গ্রামের কুমারী মেয়ে ফুলবানু প্রথমবার পোয়াতী হইবার পর সালিশ বসিল। সকলে উৎসুক হইয়া জিজ্ঞাসিল, ইহা ঘটিল কীসে? কে করিল ফুলবানুর এমনতর সর্বনাশ? বিচারে ফুলবানু দোষ স্বীকার করিয়া এ যাত্রা বাঁচিয়া গেল। ভবিষ্যতে এমন ঘটিবে না- মর্মে মুচলেকাও দিল। পরের বার ব্যাপারখানা আর আশ্চর্যের রহিল না। মোড়ল-মাতবরের বেজায় রাগের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়া কাদিঁয়া মরিল ফুলবানু। নিজের অমার্জনীয় অপরাধের মার্জনা প্রার্থনা করিয়া নাকে খত দিল। সমাজের সম্মুখে শেষবার নতজানু হইয়া সমাজচ্যুত হইবার আশংকা হইতে মুক্তি মিলিল। কিন্তু হায়, বিধি-বাম! কয়েক মাস না গড়াইতেই আবার উৎপাত। ফুলবানুর পেট ফের ভারী মিলিল। এইবার তো নড়িয়া বসিল সমাজপতিগণ। এইবার আর রক্ষে নেই ফুলবানুর। ব্যাপারখানা সত্যিই ভয়ংকর। কাঁহাতক সহ্য হয় এই উৎপাত। গ্রাম্য সালিশে মাতবরের প্রচন্ড জেরার তোপে পড়িল সে। তবে এইবার কোন ধানাই-পানাইয়ে গেল না ফুলবানু। নতি স্বীকার করিল এক বাক্যে-
"আমি যে কাউরে 'না' বলিতে পারিনে, মাতবর সাব।"
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীপ্রধানগন ইদানিং ফুলবানু হয়ে গেছে। বেশকম একটাই, ফুলবানু "দিত" লুকিয়ে আর এসকল "ফুলবাবু"গণ রীতিমত প্রজাতন্ত্রের পোষাক খুলে জনসভা করে "দেয়া" শুরু করেছেন।
আহারে, সহজ সরল ফুলবানু "কাউরে না বলিতে" না পারার যন্ত্রনায় আজীবন "দিয়েই" গেল। বিনিময়ে কিছুই পেল না। জনগনের ট্যাক্সের টাকায় চলা বু্দ্ধিমান "ফুলবাবু" গণ এবার "মোড়ল-মাতবর"কেই দিচ্ছেন, কিছু তো মিলবেই বিনিময়ে। দেখার অপেক্ষা কেবল।
(সংগৃহীত)