২৫ নভেম্বর বলিউডে মুক্তি পেল Dear Zindagi ছবিটি। ৪৫ কোটি রুপী বাজেটের ছবিটিতে অভিনয় করেছেন আলিয়া ভাট, শাহরুখ খান, কুনাল কাপুর, আলী জাফর প্রমুখ।
১৫০ মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটির কাহিনী আবর্তিত হয় কাইরা (আলিয়া ভাট) নামের এক তরুণীকে ঘিরে যে কিনা পেশায় একজন সিনেম্যাটোগ্রাফার। মূলত সিনেমার দৃশ্যায়ন এবং বিজ্ঞাপন নির্মাণের কাজ করে থাকে সে। তবে নিজেই সে একক ভাবে সিনেমা বানাতে ইচ্ছুক কিন্তু যথেষ্ট মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও সিনেমা বানাবার স্বপ্ন আর পূরণ হয় না, কারণ হিসেবে প্রযোজকেরা দেখান যে একে তো কাইরার বয়স কম, তার ওপর সে মেয়ে। এমন কি তার বয়ফ্রেন্ড রঘু (কুনাল কাপুর) নিজেই একজন প্রযোজক হওয়া সত্ত্বেও কাইরাকে ছবি নির্মাণের সুযোগ দিতে সাহস পায়না। এদিকে কাহিনীর আবর্তে রঘুর সাথে ব্রেকআপ করে কাইরা। নিজেকে সামলাতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয় তাকে। আবার এদিকে পরিবারের কিছু ব্যাপারের চাপও তাকে নিতে হয়। বাসার মানুষগুলো তার মিডিয়ায় কাজ করা ঠিক পছন্দ করে না, আবার বিয়ের জন্যও পিড়াপীড়ি করতে থাকে। আবার ছেলেবেলায় তার পারিবারিক ঝামেলাগুলোও পরিণত বয়সে তাকে পোড়ায়। এক সময় সে হতাশা থেকে মুক্তি পেতে দ্বারস্থ হয় সাইক্রিয়াটিসট জাহাঙ্গীর খানের (শাহরুখ) কাছে। এরপর কি? কাইরা কি মুক্তি পায় তার হতাশা থেকে? কিভাবে সে জীবনকে নতুন করে উপলব্ধি করতে শেখে? এই সব কিছুর উত্তর জানা যাবে Dear Zindagi ছবিটির শেষ অব্দি দেখার পর।
পরিচালক গৌরি সিনডির দ্বিতীয় ছবি এটি। পরিচালকের প্রথম ছবি ছিল ‘English Vinglish’ যেখানে এক সাধারণ হিন্দু বধূর জীবন এবং তার জেগে ওঠার গল্প দেখতে পাই আমরা। আবার Dear Zindagi ছবিটি বর্তমানের তরুণ সমাজের ভালোবাসা, হতাশা আর পারিবারিক ব্যাপার নিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। বোঝাই যায়, পরিচালক ভিন্ন ধারার ছবি নির্মাণ পছন্দ করেন।
ছবিটি কিছুটা ধীর গতির কিন্তু কাহিনী এতোটা মসৃণ ভাবে এগিয়েছে যে ধীর গতিটা ছাপিয়ে গেছে। ছবির সংলাপগুলো মাথায় গেঁথে থাকার মত। বর্তমানের তরুণ তরুণীরা সংলাপের মাঝে নিজেদের খুঁজে পাবে, সেই সাথে খুঁজে পাবে কিভাবে জীবনের হতাশা ভুলে জীবনকে সুন্দর ভাবে নতুন করে সাজাতে হয়।
ছবিতে সকলের অভিনয় ছিল চোখে লেগে থাকার মত। আলিয়া ভাট বরাবরের মত মন প্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছেন। শাহরুখ খানের কথা বললে বলতে হয় বিগত কয়েক বছরের তার বড় বাজেটের ছবিগুলোর তুলনায় Dear Zindagi স্বল্প বাজেটের ছবি হলেও এতে শাহরুখের পরিপূর্ণ অভিনয় প্রতিভা পেয়েছি।
ছবিতে আরেকটি উল্লেখ করার মত বিষয় ছিল গানগুলো এবং এর সঙ্গীতায়জন । ছবিতে মোট আটটি গান রয়েছে এবং প্রতিটি গানের লিরিক অসাধারন।
ছবি মুক্তির প্রথম দিনেই বেশ অর্থ উঠিয়ে ফেলেছে বক্স অফিস। হিটের খাতায় নাম লেখাতেও বেশী দেরী নেই। সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে ব্যাপক। এখন ২০১৬ সালের এ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানগুলোতে একাধারে সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা মিউজিক, সেরা অভিনেতা, সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার বাগিয়ে নিলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৬