া তারেক রহমান ও কোকোর। এই সরকারের নির্দেশে জিয়া পরিবার এক কাপড়ে ঘর থেকে রাস্তায় নেমে এসেছে। এখনো বেগম জিয়ার পরিবার দিনের পর দিন বিচ্ছিন্ন। আজকের সরকার নমনীয় হলে কোকো তার মায়ের কোলেই পরম শান্তিতে মরতে পারতো। আর মা তার প্রিয় সন্তানের কপালে শেষ চুমুটা দিতে পারতেন। আর সেই শেথ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখার পরও কেন শোক জানাতে চলে এলেন?
৪. যাত্রাবাড়ীতে বাস পোড়ানোর মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ১নং আসামী করে মামলা দিয়ে শোক প্রকাশ করতে আসাটা কী গরু মেরে জুতা দানের মতো নয় কী?
যে কয়টি প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় জনগণ:
বিএনপির মুখপাত্র শিমুল বিশ্বাস বললেন, খালেদা জিয়া ছেলের শোকে এতটাই অসুস্থ্ যে তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এপিএসকে জানিয়েছি এখন নয় পরে আমরা জানাবো তিনি কখন আসবেন। প্রধানমন্ত্রী আসতে চেয়েছেন এজন্য তাকে অনেক ধন্যবাদ।
১.শিমুল বিশ্বাস কী বলেছেন, খালেদা জিয়া দেখা করবেন না প্রধানমন্ত্রীর সাথে?
এই দেখাটি কালকেও তো হতে পারে কিংবা কোকোর লাশ আসার পরও তো তিনি আসতে পারতেন?
২. একজন প্রধানমন্ত্রীকে যখন বলা হলো এখন নয় পরে আসেন তিনি কেনো কোনো বাধা না মেনে হুট করে চলে এলেন?
৩. কেনো তিনি গেটের কাছে না এসে কেবল মিডিয়াকে চেহারা দেখিয়ে একমিনিটেরও কম সময় রাস্তায় অবস্থান করে দ্রুত আবার ফিরে গেলেন?
৪. কেনো মিডিয়া একটি রাত অপেক্ষা না করে খালেদা জিয়াকে শিষ্টাচার শেখাতে সব টিভি এক সাথে টানা সমালোচনা করছে? এত অতিথি টিভিগুলো তাতক্ষণিক পেলো কি করে?
৫. ভেতরে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পরে আছেন বাইরে দাড়িয়ে মিডিয়াতে একটানা সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান। তিনি খালেদা জিয়াকে খুব আহত করার মত কথা বললেন। এটা কী শোক জানানোর বহি:প্রকাশ? তবে কী তারা সত্যি শোক জানাতে এসেছিলেন ? নাকি এটাই জাতিকে দেখাতে এসেছেন যে খালেদা জিয়া দেখা করেন নি সেটা?
৬. কাল সকালে কিংবা দিনের অন্যকোনো সময় যদি ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে আসার অনুরোধ করা হয় তবে আজ যে কথাগুলো আওয়ামীলীগ বলছে তার উত্তর কী হবে ?
৭. একজন মা ছেলের শোকে কাতর আর টিভিতে তাকে নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা এটা কী রাজনৈতিক শিষ্টাচার?
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ মিয়া মারা গেলে খালেদা জিয়া তাকে দেখতে যান। সেসময়ই শোকাহত শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা না করে সরে যান।
তথ্য সূত্র দেখতে ক্লিক করুন এইখানে।