২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে অসংখ্য শর্ট ফিল্মস। সেখান থেকে সেরা কিছু কাজ নিয়ে এই আয়োজন।
১) মোমেন্টস
টাইগার মিডিয়ার ব্যানারে নির্মিত ১০ মিনিট ব্যাপ্ত ছবি ‘মোমেন্টস’। ভিকি জাহিদের পরিচালনায় ছবিতে অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান এবং অনামিকা সরকার। ডিজুইস সময়কার প্রেম, প্রেমের মিষ্টি মুহূর্ত এবং এক মর্মান্তিক পরিণাম নিয়েই ছবিটি। ছবিতে ছিলনা কোন ডায়ালগ। শুধু জোভানের কণ্ঠকে ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করে এগিয়ে গেছে ছবির কাহিনী। জোভান এবং অনামিকার অভিনয় ছিল নজরকারার মত। সেই সাথে ভালো লেগেছে ক্যামেরার কাজ এবং আবহ সঙ্গীত।
২) শোনো
প্রান ফ্রুটো আয়োজন করেছিল দর্শকের গল্প থেকে শর্ট ফিল্ম নির্মাণের। সেই শর্ট ফিল্মগুলোর একটি ‘শোনো’। তাবাসসুম জামান বন্যার রচনা এবং আতিক জামানের পরিচালনায় ফিল্মে অভিনয় করেছেন সৌমিক আহমেদ এবং সালহা নাদিয়া। একটি কাপলের ব্রেকআপ এবং ব্রেকআপ পরবর্তী বিষয়গুলো উঠে এসেছে সাড়ে তিন মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটিতে।
৩) ইতি হৃদয়
প্রান ফ্রুটোর আরেকটি শর্ট ফিল্ম ‘ইতি হৃদয়’। মাইশা তাসনিয়ার গল্পকে চলচ্চিত্রে রূপ দিয়েছেন পরিচালক রেদোয়ান রনি। অল্প বয়সে বিধবা হওয়া এক মা এবং তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে ছবির কাহিনী। ছবিতে অভিনয় করেছে মৌসুমি হামিদ এবং শিশু শিল্পী সাহির আমান। মা এবং ছেলে চরিত্রের দুজনের অভিনয়ই অসাধারণ ছিল।
৪) ফিলিংস
ওয়ান্ডার অব দি ফ্রেমের ব্যানার থেকে নির্মিত হয়েছে ‘ফিলিংস’ ছবিটি। মাহবুব মোরশেদ রিফাত এবং আবদুল্লাহ আল নোমানের রচনা এবং পরিচালনায় ‘ফিলিংস’ ছবিটির অভিনেতা অভিনেত্রীরা একদম নতুন। তবে অভিনয় বেশ ভালো করেছে। ছবিতে ছিলনা কোন সংলাপ। শুধু একটি মেয়ের কণ্ঠের কথামালা থেকে এগিয়ে গেছে ছবির গল্প। একটি মেয়ের কৈশোরের প্রথম প্রেম এবং বয়সের বিকাশের সাথে সাথে অপ্রাপ্তির ব্যাপার উঠে এসেছে আট মিনিট ব্যাপ্তি এই ছবিতে। ছবির পেছনে যে কথামালাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা অসাধারন লেগেছে।
৫) অভিমান
পপকরন ক্রিয়েটিভ সেলের ব্যানারে নির্মিত ছবি ‘অভিমান’। এতে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, মুনিরা মিঠু এবং শবনম ফারিয়া। পুরাণ ঢাকার এক পরিবারকে নিয়ে এগিয়েছে ছবির কাহিনী, যেখানে একজন বাবা তার মেয়ের সাথে কথা বলে না কারণ তার মেয়ে চাকরী করে। আবার এদিকে বাবার ব্যবসার জাহাজ ডুবে যাওয়ায় সংসারেও অভাব। ঈদ উপলক্ষে পরিবারকে কিছু দিতেও পারে না বাবা। প্রায় ছয় মিনিট ব্যাপ্তি ছবিতে সবার অভিনয় ছিল মনে দাগ কাটার মত।
৬) অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ
আতিক জামানের পরিচালনায় সাড়ে ছয় মিনিট ব্যাপ্তি ছবি ‘অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ’। কাজী আসিফ রহমান এবং তাহসিনের অভিনয়ে ছবিটির কাহিনী এক নবদম্পতির সংসার শুরুর বিষয়গুলো নিয়ে। গল্পটা ভালো ছিল। সেই সাথে লজ্জা – সংকোচের মিশেলে দম্পতির অভিনয়ও ভালো লেগেছে।
৭) ফেরা
পপকরন ক্রিয়েটিভ সেলের আরেক নির্মাণ ‘ফেরা’। হোস্টেলে আসা নতুন এক ছেলেকে ঘিরে ছবির কাহিনী যে কিনা অনেক সহজ সরল। আর হোস্টেলের সবাই তাকে ইচ্ছা মত পচালেও সে সহজে রাগে না। কিন্তু এই সরল ছেলেটিরই এক বেদনাদায়ক সত্য বেরিয়ে আসে যা দর্শকের চোখে পানি আনতে বাধ্য। অসাধারণ গল্পের এই ছবিতে অভিনয় করেছে অ্যালেন শুভ্র, শৌভিক আহমেদ, জয়নাল জ্যাক এবং সৈকত প্রামাণিক।
৮) বিসর্জন
সাদমান চৌধুরীর গল্পে আতিক জামানের পরিচালনায় ‘বিসর্জন’ ছবিতে অভিনয় করেছেন ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম তারকা সাজ্জাদ, তাসনুভা এভলিন এবং সিফাত শাহরিন। দুই বোনের গল্প নিয়ে এগোয় ছবিটি যেখানে দেখা যায় সাজ্জাদ এভলিনের গৃহশিক্ষক থাকে এবং এক সময় এভলিন সাজ্জাদের প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু অন্যদিকে সাজ্জাদ পছন্দ করে শাহরিনকে। শাহরিনও পছন্দ করতে শুরু করে সাজ্জাদকে। কিন্তু ত্রিভুজ প্রেমে শুরু হয় টানাপোড়েন।
৯) লাভ অর নট
সাদাকালো ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত ছবি ‘লাভ অর নট’। নয় মিনিট তেরো সেকেন্ড ব্যাপ্তি ছবিটির গল্প লিখেছে রনি খান এবং পরিচালনায় ছিলেন মাহফুজ আলম। ছবির গল্পে দেখা যায় রনি কিছুটা প্লেবয় টাইপের যে কিনা নানা ভাবে মেয়েদের পটিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। এভাবে একদিন রাস্তায় আফরিনকে ভুজুং ভাজুং বুঝিয়ে তার মোবাইল নাম্বার নেয়। দুর্ভাগ্যক্রমে আফরিন এক্সিডেন্টে তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। কিন্তু এদিকে রনি সত্যি সত্যি ভালোবেসে আফরিনকে। রনি আফরিনকে ফোন দিলে আফরিন জানিয়ে দেয় যে, অন্ধকে দয়া বা করুনা করা যায় কিন্তু ভালবাসা যায় না। রনি সিদ্ধান্ত নেয় নিজের চোখ আফরিনকে দান করতে। ছবির গল্প ভালো লাগলেও অভিনয় একদম মন ছুঁতে পারেনি।
১০) পিছুটান
অনিন্দ্য শায়ান রাকিবের গল্পে ‘পিছুটান’ ছবিটির পরিচালনা করেছেন আতিক জামান। ছবিতে দেখা যায় চতবেলায় মা হারা ফারিয়াকে বাবাই কোলে পিঠে করে মানুষ করে। কিন্তু ভালোবাসার মানুষটার টানে ঘর পালায় ফারিয়া। কিন্তু বাসা থেকে বের হবার প্রতিটি পদে পদে মনে পড়ে বাবাকে। মেয়ে আর বাবার অনবদ্য এই ভালোবাসার গল্পে অভিনয় করছে শাহেদ আলী, শবনম ফারিয়া এবং সাব্বির আহমেদ। সব কিছু মিলিয়ে ছবিটি ভালো ছিল। তবে বেশী ভালো লেগেছে ক্যামেরার কাজ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩